somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেশের নাম বাংলাদেশ- সরকার প্রধান শেখ হাসিনা

১১ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পহেলা বৈশাখে যৌন নিপীড়দের বিচারের দাবীতে ও পুলিশের অব্যাহত নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদে ছাত্র ইউনিয়নের ডিএমপি কার্যালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচী ছিল। দুপুর ১২টায় আহূত এই কর্মসূচি পণ্ড করার জন্য সকাল থেকেই পুলিশের ব্যাপক প্রস্তুতি ছিল। সকালে মিন্টু রোডে ডিএমপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশের অবস্থান দেখলাম। এদিকে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে অবস্থান নিয়েছিল শাহবাগে। তখনই বোঝা গিয়েছিল এরা ২৬দিনের ঘুম রদ করবে, তবে নিপীড়কদের ধরতে নয়, প্রতিবাদকারীদের উচিত শিক্ষা দিতে!
টিএসসি রাজু ভাস্কর্য থেকে ছোট এক সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচির শুরু। শান্তিপূর্ণ মিছিল ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ডিএমপি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিবে এই ঘোষণা ছিল মিছিল পূর্ব সমাবেশে।

মিছিল ক্যাম্পাস ঘুরে মধুর ক্যান্টিনের সামনে দিয়ে যেতেই দেখা গেল ভারতের স্থল-সীমান্ত চুক্তি বিলটি পাশ হওয়ায় ছাত্রলীগ আনন্দ মিছিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সম্ভবত বড় নেতাদের অপেক্ষায় ছিলেন তারা। ছাত্র ইউনিয়নের মিছিলটি তাদের ‘হল থেকে ধরে আনা’ কর্মীদের সামনে দিয়ে যেতেই তাদের মলিন মুখগুলো দেখতে পেলাম! সেই শুকনো মুখগুলো দেখেই বোঝা যাচ্ছে সেখানে নেই কোনধরনের স্বতঃ:স্ফূর্তিটা। মনে হচ্ছে চাপিয়ে দেয়া একটা কর্মসূচিতে এসেছে তারা। ছাত্র ইউনিয়নের গর্জন করা শ্লোগানের সামনে ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের অসহায়ত্ব ছিল বেশ নির্মম! আর বেশ কিছু কর্মীদের দেখা গেল ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতির সাথে সেলফি তোলার ব্যস্ত। সেখানে রীতিমত লাইন দিয়েছে অনেকে। এক দলের সেলফির পরে অন্য দল! বুঝলাম ওদের প্রাপ্তির স্বপ্ন অতটুকুই! এর বেশি স্বপ্ন দেখার সাধ্য তাদের নেই!

ছাত্র ইউনিয়নের মিছিলটি মধুর ক্যান্টিন ছাড়িয়ে ঢাক বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদ দিয়ে টিএসসি দিয়ে দোয়েল চত্বরে গেল। সেখানে পুলিশের ব্যারিকেড আগে থেকেই দেয়া ছিল। কিন্তু নিপীড়কদের রক্ষা ব্যারিকেড কয়েকজন কর্মীর চেষ্টাতেই ভেঙ্গে চুরমার। মিছিল এগিয়ে যাচ্ছে। হাইকোর্ট হয়ে মৎসভবন, তারপর কাকরাইল মসজিদ। সেখান থেকে মিন্টু রোডের দিকে এগিয়ে যেত থাকল মিছিলটি। মাঝে দু’বার পুলিশ মিছিলকে থামাতে চাইলেও সুবিধা করে উঠতে পারেনি। মিছিলটি মিন্টু রোডে ঢুকে সামনে কিছুদূর এগুতেই পেছন থেকে রায়ট কার এ একটি পুলিশের গাড়ি সজোরে এগিয়ে আসল। গাড়ি দুটি মিছিলের উপরে তুলে দিল। নেতা কর্মীরা সরে গিয়ে বাঁচালেন নিজেদের, তারা পুলিশের গাড়িকে আটকে আবার মিছিল নিয়ে সামনে এগুতে থাকলেন।

এরপর পুলিশ আবার আটকে দিলে হাসান তারেক, লাকী আক্তারসহ অন্যান্য নেতারা কর্মীদের বসে যেতে বললেন আর দাবী জানান হল ডিএমপি কমিশনার এসে যেন কথা বলেন। সেখানে নেতৃবৃন্দ কর্মীদের শান্ত থাকার কথা বলেন এবং দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার কথা বলেন।

এর মাঝেই পুলিশ মাইকের তার খুলে ফেলে। হঠাৎ উত্তেজনা তৈরি হয়। তখনই পুলিশ একযোগে ঝাঁপিয়ে পরে লাঠি হাতে। লাঠির আঘাতে হাসান তারেক, লিটন নন্দীসহ অনেকেই গুরুতর আহত হন। হামলায় অন্তত ৩৪ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেন সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম জিলানী শুভ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি তন্ময় ধর, ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক সুমন সেন গুপ্ত । গ্রেফতার করা হয় ৫ জনকে। তারা হলেন- জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক দীপাঞ্জন সিদ্ধান্ত কাজল ও কর্মী আরিফুল ইসলাম অনিক, ঢাকা মহানগর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক অনিক রায়, অন্তু চন্দ্র নাথ ও সাদ্দাম হোসেন জয়।

……………………………………………………………..
শিরোনামের সাথে উপরের লেখার মিল নেই। শিরোনামটি সচেতনভাবে কৌতূহল তৈরির ইচ্ছা থেকে দেয়া তবে এটি অপ্রাসঙ্গিক নয়। একটু পিছনে ফিরে তাকানো যাক, বাংলাদেশ সেই রাষ্ট্র যার জন্ম হয়েছে নিপীড়িত মানুষের অপরিমেয় ত্যাগের মাধ্যমে। সেই রাষ্ট্রের প্রথম সংবিধান অর্থাৎ ৭২ এর সংবিধানের চার মূলনীতি গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙ্গালী জাতীয়বাদ ও সমাজতন্ত্র। যে স্বপ্ন নিয়ে এই বাংলাদেশের যাত্রা শুরু তার এই পরিণতি এমন হবে কে ভেবেছিল? বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এই স্বপ্নের ধারক ছিল। সেই আওয়ামী লীগ আজ রাষ্ট্র ক্ষমতায়। সরকার প্রধান বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর জীবিত নেই। আছেন পিতার স্বপ্নের এক হত্যাকারীর রাজত্ব! দ্বিতীয় যে বিষয়টি মনে আসে তা হল দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী অথচ নারী নিপীড়নের বিচারের দাবী নিয়ে প্রশাসন চরম উদাসীন! সেখানে কোন ধরণের ইতিবাচক ভূমিকা নেই সেই নারী প্রধানমন্ত্রীর!

::: আসুন স্বপ্ন দেখি... :::
নষ্ট বাস্তবতার বিপরীতে ভাল স্বপ্ন দেখতে কার না ভাল লাগে। চলমান যৌন নিপীড়ন বিরোধী আন্দোলনের বাস্তবতা যদি ভিন্ন হত! কেমন হতে পারত তা? একটু কল্পনা করি …
পহেলা বৈশাখে নারী নিপীড়ন নিয়ে সারা দেশে যখন আলোচনা সমালোচনা, তখন দেশের প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন মন্ত্রীরা এই নিপীড়কদের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেদের ভুল স্বীকার করে আন্দোলনকারীদের সাথে একাত্ম হলেন। তারা ঘোষণা দিলেন ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় এ ধরণের ঘটনার ক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ বেশ কয়েকজন নিপীড়নকারীকে ধরতে সক্ষম হল। দেশের সর্বস্তরে গণ-আন্দোলন ছড়িয়ে পরল, যেখানেই নারীরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছে আশপাশের মানুষ নিপীড়কদের পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিচ্ছে। পুলিশ সহায়তা করছে নিপীড়কদের বিচার করতে। আদালতের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে যৌন নিপীড়ন বিরোধী নীতিমালা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা হল।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে নিপীড়নের প্রতিবাদের খবর আসছে। মানুষ জেগে উঠেছে নিপীড়কদের বিরুদ্ধে। নারীরা হয়ে উঠেছে সাহসী। যে নারী আগে যৌন হয়রানির ঘটনা বলতে দ্বিধা করতেন তারা আজ পাল্টা আঘাত হানে!

::: অত:পর পহেলা বৈশাখ ১৪২৩। টিএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় :::
দুজন নারী যৌন নির্যাতনের শিকার। না, এখন আর লিটন নন্দীদের জন্য অপেক্ষা করতে হয়নি। সেই নারীরাই রুখে দাঁড়িয়েছে। তাদের রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছে আশপাশের জনতা। নিপীড়করা পুলিশের হস্তগত। আদালতে তাদের বিচার চলছে ....
..........................................................................
*আজকাল দালালদের সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে। আওয়ামী দালাল, জাতীয়তাবাদী দালাল, জামাতী দালালদের পাশাপাশি আরও ভয়ংকর দু’শ্রেণীর দালালদের উৎপাত বেড়ে গেছে। তারা হল সুশীলীয় দালাল আর বাম নামধারী যত ধরণের অপযুক্তির দালাল। তারা নানাবিধ মিথ্যা তথ্য ও যুক্তি দিয়ে সকল বক্তব্য খারিজ করার জন্য তৈরি থাকে। তাই চলতি পথে করা ভিডিওগুলোর লিংক দিয়ে দিলাম।

পুলিশের গাড়ি তুলে দিল মিছিলে: http://youtu.be/NUxO6QX0bII
ডিএমপি কার্যালয়ের সামনে ছাত্র ইউনিয়ন নেতাদের বক্তব্য: http://youtu.be/QZpKv51Vmx0
পুলিশের হামলা: http://youtu.be/SfCCDpCUJ6Y
হাসান তারেক ও লিটন নন্দী'র উপর হামলা: http://youtu.be/ft7ka53TO6U
নারী নিপীড়ক পুলিশ: http://youtu.be/fgUSl8nK4Kk
ছাত্র নেতা মারুফ বিল্লা তন্ময়ের বক্তব্য: http://youtu.be/Ct7g50PkIjc

ধ্রুব দাশ
ঢাকা, ১০.০৫.২০১৫
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০১৫ সকাল ১১:৪১
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×