ছোট্ট বেলায় যখন পড়াশোনা করতে ভাল লাগতো না তখন ভাবতাম - সামনের পরীক্ষাটা শেষ করেই জোস্ একটা সময় কাটাব ঘুরে এবং ঘুমিয়ে। কিন্তু খুব একটা মনের মত করে সময়গুলো উপভোগ করা হত না। পরীক্ষা শেষ হলেই পরবর্তী পড়াশোনা শুরু করে দিতে হত। এ ব্যাপারে মা ছিলেন খুবই কড়াকড়ি ধরনের। পড়াশোনার বিষয়ে পান থেকে চুন খসলেই বিপদ, মা হয়ে যেতেন অগ্নিশর্মা। আর কপাল মন্দ হলে জুটে যেত দুই-এক ঘা বেত। তবে সত্যি বলতে কি মায়ের বেতের মার একটাও বিফলে যায়নি। আজ দূরে থেকে বুঝি মা কি ছিলেন আর কি ছিল তাঁর শাসন।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষের পথে চলে আসলাম, আজও মনে সেই একটাই আক্ষেপ... নির্ঝঞ্জাট ছুটি কাটাবার সৌভাগ্য হলোনা। এখন জুন মাস, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ। কোথায় গ্রামে গিয়ে একটু ঘুরব আর গাছের তাজা আম, কাঁঠাল খাব; তা নয় এখনও ঢাকায় থাকতে হচ্ছে। কারণ জীবনের দামী সময়গুলো অল্প কিছু টাকার বিনিময়ে বেঁচে দিয়েছি ঢাকা শহরের কিছু ছাত্র-ছাত্রী আর তাদের বাবা-মায়ের কাছে। মাসে ষোল দিন না হলে বেতন পাব না। পেট চলবে কিভাবে? সুতরাং, কর টিউশন, চালাও পেট। হা...হা...হা...
গত ০৮/০৬/২০১০ তারিখে মাস্টার্স ১ম সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হয়েছে, আজও বাড়ি যাওয়া হলোনা। মা বারবার ফোন করে বাড়ি যেতে বলছেন। বলছেন...গাছের আমগুলো তো সব ঝরে পড়ল বাবা, কবে আসবি তুই? মাকে এটা-সেটা বুঝিয়ে বলি... কিছুদিন পরে আসছি মা। মনে জানি- কবে আসব নিজেও জানি না। ছুটি উপভোগ... সেটা তো অনেক বড় ভাগ্যের ব্যাপার!
হয়তো ছুটি এক সময় পাব অফুরন্ত, জানি না উপভোগ করার সময় থাকবে কি না?
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুন, ২০১০ রাত ১১:০৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





