"আমার পাতানো ফাঁদে আরেকটি শিকার পা দিয়েছে। একটার পর একটা শিকার করাতেই আমার সুখ। এই নতুন মেয়েটির সাথে অনেকদিন থেকেই ফেসবুকে কথা হয়। প্রতিদিনই হয়। প্রথম পরিচয়ের পর থেকে আমিই একটু আগ্রহ দেখিয়ে ছিলাম। এটাই তো নিয়ম, মাছ ধরার আগেই তো টোপ দিতে হয়। আমি অমায়িক কথার মাধ্যমে ওকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি যে, আমি ওকে অনেক কেয়ার করি আর পছন্দও করি বটে। এই টোপেই কাজ হয়ে গেল। এখন আমাকে আর আগ্রহ দেখাতে হয় না, ও নিজে থেকেই সব করে। আমি বুঝতে পারি আমার সাথে চ্যাট করাটা তার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে। আর এই অভ্যাসের অন্য নামই হল প্রেম। মেয়েটি আমার প্রেমে পড়েছে, এতে কোন সন্দেহ নেই। একদিন কথা না বলে থাকতেই পারে না। আমি এই দিনের অপেক্ষাতেই ছিলাম। এই সময়টা খুব সাবধানে আগাতে হবে। সুক্ষ্ম প্রেমের অভিনয় করতে হবে আমাকে। তারপর আর দেখতে হবে না, মেয়েটি নিজেই আমার হাতে ধরা দিবে। আর আমি আস্বাদন করবো নোনতা রস। এরপরই এর সাথে আমার খেলা শেষ, আবার বের হবো নতুন শিকারের খোঁজে। আপাতত আমার টার্গেট এই মেয়েটি। "
এতোটুকু লিখে ডায়রীটা বন্ধ করলো অর্ক। ডায়রী লেখা ওর অনেকদিনের অভ্যাস। বিশেষ করে প্রতিটা চ্যালেঞ্জ এখানে লিখে রাখে। এর আগে যতগুলো মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে লীলাখেলায় মেতে উঠার চ্যালেঞ্জ নিয়েছে, তার সবগুলোই এখানে লেখা আছে। এই খেলাটা খেলতে ওর ভীষণ মজা লাগে। ওর ধারণা, মেয়েদেরকে প্রেমে ফালানো আর বিছানায় নিয়ে যাওয়া পৃথিবীর সবচেয়ে সহজ কাজের মধ্যে একটি। এর জন্য বিশেষ কিছুই করতে হয় না। ফেসবুকের কল্যাণে কাজটা আরো বেশি সুবিধা হলো। প্রথমে সুন্দরী আর নাদুস নুদুস দেখে একটা মেয়ে সিলেক্ট করতে হবে। চ্যাটিংয়ের সময় খেলতে হবে কথার খেলা। প্রতিটা কথায় ফানি হিউমার থাকতে হবে । কারণ, মেয়েরা রসিক ছেলেদের সাথে কথা বলেই বেশি মজা পায়। আর এটা অর্ক ভালো ভাবেই আয়ত্ত্ব করে নিয়েছে।
অন্বেষা, অর্কের নতুন শিকার। ৬ মাস আগে ওর সাথে পরিচয়। মেয়েই আগে অর্ককে নক করেছিলো। বাঘের খাঁচায় পা দিলো মেয়েটি।
- হাই
- হ্যালো, কী খবর তোমার? কেমন আছো?? (অর্ক জানে, মেয়েরা আগে নক করলে যতটা পারা যায় ফ্র্যাঙ্কলী কথা বলতে হয়, যেন কতদিন আগে থেকেই পরিচয়। এতে করে মেয়ের মধ্যকার সংকোচটা কেটে যায়। অন্যদিকে, ছেলেরা নিজে থেকে কাউকে নক করলে তখন কিছুটা দুরত্ব রেখে কথা বলতে হয়। এটাই নিয়ম, তাছাড়া মেয়েরা ভাবে ফ্লার্ট করার ট্রাই করছে। সেক্ষেত্রে ব্লক লিস্টে যাওয়ার সম্ভাবনাটা থেকে যায় )
- ভালো আছি, আপনি কেমন আছেন?
- কোন একটা বিশেষ কারণে আমি সব সময়ই ভালো থাকি। চেষ্টা করেও কখনো খারাপ থাকতে পারি না।
- তাই নাকি? এটাই তো ভালো। তা আপনার সব সময়ই ভালো থাকার সেই বিশেষ কারণটা কী?
- কারণ হলো, পৃথিবীর কোন কিছুকেই আমার সাবান মনে হয় না, তাই সেসব গায়েও মাখাই না। আর গায়ে না মাখলে দুঃখ পাবো কীভাবে!!
- হি হি হি হি.. বাহ, আপনিতো বেশ মজা করে কথা বলতে পারেন।
অর্ক মনে মনে বলে, এই তো ধীরে ধীরে লাইনে চলে আসছো। তোমাকে পটাতে খুব বেশি কষ্ট করতে হবে না।
- এরও একটা কারণ আছে, জন্মের পরে তো শিশুদের মুখে মধু দেয় যেন মিষ্টি মিষ্টি কথা বলতে পারে, আমার মা আমাকে রসগোল্লার রস দিয়ে গোসল করাইছিলেন, তাই আর কি।
- (অনেকগুলো হাসির ইমো) হি হি হি হি হি হি হি। আপনি পারেনও বটে।
- হাসে পাড়ে, মুরগী পাড়ে, আর আমি মানুষ হয়ে একটু আধটু না পারলে কীভাবে হয় বলো!!
- (আবারো হাসির ইমো) হা হা হা হা হা হা... OMG. আপনার সাথে আর কিছুক্ষণ কথা বললে আমি হাসতে হাসতে দম বন্ধ হয়ে মারাই যাবো।
- এতো তাড়াতাড়ি মরে যাওয়া তোমার উচিত হবে না। আরো কিছুদিন বেঁচে থাকো। তোমাকে বাঁচিয়ে রাখা আমার নৈতিক দায়িত্ব, তাই আমি এখন ফেসবুক থেকে বের হয়ে যাচ্ছি। একটু কাজ আছে। পরে আবার কোন সময় কথা হবে।
- ওকে। পরে আবার কথা হবে।
- আর হ্যা, যাওয়ার আগে একটা কথা বলে যাই, তোমার নামটা সুন্দর।
এতোটুকু লিখেই ফেসবুক থেকে লগ আউট হয়ে গেল অর্ক। এরপরে মেয়েটি কী বলবে এটা জানে সে। কিন্তু সেই কথার উত্তর দেয়ার সময় এখন না। একবারে উপযোগ শেষ করে দেয়া উচিত নয়। এটাও ওর প্রতি আকৃষ্ট করার একটা অংশ। প্রথম দিকেই মেয়ের প্রতি খুব বেশি লুতুপুতু দেখানো একদমই উচিত নয়। এতে করে মেয়েদের আগ্রহে ভাটা পড়ে যায়। একটু একটু আগ্রহ দেখাতে হবে, আবার উদাসিনতাও দেখাতে হবে। ঠিক যেমনটা ঘুড়ি ওড়ানোর সময় সুতা ঢিলা দিয়ে জোরে টান দিলেই ঘুড়ি উপরের দিকে উড়তে থাক। অর্কর এই হঠাৎ করে লগ আউট হয়ে যাওয়াটা খৃুবই দরকার ছিলো। এখন মেয়েটি অধীর আগ্রহে অর্কের জন্য অপেক্ষা করবে। আর "অন্বেষা" নামটা সুন্দর" এই কথাটা বলে অর্ক ঘড়ির চাবি মাইরা দিছে। পরবর্তী কথা না হওয়া পর্যন্ত ঘড়ির কাঁটা ঘুরতেই থাকবে। মেয়েরা নিজের নাম আর নিজের চেহারার প্রশংসা শুনতে খুবই উৎসাহী হয়। সে এই টনিকটাই কাজে লাগিয়েছে। অন্বেষার চেহারা আসলেই অনেক সুন্দর। গোল গোল দুটি চোখ, পাপড়ীগুলো বাঁকানো, কোণায় একটু টানা টানা ভাব, চিবুকটা চৌকষ সেই সাথে অসাধারণ স্কিনের টিউন- সব মিলিয়ে তাকিয়ে থাকার মত। অর্কের খুব ইচ্ছা করছিলো "তুমি দেখতে অনেক সুন্দর" এই কথাটা বলতে। কিন্তু প্রথম দিনেই এই কথাটা কখনোই বলতে নেই। এই ভুল সে কোনদিনও করবে না। চেহারার সৌন্দর্যের কথা মেয়েরা পছন্দ করলেও, প্রথম দিনেই এ ব্যাপারে কথা বললে মেয়েরা সাবধান হয়ে যায়। তখন হাতের ফাঁক দিয়ে মাছ বেরিয়ে যাওয়ার অবস্থা হবে। আর তাছাড়া, এসব বলে মেয়েদের এখন আর পটানোও যায় না। সুন্দরী মেয়েরা সারাদিনই ওদের চেহারার প্রশংসা শুনতে শুনতে বোর হয়ে যায়। কয়েকদিন পর এ সৌন্দর্য এমনিতেই পুরোটা দেখতে পাবে। এতো তাড়াহুড়োর কিছু নেই। রুটি অল্প তাপেই ভাজতে হয়, বেশি তাপ দিলে রুটি পুড়ে যায়।
সেদিন সন্ধ্যায় অন্বেষাই ওকে নক করেছিলো। এর পর থেকেই চ্যাটিংয়ের যাত্রাটা শুরু। "স্লো এন্ড স্টেডি উইনস দ্য রেস" থিওরী মোতাবেক অর্ক ধীরে ধীরেই আগাচ্ছিলো। হাসি, ঠাট্টা, মস্করার মধ্য দিয়ে মেয়েটির মনের মধ্যে জায়গা করে নিলো। "আপনি থেকে "তুমিতে নেমে এলো। এতো দিনে ও অন্বেষাকে এটা বোঝাতে সক্ষম হয়েছে যে অর্ক খুব ইনোসেন্ট আর খুব ভালো একটা ছেলে। অন্য ছেলেদের চেয়ে অনেক আলাদা। অন্যদের মত মাগীবাজি স্বভাবটা ওর মধ্যে নেই। ঠিক এই কারণেই অন্বেষা ওকে বেশি পছন্দ করে। আজ অন্বেষা অর্ককে ফোন নাম্বার দিয়েছে। শিকারকে বধ করার সময় ঘনিয়ে আসছে। রাতে সময় করে অন্বেষাকে ফোন দিবে বলে চিন্তা করে রাখলো।
ওপাশে রিং হচ্ছে। খট শব্দে ফোনটা রিসিভ করলো-
- হ্যালো, অন্বেষা, কেমন আছো? (প্রথম কথায়ই "অন্বেষার" নাম ধরে ডাকলো, এতে করে মেয়েটার বুকে ছোট্ট করে একটা ধাক্কা লাগলো। নাম ধরে ডাকলে মানুষটার পুরো মনোযোগটা পাওয়া যায়। মানুষের মনের মধ্যে স্থান করে নেয়ার এটা একটা উপায়। )
- আমি ভালো আছি, তুমি কেমন আছো?
- জানেই তো আমি খারাপ থাকি না কখনো। বাই দ্য ওয়ে, আমার একটা ধারণা তো ভুল প্রমাণিত হয়ে গেল।
- কীসের ধারণা?
- আমি ভাবছিলাম তোমার গলার ভয়েজটা সুন্দর হবে।
- মানে কী? আমার গলার ভয়েজ সুন্দর শোনায় না?
- আসলে ব্যাপারটা হলো, তোমার কন্ঠটা আমার ধারণার চেয়েও অনেক অনেক বেশি সুন্দর।
- তুমি যে কী না!! শয়তান একটা!!
এভাবেই চলতে থাকে ওদের ফোনে কথা বলা। ধীরে ধীরে পরিনয়ের দিকে আগাতে থাকে। সুযোগ বুঝে একদিন প্রপোজ করে বসে অর্ক। অন্বেষাও না করতে পারে না। কারণ সেই সিচুয়েশন তৈরি করেই নিয়েছে। নতুন প্রেম, নতুন আবেগে ভেসে বেড়াচ্ছে দুজনে। প্রতিদিন দেখা করা, ঘুরতে যাওয়া ডেট করা, সবই চলছে ওদের মধ্যে। অন্বেষাকে পুরোপুরি হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। এখন শুধু বাকি আছে সময় করে বন্দুকের ট্রিগার টেনে গুলি করে লক্ষভেদ করা। সেদিনের জন্য অপেক্ষাও করতে হয়নি বেশিদিন।
অন্বেষা বলল, "তুমি রান্না করতে পারো?"
- অবশ্যই পারি। আমার রান্না একবার খেলে আজীবন মনে থাকবে। এমনকী পরের দিন সকালে টয়লেটে বসেও আফসোস করতে থাকবা এই ভেবে যে, "আহারে, এতো মজার খাবার, সব বের হয়ে যাচ্ছে।"
- ছিঃ শয়তান কোথাকার!! এভাবে কেউ বলে নাকি!!
- আমার রান্না করা খাবারের স্বাদের নমুনা বললাম আরকি।
- তাহলে কবে খাওয়াবা বলো?
- তোমার যেদিন সময় হবে, সেদিনই খাওয়াতে পারবো, আমার কোন সমস্যা নেই।
- তাহলে আগামী শুক্রবারে দুপুরে তোমার বাসায় দাওয়াত। তোমার হাতের রান্না খাবো।
এ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি, মনে মনে বলল অর্ক।
"ওকে, তাহলে এর মধ্যেও আমিও রান্নাটা চর্চা করে ফেলি। "
শুক্রবার দিন সকাল থেকেই অর্ক ব্যস্ত। রান্নার সব উপকরণ রেডি করা আছে। অন্বেষা আসার আগেই রান্না শেষ করতে হবে। সময় নষ্ট করা একদম ঠিক হবে না। শিকারকে ভোগ করার জন্য মানসিক প্রস্তুতিও নেয়া শেষ। দুপুর ১২ টায় চলে আসলো। সুন্দর করে সেজে এসেছে ও। অপরূপ লাগছে। হাতটা ধরে রুমে নিয়ে গেল অর্ক। মুখোমুখি বসলো দুজনে। হাতটা নিয়ে আলতো করে হাতে চুমু খেলো। অন্বেষার চিবুকটা ধরে ধীরে ধীরে ওর মুখটা এগিয়ে নিয়ে আসতেই বাধা দিলো অন্বেষা। অর্ক ভয় পেয়ে গেল। "বেশি তাড়াহুড়ো করে ফেললাম নাকি?" মনে মনে বলল ও।
- "এভাবে না", বাধা দিয়েই সাথে সাথে বলল অন্বেষা, "আজ আমরা দুজনেই ভালবাসার সাগরে ভেসে যাবো। আমার সবটুকু উজার করেই ভালোবাসা দেবো তোমাকে। তবে একটু অন্যভাবে।
- কীভাবে?" কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞাসা করলো অর্ক।
- আজ আমরা Sadism চর্চা করবো।
-"ওয়াও!!" আনন্দে লাফিয়ে উঠলো অর্ক। এসম্পর্কে বইতেই পড়েছে শুধু। আজ তার চর্চা হবে।
কামুক চোখে অন্বেষা অর্ককে চিত করে শুইয়ে দুটো হাত বেঁধে ফেলল বিছানার স্ট্যান্ডের সাথে। ধীরে ধীরে ঝুঁকে পড়লো ওর উপর। অন্বেষার চোখের দিকে তাকিয়ে বড় সড় একটা ধাক্কা খেলো অর্ক। রক্তবর্ণ ধারণ করেছে। ও স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে এ চোখে আর কোন কামনা নেই, স্ফুলিয্গের মত বের হচ্ছে ক্রোধের আগুন। অন্বেষার হঠাৎ এ পরিবর্তনে ভয় পেয়ে গেল ও।
- কী হলো অন্বেষা? এমন করছো কেন?
- চুপ, একদম কথা বলবি না।
হঠাৎ এরকম তুই-তোকারিতে অর্ক ভড়কে গেল। বুঝতে পারছে না কিছুই।
গলা চেপে ধরে অন্বেষা বলে চলল, "তোর মত ছেলেকে শায়েস্তা করার জন্য এই দিনেরই অপেক্ষায় ছিলাম আমি। আর কতগুলো মেয়ের জীবন নষ্ট করবি তুই?"
"তুমি কিসের কথা বলছো, আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।" বলল অর্ক।
"মহিনী তোর কী ক্ষতি করেছিলো যে ওর জীবনটা নষ্ট করে দিলি?"
অর্ক মনে করার চেষ্টা করলো মহিনী নামের কাউকে চেনে কিনা। হ্যা, মানে পড়েছে। বছর দেড়ের আগের কথা। ওর সাথেও একই ভাবে প্রেমের অভিনয় করেছিলো। ব্রেকআপ করার দিন অনেক কেঁদেছিলো মেয়েটা। পায়ে ধরে পর্যন্ত মিনতি করেছিলো। কিন্তু মহিনীর সাথে অন্বেষার কী সম্পর্ক।
"তুমি মহিনীতে চেন কীভাবে?" কাঁপা স্বরে বলল অর্ক
"ও আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধবী। তোকে ভালোবেসেছিলো অনেক। আর তুই ওর ভালোবাসার সুযোগ নিয়ে ওর জীবনটা নষ্ট করে দিলি। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে। সেদিনই আমি প্রতিজ্ঞা নিয়েছি এর শাস্তি তোকে পেতেই হবে। "
"আমি ভুল করেছিলাম, আমি জানি এমনটি করা আমার একদম উচিত হয় নি। "
"সেই ভুলের মাশুল আজ তোকে দিতে হবে। মহিনী মারা যাওয়ার পরেই আমি তোকে ফেসবুকে রিকোয়েস্ট পাঠাইছি, চ্যাটিংয়ে আমিই আগে নক করেছি। তোর বাসায় আসার জন্য মাস্টার প্ল্যানটা আমিই করেছি। তোকে আমার স্টাডি করা শেষ অনেকদিন আগেই। মহিনী মারা যাবার পর ওর ফেসবুকে লগইন করে তোদের সব কনভারসেশন রিড করে তোর কথা বার্তার ধরণ জেনে গিয়েছি। সেই একই কথা তুই আমার সাথেও বলেছিলি। আমি ধীরে ধীরেই এগিয়েছি। তোর এই খেলা চিরদিনের জন্য বন্ধ করে দেবো। আর কোন মেয়ের জীবন নিয়ে যেন খেলা করতে না পারিস সেই ব্যবস্থাই করবো আমি।"
বলতে বলতে ব্যাগ থেকে জিনিসটা বের করলো। অর্ক শুধু চেয়ে চেয়ে দেখলো। অন্বেষার হাতের জিনিসটা চক চক করছে। ছুড়িটা খুব ধারালো বুঝতে অসুবিধা হলো না। হঠাৎ করেই হাতের মধ্যে বিঁধে গেল ছুড়িটা। ব্যাথায় কুঁকড়ে উঠলো।
"এই মুখ দিয়ে সুন্দর সুন্দর কথা বলিস, তাই না?" বলেই এক হাতে অর্কের মুখে ছুড়ি চালিয়ে দিলো অন্বেষা। গোঙ্গাতে লাগলো অর্ক। ওর মুখ রক্তে ভরে যাচ্ছে। তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছে ওর। মেয়েটা এতো হিংস্র কীভাবে হয়ে গেল।
"তোর কলুষিত হৃদয়টা দেখতে চাই" বলে বুকের মধ্যে ছুড়ি ঢুকিয়ে বুকটা চিড়ে ফেলল। হাত পা ছুড়াছুড়ি করতে লাগলো সে। আস্তে আস্তে অর্কর শরীরটা নিথর হয়ে গেল। রক্তে ভেসে গেল সারা ঘর। অর্কের মত ছেলেদের বেঁচে থাকতে নেই। ফসলের কীট যেমন বিষ দিয়ে মেরে ফেলতে হয়, তেমনি অর্কের মত সমাজে যেসব মুনাষরূপী কীট রয়েছে, ওদেরকেও পরিষ্কার করতে হয়। এরা বেঁচে থাকলে এদের ঘরেও জন্ম নেবে ওদেরই জেরক্স। এটা হতে দেয়া যায় না। অন্বেষঅ ক্লান্ত হয়ে গেছে অনেক। শরীরেও রক্ত লেগে আছে। গোসল দিতে হবে। বাথরুমে গিয়ে গোসল করে নিলো। অর্ক রান্না করে রেখেছে। অর্কর দেহটা বাঁধা অবস্থায় রেখেই প্লেটে ভাত নিলো ও। মুখে খাবার দিতেই বুছতে পারলো, "অর্ক আসলেই খু্ব ভালো রান্না করে। ছেলেদের রান্না সচরাচর এতো স্বাদ হয় না। একটা ভুল হয়ে গেছে, অর্কর কাছ থেকে রেসিপিটা জেনে নিতে হতো। তৃপ্তি ভরে খেতে থাকলো অন্বেষা।