এইটা অনেকেই জানেন আবার অনেকেই জানেন না যে, বাচ্চার জন্মের পর প্রথম ছয় মাস মায়ের দুধই বাচ্চার জন্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এর পর থেকে বাচ্চার জন্যে প্রয়োজন পরে অন্যান্য পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ খাবার। এসময় শুধুমাত্র মায়ের দুধে বাচ্চার পুষ্টির চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়না। তাই, এ সময় বাচ্চাকে মায়ের দুধের পাশাপাশি, Formula, Baby & Toddler Food কিংবা Milk, Juice & Drinks অথবা অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে পারেন। যদি বাসায় রান্না করে কিছু খাওয়াতে চান, তাহলে অবশ্যই কম মসলাযুক্ত খাবার এবং লবনমুক্ত খাবার খাওয়াবেন, যাতে করে খাবারগুলো খুব সহজেই হজম করতে পারে এবং কোন ধরণের সমস্যার সৃষ্টি না হয়। বাচ্চার অন্যান্য খাবার নিয়ে প্রত্যেক মা-বাবারাই দ্বিধা-দন্দে থাকেন যে, বাচ্চাকে আর কি খাবার খাওয়ানো যায় এ নিয়ে। তাই, আজকের লেখাটি বাচ্চার অন্যান্য খাবার সম্পর্কে বলা হয়েছে।
বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন কয়েক ধরণের খাবার। যেটি আপনারা বাসায় বাচ্চাদের খাওয়াতে পারেন।
১। কলা, দুধ, আপেল, দই এবং ওটস মিক্স করে খাবার
২। সুজির হালুয়া এবং
৩। সবজি দিয়ে খিচুড়ি।
তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক, কিভাবে এই খাবারগুলো বাসায় তৈরি করবেন।
কলা, দুধ, আপেল, দই এবং ওটস মিক্স করে খাবার
তৈরির উপকরণঃ
বড় সাইজের ১ টা কলা, ১ কাপ দুধ, ১ টা আপেলের অর্ধেক, ১ কাপ দই, ২ কাপ ওটস।
প্রণালীঃ
প্রথমে একটি পরিষ্কার পাত্রা দুধ নিয়ে তাতে ওটস দিয়ে সেদ্ধ হতে চুলায় দিন। এমনভাবে সেদ্ধ করবেন যাতে ওটস ভালভাবে সেদ্ধ হয় কিন্তু দুধের পরিমাণ অনেকাংশে কমে যায়। এরপর অন্য একটি পাত্রে আপেল পিস করে কেটে ভাপে সেদ্ধ করে নিন। কিছুক্ষণ পর আপেলটি সেদ্ধ হয়ে গেলে ম্যাশ করে নিন। এবার খাবারের পাত্রে দই নিয়ে তাতে কলা, আপেল এবং ওটস দিয়া ভালভাবে মিশিয়ে নিন।
সুজির হালুয়া
সবসময় একই খাবার খেতে খেতে বাচ্চার অরুচি ধরে যায়। এবং ডিম দুধ খেতে চায়না। তাই, ভিন্ন ধরণের এক রেসিপি দিয়ে বাড়িয়ে দিতে পারেন বাচ্চার খাবারের স্বাদ। তৈরি করতে পারেন সুজির হালুয়া।
তৈরির উপকরণঃ
১ টি ডিম, ১ টি কলা, ২-৩ টেবিল-চামচ সুজি এবং দুধ।
তৈরির প্রণালীঃ
দেড় দুধের সাথে ৩ কাপ সুজি দিয়ে তা ১০ থেকে ১৫ মিনিট হালকা আঁচে রান্না করুন। দুধ শুকিয়ে আসলে তাতে ডিমের সাদা অংশ দিয়ে ভাল করে সেদ্ধ করে নিয়ে এরপর চুলা থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা হতে দিন। বাচ্চাকে খাওয়ানোর সময় অতিরিক্ত অল্প পরিমাণে দুধ মেশাতে পারেন।
সবজি দিয়ে খিচুড়ি
বাচ্চার জন্যে সবজি খিচুড়ি হতে পারে একটি অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। যেটি খুব সহজেই ঘরে বানিয়ে বাচ্চাকে খাওয়ানো যায়। বাচ্চার বয়স ৭ মাস শুরু থেকে এই খাবার খাওয়াতে পারেন। তবে, খেয়াল রাখবেন, খিচুড়ি তৈরি করার সময় ডাল এবং চাল-এর পরিমাণ যাতে সমান থাকে।
তৈরির উপকরণঃ
গাঁজর, আলু, মিষ্টি কুমড়া, পেঁপে পরিমাণ মতো, ১ কাপ মুসর ডাল, ১ কাপ পোলাও-এর চাল, ১ টি সেদ্ধ ডিমের সাদা অংশ, পরিমাণ মতো তেল, আদা, পেঁয়াজ, রসুন বাটা, পরিমাণ মতো পানি। তবে, যে মসলাগুলো দিচ্ছেন, খেয়াল রাখবেন, সেগুলো যাতে পরিমাণে বেশি না হয়ে যায়।
তৈরির প্রণালীঃ
প্রথমে একটি হাড়িতে ১ চা-চামচ তেল নিয়ে তাতে রসুন বাটা, আদা এবং পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভেজে নিন। খুব অল্প পরিমাণে লবন ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, বাচ্চা যদি লবন ছাড়ায় খাবার খেয়ে অভ্যস্ত হয়ে থাকে, তাহলে খাবারে কোন প্রকার লবন না দিলেই ভাল। এরপর মাছটি ভাপে সেদ্ধ করে তা থেকে কাঁটা ছাড়িয়ে নিয়ে অন্য একটি পাত্রে রেখে দিন। এরপর ভাঁজতে দেওয়া হাড়িতে ডাল এবং চাল দিয়ে একসাথে কিছুক্ষণ ভেজে নিন। এরপর পর্যায়ক্রমে সবজিগুলো ছোট ছোট পিস করে দিয়ে তাতে পানি দিয়ে ভালভাবে মিশিয়ে সেদ্ধ হতে দিন। সেদ্ধ হয়ে গেলে তাতে মাছ এবং ডিমের সাদা অংশ দিয়ে পুনরায় রান্না করে নিন। এরপর রান্না হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে নিন।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০০