somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি এত জ্ঞানী না, তবু কিছু কথা বলে ফেললাম (তোমরা যারা নতুন চাকুরিজীবী)

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



নতুন যারা চাকুরীতে জয়েন করো তাদের জন্য কিছু কথা। ইদানিং চাকুরীক্ষেত্রে লক্ষ্য করছি নতুন যারা তারা কেবল উচ্চ ডিগ্রি নিয়েছো, আকাশ সম মেধাবী, জ্ঞানে শিক্ষায় সমুদ্দুর যেমন। কিন্তু অনেকেই কিছু স্বাভাবিক শিক্ষা অর্জন করতে পারো নি।

সবে জয়েন করেছো সহকারী পরিচালক অথবা অফিসার পদে। তোমার জন্য নির্ধারিত চেয়ার টেবিল দেয়া হয়েছে। সেই চেয়ারের সম্মান এখন তোমার হাতে। যেটুকু কাজ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেবেন, যথাসাধ্য চেষ্টা করবে ভালোভাবে করার। প্রথমেই কাজগুলো ফেলে রাখার চেষ্টা করবে না। না বুঝলে অন্য কর্মকর্তাদের সাহায্য নিতে পারো। প্রথমেই কাজ কঠিন অথবা বেশী বলে মনোক্ষুণ্ণ হবে না।

তুমি ইচ্ছে করলেই কিন্তু অন্য কর্মকর্তার চেয়ারে বসতে পারবে না অনুমতিছাড়া। আমি লক্ষ্য করেছি ছোটো ছোটো পোলাপান জয়েন করেই নিজেকে বেশী জ্ঞানী মনে করে ফেলো, কিছুতেই অনুমতির অপেক্ষা করো না। আমরাও এসব শিখে আসিনি। কিন্তু বিদ্যালয় হতে শিখেছি, শিক্ষকদের/গুরুদের চেয়ারে কোনোভাবেই বসতে পারবো না। তোমরা অফিসে জয়েন করেই অন্যের চেয়ারে বসে পড়ো এটা ঠিক নয়। আবার তোমার কলিগ, যারা একসাথে জয়েন করেছো, তারাও তোমার চেয়ারে বসতে পারবে না তোমার অনুমতি ছাড়া। এই চেয়ার অফিস হতে প্রাপ্ত নির্দিষ্ট ডিপার্টমেন্টের নির্দিষ্ট কাজের জন্য। কিন্তু তোমরা ভাবো অফিসটাও ইউনিভার্সিটি অথবা তোমাদের ক্যাম্পাস। যে যেমন ইচ্ছে বসে পড়ো অন্যের চেয়ারে। আবার অন্যের কম্পিউটারেও বসতে পারবে না যতক্ষণ না যে কর্মকর্তার কম্পিউটার তিনি অনুমতি দেন।

আর শুন, অফিস আড্ডার জায়গা নয়, এমনকি দলবেঁধে বটের তলে, রেষ্টুরেন্টে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডাবাজি করবে এটা মোটেও উচিত নয়, এটা তোমার চাকুরী/পদবীর প্রতি অন্যায়। আমরাও অফিসে জয়েন করেছি আমাদেরও তোমাদের মত সময় ছিলো, যদিও আমরা পুরোনো এবং যারা ছোট পদে জয়েন করেছি, তোমাদের মত এত মেধা বা বুদ্ধি ছিলো না কিন্তু কিছু নীতিবোধ ছিলো যা অন্যের চেয়ারকে সম্মান করতে জানতাম, অফিসের কাজকে প্রায়োরিটি দিতে জানতাম এবং তাই করে আসছি। এখন দেখি তোমরা জয়েন করেই অফিস ফ্লোরেই হই হুল্লোড় হাসি ঠাট্টায় মত্ত হয়ে যাও।

যেমন ধরো তুমি এখনো স্ট্যাপলার, পিন, কাগজ কলম ইত্যাদি অফিস কর্মের যাবতীয় উপকরণ এখনো পাওনি, কাজ চালাতে তোমাকে অন্য কর্মকর্তা/কর্মচারীর নিকট যেতে হবে, ধার করে কাজ চালাতে হবে, বসে থাকলে চলবে না। আর যে জিনিসগুলো ধার করেছিলে সেগুলো আবার ফেরতও দিতে হবে। কিন্তু তোমরা সেসব উপকরণ নিজের ড্রয়ারেই রেখে দাও।

বর্তমানে তোমাদের মাঝে এসব কোনো গুণই দেখতে পাই না বড্ড কষ্ট লাগে। জয়েন করে এক সপ্তাহ অথবা এক দুই মাস ভালোভাবে কাজ কর্ম করলে, দেখা গেলো পরের সপ্তাহ বা পরের মাস থেকেই তোমরা কাজের প্রতি অবহেলা করতে লাগলে। যদিও তোমার ডিপার্টমেন্টের বস খুব ভালো তোমাকে লাই দিয়ে ফেলেছেন কিন্তু তোমাকে মনে রাখতে হবে অফিস তোমার রুজি রুটি। সে স্থানকে সম্মান দিতে হবে। তোমার বা তোমাদের ব্যক্তিগত কাজ থাকতে পারে, নিজের জীবন বলতেও কিছু আছে সে সবাই বিশ্বাস করে। কিন্তু তোমাকে সেসব কাজে আগেই অনুমতি নিতে হবে। নিজের ইচ্ছেয় অফিসে আসলে, আবার নিজের ইচ্ছেয় অফিস ছুটির আগেই বাসার পথ ধরলে এটা কী অন্যায় নয়? সুযোগ পেলেই যে নিজের চাকুরীটাকে অবহেলা করবে, এ কেমন বিচার?

অফিসের ডেস্ক ছেড়ে বেশীক্ষণ বাইরে থাকা অন্যায়, বিবেককে প্রশ্ন করো একবার দুইবার হাজারবার। কাজ না থাকুক কিন্তু সীটে বসে থাকাও দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। যতটুকু কাজ করবে নিজের মনের মাধুরি মিশিয়ে সুন্দর গুছিয়ে করবে। অবহেলা বা অগুছালো কাজ করতে পারো কিন্তু এ কাজে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মন ভরবে না যদিও কাজ চালিয়ে নেয়া যায়। এক্সটা যোগ্যতা থাকুক তোমরা কী সেটা চাও না। ওয়ার্ডের ফাইলে নোটিংগুলো নিজের মত করো সাজাও, সুন্দর সেটাপের মাধ্যমে। অন্যদের চেয়ে আলাদ হতে চেষ্টা করবে সব সময়।

বড় অঙ্কের বেতন পাচ্ছো, কিন্তু কিপটামি যায় না তোমাদের। মাঝে মাঝে লজ্জায় পড়ে যাই তোমাদের কর্মকান্ড দেখে। পঞ্চাশ টাকার বিলও উপস্থাপন করো । খরচ করতে চাও না অফিসের কলিগদের জন্য, একটু আনন্দ কী পেতে চাও না? ছোটো খাটো আয়োজনে দেখবে সবাই খুশি। অফিসের ছোটখাটো উপকরণ পাঁচ দশটাকায় তোমরাও কিনে নিতে পারো নিজের সুযোগ সুবিধার জন্য। চাকুরীর প্রতি সম্মান না থাকলে এত কষ্টের শ্রমই বৃথা বলে আমি মনে করি। একবার চিন্তা করো এই চাকুরী পাওয়ার জন্য কীই না কষ্ট করেছো।

বাকী কথা অন্য দিন। সব কথা মনে নাই। আপনারাও এড করতে পারেন। বাচ্চারা শিখতে পারবে। যে অন্যায় বা অবহেলা গুলো আমার চোখে পড়ে সেগুলো নিয়েই বললাম।

সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:২৬
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রম্য: টিপ

লিখেছেন গিয়াস উদ্দিন লিটন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৫




ক্লাস থ্রীয়ে পড়ার সময় জীবনের প্রথম ক্লাস টু'এর এক রমনিকে টিপ দিয়েছিলাম। সলজ্জ হেসে সেই রমনি আমার টিপ গ্রহণ করলেও পরে তার সখীগণের প্ররোচনায় টিপ দেওয়ার কথা হেড স্যারকে জানিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বৈশাখে ইলিশ

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৪০



এবার বেশ আশ্চর্য ঘটনা ঘটেছে । বৈশাখ কে সামনে রেখে ইলিশের কথা মনে রাখিনি । একদিক দিয়ে ভাল হয়েছে যে ইলিশকে কিঞ্চিত হলেও ভুলতে পেরেছি । ইলিশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রিয় কাকুর দেশে (ছবি ব্লগ) :#gt

লিখেছেন জুন, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৩



অনেক অনেক দিন পর ব্লগ লিখতে বসলাম। গতকাল আমার প্রিয় কাকুর দেশে এসে পৌছালাম। এখন আছি নিউইয়র্কে। এরপরের গন্তব্য ন্যাশভিল তারপর টরেন্টো তারপর সাস্কাচুয়ান, তারপর ইনশাআল্লাহ ঢাকা। এত লম্বা... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেরত

লিখেছেন রাসেল রুশো, ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:০৬

এবারও তো হবে ইদ তোমাদের ছাড়া
অথচ আমার কানে বাজছে না নসিহত
কীভাবে কোন পথে গেলে নমাজ হবে পরিপাটি
কোন পায়ে বের হলে ফেরেশতা করবে সালাম
আমার নামতার খাতায় লিখে রেখেছি পুরোনো তালিম
দেখে দেখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×