ইরাকের পরবর্তী হামলা করা হয় ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্রের অজুহাতে, কিন্তু যৌথ বাহিনীর ইরাক দখলের পর তার কিছুই খুঁজে পায়নি তারা। অথচ জরিপে দেখা গেছে যে, ইরাকে প্রতিদিন গড়ে পঞ্চাশ জন করে মানুষ নিহত হয়েছে, এর মধ্যে রয়েছে নারী, শিশু, বৃদ্ধসহ অধিকাংশ সাধারণ মানুষ। ধ্বংস হয়ে গেছে একটা জাতি। আজ তাদের নীল নকশানুযায়ী খণ্ডবিখণ্ড হয়ে যাচ্ছে গোটা ইরাক। জাতিগত সহিংসতাকে বেড়ে গেছে অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় অনেকগুণ। এসবের বিচার করবে কে? [email protected]@!336037 [email protected]@!336038 [email protected]@!336039 [email protected]@!336040 [email protected]@!336041 [email protected]@!336042 [email protected]@!336043 [email protected]@!336044 [email protected]@!336045 [email protected]@!336046, কিন্তু লক্ষ লক্ষ ইরাকীকে হত্যা এবং একটি দেশ, জাতি, সভ্যতাকে ধ্বংসের দায়ে আজ কে দেবে ফাঁসীর আদেশ বুশ-ব্লেয়ারের জন্য? হিউম্যান রাইটস নামক সংস্থা কি জবাব দেবে এর? তারা তো মুসলিমসহ ইসলামী বিশ্বের সাধারণ জনগণ নিহত হলে আর চোখে দেখে না, বিপরীত পক্ষে শান্তি শৃংখলা রক্ষার জন্য কোন মুসলিম দেশ সন্ত্রাসীদের দমন করতে র্যাব জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনী গঠন করলেই তাদের একটা চোখ গজিয়ে উঠে মাত্র। এ সংস্থার উপর মুসলিমদের আস্থা স্থাপনের কোন মানে হয় না। মুসলমানদের যেন কেউ নেই, মুসলিম নেতৃবৃন্দ আজ তাদের ঐতিহ্য-শক্তিহীন, শুধু শাসক মাত্র, একান্তই ক্ষমতার লোভে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত মাত্র। প্রত্যেকেই তাদের চিন্তা-বিশ্লেষণ-বিবৃতিকে সীমাবদ্ধ রাখছেন সিংহাসনকে ঘিরে। সম্মিলিত মুসলিম জাতির জন্য যেন আজ কেউ নেই।
সাদ্দাম যেসব অপরাধে মুসলিম বিশ্বের কাছে অপরাধী, সেসব অপরাধের মানদণ্ডে ফেললে অতীত-বর্তমানের বহু নেতাই কমবেশী অপরাধী সাবস্ত্য হবেন; নিশ্চিত। কিন্তু ইয়াহূদী লবির পরিকল্পনা এবং আধুনিক কৌশলের মোড়কে মোড়া খৃষ্টান সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের স্বীকার সাদ্দামের পরাজয়কে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ্র লাভ-ক্ষতির মানদণ্ডে কি বিচার করতে পারছেন না মুসলিম শাসকগণ? ওরা একের পর এক মুসলিম দেশকে তছনছ করে দিচ্ছে আর এর প্রতিবাদে মুসলিম শাসকবৃন্দের পর্যায়ক্রমিক নিরবতা ইসলামের শত্রুদেরকে আরো বেপরোয়া করে তুলেছে। সুতরাং সাদ্দামের নিঃশেষ হয়ে যাওয়াকে মুসলিম শাসকবৃন্দ যদি মনে করে থাকেন যে, তাদের শত্রুর পতন হয়েছে, তাহলে অসামান্য ভুল করবেন তারা। ইসলামের শত্রুরা ইতিহাসের কোন প্রান্তেই কাউকে ছাড় দেয়নি, যে তাদেরকে সহযোগিতা করেছে তাকেও নয় আর যে সহযোগিতা করেনি তাকে তো নয়ই। তাই এ কথা পরিস্কার যে, সাদ্দামের নিঃশেষ-পরাজয় ইসলামী বিশ্বের আভ্যন্তরীণ বিবেচনায় যাই হোক না কেন, মুসলিম-অমুসলিম সংঘাত বিবেচনায় ইসলামের একটি বিরাট ক্ষতি হলো এতে। তার বিচার মুসলিমদের পক্ষ থেকে হলে কথা ছিল না, কিন্তু হলো ইসলামের শত্রুদের পক্ষ থেকে, তাও মুসলমানদের খুশীর দিনটিতেই।
একথা আজকের দুনিয়ায় সর্বজন স্বীকৃত যে, মুসলিমদের অধ্বঃপতনের মূল কারণ অনৈক্য। মুসলিম বিশ্বের দেশগুলো যেখানে এক প্লাটফর্মে আসার কথা, সেখানে শত্রুরা খোদ প্রতিটি দেশের ভেতরই সৃষ্টি করে দিচ্ছে গৃহযুদ্ধের ভয়াল পরিবেশ। আর এর পরিণতি হিসেবে বর্তমানের ছোট ছোট দেশগুলোও হয়ে যাচ্ছে আরো ক্ষুদ্র, আরো ছোট, আরো হীনবল, শক্তিহীন; যা ইয়াহূদী-খৃষ্টানদের নীল পরিকল্পনার মৌলিক অংশ। ধীরে ধীরে ইসলামী বিশ্ব হয়ে পড়ছে দুর্বল থেকে দুর্বলতর আর সেখানে স্থান করে নিচ্ছে কোথাও খৃষ্টান রাষ্ট্র- 'পূর্ব তিমুর', কোথাও তাদের তাবেদার শাসক, আফগানিস্তান, বর্তমান ইরাকসহ নতিস্বীকারকারী আরো বহু দেশের শাসকবৃন্দ। এখন ভাবার বিষয় যে, মুসলমানগণ তাদের দ্বীন সম্পর্কে অবহেলা, অবজ্ঞা এবং দ্বীন থেকে সম্পর্কহীনতার জন্য আরো কি পরিমাণ মার খেতে হবে। কতটা ত্যাগ আরো অপেক্ষা করছে তাদের জন্য।
((তোমরা হীনবল হয়ো না এবং চিন্তিত ও হয়ো না; তোমরাই বিজয়ী যদি তোমরা মুমিন হও।)) [সূরা আলে-ইমরানঃ ১৩৯] -এ তো আমাদের শক্তিমান স্রষ্টা, প্রতিপালনক আল্লাহরই ওয়াদা। আর এর চেয়ে বড় সত্য আর কিছু নেই, হতে পারে না। ইতিহাসে আমাদের সোনালী ঐতিহ্য এ সত্যের উদাহরণ। আমরা আজ ঈমানের মানদণ্ডে মুমিনের কোন পর্যায়ে আছি তা আল্লাহই ভাল জানেন। কিন্তু মুমিনের মডেল সম্পর্কে ওয়াকিফহালগণ নিজ থেকে শুরু করে খুব নগন্যই দেখতে পান বর্তমানের প্রেক্ষাপটে সত্যিকারের মুমিন; যাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে রয়েছে বিজয়ের ওয়াদা। তাই আমরা হতাশ নই, হতাশা মুমিনের অভিধানে থাকতে নেই কখনো। বিংশ শতাব্দি ছিল ইসলামের রেনেসাঁর শতাব্দি আর একবিংশ শতাব্দি হবে মুসলিমদের সত্যিকারের মুমিন হিসেবে চিন্তা-বিশ্বাসে নয়; বরং সশরীরে জেগে উঠার শতাব্দি। শুরুর এই নিপীড়ন প্রতিটি জেগে উঠারই পূর্বলক্ষণ। শতাব্দির শুরুর এই অত্যাচার-নির্যাতন থেকেই জেগে উঠবে মুসলিম বিশ্ব ঘুম ভাঙ্গা ক্ষুধার্ত সিংহের ন্যায় ইনশাআল্লাহ্।
মূল ছবির জন্য [email protected]@!336569 যেখানে। পরবর্তী ছবিটিতে সাদ্দামের শেষচিঠির অনুবাদ, যা বাংলাভিশন টিভি চ্যানেল থেকে সংগৃহীত এবং কৃতজ্ঞ।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০০৬ দুপুর ২:৪৫