বাচ্চার সাথে পিতামাতার সম্পর্কের বন্ধন এমন একটা জিনিস, যে বন্ধনের কারণে ছোট সন্তানের কাছে বার বার ছুটে যেতে ইচ্ছে করে। তাই, সন্তানেই একটু কিছু হতে দিতে চান না পিতামাতারা। সবসময় সন্তানকে যত্ন সহকারে রাখেন। সন্তানের সাথে থাকে পিতামাতার আত্মার বন্ধন। এবং ছোটবেলা থেকে সন্তানকে যথার্থ পরিচর্যা, যত্ন, ভালোবাসা ইত্যাদির মাধ্যমেই সন্তানের সাথে গড়ে উঠে অন্যরকম এক সম্পর্ক। তবে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে জন্মের পর পরই সন্তানের সাথে পিতামাতার সুসম্পর্ক গড়ে উঠেনা। এবং সন্তানের প্রতি খেয়াল, যথেষ্ট পরিমাণ যত্ন না থাকার কারণে সন্তানের সাথে সম্পর্কের মধ্যে টানা হেচড়ার সৃষ্টি হয়।
সন্তানের প্রতি মা-বাবার এমন অনুভূতি সৃষ্টি হওয়ার কারণ
স্বভাবতই রক্তের কারণে সন্তানের সাথে এক ধরণের সম্পর্ক সৃষ্টি হয় পিতামাতার। এবং সন্তানের প্রতি পিতামাতার সৃষ্টি হয় এক ধরণের অনুভূতি। সন্তানের প্রতি খেয়াল রাখা, আদর যত্ন করা ইত্যাদির মাধ্যমে সন্তান নিরাপত্তাবোধ করে এবং এক ধরণের আত্মবিশ্বাস তৈরী হয়। সন্তানকে স্পর্শ করা, তার দিকে তাকিয়ে থাকা, খাওয়ানো, গোসল করানো ইত্যাদি করার মাধ্যমে সন্তান মনে করে তার সাথে কেও আছে। সন্তানকে কোলে নিয়ে আদর করার জন্য পিতামাতার প্রতি সন্তানের এক ধরণের ভালোবাসা তৈরী হয়।
সুসম্পর্ক তৈরী না হওয়ার কারণ
অনেক ক্ষেত্রে জন্মের পরে বাচ্চাকে সাথে সাথে দেখতে না পারার কারণে সুসম্পর্ক বা সন্তানের প্রতি অনুভূতি সৃষ্টি হতে সময় লাগে। এবং এনআইসিইউ-তে থাকা সন্তানের ক্ষেত্রে এমনটি ঘটে থাকে। দীর্ঘদিন এনআইসিইউ-তে থাকার কারণে মায়ের সাথে সন্তানের দেখা সাক্ষাত কম হয় এবং সন্তানের প্রতি অনুভূতি সৃষ্ট হয়না। এবং সৃষ্টি হলেও একটু সময় লাগে। তবে, নরমাল হয়ে জন্ম নেওয়া বাচ্চার ক্ষেত্রে একটু আলাদা। নরমাল হয়ে জন্ম নিলে মায়ের কষ্ট হয় এবং এই কারণেই সন্তানের প্রতি মায়ের একটা আলাদা টান থাকে। কিন্তু, সিজারের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে, বিনা কষ্টে বাচ্চা জন্ম দেওয়ার কারণে সন্তানের সাথে সেরকম একটা সম্পর্ক স্থাপিত হয়না। এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে পিতামাতার বোঝাপড়ার অভাব কিংবা সম্পর্কের মধ্যে দূরত্ব থাকার কারণেও সেটা সন্তানের প্রতি একটা খারাপ প্রভাব ফেলে।
এরকম আরও অনেক বিষয় আছে যেগুলোর কারণে সন্তানের প্রতি বাবামায়ের সম্পর্ক সৃষ্টি হতে একটু সময় লাগে। সেগুলো নিম্নে দেওয়া হলো:
১. জন্মের পর অথবা শৈশবে যদি পিতামাতার ভূমিকা যদি ভালো না হয়।
২. পূর্বে যদি পিতামাতা সন্তানহারা হন।
৩. সমাজে বসবাসরত মানুষদের সাথে যদি সম্পর্ক ঠিক না থাকে।
৪. অর্থাভাব এবং ডিপ্রেশনের মধ্যে থাকলে।
প্রতিকার
১. বাচ্চার সাথে বেশি সময় ব্যয় করুন। তাকে স্পর্শ করলে সে পিতামাতার সংস্পর্শ বুঝতে শিখবে এবং একটা সম্পর্ক তৈরী হতে থাকবে।
২. যত পারেন বাচ্চাকে কোলে নিয়ে ঘুম পাড়াবেন।
৩. বাচ্চাকে গোসল করানো, ডায়াপার পরানো, সবসয় নিজের কাছে আগলে রাখা। তবে, খেয়াল রাখবেন, নবজাতকের জন্য নিউবর্ন ডায়াপার ব্যবহার করবেন।