০১।
হন্যে হয়ে খুঁজি তোমায় সুহৃদ, কোথায় আছো ব্যস্ত কী কাজে,
দেখি না তোমায় কতদিন, হৃদয় তারে যে বিষাদ বাজে;
মায়াময়ী তুমি, বিন্দু জলকণা তুমি, তুমি স্নিগ্ধতার ফোঁটা,
কোথায় আছো, কোন সে মোহ পিছে হচ্ছে রোজ ছোটা?
দেখি না তোমায়, বোন বলো বান্ধবী বলো অথবা বন্ধু,
তোমার দেয়া রঙবাহারী ছবিগুলো মনে সুখ জাগায় এক সিন্ধু,
আড়ালে গিয়েছো যে, যাওনি তো বলে, করছো যে কী,
খুঁজি এখানে সেখানে, পাই না তোমায় একি!
(ফেসবুকের অবনির আকাশকে উৎসর্গকৃত ছবিটি)
০২। দাও হাত বাড়িয়ে, তুলে নাও বুক পকেটে রক্ত জবা ফুল,
এত ভাবার কী, ভেবো না একূল ওকূল,
বিচ্ছেদের সুর তুলে, মন করো না আর অশান্ত,
বিতৃষ্ণা ঠেলে এসো, মনে পুষো না ধারণা ভ্রান্ত;
উচ্ছল হও এবেলা, হয়ো না শুকনো মাতার মতন,
কষ্টে ভেঙ্গে বুক হবে চুরমার, বুকে পুষো না বিষাদ যতন।
০৩। মন ভালো হয়ে যায়, মনে অথৈ মুগ্ধতা এসে দেয় হানা,
কখনও মন উড়ে সুখে, মেলে ডানা,
যদি এক শীতের সকাল পেয়ে যাই অনায়াসে পাশে,
যদি এক বিন্দু শিশির কণা ঝুলতে দেখি ঘাসে!
মন সুখে হয় মাতাল যদি ফুলের পাপড়িতে জমে শিশির বিন্দু
একটি কুয়াশা সকালে চোখে মুগ্ধতা এক সিন্ধু,
কচুরিপানা প্রহরগুলো সহসা হয় না আপন,
এমন হিম প্রহর ছুঁয়ে দেহমনে হয় না নেয়া সুখের কাঁপন!
০৪। বেগুনি রঙ দুঃখগুলো ফুটে থাকে মনে, দেখে না কেউ,
দুঃখের ডালপালা মেলে টের পাই আমি, ভিতরে হরদম ভাঙ্গে সুনামীর ঢেউ।
দীর্ঘশ্বাসের লহর উঠে, বুঝে না কেউ, মুখে ফুটে কথার ফুল,
হাসি মুখ অল্প বোল, দেখে না কেউ কোথায় যে কী ভুল।
০৫। তোমরা আমার বদনাম রটিয়ে দাও,
বলো আমি একঘেঁয়েমীর বুকে রাখি মাথা
ফুল লতা পাতা নিয়েই সাজাই কবিতার খাতা,
ফুল পাখিদের ভালোবাসা হতে সরে আসি এই তো চাও!
তোমরা বলো ফুল ফুল আর ফুল, কখনো পাতা লতা
কখনো নাকি কান পেতে শুনি পাখিদের কথা,
যদি তাই নিয়ে থাকি ভালো,
যদি ফুল পাখিরা মন দেয়ালে ছড়ায় মুগ্ধতার আলো,
তবে না হয় তাই নিয়েই থাকি,
আমি একঘেঁয়েমীর বুকে শুয়েই দেব সময়কে ফাঁকি।
০৬। অবহেলা করো তুচ্ছ ভাবো আমায়, কথার ঝড়ে পড়ি মুখ থুবড়ে,
তবুও দেখো তাকিয়ে আমি বিমর্ষ নই, মন আমার ভেজা কৃষ্ণচূড়া
মন আমার তরতাজা, ভাঙ্গি তবু মচকাই না।
০৭। =বৃষ্টি=
নিরিবিলি পাতা ছুঁয়ে, যায় ঝরে যায় বৃষ্টি,
তপ্ত গরম ভাগলো দূরে , আহ্ আরামের সৃষ্টি!
বৃষ্টির ছাটে গেলো ভিজে, আমার দখিন দাওয়া
পাতার হলো উদোম গায়ে , বৃষ্টির জলে নাওয়া।
বৃক্ষ তরু ভিজে এলো, সজীবতা ফিরে,
শান্তির ছোঁয়া দেহ প্রাণে, বৃষ্টির হাওয়া নীড়ে।
চোখের পাতায় আরাম ছোঁয়া, ঘুমের আবেগ জাগে,
কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমাই, ইচ্ছে মনে লাগে।
০৮। তুমি না হয় স্বচ্ছ জলের ঝিল হয়ো, টলমলে জল ঢেউ,
তোমার বুকে শাপলা হবো চুপ, জানবে নাতো কেউ,
প্রেম পাপড়ির ডানা মেলে ফুটো বুকে তোমার,
ভালোবেসো আমায় বেশুমার!
গাঢ় গোলাপী রঙ শাড়ী গায়ে জড়ানো, চুলে বুনোফুল,
আমি প্রেমের নাওয়ে ভাসবো, একূল অকূল,
তুমি সেজো শ্যাওলা রঙা জল ঢেউয়ের বসনে, আঁকাবাঁকা
ভালোবাসার ডুব সাঁতারে সঙ্গী হবো, সময় প্রেমে মাখা!
০৯। শুধু অবহেলাই তুলে দিতে পারো বুকের বামে,
তিতে কথার ফুলঝুরি নিয়েই যেন থাকো ডানে বামে,
শুধু কথার তীরই মারতে পারো ছুঁড়ে বুক বরাবর,
বিঁধাতে পারো মন দেয়ালে বিতৃষ্ণার কাঁটা
আমাদের মিলন বরাবরই অনাড়ম্বর;
এই... কিছু সজীবতা তুলে দিতে পারতে, দাও নি!
মন আমার সতেজ থাকুক, সে বুঝি কখনো চাও নি?
শুনো... কিছু প্রহর চিরসবুজ করে রাখতে পারতে, পারো নি!
জিতেই তো গেলে অনন্তকাল ধরে, একবারও যে হারো নি!
আমিই জিতিয়ে দেই তোমায় বার বার হাজার বার,
আর তুমি কিনা জীবন করে রাখো বিষাদ জেরবার।
১০। গোলাপী রঙ মন আমার মুগ্ধতায় ভরপুর
আর তোমার মন হয়ে থাকে সর্বদাই দুপুর;
একদিন বৃষ্টি ভেজা স্নিগ্ধতায় সাজাতে পারো মুখ,
দেখবে কত সুখ এসে দাঁড়ায় তোমার সম্মুখ।
১১। স্বচ্ছ জলে বাইতে ডিঙি মাঝি হবে? হাতে নেবে বৈঠা,
তোমার জন্য ফুলে সাজিয়েছি কাঠের পৈঠা;
এসো মুখ দেখি জলের আয়নায়, আঁকাবাকা সুখ ছবি,
চোখ নিয়ো না ফিরিয়ে প্লিজ, জ্বলে উঠলেও দুপুর রবি।
পা রাখো আলতো জলে, শিহরণ উঠুক মনে অল্প,
এমন স্বচ্ছ জলঘাটে বসে করবে আমার সাথে গল্প?
১২। বিজয় দেখে যাই পূর্বাশার আলোয় সোঁদা মাটির গন্ধে
বিজয় নাচে ইতিহাসের পাতায় পাতায় ছন্দে ছন্দে
বিজয় দেখে যাই শহরে অট্টালিকায়, পার্কে অথবা রাজপথে
লাউয়ের মাঁচায়, ঝিঙ্গে গাছের হলুদ ফুলের আলোতে।
বিজয়ের পতাকা দেখি রক্ত রঙ ফুল আর সবুজ পাতায়
বিজয়ের হাসি লিখে রাখি কবিতার খাতায়।
১৩। শীতের হাওয়া নিয়ে হঠাৎ, যাচ্ছে ঝরে বৃষ্টি,
ভিজছে পাতা ভিজছে মাটি, কী আনন্দের সৃষ্টি!
ঝরে ঝরে থামলো বৃষ্টি, জলে ভেজা পাতা,
হয় না খোলা আলগোছে আর ছন্দ কাব্যের খাতা!
বারান্দাটা ভিজে গেলো, এসে বৃষ্টির ছাটে,
বৃষ্টির জলও গেলো জমলো, সবুজ ঘাসের মাঠে।
ডালে বসে জলে ভেজা , কাকরা করে কা কা,
হঠাৎ বৃষ্টি থেমে গেলে,ভেতর লাগে ফাঁকা!
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৩:১৫