somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিঝুম দ্বীপের ৪০ হাজার হরিণের খাবার নেই

২৪ শে মার্চ, ২০১০ বিকাল ৩:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
তীব্র খাদ্যাভাব ও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে নিঝুম দ্বীপের ৪০ হাজারের বেশি চিত্রাহরিণ। নিঝুম দ্বীপে বন বিভাগের স্থানীয় বিট অফিসারসহ মাত্র ১২ কর্মকর্তা-কর্মচারী এ বিপুলসংখ্যক হরিণের দেখভাল করছেন, যা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই অপ্রতুল। লোকবল সঙ্কটের কারণে একদিকে যেমন বিশাল বনাঞ্চল সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব হচ্ছে না, তেমনি বিপুলসংখ্যক হরিণের দেখভালও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে না। অথচ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী হলে নিঝুম দ্বীপ থেকে প্রতিবছর গড়ে ১০ হাজার হরিণ আহরণ করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি বা রফতানি করে বছরে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। জেলার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত নিঝুমদ্বীপ। উপজেলা হাতিয়া থেকে প্রায় ১ কিলোমিটারের চ্যানেল দিয়ে বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ।
ষাটের দশকের দিকে মেঘনা বিধৌত সমুদ্রবক্ষে পলি জমে জেগে ওঠে এ দ্বীপটি। বন বিভাগ ১৯৭২-৭৩ সাল থেকে এ দ্বীপটিকে সুন্দরবন আদলে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বনায়নের কাজ শুরু করে। সৃজনকৃত ১০ হাজার ৬৬৩ একর ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলে জীববৈচিত্র্য সৃষ্টির লক্ষ্যে বন বিভাগ ১৯৭৮ সালে নিঝুম দ্বীপে ৪ জোড়া চিত্রাহরিণ অবমুক্ত করে।
নিঝুম দ্বীপে বর্তমানে হরিণের প্রকৃত সংখ্যা বন বিভাগের জানা না থাকলেও এলাকাবাসীর মতে এ সংখ্যা ৫০ হাজারেরও অধিক। নিঝুম দ্বীপের রেঞ্জ অফিসার হাফিজ উদ্দিন জানান, নিঝুম দ্বীপের হরিণের সংখ্যা ৪০ হাজার হতে পারে।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, মাত্র ৪ জোড়া হরিণ থেকে বংশ বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৪০ হাজারের অধিক চিত্রাহরিণ বিচরণ করছে নিঝুম দ্বীপের বনাঞ্চলে।
স্থানীয় অধিবাসীর মতে, গত সিডরের সময় প্রায় ৫ হাজার হরিণ ভেসে গেছে জোয়ারের পানিতে। এ ব্যাপারে বিট কর্মকর্তা নুরুন্নবী চৌধুরী হরিণ জোয়ারে ভেসে যাওয়ার কথা অস্বীকার করলেও সিডর পরবর্তী সময় বনাঞ্চলে ২০টি হরিণের মৃতদেহ পাওয়া গেছে বলে তিনি স্বীকার করেন।
প্রতিনিয়ত হরিণের বংশ বিস্তার ঘটায় তীব্র খাদ্যাভাব ও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে নিঝুম দ্বীপের ৪০ হাজার হরিণ। খাদ্যের অভাবে বনাঞ্চল ছেড়ে দল বেঁধে হরিণ লোকালয়ে এসে কৃষকের রবিশস্য বিনষ্ট করছে। এ সময় সুযোগসন্ধানীরা নির্বিচারে হরিণ শিকার করছে বলেও প্রচুর অভিযোগ রয়েছে।
একদিকে নিঝুম দ্বীপে হরিণের ক্রমাগত বংশবিস্তার, অন্যদিকে স্থানীয় প্রভাবশালীদের দ্বারা বন উজাড় করে বনাঞ্চলে বসতি স্থাপন করায় নিঝুম দ্বীপে হরিণের বিচরণক্ষেত্র বনাঞ্চলের ওপর এক ধরনের পরোক্ষ ছাপ সৃষ্টি করছে, যা বন ও বন্যপ্রাণীর জন্য শুভ নয়।
নিঝুম দ্বীপের বিপুলসংখ্যক মূল্যবান হরিণ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো মাথাব্যথা নেই। এ ব্যাপারে নোয়াখালীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বদরুল আনমের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি নিঝুম দ্বীপে ব্যাপক হারে হরিণের বংশ বৃদ্ধির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, নিঝুম দ্বীপ থেকে ব্যাপকসংখ্যক হরিণ অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য প্রধান বন সংরক্ষকের কার্যালয়ে বেশ কয়েকটি চিঠি পাঠালেও অদ্যাবধি এ ব্যাপারে কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা আসেনি। তিনি জানান, অতি সম্প্রতি সরকারের উচ্চপর্যায়ে ব্যক্তি বা খামারি পর্যায়ে হরিণ বিক্রির সিদ্ধান্ত হলেও এখন পর্যন্ত হরিণের দাম নির্ধারণ করা হয়নি এবং এ ব্যাপারে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণেরও কোনো চিঠিপত্র তিনি পাননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বন বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, নিঝুমদ্বীপে যে হারে হরিণের বংশ বিস্তার হচ্ছে সে হিসেবে গড়ে প্রতিবছর অন্তত ১০ হাজার হরিণ আহরণ করা সম্ভব। প্রতিটি হরিণের আনুমানিক বাজারমূল্য ২০ হাজার টাকা হিসেবে ১০ হাজার হরিণের বাজারমূল্য দাঁড়ায় ২০ কোটি টাকা। আহরিত হরিণ স্থানীয় বাজারে বিক্রি কিংবা রফতানি করে এ টাকা আয় করা সম্ভব। শুধু হরিণ বিক্রির টাকা দিয়ে পর্যটন সম্ভাবনাময় নিঝুম দ্বীপের অবকাঠামো উন্নয়ন, স্থানীয় লোকজনের শিক্ষা ও চিকিত্সাসেবার মতো আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যয় করা যেতে পারে বলে তিনি মনে করেন। নিঝুম দ্বীপের আর্থসামাজিক উন্নয়নের স্বার্থে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভেবে দেখা উচিত বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করেন। সূত্রঃআমার দেশ।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×