somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘন বর্ষায় দার্জিলিং ভ্রমনঃ কিছু পথের পাঁচালী

২১ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ঘন বর্ষায় দার্জিলিং ভ্রমন ও কিছু পথের পাঁচালী ভিসা পর্ব-২


ভিসা পর্ব-৩

৩রা আগস্ট বিকাল ৩টা-৪টা পাসপোর্ট delivery-র সময়। ৩০শে জুলাই ভিসার আবেদন পত্র জমাদান পর্বে সময়ের উপর আলাদা একটা শ্রদ্ধাবোধ তৈরী হয়ে গেছে। সেই শ্রদ্ধাবোধ থেকেই “ভিসা পেলে সময়মতই পাব” এ বিশ্বাসে বুড়িমারীর রাত্রীর গাড়ীর টিকিট বুক দিয়ে ফেলেছি।বলে রাখি,আবেদন পত্রে Port of Arrival দেখিয়েছিলাম – by Road Changrabandha ।

জীবনের প্রথম বিদেশ যাত্রা। রোমাঞ্চের আবহটা তাই একটু বেশিই বটে। ব্যাগ পত্র গুছিয়ে রেখে বাসার নীচে নেমেই গুলশানের উদ্দেশ্যে একটা CNG নিয়ে নিলাম।ঈদের ছুটিতে রাজধানী তখনও ফাঁকা।ফাঁকা রাস্তায় আড়াইটার মধ্যেই পৌছে গেলাম। ভিসা সেন্টারের নোটিশ বোর্ডে পড়েছিলাম-”আবেদন পত্র জমা দানের সময় সকাল ৮টা –দুপুর ১টা। আর ভিসা প্রাপ্তি বা পাসপোর্ট ফেরত প্রাপ্তির সময় বিকাল ৪টা-সন্ধ্যা ৬টা।”

১৩৭ নম্বর রাস্তার উপর সেই ব্যারিগেটের সামনে আজও দুইটা লাইন। সেদিন দেখেছিলাম ডানের লাইনটা বড় আর বামের লাইনটা ছোট।আজ তার বিপরীত।কারণটাও জানা গেল এর নামকরণে।বামের লাইন back date আর ডানেরটি current date। back date এর লাইনে বিভিন্ন তারিখের লোকজন দাঁড়িয়ে। আর current date এর লাইনে কেবল ৩রা আগস্টের লোকজন।

বেলা তখন ৩টা ২০মিনিট।কি একটা কথায় সবাই নামাজে দাঁড়ানোর মত একটু নড়েচড়ে লাইন সোজা করার তোড়জোর শুরু করে দিল।লাইন সোজা হলে আগে ঢোকার জন্য সম্মুখ দিকটায় কিছুটা ঠেলাঠেলিও শুরু হয়ে গেল।কিন্তু তারও ১০মিনিট পরে সকল প্রতীক্ষার হাড়ি ভেঙে ওপাড় থেকে কেবল গত ২৮শে জুলাইয়ের লোকদের ডাক এলো। এর পর ২৯,৩০জুলাই।এভাবে কেবল back date এর লোকগুলিই ঢুকতে থাকল। শুনলাম এরা হয় কেউ ইচ্ছা করে নির্ধারিত তারিখে আসে নাই।আবার কেউ নির্ধারিত তারিখে এসেও ”পাসপোর্ট আজ আসে নাই” এ কথা শুনে ফিরে গেছে।আর কথাটি যার কাছে শুনলাম ভদ্রলোক ”পাসপোর্ট আজ আসে নাই” বার্তার শিকার হয়ে গত date এ ফেরত গেছেন।বুঝতে বাকী রইল না আজ current date এর লোকজনের পাসপোর্ট ফেরত অনিশ্চিত।আমাদের লাইনটিও এক এক করে প্রথম দিনের মত বড় হয়ে যাচ্ছে।পাসপোর্ট ফেরতের নিয়মটা জেনে হয়ত আশা নিরাশায় দুলে সবাই আস্তে ধীরে আসছে।



তির্থের কাকের মত কেবল সামনের দিকে তাকিয়ে আছি। দাঁড়িঁয়ে থাকতে থাকতে পা টাও ধরে এসেছে।কিন্তু ডানে বামে বসার কোন ব্যবস্থা নেই।পাশ দিয়ে পুরাতন লোকেরা পাসপোর্ট হাতে বেরিয়ে যাচ্ছেন।চোখে মুখে ভিসা পাওয়ার আনন্দ।ওদের দেখে অপেক্ষার যন্ত্রণাটা আরও বেড়ে গেল।

ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি বিকাল ৫টা। বাম পাশ থেকে back date লাইন পরিস্কার হয়ে গেছে। লাইনে গুঞ্জন এখন আমাদের পালা।৫টা ১৫মিনিটে আবার লাইন নড়েচড়ে উঠল।কিন্তু না, সামনে থেকে শোনা গেল হাইকমিশন থেকে current date এর পাসপোর্ট এখনও আসে নাই।বুকের ধরফুরানি বেড়ে গেল আরেক চোট।

সাড়ে ৫টায় আর বাঁধ মানানো গেল না।তখনও সামনের দিকটায় কি একটা বলা হচ্ছিল।কিন্তু কে শোনে কার কথা! বানের মত হুড়মুড় করে ঢুকতে থাকে লোকগুলি। পুলিশ,সিকিউরিটি আর বাঁধা নয় তখন ব্যারিগেট খোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।কিন্তু ততক্ষণে কয়েকজন বেশ ভালমত চোট পেয়ে গেছেন। বানের স্রোতে নিজেকে আবিস্কার করলাম মূল বিল্ডিংয়ের গেটে। এখানে সবাই ভদ্রস্থ হয়ে ঢুকছেন।সিঁড়ি মুখে যেতেই সিকিউরিটি পাসপোর্ট দেখে লোকগুলিকে দু’ভাগ করে দিচ্ছেন।হলুদ স্টিকার লাগানো slip হাতের লোকগুলিকে নীচের waiting রুমে বসতে বলা হচ্ছে।বাকী লোকগুলির কাউকে দু’তলা,তিন তলা আবার কাউকে নীচের basement দেখিয়ে দেয়া হচ্ছে।আমার slip এ হলুদ স্টিকার লাগানো। যথারীতি waiting রুম দেখিয়ে দিতেই সিকিউরিটির কাছ থেকে জানতে পারলাম হলুদ স্টিকার লাগানো slip এর পাসপোর্ট আসতে দেরি হবে। কিন্তু আসবে। এ কথাই রোডে দাঁড়ানো লাইনের সামনে বলা হচ্ছিল।ক্লান্তির অবসাদে ধাতস্থ হয়ে চেয়ারে এখানা সিট নিয়ে বসে পড়লাম।


হুড়মুড় করে ঢোকা লোকগুলি মূল বিল্ডিংয়ের গেটে শান্ত হয়ে আবার লাইনে দাঁড়িয়ে গেছে

(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×