বর্তমানে কোভিড সিচুয়েশান কারোরই অজানা নয়। সঠিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা পদ্ধতি মেনে চলার পাশাপাশি সঠিক তথ্য সম্পর্কে জ্ঞান রাখা ভীষন ভাবে জরুরী।
আজ শেয়ার করব করোনা মহামারীর একটি নতুন বাস্তবতা “লং কোভিড” বা পোস্ট কোভিড সিন্ড্রোম নিয়ে।
সাধারন ভাবে করোনা আক্রান্তদের বেশীরভাগই বাসায় থেকেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবনে সুস্থ হয়ে উঠেন। শতকরা ১৫ জন রোগী হাসপাতাল ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে যাদের মধ্যে পাচ ভাগের নিবির পরিচর্যা ইউনিটে ভর্তি হবার মত জরূরি অবস্থা হতে পারে।
যেহেতু বেশীরভাগ মানুষই বাসায় আইসোলেশনে থেকে ডাক্তারের পরামর্শ মেনেই সুস্থ হয়ে উঠেন তাই আমরা অনেকেই কোভিড এ আক্রান্তদের কিছু কিছু বিষয় উপেক্ষা করে যাই, সম্প্রতি বেশ কিছু গবেষনাউ উঠে উসেছে সুস্থ হয়ে যাওয়ার পরও লম্বা সময় ধরে করোনা আক্রান্তদের মাঝে কিছু কিছু উপসর্গ থেকে যাওয়ার প্রবনতা বা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হওয়ার বিষয়টি।
করোনা আক্রান্ত ব্যাক্তিদের বেশীরভাগইয় দুই থেকে ৬ সপ্তাহের মধ্যেই সেরে উঠেন। আবার কারো কারো ক্ষেত্রে আপাত দৃষ্টিতে সুস্থ হয়ে গেলেও কিছু কিছু জটিলতা থেকে যায়, যা ছয় সপ্তাহ থেকে বারো সপ্তাহ কিংবা তারও বেশী সময় লেগে যেতে পারে। সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের, জাতীয় পরিসংখ্যান বিভাগের গবেষনায় উঠে এসেছে করোনা আক্রান্তদের প্রতি ৫ জনে এক জন পাঁচ সপ্তাহ বা তার বেশী সময় ধরে ভুগে থাকেন এবং প্রতি ১০ জনে এক জন বারো সপ্তাহ বা তার বেশী সময় ধরে ভুগেন। দীর্ঘ সময় ধরে কাশি, ঘন ঘন শ্বাস নেয়া, বুকে চাপ লেগে থাকা, মাত্রারিক্ত অবসাদ বা দুর্বলতা, এবং স্মৃতিভ্রম এর মত মারাত্নক স্বাস্থ্য ঝুকিতে থাকার প্রবনতা পরিলক্ষিত করা গিয়েছে।
যাদের মধ্যে উপরোক্ত লক্ষন গুলো বার সপ্তাহের বেশী সময় ধরে পরিলক্ষিত হয় তাদের কে “লং কোভিড কিংবা পোস্ট কোভিড সিন্ড্রোম” নামে ডাকা হয়। এই লং কোভিড বা পোস্ট কোভিড সিন্ড্রোম ব্যাবস্থাপনা বর্তমানে একটি ক্রমবর্ধমান উদ্বগের বিষয়। লং কোভিড এ আক্রান্ত ব্যাক্তিদের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা নিরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে, এবং চিকিৎসকদেরও এ ধরনের রোগীদের কে চলমান পর্যবেক্ষনে রাখার ব্যাপারে সতর্ক থাকার নির্ধেশনা দেয়া হয়েছে।
পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মাঝেও এ সময়টাতে সহনশীল মনোভাব এবং মানসিক সাপোর্ট দেয়ার বিষয়টিকে গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে। পোস্ট কোভিড সিন্ড্রোম বা লং কোভিড এর ধরনাটি এখনও নতুন, এবং ক্রমাগত বিভিন্ন গবেষনা চলমান রয়েছে ।
করোনা মহামারী মোকাবেলায় আমাদের প্রত্যেক কে এগিয়ে আসতে হবে। সকল স্বাস্থ্য সুরক্ষা পদ্ধতি ( ঘন ঘন সাবান দিয়ে ভালভাবে হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, মাস্ক পরা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা) মেনে চলার পাশাপাশি সঠিক তথ্য জানা এবং তা অপরের মাঝে শেয়ার করার মত নৈতিক বিষটিও খেয়াল রাখা উচিৎ।
@মেহেদী হাসান
রিসার্চ এন্ড পলিসি ট্রেইনি।
সেন্টার ফর রিসার্চ, ইনোভেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট একশ্যান।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৪৬