প্রবাসে থাকার সুবাধে প্রবাসীদের জীবনে ঘটে যাওয়া অনেক তিক্ত গল্পই শোনা হয়েছে যেগুলোর সারমর্ম "প্রবাসীরা সবার প্রয়োজন হয় ঠিকই কিন্তু প্রিয়জন হয়না।"
ঘটনা-১:
প্রবাসী তার বাবাকে বিশ্বাস করে সব টাকা বাবার একাউন্টে পাঠাতো। সংসার খরচের জন্য আলাদা করে টাকা পাঠাতো। জমানো টাকা দিয়ে বাবা নিজের নামে জমি কিনে এবং বলে তুমি দেশে আসলে জমি তোমার নামে হেবানামা দলিল করে দিবো। প্রবাসী দেশে আসার আগে বাবা পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়। এখন আইন মতে ঐ জমির অংশীদার সবাই। অন্য ভাই-বোনরাও এই জমির ভাগ দাবি করে। প্রবাসী বিনয় করে ভাই-বোনদের বলে,"তোমাদের প্রয়োজনে যখন যা দরকার বলেছ আমি দিয়েছি" এখন আমার জন্য কেনা জমিটা অন্ত্যত আমাকে দাও।
ঘটনা-২:
প্রবাসী ছুটিতে বেড়াতে গেলে তার বাল্যবন্ধু তার সাথে দেখা করতে আসে এবং তার খুব বিপদ বলে প্রবাসীর কাছ থেকে টাকা ধার নেয়। সরল বিশ্বাসে বন্ধুর বিপদে পাশে দাঁড়ায়। দারিদ্রতার কারনে সেই টাকা পরিশোধ করতে পারে না। বন্ধু বিপদে তাই প্রবাসী তার ধারের টাকা আর চায় না। অথচ, একদিন স্ত্রীর ফোন পেয়ে অবাক হয় এটা শুনে যে তার সেই বন্ধুই তার জমির একাংশ জোড় করে দখল করে বাউন্ডারী দিচ্ছে।
প্রবাসীরা প্রিয় লাল-সবুজের পতাকার দেশটাকে ছেড়ে সুদূর প্রবাসে অবিরাম চেষ্টা করে দারিদ্রতার বলয় থেকে বের হতে। নিজে দরিদ্র বলেই তো প্রবাসে পারি জমিয়েছে। তবুও প্রায় সব প্রবাসীই তার চারপাশের সবাইকে কম বেশি সহায়তা করে। বাবা-মার ভরন পোষন, ছোট ভাই-বোনের পড়ালেখা খরচ, বাড়ির ভিটায় পাকা ঘর তোলা, বোনে বিয়ে খরচ ইত্যাদি প্রবাসী নিজ দায়িত্ব মনে করে হাসিমুখে করে যায়।
এই যে প্রবাসী এতোকিছু যাদের জন্য করছে তাদের সবাই কিন্তু তাকে প্রিয়জন ভাবছেনা। প্রয়োজনে হাসিমুখে মিষ্টি কথা বলছে। যখনই তাদের প্রয়োজনে চাওয়া কিছু দিতে অপারগতা জানায় প্রবাসী তখনই আর সে ভালো না।
প্রবাসীদের উচিত -
=> উপার্জনের সব টাকা বাবা/ভাই/স্ত্রীকে না দেওয়া। নিজের একাউন্টে টাকা জমানো।
=> সবার সাথে সাভাবিক সুসম্পর্ক রাখা। আবেগে গলে না যাওয়া।
=> বাবা/স্ত্রীকে বিশ্বাস করা ভালো তবে সম্পূর্ন নির্ভর করা ঠিক না।
=> দীর্ঘদিন যেনো প্রবাস করতে না হয় সেজন্য নিজের জন্য একটা মাস্টার প্লান করে অর্থ সঞ্চয় করা।
=> নিজের স্বার্থ ঠিক রেখে পরোপকার করা যেতে পারে যা আপনি দেশে আর্থিক সামর্থ্যবান হলেও করতেন।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই অক্টোবর, ২০২২ বিকাল ৫:৪৯