somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেন কাদিয়ানীদের সাথে এমন আচরণ করা হয়?

০৭ ই মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


শিয়ারা আজানের মধ্যে হযরত আলীর নাম ব্যবহার করে এবং আকিদাগত পার্থক্যে তারা প্রত্যেহ তিন ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, তাদের হাদিস গ্রন্থও যথেষ্ট ভিন্ন অথচ নিজেদের মুসলিম বলে পরিচয় দিয়ে সারা পৃথিবীর সামনে তারা মাথা উচু করে বুক ফুলিয়ে বিচরণ করে। বিশেষ করে ইরানের প্রায় ৯৯% মুসলিম হল শিয়া। তো বলুন তো, আপনি কখনো শুনেছেন কোন ইসলামিক দল এই শিয়াদেরকে কাফের, অ-মুসলিম বলে গালি দিতে? আপনি কখনো দেখেছেন তাদের ধর্মীয় অধিকার হননে কোন ইসলামিক দলকে উদ্ব্যত হতে? কি, দেখেছেন?

তবে কেন যুগ যুগ ধরে শুধু কাদিয়ানিদের সাথেই এমন আচরণ করা হয় ? আমার পরিভাষায় ধর্ম হলে একটা বিশ্বাস, এক ও অদ্বিতীয় পরম স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। আর এই বিশ্বাসের সাথে সরাসরি সম্পর্ক হল মানুষের হৃদয়ে, কারন বিশ্বাসটা হৃদয় থেকেই আসে। পৃথিবীতে প্রায় ১০,০০০ স্বতন্ত্র ধর্ম রয়েছে এবং ২০২২ সালের শুমারী অনুযায়ী পৃথিবীর মোট জনসংখ্যা হল ৮০০ কোটি। এই ৮শত কোটি মানুষের মাঝে ১০ হাজার ধর্ম-ই মানব হৃদয়ে স্ব-স্ব ধর্মীয় স্রষ্টার প্রতি প্রেম ও বিশ্বাস এবং পবিত্র অন্তঃকরণের মাধ্যমে বেচে আছে। তো ইসলাম হল তারই মধ্যে একটি অন্যতম স্বতন্ত্র ধর্ম। ঐশী গ্রন্থ কুরআন এবং ইসলামের প্রবর্তক হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হতে প্রাপ্ত বানী সম্বলিত হাদিস গ্রন্থ হল মুসলমানদের ধর্মীয় মৌলিক বিষয়ের কেন্দ্র বস্তু। আবার এই গ্রন্থ দুই-কে কেন্দ্র করেই সৃষ্টি হয়েছে সর্বমোট ৭৩ টি দল। কাদিয়ানী তথা আহমদিয়া মুসলিম জামাত হল সেই ইসলামি ৭৩ দলের একটি। এই কাদিয়ানী মুসলিমরা ১৮৮৯ সাল থেকেই মির্জা গোলাম আহমদকে প্রতিস্রুত মসিহ ও ইমাম মাহদি, বিশ্বনবী (সাঃ) এর উম্মতি নবী এবং বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)কে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ শরিয়তবাহী নবী হিসেবে মান্য করে আসছে। যার ফলে তাদের নিয়ে বিপত্তির দানা বাধে বাকি ৭২ দলের মুসলিম সমাজে।

পরম স্রষ্টা আল্লাহ মানবজাতীর ইহলৌকিক এবং পারলৌকিক কল্যানের জন্য কি দিক নির্দেশনা দিয়েছেন তা জানতে হলে পড়তে হবে কুরআন এবং আল্লাহর নবী ও মানবজাতির পথপ্রদর্শক মুহাম্মদ (সাঃ) কিভাবে তা পালন করেছেন তা শিখতে হলে পড়তে হবে হাদিস। এই দুই গ্রন্থকে যথাযথ মান্য করার মাধ্যমেই ইসলাম ধর্ম পালিত হয়। পক্ষান্তরে পবিত্র এই দুই গ্রন্থ কে অমান্য করার কোন প্রকার সুযোগ ইসলাম ধর্মে দেয়া হয়নি। এখন কথা হল অত্যন্ত মার্জিত এবং শ্রেষ্ঠ জীবনাদর্শের সূচি পবিত্র কুরআন এবং হাদিস এর কোথাও-ই তো মানুষের নিজেস্ব বিশ্বাস(ধর্ম) জোরপূর্বক কেড়ে নিয়ে মন-মতো চাপিয়ে দেয়া অথবা হস্তক্ষেপ করা, কাফের বলে গালি দেয়া, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করা, সরকারের নিরাপত্তে থাকা নিরিহ মানুষের সম্পত্তির নথিপত্র জ্বালিয়ে দেয়া, গবাদিপশু পুরিয়ে মারার মত নৃশংসতার পরামর্শ বা নির্দেশ কোন অবস্থাতেই মুসলমানদের দেয়া হইনি। বরং পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করা হয়েছে- "লা ইক্বরাহা ফিদ্দিন" অর্থাৎ ধর্মে কোন জোর জবরদস্তি নেই। ক্যানাডার পার্লামেন্টে সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব হিসেবে বক্তব্য রাখেন মালালা৷ বক্তব্যে মালালা বলেন, ‘‘২০১৪ সালে পার্লামেন্ট হিলে যে হামলা চালিয়েছিল সে নিজেকে মুসলিম বলে দাবি করেছিল, কিন্তু তার সাথে আমার বিশ্বাস মেলে না৷ বিশ্বের দেড়শ কোটি মুসলিম, যারা শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করছে তাদের বিশ্বাসের সঙ্গেও ঐ ব্যক্তির বিশ্বাস মেলে না৷ কেননা ইসলাম ক্ষমা ও শান্তির প্রতীক৷ আমি একজন মুসলিম এবং আমি বিশ্বাস করি যদি তুমি ইসলামের নামে হাতে অস্ত্র তুলে নাও এবং অসহায়-নিষ্পাপ মানুষদের হত্যা করো তুমি কখনোই একজন মুসলমান হতে পারো না৷''

তাহলে কাদিয়ানী তথা আহমদিয়া মুসলমানদের বিপরীতে বিশ্ব-মুসলিম সমাজের আচরণ কতটা সঠিক ও ইসলাম সম্মত? এবং উপরোল্লিখিত আয়াতের আদেশ পালনকারী বা মান্যকারী কারা? একজন নিরপেক্ষ সাধারণ মুসলিম হিসেবে আমার এই প্রশ্নটা সকল ধর্মের সকল সু-শীল ও সাধারণ মানুষের তরে।

_______চৌধুরী আসিফ।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০২৩ দুপুর ১২:৫৫
৩৩টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারো বলছি দেশে জঙ্গী নেই উহা ছিল আম্লিগ ও ভারতের তৈরী

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:০৮


আওয়ামী নস্টালজিয়ায় যারা অন্তরের ভিতর পুলকিত বোধ করে তাদের কাছে বাংলাদেশ মানেই হলো জঙ্গী, অকার্যকর অথবা পাকিস্তানের মতো ব্যর্থ রাষ্ট্র। ৩৬ জুলাই পরবর্তী মহা-গণবিস্ফােরনকে কোনাভাবেই মানতে পারেনি তারা ভয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী-লীগের ছায়া দায়িত্ব নিয়ে তারেক জিয়া এখন দেশে

লিখেছেন অপলক , ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৩৬



সংবাদের টাইটেল অনেক কিছু বলে দেয়। ভেতরেটা না পড়লেও চলে। বস্তুত: এতদিন ধরে ভারতের গ্রীন সিগনাল পাচ্ছিলেন না, তাই তারেক জিয়া দেশে আসার সময় বারবার পিছাচ্ছিলেন। এখন চুক্তি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভোটের পর, আমরা পাকীদের বুটের নীচে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৩২



পাকীরা অমানুষ, অপসংস্কৃতির ধারক ও বাহক; ওরা ২টি জাতিকে ঘৃণা করে, ভারতীয় ও বাংগালীদের; ওরা মনে করে যে, বাংগালীদের কারণেই পাকিরা হিন্দুদের কাছে পরাজিত হয়েছে ১৯৭১... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফুড ফর থট!!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৩৫



একটা বিশাল আলোচনাকে সংক্ষিপ্ত আকার দেয়া খুবই কঠিন, বিশেষ করে আমার জন্যে। তারপরেও বর্তমান পরিস্থিতিতে ভাবলাম কিছু কথা বলা উচিত। দেশের আভ্যন্তরীন বা আঞ্চলিক রাজনীতিতে ক্রমাগত বড় বড় ভূমিকম্প... ...বাকিটুকু পড়ুন

তারেক রহমান আসবে, বাংলাদেশ হাসবে?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৩৮


আমি যখন স্কুলে পড়তাম, দুপুরের শিফটে ক্লাস ছিল। একদিন স্কুলে যাওয়ার আগে দেখি ছোটো মামা সংসদ টিভিতে অধিবেশন দেখছেন। কৌতূহল হলো, মামা এত মনোযোগ দিয়ে কী দেখছেন। আমিও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×