somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের সকল মাদ্রাসা বন্ধ করে দেয়া উচিত

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশে একমূখী শিক্ষাব্যবস্থা চালু করে সকল পর্যায়ে আধুনিক শিক্ষার মত বাধ্যতামূলকভাবে কুরআন, হাদীস,ইজমা, কিয়াসকে পূর্ণ সিলেবাসের অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
দ্বিমূখী শিক্ষার কারণে সমাজে কুরআন ও বিজ্ঞানের যে গভীর সম্পর্ক ও সামঞ্জস্যতা আছে তা কেউ বোঝে না। একটি উদাহরণে ব্যাপারটা পরিস্কার হতে পারে। বিজ্ঞানের ছাত্র হওয়ার কারণে আমি জীন তত্ত্বের ধারণা পাই। ১৬৭৭ সালে লিউয়েন হুকের আবিস্কৃত ভ্রুণ কোষের ধারনা মাথায় নিয়ে আমাদের আপাত জীন বিদ্যাের যবনিকা টানতে হয়েছিলো।
কিন্তু লিউয়েন হকের ভ্রুণ কোষ আবিষ্কারের ১০০০ বছর আগেই যে কুরআনের ২৯নাম্বার সূরা আল-মু’মিনুনের ১২ থেকে ১৪ নং আয়াত পর্যন্ত তা নিয়ে বিশদ আলোচনা এসেছিলো তা আমাদের পুঁজিবাদি শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের জানাতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। নিজ উদ্যোগে কোরআনের অর্থনা ঘাটলে অথবা বই না পড়লে ব্যাপারটা হয়তো বিশদভাবে জানতেই পারতাম না কখনো।

যেহেতু বাংলাদেশে স্কুলের তুলনায় মাদ্রাসার সংখ্যা খুবই কম, তাই আমি মনে করি সকল মাদ্রাসা বন্ধ করে দিয়ে কুরআন হাদীসকে বাংলা-ইংরেজী কিংবা পদার্থ -রসায়নের মতোই বাধ্যতামূলক পাঠ্য করতে হবে।
কাশিমবাজারে একটি দোকান খোলার মাধ্যমে বৃটিশরা আমাদের দেশে সম্রাজ্যের শেকড় গেড়ে বসে দু’শো বছরের জন্য। তারা শুরুতে তাদের নাগরিকদের দিয়ে তাদের সকল প্রশাসনিক কাজ চালালেও পরবর্তীতে এদেশের মানুষদেরেই তারা হাতে কলমে শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করে। যেহেতু মুসলমানদের সাথে ইংরেজদের একটা দূরত্ব শুরু থেকেই ছিলো তাই তারা বৃটিশদরে এই উদ্যোগ বর্জন করে কিন্তু তাদেরই প্রতিবেশী হিন্দু সমাজ এ সুযোগ লুটেপুটে নেয়। বৃটিশ আমল থেকেই এদেশের মুসলমানরা শিক্ষাক্ষেত্রতে পিছিয়ে।
ইতিহাস জানতে একটু পেছন ফেরা যাক
ভারতবর্ষে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর শাসন প্রবর্তিত হওয়ায় শিক্ষার ক্ষেত্রে আমূল সংস্কার সাধিত হয়। ভারতবর্ষের গভর্ণর জেনারেল উইলিয়াম বেন্টিং-এর আমলে এডাম নামে জনৈক স্কটল্যান্ডবাসীকে দিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয় এবং কমিটি এডামস রিপোর্ট (১৮৪৪সালে) নামে সরকারের কাছে সে রিপোর্টটি জমা দেয় তাতে সাত শ্রেণীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কথা ছিল। যেমন : (১) দেশীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় (২) মিশনারী বিদ্যালয় (৩) পারিবারিক বিদ্যালয় (৪) ইংরেজী বিদ্যালয় ও কলেজ (৫) দেশীয় বালিকা বিদ্যালয় (৬) দেশীয় মাইনর বিদ্যালয় ও (৭) বয়ষ্ক বিদ্যালয়। এছাড়া হিন্দু ও মুসলিমদের জন্য পৃথক পৃথক বিদ্যালয় ছিল। তাছাড়া ১৭৬৫ সাল থেকে ১৮১৩ সাল পর্যন্ত প্রত্যেক সম্প্রদায়ের স্ব স্ব ধর্মীয় শিক্ষার সুযোগ ছিল। পরবর্তীতে খ্রিস্টান ধর্ম শিক্ষা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। সেই থেকে শুরু হয়ে স্বাধীনতার আগ পর্যন্ত মোট দশটি এবং স্বাধীনতার পর ড. কুদরতই খোদা শিক্ষা প্রণয়ন কমিটি (১৯৭২-৭৪) থেকে শুরু করে অধ্যাপক কবীর চৌধুরী জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটি (২০১০) পর্যন্ত মোট সাতটি শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়, যার একটিও আমাদের জাতির জন্য কল্যান বয়ে আনতে পারেনি।

ইংরেজদের শিক্ষার প্রতি আগ্রহের কারণ ছিল তাদের সম্রাজ্য চালানোর জন্য যতটুকু শিক্ষা হাতে কলমে দেয়া দরকার তাই দেয়া। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং রাজা রামমোহন রায়ের শিক্ষা সংস্কার আন্দোলনের কারণে ইংরেজরা এই উপমহাদেশে উচ্চশিক্ষার প্রসার ঘটাতে বাধ্য হয়। এখানে লক্ষণীয় যে মুসলমানরা ইংরেজদের সকল উদ্যোগকে যেখান প্রত্যাখ্যান করেছে তাদেরই প্রতিবেশী হিন্দু সমাজ হাত পেতে নিয়েছে সবকিছু।
আর মুসলিম সমাজ তাদের স্বাধীনতা আন্দোলন ফিরিয়ে আনার ব্যস্ততায় মনোযোগ দিতে পারেনি শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে। ব্যাস এ উপমহাদেশে চালু ধর্মীয় ও আধুনিক শিক্ষার নামে দু’ধরনের শিক্ষা ধারাবাহিকতা শুরু হলো। আজকের ভারত যেখানে ইংরেজীতে নিজস্ব অভিধান বের করতে উদ্যোগী সেখানে আমাদের দেশের মাস্টার্স পাশ করা একজন ছেলে শুদ্ধ বাংলা বলতেই হিমশিম খান ইংরেজী পরের ব্যাপার।
আমাদের দেশে যত ধরনের রাজনৈতিক বিপর্যয় এসেছে বিশ্লেষণ শেষে দেখা যাবে সমূলে কুশিক্ষাই দায়ী। সুতরাং সময় এসেছে সুশিক্ষা বাস্তবায়নের। কুরআন-হাদীসের জ্ঞান ছাড়া তা যে অসম্ভ তা সারা বিশ্বের চলমান রাজনৈতিক বয়াবহতার দিকে তাকালেই বোঝা যায়।
যেহেতেু এদেশের স্কুল-কলেজের সংখ্যা অনেক বেশী তাই মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থাকে বন্ধ করে সেই সিলেবাসকে স্কুল কলেজের পূর্ণ পাঠের অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন। যাতে করে একমূখী শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে কুরআন হাদীসের জ্ঞান নিয়ে জাতি উন্নতির শীর্ষে অবস্থান করতে পারে।
আর যদি তা না হয় দেশ তথৈ তথৈ উন্নতিতে ভাসবে ঠিকই নীতি আর রাজনীতি রোগাক্রান্তই রয়ে যাবে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৬
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×