বৃষ্টি হলে তোমাদের মনে কদমফুল ফোটে,
বিলাসিতা তোমাদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়;
তোমরা ব্যালকোনিতে বসে চা খাও,
কফির উষ্ণতা তোমাদের মধ্যে একধরনের মাদকতা সৃষ্টি করে;
তোমরা রবীন্দ্রসংগীত শোনো—
আজি ঝরো ঝরো মুখর বাদল দিনে...
আর থেকে থেকে হাত বের করে বৃষ্টি ছুঁয়ে দেখো,
বৃষ্টি তোমাদের ছুঁতে না চাইলেও তোমরা তা ছুঁয়ে দেখো;
বৃষ্টির শব্দে তোমরা ছন্দ, এমনকি তাল-লয়ও খুঁজে পাও;
তোমরা বিচারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হও—
রবীন্দ্রসংগীত অধিক শ্রুতিমধুর নাকি ছন্দমুখর বৃষ্টিধ্বনি অধিক শ্রুতিমধুর।
অথচ আমরা তোমাদেরই শহরে—
অনতিদূরে বসবাস করি,
আমাদের ঘরের চাল ভেদ করে বৃষ্টি পড়ে,
আমরা থালা-বাসন, আমরা জগ-বালতি—
আমরা সবকিছু দিয়েই বৃষ্টি হতে একটু বাঁচার চেষ্টা করি;
কিন্তু পারি না, বৃষ্টি আমাদের সবকিছুই ভিজিয়ে দেয়—
আমাদের কাঁথা-বালিশ ভিজিয়ে দেয়,
আমাদের কাপড়চোপড় ভিজিয়ে দেয়;
আমাদের ছোট ভাইবোন বৃষ্টিতে চুপসে যায়,
আমরা রাতে একটু ঘুমাতেও পারি না।
তোমরা সিডর-সুনামি, তোমরা হারিকেন-মাইকেলের
মতো বড় বড় সাইক্লোনকে খুব ভয় পাও,
রাতে ঘুমাতে পারো না তিতলির আঘাত-গহনে;
অথচ আমরা সামান্য বৃষ্টিতেই ঘুমাতে পারি না সমুদ্রের গর্জনে,
আর যখন আম্ফানের মতো সাইক্লোন ধেয়ে আসে নগরে,
তখন আমরা মৃত্যুর জন্যে প্রস্তুতি নিয়েই তা উপভোগ করি।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মে, ২০২১ বিকাল ৫:১৬