somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

@ সাদ্দামের ফাঁসীঃ ইসলামী বিশ্বের ক্ষতি এবং শত্রুদের হিংস্রতা

৩০ শে ডিসেম্বর, ২০০৬ দুপুর ২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুসলিম বিশ্বের অনেকাংশেই আজ ছিল ঈদের দিন, ঈদ মানেই আনন্দ, আনন্দ মানেই হৃদয়ে খুশীর বন্যা। ইসলামের চরম শত্রু ইয়াহূদী লবির ইশারা-ইঙ্গিতে পরিচালিত খৃষ্টান সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা এবং তাদের দোসর বৃটেনসহ ওদের মিত্রবাহিনীর আক্রমণে একটার পর একটা মুসলিম দেশ তছনছ হয়ে যাচ্ছে। প্রতিজন অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র বাহী দখলদার যোদ্ধার বিপরীতে সাধারণ মানুষ, নিরিহ নারী-শিশু এবং মুসলিম যোদ্ধা মিলিয়ে শতক ছাড়িয়ে হাজারের পথ ধরেছে। দু'জন বন্দীর বিপরীতে যেখানে লেবানন ধ্বংস হচ্ছে। ফিলিস্তিনের হত্যাযজ্ঞ গত বছরের ছেয়ে অনেকগুণ বেশী ছাড়িয়ে গেছে। দুনিয়ব্যাপী এমনসব পৈশাচিক হত্যা-ত্রাস সৃষ্টি করেও তারা তুষ্ট হতে পারেনি। সাদ্দামের অপরাধ যত বড়ই হোক, সাদ্দামের বিচার যেভাবেই হোক, তার ফাঁসি কার্যকর করার ব্যাপারে মুসলিম বিশ্বের 'ঈদের দিন'কে বেছে নেয়ায় মাধ্যমে তারা আঘাত হেনেছে ইসলামের মৌলিকত্বে আর এতে এটাই প্রমাণ করলো যে, তাদের হিংস্র আত্মাগুলো ইসলামের বিরুদ্ধাচরণে মানবতার নূন্যতম অবস্থানেও বহাল নেই।

ইরাকের পরবর্তী হামলা করা হয় ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্রের অজুহাতে, কিন্তু যৌথ বাহিনীর ইরাক দখলের পর তার কিছুই খুঁজে পায়নি তারা। অথচ জরিপে দেখা গেছে যে, ইরাকে প্রতিদিন গড়ে পঞ্চাশ জন করে মানুষ নিহত হয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ অধিকাংশ সাধারণ মানুষ। ধ্বংস হয়ে গেছে একটা জাতি। আজ তাদের নীল নকশানুযায়ী খণ্ডবিখণ্ড হয়ে যাচ্ছে গোটা ইরাক। জাতিগত সহিংসতাকে বেড়ে গেছে অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় অনেকগুণ। এসবের বিচার করবে কে? !@@!336037 !@@!336038 !@@!336039 !@@!336040 !@@!336041 !@@!336042 !@@!336043 !@@!336044 !@@!336045 !@@!336046, কিন্তু লক্ষ লক্ষ ইরাকীকে হত্যা এবং একটি দেশ, জাতি, সভ্যতাকে ধ্বংসের দায়ে আজ কে দেবে ফাঁসীর আদেশ বুশ-ব্লেয়ারের জন্য? হিউম্যান রাইটস নামক সংস্থা কি জবাব দেবে এর? তারা তো মুসলিমসহ ইসলামী বিশ্বের সাধারণ জনগণ নিহত হলে আর চোখে দেখে না, বিপরীত পক্ষে শান্তি শৃংখলা রক্ষার জন্য কোন মুসলিম দেশ সন্ত্রাসীদের দমন করতে র্যাব জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী গঠন করলেই তাদের একটা চোখ গজিয়ে উঠে মাত্র। এ সংস্থার উপর মুসলিমদের আস্থা স্থাপনের কোন মানে হয় না। মুসলমানদের যেন কেউ নেই, মুসলিম নেতৃবৃন্দ আজ তাদের ঐতিহ্য-শক্তিহীন, শুধু শাসক মাত্র, একান্তই ক্ষমতার লোভে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত মাত্র। প্রত্যেকেই তাদের চিন্তা-বিশ্লেষণ-বিবৃতিকে সীমাবদ্ধ রাখছেন সিংহাসনকে ঘিরে। সম্মিলিত মুসলিম জাতির জন্য যেন আজ কেউ নেই।

সাদ্দাম যেসব অপরাধে মুসলিম বিশ্বের কাছে অপরাধী, সেসব অপরাধের মানদণ্ডে ফেললে অতীত-বর্তমানের বহু নেতাই কমবেশী অপরাধী সাবস্ত্য হবেন; নিশ্চিত। কিন্তু ইয়াহূদী লবির পরিকল্পনা এবং আধুনিক কৌশলের মোড়কে মোড়া খৃষ্টান সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের স্বীকার সাদ্দামের পরাজয়কে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ্র লাভ-ক্ষতির মানদণ্ডে কি বিচার করতে পারছেন না মুসলিম শাসকগণ? ওরা একের পর এক মুসলিম দেশকে তছনছ করে দিচ্ছে আর এর প্রতিবাদে মুসলিম শাসকবৃন্দের পর্যায়ক্রমিক নিরবতা ইসলামের শত্রুদেরকে আরো বেপরোয়া করে তুলেছে। সুতরাং সাদ্দামের নিঃশেষ হয়ে যাওয়াকে মুসলিম শাসকবৃন্দ যদি মনে করে থাকেন যে, তাদের শত্রুর পতন হয়েছে, তাহলে অসামান্য ভুল করবেন তারা। ইসলামের শত্রুরা ইতিহাসের কোন প্রান্তেই কাউকে ছাড় দেয়নি, যে তাদেরকে সহযোগিতা করেছে তাকেও নয় আর যে সহযোগিতা করেনি তাকে তো নয়ই। তাই এ কথা পরিস্কার যে, সাদ্দামের নিঃশেষ-পরাজয় ইসলামী বিশ্বের আভ্যন্তরীণ বিবেচনায় যাই হোক না কেন, মুসলিম-অমুসলিম সংঘাত বিবেচনায় ইসলামের একটি বিরাট ক্ষতি হলো এতে। তার বিচার মুসলিমদের পক্ষ থেকে হলে কথা ছিল না, কিন্তু হলো ইসলামের শত্রুদের পক্ষ থেকে, তাও মুসলমানদের খুশীর দিনটিতেই।

একথা আজকের দুনিয়ায় সর্বজন স্বীকৃত যে, মুসলিমদের অধ্বঃপতনের মূল কারণ অনৈক্য। মুসলিম বিশ্বের দেশগুলো যেখানে এক প্লাটফর্মে আসার কথা, সেখানে শত্রুরা খোদ প্রতিটি দেশের ভেতরই সৃষ্টি করে দিচ্ছে গৃহযুদ্ধের ভয়াল পরিবেশ। আর এর পরিণতি হিসেবে বর্তমানের ছোট ছোট দেশগুলোও হয়ে যাচ্ছে আরো ক্ষুদ্র, আরো ছোট, আরো হীনবল, শক্তিহীন; যা ইয়াহূদী-খৃষ্টানদের নীল পরিকল্পনার মৌলিক অংশ। ধীরে ধীরে ইসলামী বিশ্ব হয়ে পড়ছে দুর্বল থেকে দুর্বলতর আর সেখানে স্থান করে নিচ্ছে কোথাও খৃষ্টান রাষ্ট্র- 'পূর্ব তিমুর', কোথাও তাদের তাবেদার শাসক, আফগানিস্তান, বর্তমান ইরাকসহ নতিস্বীকারকারী আরো বহু দেশের শাসকবৃন্দ। এখন ভাবার বিষয় যে, মুসলমানগণ তাদের দ্বীন সম্পর্কে অবহেলা, অবজ্ঞা এবং দ্বীন থেকে সম্পর্কহীনতার জন্য আরো কি পরিমাণ মার খেতে হবে। কতটা ত্যাগ আরো অপেক্ষা করছে তাদের জন্য।

((তোমরা হীনবল হয়ো না এবং চিন্তিত ও হয়ো না; তোমরাই বিজয়ী যদি তোমরা মুমিন হও।)) [সূরা আলে-ইমরানঃ ১৩৯] -এ তো আমাদের শক্তিমান স্রষ্টা, প্রতিপালনক আল্লাহরই ওয়াদা। আর এর চেয়ে বড় সত্য আর কিছু নেই, হতে পারে না। ইতিহাসে আমাদের সোনালী ঐতিহ্য এ সত্যের উদাহরণ। আমরা আজ ঈমানের মানদণ্ডে মুমিনের কোন পর্যায়ে আছি তা আল্লাহই ভাল জানেন। কিন্তু মুমিনের মডেল সম্পর্কে ওয়াকিফহালগণ নিজ থেকে শুরু করে খুব নগন্যই দেখতে পান বর্তমানের প্রেক্ষাপটে সত্যিকারের মুমিন; যাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রয়েছে বিজয়ের ওয়াদা। তাই আমরা হতাশ নই, হতাশা মুমিনের অভিধানে থাকতে নেই কখনো। বিংশ শতাব্দি ছিল ইসলামের রেনেসাঁর শতাব্দি আর একবিংশ শতাব্দি হবে মুসলিমদের সত্যিকারের মুমিন হিসেবে চিন্তা-বিশ্বাসে নয়; বরং সশরীরে জেগে উঠার শতাব্দি। শুরুর এই নিপীড়ন প্রতিটি জেগে উঠারই পূর্বলক্ষণ। শতাব্দির শুরুর এই অত্যাচার-নির্যাতন থেকেই জেগে উঠবে মুসলিম বিশ্ব ঘুম ভাঙ্গা ক্ষুধার্ত সিংহের ন্যায় ইনশাআল্লাহ্।

মূল ছবির জন্য !@@!336569 যেখানে। পরবর্তী ছবিটিতে সাদ্দামের শেষচিঠির অনুবাদ, যা বাংলাভিশন টিভি চ্যানেল থেকে সংগৃহীত এবং কৃতজ্ঞ।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০০৬ দুপুর ২:৪৫
২১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×