somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তর্ক : নীতিগত বিশ্লেষন

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ২:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তখন সবে ইউনিভারসিটি তে ভর্তি হয়েছি । ইউনিভারসিটিতে ভর্তি হওয়ার পর বহুমুখি চাপে অবস্থা খারাপ। ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পর কোন সংঘটনেই বাদ দিই নাই। ফটোগ্রাফি থেকে শুরু করে ট্যুর ক্লাব, নাটক,ফিল্ম,গান,রক্তদান সংঘটন ও বাদ রাখিনি। যে ছাত্রলীগকে দুচোখে দেখতে পারিনা হলে সিট পাবার জন্য তাদের সাথেও দহরম-মহরম সম্পর্ক গড়ে উঠল।পড়ালেখার সাথে এই সব চাপ ও গড়ে উঠল। ফলাফল স্বরূপ কোনদিন রাত ৮ টার আগে রুমে ফেরা হয় না। এম্নিতেই আমি এত ব্যস্ত মানুষ তার উপর বেরসিক স্যার রা এসাইন্মেন্ট দিলে কেমন লাগে !! শুক্রবার সকাল-সকাল লাইব্রেরি তে গেলাম এসাইন্মেন্ট করার জন্য। যেয়ে দেখি রায়হান একান্ত মনে কি একটা বই পরছে।কাছে যেয়ে দেখলাম হুমায়ুন আজাদের এর একটা বই নাম ‘নারী’। ব্যাটা আঁতেল!! পড়ার বই পড়ার টাইম পাইনা আর ও আউটবই পড়ে।যাই হোক, কাছে যেয়ে বললাম,
- কিরে দোস্ত, এসাইন্মেনট কমপ্লিট ?
- না, এখনও করি নাই।
- করবি না ?
- হুম, করব।
আজিব ছেলে।আমি ওর মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝি না।কিছুদিন আগেও শিবির এর সাথে যুক্ত ছিল।শুরুর দিকে সেই একটিভ।নিজে তো ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে অই সময় সাথে যাদেরকে পাই তাদের ও জোর করে নামাজ পড়তে নিয়ে জাই।তাই আমি নামাজের টাইমে সাধারনত ওর কাছে ঘেঁষতাম না।তবে ইদানিং ও অনেক চেঞ্জড। আগের মত ডিস্টার্ব করে না।ফেসবুকে দেখি মাঝে মাঝে নাস্তিক্যবাদী কমেন্টস দে।তার যন্ত্রণা থেকে বাঁচলেও তার নামাজ ছেড়ে দেয়ার কথা শুনে অনেক মর্মাহত ছিলাম।একটু পর জুমার আযান দিল।আমি রায়হানকে জিজ্ঞাসা করলাম,‘নামাজ পড়বি না ?’
-না,তুই যাবি না ?
- আমি আগের সপ্তাহে নামাজ পরেছি তাই এ সপ্তাহে যাব না।তাছারা পড়া ও আছে।পরপর ৩ সপ্তাহ মিস হয়ে গেলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। আর মুসলিম ক্যাটাগরিতে থাকতে পারব না
রায়হান হেসে বল্ল,এত কষ্ট করে নামাজ পড়ার কি দরকার? ৩ শুক্রবার পর ‘লা ইলাহা’ পড়ে ফেললেই তো হয়ে যাই।
ওর কথা শুনে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল । বেশি জ্ঞান অর্জন করতে গিয়ে নিজের কত বড় ক্ষতিটাই না করে ফেলল । শেষ পর্যন্ত নাস্তিক হয়ে গেল ? মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম , আজকে যদি ওর ভুল ধারনা টা না ভাঙ্গি তবে আমার নামেই চেঞ্জ করে ফেলব ।
তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, তুই যে এভাবে চেঞ্জ হয়ে গেলি এতে কারো প্রভাব আসে?
রায়হান বলল, হ্যাঁ আবার নাও
-মানে ?
-আসলে,আমি ছোটকাল থেকেই এসব নিয়ে চিন্তাভাবনা করতাম।
-তাই নাকি? তো তোর চিন্তা ভাবনা টা শুনি
-চিন্তা ভাবনা তো অনেক বিশাল ব্যাপার। হঠাট করে কত্থেকে শুরু করব?তুই জেতা জানতে চাস বল,আমি উত্তর দি
আমি প্রশ্ন করলাম, তোর মাথায় এসব উলতাপালতা চিন্তাভাবনা কেম্নে আসল?
- আসলে ক্লাস-সিক্স, সেভেনে থাকার সময় আমার মাথায় প্রথম এ চিন্তা টা আসছে, যদি আমাদের কে আল্লাহ বানায়,তাহলে আল্লাহ কে কে বানাইসে?
- শুন,স্রিষ্টিজগত অনেক বিশাল ও বিচিত্র। আমরা এর ০.১ ভাগ ও জানি না।এত ক্ষুদ্র জ্ঞান নিয়ে ঈশ্বরকে খুজতে যাওয়া বোকামি ছাড়া আর কিছুই না।এতদিন মানুষের ধারনা ছিল শুন্য থেকে কিছু সৃষ্টি হতে পারে না কিন্তু quantum physics প্রমান করছে শুন্য থেকেও কিছু সৃষ্টি হতে পারে।৫০০ বছর আগের ধারনার সাথে এখন কার মানুষের ধারনা অনেক চেঞ্জ, আর ৫০০ বছর পর দেখা যেতে পারে বিজ্ঞান এতদিন যা সঠিক ভাবসিল তা ভুল ! একটা পিঁপড়ার পক্ষে তার জ্ঞান দিয়ে যেমন এটম বম্ব এর ধ্বংস ক্ষমতা বুঝা সম্ভব না , তেমনই আমাদের জ্ঞান দিয়ে ঈশ্বর এর অস্তিত্ব প্রমান করা সম্ভব না।
- ঈশ্বর এর অস্তিত্ব নাই তাতো প্রমানের বিষয় না, ঈশ্বর এর অস্তিত্ব আছে কিনা তাই তো প্রমান এর বিষয় । আমরা একটা জিনিস দেখিনা,ধরতে পারি না,গন্ধ পাই না,কোন অনুভবেই ক্রতে পারি না, তাহলে তা আমরা বিস্বাস করব কেন?-সে অসহিষ্ণু ভাবে বলল
আমি পাল্টা যুক্তি দেখালাম,আমরা তো বাতাস ও দেখি না,তার মানে কি বাতাস নেই ?
রায়হান বল্ল,আমরা বাতাস না দেখলেও অনুভব করতে পারি তাই বিশ্বাস করি।একটা লোক এসে তোকে বলল আল্লাহ আছে, তুই তার কথা কোন প্রমান ছাড়া বিশ্বাস করবি কেন? আমি যদি বলি,আমি আকাশে উরতে পারি তাহলে তুই প্রমান ছাড়া তা বিশ্বাস করবি?
-তুই প্রুফ চাস ? জানিস,আধুনিক বিজ্ঞান কুরানের কত বাণী প্রমান করেছে। কিসুদিন আগে কোন একটা প্রতিষ্ঠান পৃথিবীর বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ নিয়ে জরিপ করেছে,তারা দেখেছে,একমাত্র কুরান ছাড়া পৃথিবীর সকল ধরমগ্রন্থ বিকৃত হয়েছে।
-কারেকশন প্লিস,হিন্দু ধর্মগ্রন্থ বেদ ও বিকৃত হই নাই
আমি শুনে একটু অবাক হলাম,তুই কি শিওর?
রায়হান ও দেখলাম এ ব্যাপারে শিওর না,তাই আর জানা হল না।

আমি বললাম, ধুর হিন্দু ধর্ম একটা ধর্ম হোল নাকি? ওদেরকে যদি জিগাস, তোরা কয়টা ভগবানে বিশ্বাস করিস,কেও বলবে একটা ,কেও তিনটা আবার কেও বা লক্ষ-লক্ষ দেব-দেবিতে বিশ্বাস করে ।
-তোমরা মুসলিম রাও তো অসংখ্য ভাগে বিভক্ত,কেও সুন্নি,কেও বা শিয়া।অনেকে হানাফি মাযহাব ফলো করে ,অনেকে শাফেয়ি। আর একদল আরেক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তাদের নামায হচ্ছে না,তারা দোজখি হবে।হাহা...
-আমার মতে সবগুলা মাযহাব এই সঠিক। প্রত্যেকের উচিত সবগুলা মাযহাব পড়ার পর জার জেতা সঠিক মনে হওই সেটা মানা।এততুকুই জথেস্থ।
-হাহা... তাই নাকি?? –রায়হান এর কণ্ঠে উপহাস এর সুর
-হুম...আল্লাহ অনেক দয়ালু।তুই জানিস,আল্লাহ সমস্ত দয়া-মায়া কে আল্লাহ ১০০ ভাগ করে নিজের কাছে ৯৯ ভাগ রেখে বাকি ১ ভাগ সমস্ত সৃষ্টি জগতে বন্টন করে দিয়েছেন।
রায়হান হাসতে হাসতে বলল,আল্লাহ যদি এতই দয়ালু হত তাহলে আল্লাহ নিজের কাছে ১ ভাগ রেখে বাকি ৯৯ ভাগ সবার মধ্যে ভাগ করে দিত।

তার কথা শুনে রাগ উঠল।বল্লাম,এসব নিয়ে হাসিঠাট্টা করা উচিত না পরে পস্তাতে হবে । তুই চিন্তা করতে পারতেছিস না,তুই কত ভাগ্যবান যে আল্লাহ তোকে মুসলমান ঘরে জন্ম দিয়েছে আর তুই .....

রায়হান বলল,আমিতো এ কারনে আল্লার কাছে সন্থুস্ত হওয়ার কিছু দেখি না,বরং অনেকের রাগ হওয়ার কথা কারন একজন মানুষ শুধুমাত্র মুসলিম বলেই সে জত পাপ করুক না কেন সে জান্নাতে যাবে আর শুধুমাত্র একজন মানুষ হিন্দু, খ্রিষ্টান বা অন্য কোন ধর্মের পরিবার এ জন্মগ্রহন করার কারনে সে যতই ভাল হোক না কেন সে দোজখে যাবে এতা কোন রুলস হল?
-তোকে কে বলছে মুসলিমরা দোজখে যাবে না?
-না, দোজখে তো জল্বে ,কিন্ত সীমিত সময়ের জন্য তারপর সবাই বেহেস্তে জাবে,কিন্তু অন্য ধর্মবলাম্বীরা চিরকালেই দোজখে জ্বলবে। যতসব ফাউল নিয়ম !!

আমি বল্লাম,ঠিকেই তো আছে।আচ্ছা , তুই বল,তুই যদি তোর বাপ কে বাপ বলেই স্বীকার না করিস,তর বাপ কি তোকে ঘরে রাখবে
-এই দুইটা কথা এক হোল নাকি?
-এক হবে না কেন?,আমি পাল্টা প্রশ্ন করলাম
-আমরা আমাদের বাবা কে কোন কারন ছাড়া অবিশ্বাস করব কেন ? যদিও আমরা সরাসরি জানতে পারি না, কে আমাদের পিতা,কিন্তু সমাজ আমাদের বলে ,দেখাই দেই।তাছারা আমাদের সমাজ এ প্রতিদিন কত মানুষই তো বাবা,মা হচ্ছে ।একটি সন্তান এর পিতৃত্ব বা মাতৃত্ব স্বীকার করে আক্ষরিক অর্থে তার কোন লাভ হচ্ছে না।এ প্রকৃতির সব প্রানিই তাদের নিজ নিজ সন্তান কে ভালবাসে এর কারন থেকে তারা তা করছে, যদিও এর কিছু ব্যাতিক্রম আছে।আবার অনেক বন্ধ্যা দম্পতি সন্তান কে দত্তক নে,কিন্তু সন্তান রা তাদেরকে নিজের বাবা-মা ভেবে না এটা আরেকটা ব্যাপার। কিন্তু আল্লাহ আমাদের অভিভাবকত্ব দাবি করলেও প্রকৃতিতে এমন কোন চিহ্ন দেখি না, যা দেখে আমি বুঝব আল্লায় আমাদের অভিভাবক।

-তোকে কিছু বলব ভাবছিলাম কিন্ত বলে লাভ নাই, তোকে এখন জত যুক্তিই
দেখাই না কেন তুই বুঝবি না,আল্লাহ পবিত্র কুরানে তোদের মত লোকের কথা বলেছেন। তোদের অন্তরে আল্লাহ সিলমোহর মেরে দিয়েছেন।ভাল কথা বললেও টা তোদের কান দিয়ে যাবে না।

রায়হান স্মিত হেসে বল্ল,বন্ধু,তাহলে তো এটা আমার দোষ না ,আল্লার দোষ কারণ আল্লায় আমাদের অন্তর এর দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন । তারপর আবার বলল,আচ্ছা তুই কি ‘বিষাদসিন্ধু’ বইটা পরেছিস ?
আমি না বললাম।
-ও ,আমি এখন তোকে সংক্ষেপে এর কাহিনী বলি,রাসুল(স) একদা মন খারাপ করে বসে ছিলেন, তা দেখে অন্য সাহাবীরা বল্ল,হুজুর,আপ্নার মন খারাপ কেন?
তিনি উত্তর দিলেন, তোমাদের মধ্যে এক জনের ছেলে আমার দুই নাতি হাসান- হোসেন কে হত্যা করবে ?

সাহাবীরা তাকে আবার জিজ্ঞাসা করল কে সে ব্যক্তি? কিসুক্ষন পিড়াপিড়ির পর তিনি উত্তর মুয়াবিয়া(র) এর নাম নিলেন।তা শুনে মুয়াবিয়া(র) বিয়া না করার সিদ্ধান্ত নিল।রাসুল(স)তাকে বুঝালেন এটা আল্লার ইচ্ছা আর প্রক্রিত মুসলিম হিসেবে তার উচিত আল্লার ইচ্ছা বাস্তবায়নে সহায়তা করা কিন্ত তিনি তার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। কিছুদিন পর মুয়াবিয়া (র)এর কঠিন রাগ হল এবং তার একমাত্র চিকিৎসা স্ত্রী সহবাস।আত্মহত্যা মহাপাপ বলে তিনি বাধ্য হয়ে ৮০ বছরের এক বুড়ি কে বিয়ে করে ।পরবর্তিতে তাদের সন্তান এয়াজিদ হাসান,হোসেন কে হত্যা করল ।
- তো
- এখন বল , এখানে এয়াজিদ এর কি দোষ ? আল্লার ইচ্ছাই ছিল by hook or crook এয়াজিদের হাতেই তারা মারা যাবে ।
আমি বললাম , এই প্রশ্নের একটা সুন্দর উত্তর ডাঃ জাকির নায়েকের পাইছিলাম । তাকে একজন প্রশ্ন করেছিল , সব কিছুই তো আল্লার ইচ্ছাতে ঘটে তাহলে আমাদের অপরাধ টা কী । উত্তরে তিনি বলেন , একজন শিক্ষকের কাছে কিছু ছাত্র পড়ত ।তিনি তার একটি ছাত্রকে দেখে ভবিষ্যতবাণী করেন , এই ছেলেটা ফার্স্ট হবে , ওই ছেলেটা সেকেন্ড এবং আরেকটা ফাকিবাজ ছাত্রকে দেখিয়ে বলল ছেলেটা এবার ও ফেইল করবে । ফলাফলের দিন দেখা গেল শিক্ষকের ভবিষ্যতবাণী সত্যি সত্যি ফলে গেল । কিন্তু তার মানে এ নয় যে , যে ছেলেটা প্রথম হইছে তার কোন ক্রেডিট নাই বা যে ফেইল করছে তার কোন ব্যর্থতা নাই ।অনেক বছর পড়াতে পড়াতে কে কি করতে পারে শিক্ষক এই ক্ষমতা অর্জন করেছে । আল্লাহ একই সাথে আমাদের ভুত-ভবিষ্যত জানে ।
যেমন ধর , একটি দিমাত্রিক বস্তুর পক্ষে তার মাত্রায় থেকে তার পুরা দুনিয়া বুঝা সম্ভব না । তুই কার্টুনের কমিক্স পরছিস কখন ?

রায়হান বলল , হুম ,পড়ছি
- ধর , একটা কার্টুন বইয়ে একটা ছবি আছে যে , একটা বিড়াল শুয়ে আছে , আর একটা ইদুর তার পাশে হেটে যাচ্ছে । দিতীয় ছবিতে বিড়ালটি ইদুরকে ধাওয়া করছে এবং ত্রিতীয় ছবিতে বিড়াল ইদুরকে ধরে ফেলছে । তুই একসাথে তিনটা ছবিই দেখতে পারতেছিস । পড়ার আগেই , শেষে কি হবে বুঝতে পারতেছিস । তেমনি আল্লাহ হইত ইনফিনিটি মাত্রার । আমরা কি করি বা করব তা তার পক্ষে বুঝা কোন ব্যাপারেই না ।
রায়হান বলল , সরি দোস্ত তোর হাইপোথিসিস এর সাথে একমত হতে পারছি না ।
- কেন ?
- একজন ছেলে কেমন হবে তা তার পরিবেশের উপর নির্ভর করে । যেসব ছেলে বস্তিতে থাকে ; মদ , গাজা ,নেশার আখড়া থেকে বড় হয়ে উঠে তারা পরবর্তিতে সন্ত্রাসী হচ্ছে । আবার যারা একেবারে ভদ্র ফ্যামিলি থেকে উঠে আসছে , জীবনে চুরি-চামারি , ফন্দি-ফিকির এসবের সাথে অপরিচিত তারা এগুলা পরেও করতে পারে না ।

আমি বললাম , কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় , একই পরিবারের একজন ছেলে ডাক্তার আরেকজন ডাকাইত । একজন প্রচন্ড পরিশ্রমী আরেকজন জন্মের আলসে ।
রায়হান , এখানে জেনেটিক্সের অনেক ব্যাপার-স্যাপার আছে । এইচ.এস.সি তে মেন্ডেলের সুত্রগুলা পড়িস নাই ? একই প্যারেন্টস থেকে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যপুর্ন সন্তান হতে পারে । আসলে , একজন মানুষ হল একেবারে ভ্রুণ অবস্থা থেকে শুরু করে পরবর্তিতে তার উপর ক্রিয়াশীল বিভিন্ন ঘটনার রেসাল্ট বা আউটপুট । কোন একটা জায়গায় পড়ছিলাম , বড় বড় সন্ত্রাসীদের কি একটা ক্রোমসাম থাকে যা অন্যদের থাকে না

- তার মানে আমি কোন অপরাধ করলে এটা আমার দোষ না , আমি বলব আমার জেনেটিক্যাল প্রব্লেম ছিল , হাহ …
- জেনেট্যাকেলি তুমি কিছু বৈশিষ্ট্য পাবা কিন্তু অপরাধ প্রবণতা মেইনলি পরিবেশ থেকে । তোমাকে ভাল পরিবেশে থাকার চেষ্টা করতে হবে ।
- কিন্তু তোর যুক্তি অনুসারে ভাল হয়ে থেকে কি লাভ ? ঈশ্বর-আল্লাহ কিছুই তো নেই । এ জন্যই ধর্ম দরকার , বুঝেছিস ? ধর্ম না থাকলে এতদিনে প্রিথিবী ধ্বংস হয়ে যেত । আর ইসলাম হল সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম । আজকে যদি আমাদের দেশে ইসলাম এর আইন প্রতিষ্ঠিত থাকত তাহলে এত হিংসা-বিদ্বেষ থাকত না ।
- আফ্রিকার কয়েকটা দেশে ইসলাম এর আইন প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল আর পরবর্তিতে ওই দেশগুলার অবস্থা আর খারাপ হইছে । তবে এটা ঠিক অতীতে ধর্ম সমাজে রীতি-নীতি রক্ষার্থে কিছুটা ভুমিকা রেখেছে কিন্তু বর্তমানে ধর্মের প্রয়জনীয়তা তেমন নাই ।
কারাগারে যেয়ে দেখ , যতসব চোর-ডাকাত, ক্রিমিনাল আছে তারা প্রায় সবাই স্রিষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করে এবং এটাও মনে করে তাদের ক্রিতকর্মের শাস্তি পেতে হবে তারপরেও তারা ক্রাইম করে ।
যেমন অনেকে বাসে উঠি এক জাইগা থেকে কিন্তু ভাড়া কম দেয়ার জন্য আরেক জাইগার নাম বলে । ১০টা বাজে অফিসে এসে সাইন করি ৮.৫৫ । কিন্তু ইংল্যান্ডে তুই এরকম করতে পারবি না । যে জাইগার টিকেট কাতছিস সেখানে যেয়ে কার্ড ঢুকালে দরজা খুলবে । অফিসে কয়টার সময় গেছিস তা অটমেটিক্যালি কম্পিউটারে উঠে যায় ।

আমি বললাম , ঠিকাছে , কিন্তু নাস্তিকদের তুলনায় আস্তিকরা নিয়ম-কানুন তো একটু বেশি মানে ।আর আস্তিকদের তুলনায় নাস্তিকরা তাড়াতাড়ি ভেঙ্গে পড়ে , কারণ আস্তিকদের শেষ পর্যন্ত একটা লাস্ট ভরসা থাকে যা নাস্তিকদের থাকে না । বিজ্ঞানের পাশাপাশি ধর্ম থাকলে আরো ভাল না ।

রায়হান বলল, যারা ভাল তারা এম্নিতেই ভাল । পুন্য সঞ্ছয় হবে এ ভেবে তারা ভাল কাজ করে না ।আর যেটা বললি ,আস্তিকদের শেষ ভরসা থাকে , সে কারণে তারা ব্যর্থ হয় বেশি । তারা অল্পতেই হাল ছেড়ে দিয়ে স্রিষ্টিকর্তার আশায় বসে থাকে কিন্তু নাস্তিকরা জানে নিজের কাজ নিজেকেই করতে হবে , গায়েবী ভাবে কোন কাজ হবে না । তবে সব মানুষকে এক প্রকার নাস্তিক বলা যায় , যেমন একজন ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীর সাথে অকারণে ঝামেলা করি না কিন্তু এক ওয়াক্ত নামায না পড়লে লক্ষ-লক্ষ বছর দোযখী আগুনে জ্বলতে হবে জেনেও আমরা নির্বিকারভাবে নামায ছেড়ে দিই ।
- তুই কি বলতে চাস , ধর্মের কোন ভাল গুনেই নাই ?
- ধর্মের কিছু ভাল দিক আছে , তবে এটার খারাপ দিক আরো বেশি । ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার কারণে দাঙ্গায় প্রতিদিন প্রিথিবীতে মানুস মারা যাচ্ছে , কোটি কোটি টাকার সম্পদ-হানি হচ্ছে । আর ধর্মীয় আচার যেমন হজ্জ্ব , কোরবানি , তীর্থযাত্রা পালন , মাদ্রাসা ,মসজিদ-মন্দির প্রতিষ্ঠা ,ইমামদের বেতন এসবে কত টাকা নষ্ট হচ্ছে আর মানুষ মারা যাচ্ছে তা বাদেই দিলাম ।
আমি হাল ছেড়ে দিয়ে বললাম , আমার এত কিছু জানার দরকার নাই, আমি শুধু এতটুকু জানি ইসলাম ধর্মই সত্য ধর্ম । আধুনিক বিজ্ঞান ও তাই বলে । ডাঃ জাকির নায়েকের লেকচারগুলা দেখিস । তিনি কখুব সুন্দর করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রমাণ করেন যে ইসলামেই সত্য ধর্ম ।
রায়হান এবার বিরক্ত হয়ে গেল , বলল , ওই জোকার নায়েকের নাম আমার সামনে নিবি না তো । শালা পুরাই একটা ভন্ড । শব্দের অর্থ ইচ্ছামত পরিবর্তন করে যা খুশী তাই বলে ।
- তাই নাকি ? তিনি এমন কি করছেন ?
- ওনার সব ভন্ডমীর কথা বলতে গেলে সারারাত পার হয়ে যাবে তারপরেও শেষ হবে না । তোকে কতগুল সিম্পল উদাহরণ দিচ্ছি ।
প্রাচীনকাল তেকে যতগুলো কোরানের তাফসির আছে সবগুলাতে বলা ‘দুহাহা’ শব্দের অর্থ বিস্ত্রিত । কিন্তু উনি এটার অর্থ পালটিয়ে বলেন এর অর্থ নাকি উট পাখির ডিম এবং কোরানেই সর্বপ্রথম বলা হয় প্রিথিবী দেখতে ডিম্বাকার । কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে প্রিথি্বী দেখতে মোটেও ডিম্বাকার নয় ।
তারপর কোরানে আল্লাহ বলেন , একজন মানুস ভাল কাজ করলে তা যতই ক্ষুদ্র হক না কেন আল্লাহ তাকে তার পুরষ্কার দিবেন আর খারাপ কাজ করলে তা যত সুক্ষ্ম হোক না কেন আল্লাহ তাকে শাস্তি দিবেন । নিশ্চয়ই আল্লাহ সুক্ষ্মাতিসুক্ষ্ম ব্যাপারেও খোজ-খবর রাখেন । আর জোকার নায়েক বলেন এখানে অণু-পরমাণুর খোজ-খবর রাখেন বলছেন । তার মানে কোরান , ডাল্টনের ১২০০ বছর আগে অণু-পরমাণুর ধারনা দেন । কিন্তু তুই তো লাইনগুলা শুনে বুঝতে পারতেছিস এখানে কেমিস্ট্রির অনু-পরমাণুর কথা বলেন নাই ।
রায়হানের কথা শুনে একটু বিব্রত হলাম । আমতা-আমতা করে বললাম ,ডাঃ জাকির নায়েক তো আর ইসলাম না , সাধারণ একজন মানুষ । তার ভুল-ভ্রান্তি হতেই পারে । এর থেকে প্রমাণ হয় না ইসলাম ভুল ।
রায়হান বলল , হুম , এর থেকে প্রমাণ হই না ইসলাম ভুল কিন্তু ইসলাম যদি আসলেই সত্যি ধর্ম হত তাহলে এর মদ্ধ্যে কোন কন্ট্রাডিকশন থাকত না । বিজ্ঞানগত ভুলের কথা বাদেই দিলাম । ইসলামের বেসিক জিনিষগুলা নিয়ে তুই যদি নীতিগত বিশ্লেষন করে দেখিস তাহলে অনেক অসঙ্গতি দেখতে পারবি
- যেমুন
- ঠিকাছে, তোকে কয়েক্টা উদাহারণ দিচ্ছি
এক. কোরানে আমরা পড়ি , আল্লাহ এমন একজন সত্তা যে সর্বশক্তিমান এবং তার কোন ক্ষুত-পিপাসা, বিশ্রাম বা কোন কিছুরেই প্রয়োজন নেই । কিন্তু আদম (আ) স্রিষ্টির ইতিহাস এ আমরা দেখি তাকে স্রিষ্টি করার আগে আল্লাহ অস্থিরতাই ভুগছিলেন !! তা দেখে ফেরেশ্তারা তাকে প্রশ্ন করলে তিনি জবাব দেন , তিনি আদম স্রিষ্টির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন !! যা আল্লাহর সব স্রিষ্টির নাম জানবে । কিন্তু আমরা কোরান থেকে জানতে পারি আল্লাহর কোন কিছুর প্রয়োজনীয়তা নাই তাহলে তিনি কেন অস্থিরতা অনুভব করবেন বা আদম স্রিষ্টির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করবেন ?

দুই. যাদের কেউ দাম দে না তারা যেমনি সারাক্ষন নিজের ঢোল নিজে পিটাই চাপা মারে আর চাই যে গল্পগুলা আমরা বিশ্বাস করি , এইটা সেইটা খাওয়ায় ঠিক তেমনি কোরানে আমরা দেখি ,আল্লাহ সারাক্ষণ নিজের প্রশংসা করছেন আর আমাদের জান্নাতের লোভ দেখিয়ে প্রশংসা ভিক্ষা চাচ্ছেন । এইটা আর যাই হোক কোরানে বর্ণিত তার গুনের সাথে যায় না ।

তিন . আদম গন্ধম ফল খাওয়ার কারনে শাস্তিস্বরুপ তাকে প্রিথিবীতে নির্বাসন দেওয়া হয় । তাদেরকে বেহেশ্তে আসার জন্য পুন্য সঞ্ছয় করতে বলা হয় । কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে তাদের শাস্তি আমাদের ও কেন ভোগ করতে হচ্ছে ।
চার. চার নাম্বার নীতিগত বিশ্লেষন হল ইসলামের বিভিন্ন আইন-কানুনে টেকনিক্যাল ভুল আছে । যেমন , জুম্মার নামায ইচ্ছা করে পরপর তিন শুক্রবার না পড়লে সে আর মুস্লিম থাকে না । কিন্ত আবার লা ইলাহা পড়লেই একজন মানুষ মুস্লিম হয়ে যায় । তাহলে মুস্লিমত্বের লাইসেন্স রি-নিউ করার জন্য জুম্মা পড়ার কি দরকার ? লা ইলাহা পড়ে ফেল্লেই হয়ে যায় ।
পাচ. তোদের পাপ-পুন্যের স্কেল্টা আমার কাছে এপ্রোপ্রিয়েট মনে হই না ।পাপ-পুন্য হল আপেক্ষিক ব্যাপার ।ইসলাম ধর্মে চারিত্রিক গুনাবলী, ভেতরের সৌন্দর্য্য থেকে ধর্মীয় আচার পালনের উপর বেশী গুরত্ব দেয়া হয় । যেমন , তাবলীগের ছেলেদের দেখ । তারা সারাদিন নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকে , প্রচন্ড পরিমাণ আত্ম-কেন্দ্রিক এবং কারো কোন উপকারে আসে না । কিন্তু তারা বেহেস্তে যাবে কারন তারা নামায পরে । আবার , কিছু কিছু ছেলে আছে যারা সবসময় অন্যদের মাতিয়ে রাখে , আশে-পাশের কাউকে দুঃখী হতে দে না । কেউ বিপদে পড়লে তারা এমনভাবে ছোটাছুটি করে যেন প্রব্লেমটা তাদের নিজের । এ ধরনের ছেলেদের সবাই অন্তর থেকে পছন্দ করলেও আল্লাহ পছন্দ করেন না । কারন , বেশিরভাগ সময় দেখা যায় তারা নামায পড়ে না ।
আবার ধর , কোন একটা মেয়ে ইরানের তীব্র রক্ষণাত্মক পরিবারে জন্মগ্রহন করেছে ।স্বাভাবিকভাবে দেখা যায় সে মেয়েটা সারাজীবন বোরকা পড়ে চার দেয়ালের মাঝে কাটায় দিসে কিন্তু সেই মেয়েটিই যদি আমেরিকায় জন্মগ্রহন করত তাহলে হইত সেখানকার মেয়েদের মত শর্ট ড্রেস পড়ত । ইসলাম ধর্ম অনুসারে প্রথম ক্ষেত্রে জান্নাতে এবং দ্বিতীয় ক্ষেত্রে জাহান্নামে যাওয়ার কথা ।আরেকটা উদাহরণ দিই , একজন লোক দেশের প্রেসিডেন্ট হইছে । চারিদিকে ক্ষমতাশালী লোকদের প্রেশারে সে দুর্নীতির আশ্রয় নিল । তার শাসনে দেশের লোক অতিষ্ঠ এবং সে নিজেকে হাবিয়া দোজখের উপযোগী করে ফেলে । সে একই ব্যাক্তি যদি কোন স্ট্রীক্ট প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকুরি করত তাহলে হইত সারাজীবন বাধ্য হয়ে সৎভাবে কাটিয়ে দিত ।বিষয়টা অনেকটা এমন হয়ে গেসে , ক্লাস ফাইভের কিছু ছাত্রের এক্সাম নেয়া হচ্ছে । কেউ পাইছে ক্লাস ওয়ানের কোয়েশ্চেন পেপার , কেউ বা সেভেনের , কেউ বা টেনের ।
ছয়. কোরানে আছে জান্নাতে একজন মানুষ যা চাই তাই পাই । যদি ২ জন মানুষ কোন খেলা খেলে তাহলে কে জিতবে ? আরেকটা ব্যাপার হল , জান্নাতে যা চাই তাই যদি পাওয়া যায় নিচের স্তরের জান্নাতিরা তো চাইবে শহীদদের মত জান্নতুল ফেরদৌসে মুহাম্মদ (স) এর বাড়ির পাশে থাকবে ।
আর সুখ জিনিষ্টা হচ্ছে চারিদিকের মানুষের সাপেক্ষে তোর অবস্থান । তুই যদি গ্রামে থাকিস তাহলে দেখবি হয়তো তোর ২১ ইঞ্ছি টেলিভিশন দেখার জন্য সবাই ছুটে আসছে আবার গুলশানে থাকলে হয়তো তোর ৪২ ইঞ্ছি এল.ই.ডি টি.ভি নিয়ে তুই মন ছোট করে বসে আছিস । অন্যের কাছে নিজেকে প্রমাণ করার সু্যোগ নেই , ক্লাসে ফার্স্ট হয়ে তাক লাগানো যায় না যেখানে , নিজের ক্ষমতা দেখানো যায় না যেখানে , সব কিছু নিয়ম-মাফিক চলে যেখানে সেখানে আনন্দ নেই । আর যেখানে আনন্দ নেই সেখানে সুখ ও নেই ।


সাত. তিনি যে প্রচন্ড হিংসুটে ও প্রতিহিংসাপরায়ন তা কোরানে না লিখলেও আমরা তার কর্ম-কান্ড থেকে তার এই বৈশিষ্ট্যের কথা জানতে পারি ।যদিও প্রাথমিকভাবে বলা হয় , ভাল লোকেরা জান্নাতে এবং খারাপ লোকেরা জাহান্নামে যাবে কিন্তু আমরা দেখতে পাই যে অনেক ভাল মানুষ শুধুমাত্র অন্য ধর্মাবলম্বী হওয়ার কারনে জাহান্নামে যাবে । সেখানে তাদের শাস্তির বর্ননা শুনলে তোর এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ থাকবে না এটা যে কোন অসুস্থ মানুষের প্রলাপ । আর যাই হোক , এমন কোন সত্তার মনে হবে না যে পরম দয়ালু ।

আমি তাকে এ পর্যায়ে একটু বাধা দিলাম ।বললাম, আসলে প্রব্লেমটা হচ্ছে তোরা এ জিনিষগুলা গুলিয়ে ফেলিস ।আল্লাহ যেমনি রাহমানুর রাহীম ঠিক তেমনি ন্যায়বিচারক ও ।ধর , কেউ তোর বাবাকে হত্যা করছে কিন্তু ইহকালে সে শাস্তি পাই নাই ।তুই কি চাস না তার শাস্তি হওয়া দরকার ? আল্লাহ পরকালে তার শাস্তি নিশ্চিত করেন । আল্লাহ অনেক সময় তার সাথে যে অন্যায় করা হয়ছে তা ক্ষমা করে দেন কিন্তু একজন মানুষ যদি আরেকজন মানুষের সাথে অপরাধ করে তা ভুক্তভোগী মানুষটা যতক্ষন ক্ষমা না করে আল্লাহ ক্ষমা করেন না ।
- হুম , যে একটা মার্ডার করছে তাকে শাস্তিস্বরুপ একবার মারা যায় , দুবার মারা যায় কিন্তু সারাজীবন দোজখের আগুনে জ্বালানো কোন শাস্তি হতে পারে না । তাছাড়া , যারা অন্য ধর্মবলাম্বী তাদেরকে বিনা কারনে কেন শাস্তি দিবেন
- ঠিকই তো আছে । আল্লাহ তাকে স্রিষ্টি করেছেন , প্রিথিবীতে থাকার জন্য পর্যাপ্ত আলো,বাতাস,পানি দিয়েছেন , এতো অনুগ্রহ করেছেন আর তারা সে আল্লাহর নাফরমানি করে অন্য কারো উপসনা করলে তো আল্লাহর রাগাটাই স্বাভাবিক । ধর , তুই কারো একটা উপকার করলি সে তা তো স্বীকার করলই না বরং তোর বিপক্ষে কথা বলে । তাহলে কি তুই রাগবি না ?
রায়হান বলল, আরে ব্যাপারটা তো এমন নয় যে ,যারা হিন্দু বা অন্য ধর্মবলাম্বী তারা জানে আসলেই আল্লাহ তাদের স্রিষ্টিকর্তা কিন্তু আল্লাহর সাথে তাদের কোন শত্রুতা আছে বলে তারা অন্য কার উপাসনা করে । তুই এখন ইসলামের পক্ষে কথা বলতেছিস কিন্তু এই তুই এই যদি হিন্দু বা খ্রিষ্টান পরিবারে জন্মগ্রহন করতি ৯৯% এর ও বেশি সম্ভাবনা তুই ওই ধর্মের পক্ষে কথা বলতি । আজকাল মানুষ নিজের ধর্ম সম্পর্কে তেমন কিছু জানে না , অন্য ধর্ম তো দুরের কথা । সো, ধর্ম চেঞ্জ করবে কেম্নে ?
আমি বললাম , আরে , আল্লাহ আমাদের স্রিষ্টিকর্তা , আমাদের মালিক ,আমরা তার গোলাম । তার স্রিষ্টি নিয়ে তিনি যা ইচ্ছা করবেন । তুই প্রশ্ন তুলার কে ?
রায়হান বলল , এটা ঠিক বলছিস । স্রিষ্টিকর্তাকে ভালই হতে হবে এমন কে বলছে ?স্রিষ্টিকর্তা খারাপ অ তো হতে পারে । এমন ও হতে পারত , আমাদের দিন-রাত অমানষিক কষ্ট দিয়ে তিনি আনন্দ নিচ্ছেন ।কিন্তু তখন তিনি ডিরেক্ট বলতে পারতেন , আমি তোদের স্রিষ্টিকর্তা , আমার যা ইচ্ছা তা করব তোদের সাথে । কোন মিথ্যা কথা বলার প্রয়োজন পড়ত না । কিন্তু কোরান শরীফে আল্লাহ নিজেকে বলতেছে একরকম কিন্তু তার আচরন অন্যরকম । মিথ্যা কথা বলতে পারা কোন ক্ষমতা নয় বরং ল্যাকিংস । আমরা কখন মিথ্যা কথা বলি ? ধর , আমি এমন কোন কাজ করলাম যা তুই পছন্দ করিস না কিন্তু তোর কাছে কোন কারনে আমি ধরা । তখন হইত আমাকে মিথ্যা বলতে হবে ।

আচ্ছা , তোদের সমস্যাটা কি ? এত ধর্ম থাকতে তোরা সারাদিন ইসলাম ধর্মের পিছনে পড়ে থাকিস কেন ?
- আসলে আমি তো ইসলামিক ব্যাক-গ্রাউন্ড থেকে উঠে আসছি , এ ধর্ম সম্পর্কে অনেক কিছু জানি তাই এটা নিয়েই লিখি । তুই যদি কলকাতার মুক্তমণা সাইট গুলা দেখিস তাহলে তাদের লেখায় কেবল হিন্দু ধর্মের দোষ-ত্রুটি গুলো উঠে আসছে ।ইসলামিক অপবিজ্ঞানের মত হিন্দু ধর্মের ও অপবিজ্ঞান আছে যদিও এগুলো ইসলামিক অপবিজ্ঞানের মত এত শাখা-প্রশাখা অর্জন করতে পারে নি কারন ইসকন বা এই সঙ্ঘটন গুলো তেমন ফান্ডিং পাই না । মিডল ঈস্ট এর দেশগুলো মরিস বুকাইলির মত আরো অনেক বিজ্ঞানিকে কিনতে গিয়ে ধরাও খায়ছিল ।
আমি এসাইন্মেন্ট না করে উঠে গেলাম । বললাম, সন্ধ্যা হয়ে গেসে ,আমি উঠলাম । কিন্তু তোর সব প্রশ্নের উত্তর একদিন না একদিন তোকে দিবই ।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×