আমাকে অনেকে হতাশাবাদী মনে করে।
করতে পারে। এই বিষয়ে আমার কোনো আক্ষেপ নেই। কারণ, সবার গভীর ভাবে ভাবনার শক্তি থাকে না।
এটা আবার খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা।
তবে আমি প্রতিবাদী।
যেখানে যেভাবে প্রতিবাদ করা যায় আমি তাই করি। যা বেশির ভাগ মানুষ পারে না।
কি কারণে পারে না তা আমি জানি না।
জানতে চাই না।এই ভাইরাস আমার মাঝে সংক্রমায়িত হোক তা আমি চাই না।
তবে আপাতত এই পৃথিবী ব্যাপী মহামারীর মহাক্রান্তিকালে সব অভিযোগ তালা বদ্ধ করে রাখলাম। আগে নিজে বাঁচি অন্যকে বাঁচাই তারপর যারা বেঁচে থাকবে তাদের মধ্যে অশুদ্ধজনদের ছাড় নেই।
শুদ্ধাভিযানে আমার প্রতিবাদ চলবেই মৃত্যুবৎ।
চোর ডাকাত ছ্যাঁচোর গুণ্ডা বদমাইশ
লুটেরা এ সব অশিক্ষার ফসল।
যারা পরধনলোভী তারা কখনও
ভালো পরিবার থেকে আসে না।
এরা অভাব-অনটনকে চির শত্রু মনে করে
এবং তা ঘুচানোর জন্য একটা সময় সকল
অনিয়মের পথ বেছে নেয়।
এদের মধ্যে অনেকে আবার প্রচুর পড়াশোনা করে নিজেকে যোগ্যতর করে তোলে।
লক্ষ্য একটাই অর্থ উপার্জন।
সব ক্ষেত্রে এটা দোষের কিছু নয়।
যদি সেটা অন্যের ক্ষতি সাধন না করে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ ভাবে। বিপথগামীরা এই নষ্ট ধারা চালাতে থাকে তাদের পরিবারগুলোতে প্রজন্ম পর প্রজন্ম। আদর্শ থাকলে অভাব অনটনের মাঝেও অনেক মহৎ প্রাণ তৈরী হয়।
তাদের জগৎব্যাপী সুনাম হয়।
তারা মানুষের কল্যাণে জীবন উৎসর্গ করে।
আপাতত আমাদের সবাইকে বাঁচাতে হবে। ভালো মানুষের সাথে সাথে চোর ডাকাত ছ্যাঁচোর গুণ্ডা বদমাইশ লুটেরা সবাইকে। কারণ, বিচার করার সময় এখন নয়। এখন সবার একসাথে যুদ্ধ করার সময়। বলাতো যায় না ঐ অসভ্য অমানুষগুলো এই ভয়াবহতার সময় হঠাৎ মানুষ হয়ে যেতে পারে। তবে এরই মাঝে এই মহাপ্রলয়ে এই কঠিন বিপর্যয়ের সময় এখনও যারা চুরি করে তাদের তড়িৎ শাস্তি হওযা উচিত। সেটা করবে দেশের আইন। আমরা দেখিয়ে দেবো। আমরা ধরিয়ে দিবো। আর লিখে রাখবো তাদের নাম। ঠিকানা। তাদের জন্ম কুষ্ঠি। এই ডিজিটাল যুগে কারোর আমল নাম লুকানোর কোনো সুযোগ নেই। একদিন না একদিন ঠিকই তারা শাস্তির কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে। ফাঁকি দিয়ে যতই দূরে চলে যাক। তারা অপরাধের শাস্তি ঠিক ঠিক পেয়ে যায়। প্রথম শুরুটা হয় তার পরিবার থেকে। যতই তারা তাদের বাপ-দাদার অবৈধ আয় রুজি উপভোগ করুক না কেনো। আড়ালে-আবডালে ঠিকই বলে ফেলে এটা তাদের পূর্বপুরুষদের অবৈধ আয়রুজি। এবং তার ব্যবহার করে যাচ্ছেতাই ভাবে। কিংবা একেবারে না করে। তারা কখনও স্বাভাবিক ধারায় চলতে পারে না। তাই আবার ফিরে আসে একদিন সেই পূর্বাবস্থায় যেখানে একদিন তাদের পূর্বপুরষেরা ছিলো।
এই প্রক্রিয়াটুকু হয় ধীর গতিতে। যার জন্য মানুষ শুধরাতে চায় না। তারা নানা রকম চাকচিক্যপূর্ণ মিথ্যে ভোগ বিলাসেই মেতে থাকতে চায়। একাধিক বাড়ি, একাধিক গাড়ি, সবই অতিরিক্ত চাই। যা সত্যিকার অর্থে ভোগ করা অসম্ভব। মানুষ চলবে তার সমাজ নিয়ে। তার আশেপাশে কে কোন অবস্থায় আছে সেই খোঁজখবর নিয়ে। একজন পীড়িত মানুষ, একজন আইসোলেটেড মানুষ যদি তার নিকটে থাকে তার খেয়াল রেখে। তাকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে নয়। তারজন্য হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তার ঔষধপত্রের ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তার পরিবারের সকলের নিরাপত্তা দিতে হবে। নতুবা একদিন হোমরা-চোমড়া যে কেউ বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকবে ঘরের ভিতর। লাশ পঁচবে, গলবে আসবে না কোনো মানুষ সৎকার করার জন্য।আজকাল কি হচ্ছে, কি দেখতে পাচ্ছি। সামান্য ভাইরাস সব সম্পর্ক নষ্ট করে দিচ্ছে! দূর দূর করছে একে অপরকে! হ্যাঁ, সাবধানে থাকতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঘৃণা করে নয়। অবজ্ঞা করে নয়। একজন ব্যক্তি এই অদৃশ্য ভাইরাসে যে কোনো ভাবে আক্রান্ত হতে পারে। আপনি খাচ্ছেনতো? বাথরুম করছেনতো???
বারান্দায় দাঁড়িয়ে বাহিরে কিছুটা হলেও দেখছেনতো???
বারান্দায় যে রেলিং ধরে দাঁড়ালেন
সেখানেওতো ড্রপলেট থাকতে পারে।কীভাবে??
পাখীর মাধ্যমে। তার পা বহন করে এসে নিয়ে রেখে যেতে পারে বারো তলার উপরেও। আপনি সতর্কতার মধ্যে থেকেও আক্রান্ত হয়ে গেলেন। এখানে দোষটা কী আপনার???
না, একদম না। মানুষ এতটা সতর্ক থাকতে পারে না। তাহলে সে পাগল হয়ে যাবে। মানসিক বৈকল্য দেখা দিবে।
এখানে কিছুটা ভাগ্যের খেলা থাকে।
আবারও বলছি একজন আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবজ্ঞা নয়। ঘৃণা নয়। অচ্ছ্যুত করা নয়।
তাকে ভালোবাসা দিন। দূর থেকে দিন। সাবধানতার সাথে দিন। তাকে বাঁচতে দিন। বলাতো যায় না কাল আপনার এই একই অবস্থায় পড়তে হতে পারে।
তখন যেনো আপনি কাউকে পান।
আপনার আশে পাশের এম্বুল্যান্সগুলোর নম্বর সংগ্রহে রাখুন। ডাক্তার সাহেবদের সাথে যোগাযোগ রাখুন। অযথা তাদের বিরক্ত করবেন না। হাসপাতালগুলোর ফোন নম্বর সংগ্রহে রাখুন। স্থানীয় কাউন্সিলদের ফোন নম্বর রাখুন। কারণ এই দুর্যোগ কালে তারাই আমাদের একমাত্র ভরসা। কে কিভাবে ভাইরাস প্রতিরোধ করছে তার কথা শুনুন।শরীরের প্রতি যত্ন নিন। শরীর শক্ত রাখুন।পরিবারের সকলের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখুন।বিশেষ করে যিনি সংসারে বয়স্ক তার সাথে গুরুত্ব দিয়ে কথা বলুন।
খেয়াল রাখুন তিনি আজ সব চেয়ে বেশি অসহায়। কারণ তিনি এতদিনে জেনে গেছেন এই করোনাভাইরাসে বয়স্করা আক্রান্ত হলে তাদের ফেরার সুযোগ তুলনামূলক কম।
তাই তাদের সাহস দিন। সতর্ক রাখুন।
দেখবেন কিছুই হবে না।
সচেতন বা অসচেতন ভাবে আর ভয়
দেখাবেন না কাউকে। সাহস দিন,
মনে রাখবেন মরতেও সাহসের প্রয়োজন পড়ে। নতুবা সে মৃত্যু হয় বড় যন্ত্রণার।
মানুষ কিন্তু সহজে মরে না।
যদি না আগে থেকে মানসিক ভাবে মরে যায়। অসুস্থ্যকে একটু সাহস দিন দেখবেন প্রকান্তরে আপনি নিজে সাহস পাচ্ছেন। যিনি এই মুহূর্তে অসুস্থ পজেটিভ তাকে অসহায় ভাবে ফেলে না রেখে দূর থেকেই ইশারায় বা জোরে বলুন আপনি বা আপনারা পাশে আছেন।
দেখবেন মানুষটি মরবে না। মানুষ বড় শক্তিমান। তবে তার জন্য সাপোর্ট লাগে। ভরসা লাগে। বলাতো যায় না এই প্রয়োজনটুকু আপনারও লাগতে পারে খুব শীঘ্রই।
তাই আসুন ভালো থাকি সবাইকে নিয়ে।
আমি আবারও বলছি মানুষ টিকে থাকে নিঃস্বার্থ-নির্লোভ ভালোবাসায়।
যিনি আজ অসহায়, যার একটু ভরসার প্রয়োজন, তাকে সামান্য ইশারা দিন এই সময়ে সাবধানে থেকেই দেখবেন সে কত বড় অসাধ্য সাধন করে ফেলে। বিনিময়ে আপনি খালি থাকবেন না। আপনার অন্তর ভরে
যাবে মহত্তর কর্মের অমূল্য ঐশ্বর্যে!!
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৪৮