somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পাহাড়, সাগর, প্রাসাদ আর বিপরীত-আবহাওয়ার সেই সহাবস্থান পৃথিবীর খুব বেশি শহরে নেই- যা আছে নয়নমোহিনী ইস্তাম্বুলে

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১২ সকাল ৭:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

।। এক।।
পাহাড়, সাগর, প্রাসাদ আর বিপরীত-আবহাওয়ার সেই সহাবস্থান পৃথিবীর খুব বেশি শহরে নেই- যা আছে ইস্তাম্বুলে। এর নাম থেকে শুরু করে ইতিহাস পর্যন্ত সব কিছুতেই বৈচিত্র্যের সমাহার। মনে হয়, এত পরস্পর-বিরোধীতার সমুজ্জ্বল উপস্থিতি দুনিয়ার আর কোন নগরীতে নেই।
প্রাচ্যের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী রাজাদের এই রাজধানী যেন স্বপ্নের শহর! বলা হয়, পৃথিবীর ইতিকথা যদি শুনতে চাও  ইস্তাম্বুলের মাটিতে কান পাতো। যেদিকেই আমি চোখ ফেরাইঃ সেন্ট সোফিয়া কিংবা ব্লু মস্ক, টপকাপি প্রাসাদ কিংবা গ্র্যান্ড-বাজার বিমোহিত হয়ে পড়ি। অতীতের দিকে তাকালে দেখি- এখানেই সম্রাট দারিয়ুস, মহামতি আলেক্সান্ডার, ক্লিওপেট্রা, সালাদিন দ্য গ্রেট, মোহাম্মদ দ্য ম্যাগনিফিশেন্ট, অস্ট্রিয়-হাঙ্গেরী-জার্মান-রাশিয়ার দুঁদে সম্রাটেরা এসে ভীড় জমিয়েছেন। ভূগোল জুড়েও কী অপার বিস্ময় এটিই পৃথিবীর একমাত্র শহর, যা দুটো মহাদেশে অবস্থিত; দু’দুটো সাগরঃ ব্ল্যাক-সি ও মার্মারাকে যুক্ত করেছে এর বসফরাস-প্রণালী ঝুলন্ত ব্রীজ হবার আগ পর্যন্ত যে বারবার বিচ্ছিন্ন করেছে উচ্চাভিলাষী সেনানায়কদের অসংখ্য ষড়যন্ত্র! বসফরাসের দক্ষিণ প্রান্তে, গন্ডারের শিঙের যে শাখাটি ঢুকে গেছে ইস্তাম্বুলের ইউরোপীয় পেটে--‘দ্য গোল্ডেন হর্ন’- অনাদীকাল থেকে দোলা জাগিয়েছে সৌন্দর্য পিপাসু পর্যটকদের চেতনায়। বিচিত্র মানুষের বহুবিচিত্র রঙ-রূপ-ভাষা ছাড়াও এ শহরে আছে চা-কফি-শরাবের ঢালাও আয়োজন; প্রাচ্য-প্রতীত্যের মিলনের তীব্র চেষ্টা এবং কামাল আতাতুর্কের বিস্ময়কর নিরব উপস্থিতি। পর্দার আড়ালে কিছু ক্রন্দনধ্বনিও আছে, কিন্তু সেগুলো শুনতে চাইলে আপনার চেতনাকে পান্না দিয়ে রাঙাতে হবে। থাক আপাতত রবি ঠাকুরের সেই স্বপ্নরঙিন কথকতা।
***
আমি আর আনোয়ার আয়া-সোফিয়া আর ব্লু-মস্কের মধ্যবর্তী ফুটপাতে বসে তুর্কীর বিখ্যাত তেতো-কফিতে চুমুক দিয়ে ওপাড়ের উঁচু পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে আছি। আমাদের উত্তর পাশে ঝিলমিল করছে গোল্ডেন হর্ণ পৃথিবীর প্রাচীনতম প্রাকৃতিক-পোতাশ্রয়। এই হর্নের মুখ বন্ধ করেই ১৪৫৩ পর্যন্ত রোমানরা তুর্কীদের ইউরোপ-প্রবেশ ঠেকিয়ে রেখেছিল। কিন্তু সুলতান মোহাম্মদ-(টু) কল্পনার অতীত এক যুদ্ধকৌশলে পাহাড়ের উপর দিয়ে নৌ-বহর টেনে নিয়ে কনস্টান্টিনোপল্ জয় করেন। দ্বিতীয় মোহাম্মদকে এজন্য ‘ফাতিহ্’ বা ‘কনকোয়ারার’ নামে অভিহিত করা হয়।
আয়া-সোফিয়া আর ব্লু-মস্ক ইস্তাম্বুলের এমন দুটি অনন্য স্থাপত্য যা ধর্ম, ইতিহাস, জাতিদ্বন্দ্বকে অতিক্রম করে হয়ে উঠেছে তুরস্কের প্রতীক-চিহ্ন। আইফেল টাওয়ার বা স্ট্যাচু অভ লিবার্টির চেয়ে বহু পুরানো এই নির্মাণ দুটি একদিকে যেমন হৃদয় ও চোখকে মোহিত করে- অন্যদিকে তা চিন্তাকেও আপ্লুত করে মানুষের উচ্চতর আকাংখা ও স্বপ্নের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালবাসায়। যুদ্ধ, রক্তপাত এবং শত-সহস্র সংঘর্ষের পরেও মানুষের শুভবুদ্ধি, সুন্দরের আরাধনা এবং মহত্বকেই তুলে ধরে এই অসাধারণ স্থাপনা দুটি।
দুটোই বসফরাসের পশ্চিম তীরে অর্থাৎ ইস্তাম্বুলের ইউরোপীয় অংশে অবস্থিত। এই অংশকে আবার উত্তর-দক্ষিনে ভাগ করেছে গোল্ডেন হর্ণ। হর্ণের দক্ষিণ ভাগের নামই কনস্টান্টিনোপ্ল যেখানে ব্লু-মস্ক আর আয়া সোফিয়া এখনো দাড়িয়ে আছে সগৌরবে; উত্তরে আধুনিক নিমার্ণ- যার কেন্দ্রস্থলে তাকসীম আর ইসতিকলাল স্কয়ার। বসফরাসের উপর দুটি ঝুলন্ত ব্রীজ আর সংখ্যাহীন ফেরী-বোট যোগাযোগ রাখছে এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে। এপাড় থেকে ওপাড়ে তাকালে শুধুই ব্যাকুলতা জাগে নজরুলের কবিতার.............. মধ্যে সাগর এপাড়-ওপার করছে কানাকানি।
তিন মাস আগে আমরা যখন সিনাইয়ে প্রবেশ করি- তখন সুয়েজ খালের উপর নির্মীয়মান ঝুলন্ত ব্রীজ দেখিয়ে আনোয়ার বলেছিল- এই হচ্ছে এশিয়া ও আফ্রিকার প্রথম স্থল-সংযোগ। যদিও সুয়েজের নীচ দিয়ে টানেল চালু হয়েছে বেশ ক’বছর আগে। বারো সপ্তাহ পার হয়ে আজ দেখছি এশিয়া ইউরোপের মিলন-মালা। হে আমার জোড়া চোখের স্রষ্ঠা- তোমাকে অভিবাদন, প্রিয়তম। তুমি এই অধমের ভাগ্যে লিখেছো ইবনে বতুতার বিধিলিপি, তুমিই তাকে দিয়েছো ওমর খৈয়ামের স্বপ্নবিলাস। তুমি অকৃপণ নও বলে দরিদ্রতম দেশের এক ভিখিরিকে দিয়েছো রাজসিক অনুভবই আর মস্তিষ্কে দিয়েছো প্রজ্ঞার পক্ষপাতিত্ব....।
***
দেশ থেকে বাইরে পা ফেলার আগেই আমি দুটো বিষয় যেখানে যাচ্ছি, সেখানে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ কিছু ঘটেছে কিনা; দ্বিতীয়ত জায়গাটির নান্দনিক সৌন্দর্য হৃদয়ছোঁয়া কিনা। প্রথমটি আমার প্রাণকে মুগ্ধ করে মায়াবতী নারীর মত- চেতনার পরতে পরতে তোলে ঢেউ। পরেরটিতে তৃপ্ত হয় চোখ, বুকের তৃঞ্চা আর বাসনার বহ্নি। এ কারণেই ঝকমকে বা আধুনিক শহর থেকে আমায় বেশি টানে ঐতিহাসিক স্থান। মুম্বাই ছেড়ে মুগ্ধ হই হায়দ্রাবদে; মস্কো ছেড়ে প্রাণ ছোটে সমরখন্দ-বোখারায়। তবে দিল্লী-রোম-কায়রো-ইস্তাম্বুলের ক্ষেত্রে এ আবেগ খাটে না। এ সব নগরী সিদ্ধার্থের কমলার মত- রূপে ও গুনে- দুটোতেই মনোহারিনী। সেখানে গেলেই জীবনানন্দ দাশের বনলতা সেনের চেয়ে বাস্তব হয়ে ওঠে ক্লিওপেট্রা বা নেফারতিতির ছায়া। ইতিহাস যেন রাতের জ্যোস্নার মত গ্রাস করে মনের-দিন। চেতনা বিহ্বল হয়ে পড়ে ঐতিহ্যের ছোঁয়ায় আর আবেগের প্রাবল্যের কাছে হার মানে যুক্তি। ক্লান্ত মাথা নত হয় মানুষের অবিনশ্বর কীর্তি, ইতিহাস আর রক্তগঙ্গার উত্তাল স্রোতে। তখন গুনগুন করে সুমনের জাতিস্বর গাই: যতবার তুমি জননী হয়েছো ততবার আমি পিতা...।
আবেগের তীব্র বিহ্বলতায় কার কাছ থেকে কখন ধারকর্জ করে প্লেনে চেপে বসি- নিজেই জানি না। সুন্দরী বিমান বালারা হয়ে ওঠে রোখসানা বা চায়না বেগম; আর আমিও হয়ে উঠি সুলতান মাহমুদ বা আলেক্সান্ডার দ্য-গ্রেট। ট্রাম-বাস-ট্রেন ধীরে ধীরে রূপান্তরিত হয় ঘোড়ার গাড়ি বা অশ্বরথে; আর দরিদ্র কাঠ পা রাখে ক্ষুধিত পাষানের শ্যাঁওলাপরা সিড়ির পিচ্ছিল ধাপে।
***
পৃথিবীর কেন্দ্রভূমি বিকেলের মোহময়ী আলোয় মুগ্ধ মন আমার স্বপ্নে ধাবিত হল ইতিহাসের আলো আঁধারীতে। ইস্তাম্বুল অগুনিত রহস্যেরও আধার। কত স্মৃতি এখানে পাখা মেলেছে উপন্যাসের চেয়ে জান্তব ভাবে! আসার সনে পড়ে যায় বিশ শতকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ থ্রিলার লেখক আগাথা ক্রিস্টির জীবন কাহিনী ইউরোপিয়ান ইস্তাম্বুলের পেরা-প্যালেস হোটেলে ডিনারে গিয়েছিলাম গতকাল। লক্ষ্য এই খ্যাতিমান হোটেলটিকে চর্মচক্ষুতে দেখা। ১৯২৬ থেকে ১৯৩২ এর মধ্যবর্তী সময়ে এই হোটেলে প্রায়ই থাকতেন ক্রিস্টি। একবার হঠাৎ.হোটেল থেকে উধাও হয়ে যান তিনি। ১১ দিন পর্যন্ত তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না। সবারই মাথা খারাপ; এত নামজাদা লেখিকার কিছু হলে তো সর্বনাশ! যাই হোক, সব শংকা ও আতংকের অবসান ঘটিয়ে ১১ দিন পরে হঠাৎ তিনি ‘নাজিল’ হলেন। জেরবার স্বামী কিছুতেই মেনে নিতে পারেন নি এ আচরণ। বাকবিতন্ডায় কাটে তিন-তিনটি দিন। অবশেষে চতুর্থ সকালে স্বামী তাকে তালাক দিলেন। তবুও সেই ১১ দিনের বিষয় ক্রিস্টি মুখ না-খোলায় রহস্যপোন্যাসের চেয়েও জটিল হয়ে ওঠে সে-উপাখ্যান।
ষাটের বিশ্বখ্যাত দশকে এই লেখিকার জীবন নিয়ে চলচ্চিত্র তৈরী করতে যায় ওয়ার্নার ব্রাদার্স। সেই ১১ দিনের রহস্যের জট খোলা তখন জরুরী হয়ে দাঁড়াল। কোথাও কোন সুত্র না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ওয়ার্নারের গবেষকরা প্ল্যানচেটের সাহায্য নেন। তামারা র‌্যান্ড নামের নির্ভরযোগ্য এক মিডিয়ামের মাধ্যমে প্রয়াত লেখিকাকে ডাকা হয়। প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- ৪১১ নং কক্ষে রহস্যের সমাধান আছে। কোম্পানীর কর্মকর্তা, গবেষক এবং সাংবাদিকরা পেরা-প্যােেলসে ভীড় করেন। ওয়ার্নার ব্রাদার্স ৪১১ নং রুম ভাড়া নেন, কিন্তু রহস্যের সুরাহা হয় না। আবার তামারা র‌্যান্ডকে ডাকা হয়। এবার তামারা একটি পুরানো মর্চে ধরা চাবির সন্ধান বলেন- যা আগে কখনো ব্যবহার করা হয়নি। ওয়ার্নার কর্তৃপক্ষ চাবিটি ব্যবহার করতে চাইলে হোটেল-মালিক বিশ লাখ মার্কিন ডলার এবং নির্মিত ছবির শতকরা ১৫ ভাগ রয়্যালিটি দাবী করায় বিষয়টি জটিলতায় আটকে যায়।
পরবর্তীতে আবারও তামারা র‌্যান্ডের সাহায্য নিলে সে জানায়, চাবিটি সংরক্ষনের জন্য লেখিকার আত্মাই তাকে বারবার অনুরোধ জানাচ্ছে। কারণ, লেখিকার আত্মজীবনী লেখা ডায়রীটি ঐ চাবির আড়ালে লুকানো। সাংবাদিকদের কল্যাণে বিষয়টি চাউর হয়ে যায় এবং ওয়ার্নার কোম্পানী বিপুল জনদাবীর মুখে পড়ে। অবস্থা আঁচ করে ওয়ার্নার কোম্পানী শর্তে রাজী হয়। কিন্তু ততদিনে হোটেল মালিক মারা গেছেন গুপ্ত-বাক্সটির সন্ধান গোপন রেখেই। যদিও বাইওগ্লুর জোকাথিয়ান হোটেলে জনাব ড্যাশিয়েল হামেদের বাহুবন্ধনে সেই এগারো দিন ক্রিস্টি স্বেচ্ছায় বাহুবন্দী ছিলেন বলেও গুজব রটে যায়। কিন্তু এ গুজবের সত্যতা আর প্রমান করা যায় নি। ফলশ্র“তিতে ওয়ার্নারের সেই ডকুমেন্টারিও আর তৈরী হয়নি।
আমরা যখন পেরা-প্যালেসের রুমগুলো ঘুরে দেখার অনুমতি চাইলাম- ম্যানেজার বেঁকে বসল। দশ লাখ লিরার পাঁচটি নোট সামনে ধরতেই তার চেহারা দ্রুত পাল্টে গেল (প্রিয় পাঠক ভয় নেই- তুর্কি পঞ্চাশ লাখ লিরার দাম ১২/১৩ ডলার মাত্র)। একজন খানসামাকে দিয়ে আমাদেরকে উপরে পাঠাল সে।
১৮৯২-এ প্রতিষ্ঠিত হোটেলটি চরম বিলাসবহুল নয়। তবে খ্যাতি এর গগনচুম্বী। রুম নং- ৪১১ তে বসে ক্রিস্টি লিখেছেন তার বহুল আলোচিত উপন্যাস ‘দ্য ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস’ যা চলচ্চিত্রায়িত হয়েও বিপুল সাড়া তুলেছে। ১০১ নং রুমকে গালিপল্লির যুদ্ধের হেড-কোয়ার্টার বানিয়েছিলেন কামাল আতাতুর্ক; এখন সেটি মিউজিয়াম। বেয়ারা এক একটি রুমের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় আর বলে- এখানে ছিলেন গ্রেটা গার্বো, এখানে মাতা হারি, এখানে জ্যাকুলিন কেনেডি ওনাসিস; এই রূমে সম্রাট এডোয়ার্ড, এই-যে এখানে, এই খাটে ঘুমিয়েছেন জোসেফাইন বেকার আর হাত বাড়ায় বখশিশের জন্য। শেষ পর্যন্ত রাগ করে আনোয়ার দশ লাখ লিরার একটা নোট দিয়ে বলল, খালাস-খালাস!। আই’ল নট গো ফার।
১৪৫টা রুমের মধ্যে সোয়াশ’ বাকী থাকতেই আমরা নীচে ফিরে এলাম। যদিও বেয়ারার মুখে তখনো এমন সব জগদ্বিখ্যাত লোকের নাম খৈয়ের মত ফুটছে- যাদের চেহারা মনে পড়লেই মাথা ঘুরে যায়; ইতিহাস তো বাদই থাকল!
*
তখনো আমরা দেখিনি গ্র্যান্ড বাজার- যা প্রায় দু’হাজার বছর ধরে সিল্ক-রুটের প্রান্ত হিসেবে পৃথিবীকে যোগান দিয়ে আসছে লাখো রকমের রসনা-নিবারক মশলা এবং সুন্দরীদের রূপচর্চ্চার বিলাস সামগ্রী। এখনো ৪০০০ দোকান নিয়ে যেটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে স্বীকৃত। যে বাজার আবার দিনের চেয়ে রাতেই বেশি মজলিশি।
পেরা-প্যালেসের অদেখা-যাতনাকে বুকে চেপেই পা বাড়ালাম গ্র্যান্ড-বাজারে। ঢুকতেই মনে হলো মশ্লার সাথে আরো কি-যেন নাকে ঢুকছে। আনোয়ারের দিকে তাকাতেই হেসে বলল, মাফিশ্ মুশকিলা, ইয়া আফেন্দি। হাশিশ-হাশিশ।
কাবুল থেকে শুরু করে ইস্তাম্বুল পর্যন্ত সিল্ক রুটের যেখানেই গেছি- সে বোখারা হোক বা সমরখন্দ, তেহরান কিংবা বাকু- সর্বত্রই হাশিশের গন্ধ টের পাই। এ-যেন তুর্কীস্থানের টাইল্স- যা ছাড়া অভিজাত কোন নিমার্ণ সম্পূর্ণ হতে পারে না। মাঝে মাঝে ভাবি, হাজার বছর ধরে এই হাশিশ মধ্য-এশিয়ায় কোন সমস্যা তৈরী না করলেও গত পঞ্চাশ বছরে পশ্চিমী দুনিয়াকে সর্বনাশের অতলে ডুবিয়েছে। এ-কি হাভাতের গোগ্রাসে খাবার পরিনতি, না অন্য কিছু?
*
গোল্ডেন হর্ণের উত্তর পাশের পাহাড়টি কম উঁচু নয়। ১৪৫৩’র ৬ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত ৮টি আক্রমন ব্যর্থ হবার পর ওসমান-বাহিনী যখন হতোদ্যম, তখন সুলতান মোহাম্মদ (টু) এর শিক্ষক ও ধর্মগুরু আকসেমেদ্দিন জানানঃ- আবশ্যই কনস্টান্টিনোপ্ল বিজিত হবে। এবং সেটি হবে আপনার হাতেই।
সুলতান বিস্মিত হয়ে বললেন, কিভাবে?
আল্লাহ রহমতে এবং আপনার সৌভাগ্যে সুলতান।
সেনাপতিরা মুখ চাওয়া চাওয়ি করে।
আকসেমেদ্দিন এবং তার আরও তিনজন বন্ধু- ওস্তাদ জাগানস পাশা, মোল্লা গুরানী এবং মালিক হাসরার সুলতানকে এক অবিশ্বাস্য পরিকল্পনার কথা শোনান।
...আল্লার ইচ্ছা এ রকমই, মহামান্য সুলতান। পরিকল্পনার বিবরণ শেষ করে বলেন আকসেমেদ্দিন।
বসফরাসের মুখে গোল্ডেন হর্ণের প্রবেশ দ্বার ভারী লোহার চেন দিয়ে আটকানো। তার থেকেও কোয়ার্টার মাইল পশ্চিমে বারুদমুখো খ্রিস্টান রণতরী। দক্ষিণের পাহাড় সমান উচুঁতে দাঁড়ানো পবিত্র গীর্জা হাজিয়া সোফিয়া পূর্বাঞ্চলীয় খ্রিস্ট- শক্তি ও বিশ্বাসের প্রতীক- তারই পেছনের সেনানিবাসে সুদক্ষ সাহসী নাইট ও জেনারেলদের অধীনে জানবাজ সৈনিকরা। সুতরাং সদাপ্রস্তুত মনোবলে কোন ঘাটতি নেই খ্রিস্টবাহিনীর।
কিন্তু ২২ তারিখ সকালে হর্ণের উত্তর পাশের বিশাল পাহাড়ের চূড়া থেকে একের পর এক সত্তরটি জাহাজ নামতে দেখে খিস্ট্রানদের সহস্র বর্ষের অটুট মনোবল ছাই হয়ে গেল। একি স্বপ্ন না সতি? প্রতিটি জাহাজ টেনে নামাচ্ছিল অসংখ্য গরু আর মহিষ। আর হাজার হাজার রশি দিয়ে পাহাড়ের অমসৃন গায়ে জাহাজগুলিকে দু’দিক থেকে ব্যালেন্স করছিল তুর্কী সেনারা। চাকা ও চর্বি লাগানো কাঠের অসংখ্য সিঁিড়র উপর দিয়ে হর্নের পশ্চিম প্রান্তে গিয়ে নামল তুর্কী বাহিনী পৃথিবীর সকল নৌ যুদ্ধের রেকর্ড ভেঙ্গে স্থলপথে! শুধু স্থল নয়, সুইচ্চ পাহাড় ডিঙ্গিয়ে !!
কিন্তু সেই হতবাক করা স্থবিরতাও বাইজান্টিয়ান সৈন্যরা কাটিয়ে উঠল। ২৮ এপ্রিল থেকে ২৮ মে পর্যন্ত ৯ বার দ্বিমুখী আক্রমনেও তারা টললো না। ২৯ তারিখ সুলতান স্বয়ং যুদ্ধের ভার নিলেন। সেদিন হাজিয়া সোফিয়ায় পার্টি ছিল। সম্ভ্রান্ত সব খ্রিস্টান মিলিত হয়েছিলেন গীর্জায়। যুদ্ধ শুরু হল মধ্যরাতে।
প্রথম ৩০০ জন তুর্কী সৈন্যের জীবনের বিনিময়ে দূর্গের প্রাচীর পর্যন্ত পৌঁছে গেল তরুণ তুর্কীরা। এরপর যুদ্ধে নামল জানেসারীরা। জানেসারীদের সাহস, বুদ্ধিমত্তা এবং কৌশল ছিল জগদ্বিখ্যাত। উলুবাতিল হাসান নামের মঙ্গোল বংশোদ্ভুত এক প্রথম তুর্কী পতাকা ওড়ালেন দূর্গের চূড়ায়- কিন্তু শত্র“র গোলাকে এড়াতে পারলেন না। তার লাল-সবুজ নিশান উপন্থাপনের মধ্য দিয়েই শুরু হলো মুসলমানদের ইউরোপ যাত্রা।
যুদ্ধের পর দেখা গেল- কনস্টান্টিনোপ্লে খুব বেশি সৈন্য ছিল না। অবস্থানগত এবং কৌশলগত কারণেই অজেয় হয়ে উঠেছিল এই রোমান রাজধানী। তদুপরি হাঙ্গেরী, গ্রীস এবং বলকান থেকে দ্রুত সরবরাহ পেত কনস্টান্টি নোপল্স। যখনই এসব বন্ধ হয়ে গেল, তখনই বোঝা গেল- ,রোমান এই রাজধানী অজেয় নয় ; ...নয়ই।
পরদিন দুপুরে সুলতান মোহাম্মদ এইউপ মসজিদে নামাজ পড়ে ঘোষণা করলেন- এখন থেকে হাজিয়া সোফিয়া আর গীর্জা থাকবে না। সিনান, আপনি কাজ শুরু করুন।
*
নীল মসজিদকে তুর্কীরা বলে সুলতান হামেত (সুলতান মস্ক)। এর বিশাল প্রাঙ্গনে মসজিদ ছাড়াও আছে কবরস্থান, মাদ্রাসা, ফোয়ারা, হেল্থ ক্লাব, রন্ধনশালা, বিপনীবিতান, হাম্মাম, বাসগৃহ এবং গুদামঘর। ১৯-বছর বয়সী সম্রাট আহমদ নিজ হাতে এর ভিত্তি খনন করেন এবং ৭ বছর পর ১৬১৬ সালে মসজিদের নিমার্ণ শেষ হয়। সুলতান আহমদ (ওয়ান) সম্পর্কে নীল মসজিদ সংক্রান্ত একটি জনপ্রিয় বাক্য হচ্ছে এ রকম: ওসমানের ১৪তম বংশধর আহমদ ১৪ বছর বয়সে ক্ষমতায় বসে ১৪ বছর পর মারা যান।
নীল মসজিদের প্রধান স্থপতির নাম মোহাম্মদ আগাযিনি সিনানের শিষ্য। সিনান (১৪৯১-১৫৮৮) হচ্ছেন সেই বিশ্বখ্যাত নির্মাতা, যার হাতে তুরস্কের ৪৭৭টি স্থাপত্য নির্মিত হয়েছি। এক দরিদ্র কৃষকের সন্তান এই খ্রিস্টান ছেলেটি ৪৮ বছর বয়সে মিম্বারবাসি (প্রধান স্থপতি) হন এবং সুলতান সোলাইমান- (ওয়ান), সেলিম-(টু) এবং মুরাদ-(থ্রি)’র রাজত্বকালে নির্মাণ সেবায় নিয়োজিত থাকেন (১৫৩৯-১৫৮৮)। পুরো পৃথিবীতে দ্বিতীয় কোন স্থপতির ভাগ্যে এত বিপুল নির্মানের সুযোগ, খ্যাতি এবং গৌরব জোটেনি- যা জুটেছিল সিনানের ভাগ্যে। কেউ যদি, এমনকি লুই-কানের সঙ্গেও সিনানের তুলনা করে, তাহলে সিনানের পাশে কানকে মনে হবে পূর্ণিমার চাঁদের পাশে ঝোনাকীর আলো মাত্র! বসফরাসের পশ্চিম পাড়ের আধুনিক তুর্কী বিশ্ববিদ্যালয়টি এই মহান স্থপতির নামে উৎসর্গিত।
*
নীল মসজিদের প্রধান দরোজা পাঁচটি। মূল মসজিদটি ২৬টি পিলারের উপর দাঁড়ানো ৩০টি গম্বুজের সমন্বয়ে নির্মিত। চার কোনায় চারটি সরল-একরৈখিক মিনার- যার প্রত্যেকটির গঠন ত্রিকোনাকার। এছাড়াও পশ্চিম কোনায় রয়েছে দুটি অতিরিক্ত মিনার। মসজিদের কেন্দ্রীয় গম্বুজটির ব্যাস সাড়ে তেহাত্তর ফুট এবং মাটি থেকে একশো একচল্লিশ ফুট উচুঁ।
হাতির পায়ের মত বিশাল চারটি পিলার এই গম্বুজের ভার বহন করছে।
নীল মসজিদে ২৬০টি জানালাযার সবগুলো রঙিন (প্রধানত নীল) কাঁচে মোড়া। ২১০০০ নীল টাইল্সে আবৃত্ত এই মসজিদের নীলাভ দ্যূতি শুধু চোখ নয়, চেতনাকেও ধাঁধিয়ে দেয়। জেনে আশ্চর্য হলাম যে এতে স্থাপিত ইজমিরি টাইল্সের একেকটির বর্তমান দাম ছয় লক্ষ মার্কিন ডলার। তাহলে নীল মসজিদে কত টাকার টাইল্স লাগানো? হিসাব করতে যেয়ে আমার মগজ আতংকে জমে গেল।
তুরস্কের জাতীয় প্রতীক এই মসজিদের পাশেই দাঁড়িয়ে আছে আয়া-সোফিয়া। তুর্কীরা যাকে বলে হাজিয়া সোফিয়া, মানে ‘স্বর্গীয় প্রজ্ঞা’। পিরামিড ও চীনের প্রাচীরের পর পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও প্রাচীণ নির্মাণ আয়া সোফিয়া। খ্রিস্ট জগতে এটি সেন্ট-সোফিয়া নামেও পরিচিত। বর্তমানে এটি পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম গীর্জা হলেও- চারশো বছর আগ পর্যন্ত এটিই ছিল একমেবাদ্বিতীয়ম। একে এখন টপকে গেছে লন্ডনের সেন্ট পল, রোমের সেন্ট পিটার এবং মিলানের ডুয়োমো। যদিও আয়তনে সে এদের কাছে হেরেছে কিন্তু সেন্ট-সোফিয়াকে গন্য করা হয় মর্যাদার সর্বোচ্চ সম্মানে। পৃথিবী শ্রেষ্ঠ স্থপতি সিনানের মন্তব্যটি সবাইকে মনে করিয়ে দিল ইয়াসমীনাঃ- আমি সারা জীবন শুধু একটি নির্মাণকেই অতিক্রম করতে চেয়েছি : আয়া-সোফিয়া। কিন্তু পারিনি।’
এটি আসলে কি? গীর্জা না মসজিদ? আনোয়ার আগ্রহী গলায় জানতে চায়।
ইয়াসমিনা লাস্যকন্ঠে বলে, কোনটাই নয়। ৯১৬ বছর এটি ছিল গীর্জা, ৪২১ বছর মসজিদ, এবং ১৯৩৪ থেকে যাদুঘর।
এর ইতিহাস একটু বল, ইয়াসমীনা?
আনোয়ারের কৌতূহলে ইয়াসমীনা উচ্ছ্বসিত। এই-গাইড সফরের প্রথম থেকেই মেয়েটি আনোয়ারের কোমল হাসি আর সলজ্জ পৌরুষের প্রেমে পাগল। আমরা সবাই সেটা টের পেলেও আনোয়ার উদাসীন।
বর্তমান হাজিয়া-সোফিয়ার স্থানে আগে দুটো গীর্জা ধ্বংস হয়েছে। সম্রাট জাস্টিনিয়ান ৫৩২ খ্রীস্টাব্দে বর্তমান গীর্জাটির নির্মাণ শুরু করেন প্রকৌশলী এন্থেমিয়াস এবং গানিতিক ইসিডোরাসকে দিয়ে। প্রাচীন যুগের সকল বড় নির্মাণ এভাবেই হত- জ্যামিতি, ত্রিকোনোমিতি আর ভূবিজ্ঞানকে সামনে রেখে। একারণেই ভূমিকম্প, প্রাকৃতিক দূর্যোগ আর নানাবিধ বিপর্যয়কে অতিক্রম করে এগুলো টিকে থাকে শতাব্দীর পর শতাব্দী। তারই প্রোজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আয়া-সোফিয়া নির্মাণ শেষ হলে (৫৩৭ খ্রিস্টাব্দে) এর ভেতরে প্রবেশ করে এর মহিমান্বিত সৌন্দর্যে পুলকিত সম্রাট চিৎকার করে ওঠেন, হে রাজাধিরাজ সোলায়মান! আমি তোমাকে অতিক্রম করে গেছি!
বহু রাজা-বাদশা এই গীর্জায় রাজ মুকুট পরেছেন। বহু চোর বাটপারের আশ্রয়স্থল হয়েছে এটি। চতুর্থ ক্রুসেডাররা ১২০৪-এ এটিকে দুর্গ হিসেবে ব্যবহার করেছে। ১৮৫৩-তে কনস্টান্টিনোপ্লস জয় করে সুলতান মোহাম্মদ এটিকে মসজিদে রূপান্তর করান।
মূল গীর্জাটি আয়তকার ২৩০-বাই-২৪৬ ফিট। ১৪৭টি স্তম্ভের উপর দন্ডায়মান প্রধান গম্বুজটির উচ্চতা ১৮২ ফিট। পুরো নির্মাণটি বিচিত্র টাইলসে সাজানো- যাতে চিত্রিত হয়েছে খৃষ্টপূর্ব, খ্রীস্টিয় এবং খ্রিস্টত্তোর যুগের অনেক দুর্লভ কাহিনী। মুসলিম যুগে এগুলো ঢেকে দেয়া হয়েছিল। এখন অনেকগুলোই খোলা। যদিও চারদিকে এখনো ইসলামের নবী এবং তার খলিফাদের নামই ঝুলছে। তারপরেও বলা উচিত অর্থোডক্স চার্চের প্রধান ভিত্তি ক্রুশ-প্রতীকের কেন্দ্রীয় ধারনা বহন করে চলছে সেন্ট সোফিয়া। যার অন্য নাম আইকোনিজম।
মা মেরী ও যীশুর আগেকার বহু কাহিনী- যা আমরা অস্বীকার করি মুসলমানদের সাথে মিল থাকার কারণেএখনো অবিকৃত ভাবে আঁকা আছে আয়া সোফিয়ার দেয়াল চিত্রে। ইয়াসমিনা খানিকটা আবেগাক্রান্ত গলায় বলল, আমরা তুর্কীরা ধর্মের কারণে ভাইয়ের গলায় ছুরি ধরি না- যদিও বসফরাসের স্রোতে পানির চেয়ে রক্তের পরিমানই বেশি। কিন্তু এই রক্তের দায় যতটা না আমাদের, তার চেয়ে অনেক বেশি বহিরাগতদের। মোস্তফা কামাল আবার আমাদেরকে এক করেছেন উদার বিশ্ব ভ্রাতৃত্বে। এশিয়াকে ভাই করেছেন ইউরোপের। মুসলমানদের পাশাপাশি দাঁড়াতে দিয়েছেন খ্রিস্টানদের। এমনকি বিসমিল্লাহ বলে তিনি তার প্রথম ভাষণ শুরু করেও পার্লামেন্ট মর্যাদা দিয়েছেন ইহুদীদেরকে। এই আমাদের ইতিহাস। এই আমাদের তুরস্ক। আমরা পৃথিবীর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত বলেই মূলের কাছাকাছি। আর কামাল আমাদেরকে ফিরিয়ে দিয়েছেন ঐতিহ্য।...
নিজেকে বিতর্কে জড়াতে প্রবৃত্তি হল না আমার। আয়া সোফিয়ার পশ্চিম-উত্তর এলাকা সাহাবী হযরত আবু আইউব আনসারীর নামে উৎসর্গিত। ইস্তাম্বুল অবরোধকালে তিনি এখানেই মারা যান। কনস্টান্টিনোপ্ল জয়ের পর সুলতান মোহাম্মদ নামটিকে পুনরায় গৌরবান্বিত করে ইউরোপের সেই অংশের নাম রাখেন এইউপ। সহসাই আমার মন কেঁদে উঠল এইউপ যাবার জন্য। আতিথ্যের এই জ্যোতির্ময় আহ্বান যেন বেজে উঠল আমার বুকের গহীনে। যে মসনবীর রুমীকে চেনে না; যে বাবরনামা’র জহির উদ্দীনকে দেখেনি, যে শোনেনি নাসির উদ্দীন হোজ্জার গল্প গাঁথা  তার পক্ষে এই আবেগ ব্যাখ্যা করা কষ্টকর। আমি মুখ খুলবার আগেই আনোয়ার আমাকে বুঝতে পারল। হেসে বলল  ফাদ্দাল, ইয়া সারোয়ার, ফাদ্দাল
আনোয়ারকে নিয়ে আমি ধীর পায়ে নীল মসজিদে ঢুকলাম মনের আবেগকে অনন্তের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করতে।
--------------------------------------------------->।।২।।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১২ সকাল ৭:৫৮
১৪টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঘরে আগুন, মন্দীরে হামলা, মাজার ভাঙ্গা, পিটিয়ে মানুষ মারা এমন মেধাবী এদেশে দরকার নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৩২



২০০১ সালে দেলাম ঘরে আগুন দেওয়া ও মন্দীরে হামলার জঘণ্য কাজ। ২০০৪ আবার দেখলাম ঘরে আগুন, মন্দীরে হামলা, মাজার ভাঙ্গা, পিটিয়ে মানুষ মারার জঘণ্যতম ঘটনা।জাতি এদেরকে মেধাবী মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিক্ষাঙ্গনে অপ্রীতিকর ঘটনার মুল দায় কুৎসিত দলীয় লেজুরভিত্তিক রাজনীতির

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৫

সোস্যাল মিডিয়ার এই যুগে সবাই কবি, লেখক, বুদ্ধিজীবি সাজতে চায়। কিন্ত কেউ কোন দ্বায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে রাজী নয়। ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটা মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে । এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোমলমতিদের নিয়ে আমি কি বলেছিলাম?

লিখেছেন সোনাগাজী, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৫৪



আমি বলেছিলাম যে, এরা ভয়ংকর, এরা জাতিকে ধ্বংস করে দেবে।

ড: ইউনুসের সরকারকে, বিশেষ করে ড: ইউনুসকে এখন খুবই দরকার; উনাকে টিকিয়ে রাখতে হলে, কোমলমতিদের থামাতে হবে; কিভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পিটিয়ে মানুষ মারার জাস্টিফিকেশন!

লিখেছেন সন্ধ্যা প্রদীপ, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৩

এদেশে অনেক কিছুই সম্ভব।বর্তমান এলোমেলো সয়য়ে যা সম্ভব না বলে মনে করতাম তাও সম্ভব হতে দেখেছি।তবে মানুষকে কয়েক ঘন্টা ধরে পিটিয়ে মারাকে ইনিয়েবিনিয়ে জাস্টিফাই করা যায় এটা ভাবিনি।তাও মেরেছে কারা?
একদল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আহা তোফাজ্জল

লিখেছেন সামিয়া, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৪




মৃত্যু এখন এমনি সহজ
ভিডিও করতে করতে;
কথা বলতে বলতে
ভাত খেতে দিতে দিতে;
কনফিউজড করতে করতে
মেরে ফেলা যায়।

যার এই দুনিয়ায় কেউ অবশিষ্ট নাই
এমন একজনরে!
যে মানসিক ভারসাম্যহীন
এমন একজনরে!
যে ভবঘুরে দিক শূণ্য
এমন একজনরে!
যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×