©কাজী ফাতেমা ছবি
#চলো_চা_খাই (জীবনগদ্য)
আজ না হয় ঠান্ডা চা'ই পান করি! দুদুটো ঠোঁটে কাপে চুমুক তোলা চাট্টিখানি কথা নয়! এই অবেলায় মাথায় মাথায় ঠুস খাওয়াটা সমীচীন হবে না মনে হয় অথবা নাকে নাকে ঘর্ষনে শিহরণের ঢেউ সে দূরেই থাক না হয় আজ।
শুনো স্ট্র রেখেছি কাপের পাশে প্লেটে। স্ট্রয়ের কালার নীল এবং গোলাপী। আমি জানি তুমি নীল পছন্দ আর আমারটা গোলাপী সেও তুমি জানো। তো! আর দেরী নয়-চলো পান করি ভালবাসার এক অমৃত পানীয়। কিন্তু তবুও থেকে যায় স্বাদে দ্বিধা, মনে দ্বন্দ্ব তাই না-বুঝো নি?
বুঝিয়ে দিচ্ছি ধরো তুমি চিনি থেকে দূরে থাকতে চাও কারণ যারা নীলের রঙ আবরণে নিজেকে জড়িয়ে রাখে তারা ঝাল পছন্দ বেশী, তাদের মুখটা থাকে ধূমায়িত কফির পেয়ালা। ঝাঁঝা গরম ধোঁয়ায় তারা নিজেদেরকে জড়িয়ে রাখতে ভালোবাসে। আর গোলাপী আহ্ সেতো মিষ্টি রঙ-গোলাপী আভায় অধর রাঙিয়ে নিলে সেতো তুমিই বলো-যেনো মমতার প্রলেপ মেখে আছি, তাই না? গোলাপী রঙ পছন্দধারীরা মিষ্টিই পছন্দ করে, যেমন আমি। ঝাল আমার দুচোখের বিষ ওহ সরি চোখের না জিহ্বার।
হালকা আবেশেই আমি মুগ্ধ হই আর তুমি দুনিয়ার সকল সুন্দর সামনে এনে দিলেও বলো এ আর কি সুন্দর! নাক ছিটকানো স্বভাবটা আর গেলো না বাপু তোমার। চোখে নীল ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন তুমি স্বপ্ন কি শুধু নীল'ই দেখো? নীল ব্যথায় আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ফেলেছো আমায়। কি কারণে এতোটা দূরে। তোমার মনের ভাব বুঝার সাধ্যি হয়তো আমার নেই। অথচ খুব সহজেই তুমি বুঝতে পারতে আমার মনের ভাবাবেগ।
অল্প মুগ্ধতা চোখে ঘোর লাগিয়েই টেনে নিতে পারতে কাছে যতটা তুমি চা্ও। সারাক্ষণ গুমড়ো মুখে ভেসে বেড়াও নিজের রাজত্বে আচ্ছা তোমার রাজত্বের রানী কেগো? তাকে কি আমি চিনি? সেও কি নীল পছন্দ করে। তুমি তারে নীল শাড়িতে দেখতে ভালোবাসো। সেকি ঝাঁঝা রোদ্দুরের দুপুর বেলা হতে পারবে? প্রকট তীক্ষ্ণ তেজ তোমার চোখে ঢেলে দেয়? নাকি প্রেমে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে করে রাখে তোমার কোণঠাসা?
তোমার সাথে আজো আমার কথা হয়ে উঠেনি! ব্যাকরণের ব-ও যে শিখতে পারিনি। আমার উচিত ছিল ভাষা শিক্ষায় গ্রাজোয়েট করা কিংবা ব্যাকরণের উপরে পিএইচডি ডিগ্রি নেয়া হাহাহা তবেই বুঝি তোমার নীল চোখের মণিতে ভাষার আগুনে জ্বালিয়ে দিতে পারতাম তুমি হা করে আমার ভাষাজ্ঞান গিলতে।
তুমি চাও ভাষা আমি চাই ভালোবাসা-সত্যিই সেলোকাস কি বিচিত্র আমাদের প্রেম। যেখানে নিত্য চলে বিতৃষ্ণার বেসাতি। লেনদেন হয় শুধু ঘৃনা। তোমার পাল্লাটাই ভারি....... আর আমি শূন্য। কি করে এতো উৎসাহ পা্ও মনে, একা থাকার মন্ত্রটা না হয় আমাকেও শিখিয়ে দাও। আচ্ছা হাসিগুলো তোমাকে যদি দিয়ে দেই তুমি নেবে? না ফিরিয়ে দিবে? হুম, তোমার মুখে হয়তো হাসি মানাবে না। থাক আমার হাসিগুলো আমার ঠোঁটেই থাক। তুমি নিরস পড়ে থাকো রাণী আর প্রজাহীন তোমার রাজত্বে।
অহহো তা যা বলেছিলাম, প্রসঙ্গ ছিলো তো চা খাওয়া নিয়ে-আর দেখো কতই না বকবক করে যাচ্ছি শুধু তোমাকে ঘাটছি-নো নো এ তো ঠিক নয় বাপু। যার যার স্বাধীনতায় সে বাঁচুক।
শুনো তবে-শ্রীমঙ্গলের একটা চা বানায় তুমি কি জানো-আট/কিংবা দশ লেয়ারে-এক কালার অন্য কালারের সাথে মিক্সড হয় না। ঠিক তেমন করেই আমি চা বানিয়েছি তোমার জন্য দেখো তাকিয়ে একটি বিষন্নতার ঢেউ মাঝে বয়ে গেছে। তোমার জন্য ঝাল চা আর আমার মিষ্টি-চুমুকে চুমুকে তুলো তৃপ্তি ।স্ট্র হাতে নাও প্লিজ। আমি কিছু চাইছি নে বাপু-না ভালোবাসা, না মুগ্ধতা, না তোমার নজর। শুধু স্পর্শ লাগুক তোমার আমার মনের, না তুমি ছুঁয়ো না, ধোঁয়ার হাওয়ায় স্পর্শের অনুভব ছুঁয়ে থাকুক মনে। শুধু এক বেলা একসাথে চা খাওয়ার স্বাধ পূর্ণ হোক।
পেয়ালায় পবিত্রতার চিহ্ন রেখেছি। এটা ছুঁয়ে দেখতে পারো, পেলেও পেতে পারো শুদ্ধতার স্পর্শ আলতো। রেশটুকু থেকে যাক... না হয় হেমন্তের একটি বেলার গোধূলি পর্যন্ত ।
October 28, 2016
২০১৬ সালের লেখা আঠারো সালে কপি হইছে
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০২০ দুপুর ২:১৭