somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এ কি আজব স্বপ্ন!!!!!!

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৩ রাত ১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ঘুমাচ্ছিলাম।
টিনের চালে ‘ধড়াম’ শব্দে লাফিয়ে উঠলাম।
হুরমুর করে দড়জা খুলে দেখি উঠানে চিৎপটাং শুয়ে এক বুড়ি কোঁকাচ্ছে “মাজা টা গেল গো” বলে।
আমি তো অবাক-এত রাতে এই বুড়ি এলো কোথা থেকে,জীবনে দেখিনি!
পেত্নী নাকি??
ভয় ও পেলাম!!
ওদিকে কোঁকিয়েই যাচ্ছে বুড়ি,আর বিরবির করে কি যেন বলে যাচ্ছে!
মহা মুশকিল!
আস্তে আস্তে এগিয়ে গিয়ে ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করলাম-“আপনি কে”?
দাত মুখ খিঁচিয়ে ধমকে উঠল-“আমারে চিনস্‌ না?”
আমি থতমত খেয়ে আরেকটু ভড়কে গেলাম,না চেনাটা বোধয় অপরাধ ই হয়েছে আমার!
মিনমিন করে বললাম-“না মানে,ঘুম থেকে আচমকা উঠলাম তো,তাই......”
কথা শেষ করার আগেই আবার খিঁচিয়ে উঠল সে-“তরা এই দুনিয়ার মানুষ গুলাই এমন নিমক হারাম,কাজের সময় কাজি,কাজ ফুরাইলেই পাজি!”
কয় কি বুড়ি??
আমি তো এইবার আরো ভয়ে শেষ!!
“এই দুনিয়ার মানুষ” মানে?!! এই বুড়ি কি তাহলে আসলেই পেত্নী নাকি??
আমি ভয়ে ভয়ে আবার জিজ্ঞেস করলাম-“এই দুনিয়ার মানুষ” মানে?!!আপনি কোন দুনিয়ার??
প্রচন্ড বিরক্তি নিয়ে আমার দিকে তাকালো বুড়ি!
আমি সিঁটিয়ে গেলাম!
“ছোট বেলায় তো খুব পাগল ছিলি আমার জন্যে,এখন জুয়ান হইছ আর বুড়ির কথা মনে থাকে না!?
খালি জুয়ান মাইয়া গো মনে পড়ে।”
কোন আত্বিয়া টাত্বিয়া নাকি?কিন্তু এত রাতে......!!
“মায়ের কোলে বইসা বইসা খালি আকাশের দিকে তাকায়া থাকতি আর চান্দের বুড়ির গল্প শুনতি,তখন তো খুব মনে পড়ত আমারে,আর এখন চিনস ই না!!!”
আমি তো থ!!!
চাঁদের বুড়ি এইখানে কেন?? স্বপ্ন নাকি???
“তা চিনবি কেন,এখন যে আমার বিপদ! অথচ কি পরিশ্রমটাই না গেছে তোর মত এমন হাজার টা পুলাপাইনের মন ভড়াইতে!সারাদিন-রাইত বইসা চড়কা ঘুরাইতাম! চাঁদ ও ঘুরে,চড়কাও ঘুরে,ব্যালান্স পাইতাম না,তবুও বিরতি নাই”।
আমি আবার মিনমিন করে জিজ্ঞেস করলাম-“আপনি চাঁদের বুড়ি”??!
এইবার বুড়ি আরো খেপে গেল-“না তো কি?”
“ধুর,মজা নেন,তাই না?”-আমি হেসে জিজ্ঞেস করলাম।
“থাবড়া দিয়া দাত ফালায় দিমু” বলে বুড়ি টা যেই না উঠতে গেল অমনি কোঁকিয়ে উঠল আবার।
আমি দ্রুত এগিয়ে গিয়ে তাকে ধরলাম।
“কি হয়েছে আপনার?” আমি ধরে তাকে উঠালাম।
“কত উচা থিকা পড়ছি বুঝস?মাজা টা গেছে রে!!”
তাকে ধরে নিয়ে বারান্দার পাকা সিঁড়ি তে বসালাম।
বুড়ি এইবার একটু নরম হল।
আমি এবার একটু সাহস নিয়ে প্রশ্ন করলাম-“তা কি মনে করে হঠাৎ চাঁদ থেকে লাফ দিলেন? তাও আবার এমনি এমনিই! আপনার রকেট টকেট নাই?”
বুড়ি আবার বিরক্ত হয়ে ঝাঁঝিয়ে উঠল-“রকেট দিয়া আমি কি করমু? আমার কি কোনখানে যাওয়া লাগে নাকি? আর কেডা জানত এমন ঘটনা ঘটব?!”
এবার আমি একটু উৎসাহিত হয়ে জিজ্ঞেস করলাম-“তা কি এমন ঘটল যে কিছু ছাড়াই ঝাপিয়ে পড়তে হল আপনাকে?!”
এবার তার মুখে ভয়ের ছাপ চোখে পড়ল আমার।একটু আতঙ্কিতও যেন।
আমি বললাম-“পানি খাবেন? পানি দিব?”
“আমার পানি লাগে না। কিচ্ছু জানস্‌ না দেখি!”বললো সে।
“হুম,তা বললেন না কি এমন হয়েছিল যে আপনি এমন লাফিয়ে পড়লেন পৃথিবীতে?”
“কি আর কমু?”-একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে বলা শুরু করল-“আমি প্রতিদিনের মতই চড়কা ঘুরাইতাছি,এমন সময় দেখি একটা লাল দাড়ি অলা লোক পান চিবাইতে চিবাইতে আমার দিকে দৌড়ায় আসতাছে আর চিল্লাইতাছে-‘মেশিন চলবে’!! আমার সামনে আইসা দাড়ায়া গেল আর পান খাওয়া লাল লাল দাত বাইর কইরা একটা হাসি দিয়া কয়-‘মেশিন চলবে,তোমার কাছে লইট্যা ফিশ থাকলে রান্ধ,লইট্যা ফিশ না খাইলে মেশিন ঠিক মত চলে না’!!
আমি কইলাম-‘চড়কা মেশিন তো চলেই’।
সে একটা হাসি দিয়া বলে-‘এই মেশিন না’।
আমি জিগাইলাম-‘তো, কোন মেশিন?’
সে কিছু না বইলা তার পড়নের লুঙ্গি উচাইতে গেল,আর আমিও ভয়ে উলটা দিকে দিলাম দৌড়......
সে পিছন পিছন দৌড়ায় আর চিল্লায়-‘পান চলবে,সাথে মেশিন ও চলবে’!
উপায় না দেইখা দিলাম লাফ!!!
তারপর তো...... আআআআআআ......” বলে বুড়ি আবার কোমড় ধরে কোঁকিয়ে উঠল।
এর মধ্যে কোথ্যেকে যেন কইয়েকটা ধাড়ি ছাগল এসে জুটল আমার উঠানে।
প্রায় শেষ হতে চলা রাতে আকাশের চাঁদের দিকে তাকিয়ে ডেকে উঠল-“ম্যা ম্যা ম্যা ম্যা ম্যা ম্যা......”
ডেকেই চলল,ডেকেই চলল.........
ঘুম ভেঙ্গে দেখি মোবাইল টা তাঁর স্বরে বেজে চলেছে......
ফোন রিসিভ করে ঘুম ঘুম গলায় বললাম-“হ্যালো”
ওপাশ থেকে বন্ধুর গলা-“জানিস,ছাগুরা কি ছড়াচ্ছে এখন?”
আমি মহা বিরক্ত হয়ে জিজ্ঞেস করলাম-“শেষ রাইতে ফোন দিছস এই আজাইরা কথা কইতে?!”
-“আরে বেটা,শুন ই না আগে”।
-‘বল’
-“চান্দে নাকি চুঈদীর চেহারা দেখা গেছে!! হা হা হা ......”
আমি ধরমর করে উঠলাম-“বাইরে আসলেই চাঁদের বুড়ি কোমড় ব্যাথায় কোঁকাচ্ছে না তো?!!”

পূনশ্চঃ ইহা একটি নিতান্তই নীরিহ কাল্পনিক গল্প। বাস্তবের কোন চরিত্রের সাথে মিলে গেলে লেখক দায়ী নহে!! কুনুমতেই না!!
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×