#মেঘের_কাছে_রোদ্দুরের_চিঠি_৬
#আমায়_নিয়ে_হারাবে?
আশা ও বিশ্বাস ভালো আছো, পৃথিবীর সবাই ভালো থাকুক সুন্দর থাকুক এই কামনাই করছি। এই দিনগুলো কেমন জানি ঘুম ঘুম দিন তাই না মেঘ? আমার মনে হয় অতিরিক্ত পরিশ্রমের জন্য হয়তো আমার এমন ঘুম পায় শুধু। ঘুম নিয়া আছি ভেজালে কিছু লিখতে গেলেই ঘুম পায়। তোমাকে চিঠি লিখতেছি এত্তগুলা ঘুম পাচ্ছে। কি যে করি বল! এক কাজ করি সবুজ চা খাই চিনি ছাড়া। কি তুমি খাবে নাকি? খেলে চলে এসো.......অফিস পাড়ায়।
মেঘ , ঢাকায় এই কয়েকটা দিন শান্তি মতে চলা যাবে। ফাঁকা ঢাকা। ভাল লাগায় ভরপুর। তুমি দেখতে আসবে ফাঁকা ঢাকা? খুব মজা করে রিকশা করে ঘুরতে পারবে। আমারো খুব ইচ্ছে একদিন ফাঁকা ঢাকা রিক্সা করে ঘুরে বেড়াবো । কিন্তু একা একা বড্ড ভয় লাগে। আমি রাস্তাঘাট তেমন একটা চিনি না। একই রাস্তায় প্রতিদিন যাই অথচ সেই রাস্তাও ভুলে যাই কি এক ফাঁপড়ে পড়ে যাই বলো। এমন করলে কেমনে হবে। ১৫ বছর ঢাকা থাকি অথচ ঢাকা তিন চারটা মার্কেট চিনি খালি। যেমন ধরো, রাজধানী মার্কেট, মৌচাক মার্কেট আর গাউছিয়া চাঁদনি চক। তাও মার্কেটগুলোতে যাই রিক্সাওয়ালার পরিচয়ে বেচারারা আমাকে চিনায়ে নিয়া যায় হাহাহাহা।
ঢাকা শহর আজব জায়গা
চিনি নাকো কিছু
হরহামেশা বিপদ আপদ
ছুটে যেনো পিছু।
ঢাকার রাস্তায় হাজার মানুষ
ব্যস্ত নিজের কাজে
সবাই যেনো ঘোরে থাকে
আপন চিত্ত মাঝে।
কেউ কারো হয় নাকো আপন
সবাই যে সবার পর
চলতে ফিরতে তবু বুঝি
অন্তরে লাগে ডর ।
অফিসে আসার পথে দেখি রাস্তাঘাট ফাঁকা খুব ভালো লাগছিল জানো মেঘ, এত রোদ্দুর,,,,,, সূর্য যেনো ঝাঁঝাল তেজ ঢেলে দিচ্ছে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে। তবুও এতটা মুগ্ধ হয়েছি যে যেমন ছিল রাস্তাঘাট ফাঁকা বড় বড় পিচ ঢালা পথগুলো ধূঁধুঁ মরুভূমির মতন তেমনি আকাশটাও ছিল অনেক নীল।
আজ যেনো নীল হলুদের মাখামাখি ভালোবাসা। আমিও আকাশের নীল থেকে কিছু নীল ধার করে এনে নীল রঙে সেজেছিলাম। তারপর নীল রোদ চশমায় চোখ ঢেকে হেঁটেছিলাম অনেকটা পথ। একা একা হেঁটেছি তবুও ভালো লাগার শেষ নেই। তবে তুমি যদি থাকতে ... আরো অনেকটা পথ তোমাকে নিয়ে হাঁটতাম হয়তো। তুমি তো অদৃশ্য অস্পৃশ্য। তোমার ঠিকানা আমার জানা নেই , না তুমি জানো আমার ঠিকানা। কেউ কাউকে চিনি না অথচ তুমি আছো আমার মনের মাঝার।
ও মেঘ বলো কেগো তুমি
অন্তর মাঝে থাকো
নিত্য এসে রঙতুলিতে
সুখের ছবি আঁকো।
আকাশ না বাতাস কি তুমি
নাকি অথৈ নদী
বুকের মাঝে তৃষ্ণা জাগাও
ঢেউয়ে নিরবধি!
ঘুড়ি তুমি পাখি তুমি
উড়ো মনের আকাশ
হৃদয়ের ঐ মণিকোঠায়
নিত্য যে তোমার বাস!
তুমি ঝর্ণা তুমি পাহাড়
বয়ে চলো মনে
কলকলিয়ে সুর উঠিয়ে
ভরাও শিহরণে!
তুমি চন্দ্র তুমি সূর্য
ভালবাসার উত্তাপ
দূরে থেকে বাড়িয়ো না
মনে কষ্ট সন্তাপ।
শুনো, অজানা পাখি, তোমাকে বন্দি করে ফেলেছি বুক পিঞ্জরে, পালাবে কোথায়! একটা গান শুনাবে, না একটা কবিতা শুনাও, না না একটা ছড়া কাটো তো ছন্দে ছন্দে ভরিয়ে দাও সময়।
তুমি আমি সবাই এত ব্যস্ত থাকি কেনো বলোতো। সবাই কেমন জানি দূরে দূরে। কাছের মানুষগুলো আরো দূরে। ইচ্ছে করলেই ছোঁয়া যায় না। কথা বলা যায় না, কি নির্মম পরিহাস জীবনের তাই না মেঘ? আজ ছুটির দিন আলসেমির ঘুম ভাঙ্গে না তবুও। আড়মোড়া দিয়ে ঘুম ভাঙ্গাতেই হয় বাধ্যতামূলক।
পেট যদি না থাকতো অনেক ভালো হত। খালি খাওন আর খাওন... বিরাট আয়োজনে পেটের জন্য খাবার রেডি করতে হয়। নেয়ে ঘেমে পুড়ে কেটে। রান্না বান্না শেষ করতে যদি লাগে ৫ ঘন্টা তবে খাইতে পাঁচ মিনিটও লাগে না । আর বাকিটা তো জানোই। জীবনটাই একটা রুটিনের মাঝে বাঁধা পড়ে যায় তাই না। মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় ছন্নছাড়া হয়ে যাই কিন্তু তা আর হওয়া যায় না। পিছনে বাঁধা আছে এক অলিক সূতা। আচ্ছা তোমার কি এমন ইচ্ছে করে মেঘ।
ছন্নছাড়া হতে আমার
ইচ্ছে মনে লাগে
ধ্যত্তেরি ছাই ভাল্লাগে না
মাথা ভাঙ্গি রাগে।
আগে পিছে ডানে বায়ে
সূতায় আছি বান্ধা
চোখ ঘুরিয়ে দেখলে একি
লাগে বড় ধান্ধা!
মনের মাঝে অনেক কষ্ট
কাঁদার জায়গা নাই গো
হীরা ভেবে ভালবাসা
হাতে নিলেই ছাই গো!
ইচ্ছে লাগে মনের মাঝে
হারিয়ে যাই কোথাও
কেউ পাবে না হদিস আমার
শূন্যে হবো উধাও।
চোখের কোণে জলের ধারা
শুকনো চৈত্র নদী
শ্রাবণ হয়ে ঝরতে চোখে
আসতো কেহ যদি!
একলা আমি একলা থাকি
মনের মাঝার শূন্য
পানসে জীবন কাটবে এমন
সুখ খুঁজে হই হন্য।
আচ্ছা আজ তবে আসি। তুমি সুস্থ থাকো, আর নিরাপদে থাকো এই কামনাই করছি। আসি-শেষপ্রান্তে রোদ্দুর।
পুনশ্চঃ উত্তর দিয়ো!
(১৬-৯-১৬)
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১০:১১