somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সৈকত চৌধুরীকে যিনি প্রশ্ন তুলেছেন - কোরান কি অলৌকিক গ্রন্থ?

১০ ই মার্চ, ২০১১ দুপুর ১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খৈয়ামের সায়রগুলির (রূবাইয়্যাৎ) বাংলা উচ্চারন খুঁজতে গিয়ে হঠাৎ করে বাংলা ভার্সনের ব্লগ চলে এলো । আপনার লেখাটি দেখলাম, পাশাপাশি বিভিন্নজনের মন্তব্যও ।
আপনি আপনার “নিজ”কে খোঁজেন কিনা জানিনে । তবে লেখাপড়া (জ্ঞান নয়)কিছু যে করেন, বুঝতে পেরে ভালো লাগলো ।
আলেক্স হ্যালীর “রুট্স্” বইটির কথা আপনি হয়তো শুনে থাকবেন । মানুষ তার নিজের শেকড়কে খোঁজে, এবং একদিন না একদিন তাকে তা খুঁজতেই হয় । এই ই উপজীব্য বইটির ।
আপনি কি কখোনও নিজেকে খুঁজেছেন, না কি আমরাই বা কেউ খুঁজি ? না, আমি পার্থিব জীবনে রক্তমাংশের ব্যক্তি মানুষের অতীত খুঁজতে বলছিনা । ওটি খুব ছোট প্রেক্ষাপট । সৃষ্টির মূল খোঁজার কথা বলছি । এই বিশাল ব্রম্মান্ডে (য়্যু’নিভার্স) আমার সৃষ্টিটুকুর পেছনে এতো কষ্ট করাই বা কেন আর এই অতিজটিল মহাবিশ্বের মাঝে আমার অস্তিত্বটাই বা কতোখানি, কতোটুকু মূল্যবান, কতোটাই বা মূল্যহীন, প্রয়োজনই বা কি ছিলো ; এইটুকু খোঁজার চেষ্টা করেছি কি আমি কিম্বা আপনি ? করা হয়ে ওঠেনি । প্রোথিত শেকড়ের খোঁজে সাধারন মানুষ মোটেও আগ্রহী নয় কারন তা খুঁজতে গেলে যে হাতিয়ার দরকার, তার নাম হলো – জ্ঞান এবং বিশ্লেষনী ক্ষমতা । এগুলো যোগাড় করা সবার জন্যে সহজ নয় । এর জন্যে থাকতে হবে যুক্তির ধার, অংকে পারদর্শীতা, গভীর চিন্তাশীলতা, পরমত সহিষ্ণুতা এবং গ্রহনের মানসিকতা, বিচার করার বিচক্ষনতা, ধৈর্য্যের গভীরতা এবং সবার উপরে দাগহীন নিমোর্ক একটি হৃদয়, লাইক অ্যা ক্লিন শ্লেট ।
আপনার মাঝে এর বেশ কিছুর অসম্পূর্ণ দেখা মিললেও একটা কথা শুরুতেই বলে রাখি – যুক্তি বা লজিক অনেক রকমের । সুযুক্তি – কুযুক্তি – অযুক্তি । যুক্তির খাতিরে এই বিভাজন আপনাকে মানতেই হবে । বিশ্বাস করি, আপনার সেই সৎ-সাহস আছে ।(উদাহরন দিতে গেলাম না, অনেক লিখতে হবে তাই । কিন্তু ‘সমঝ্দার আদ্মীকো ঈশারা-ই কাফী হোঁতা হ্যাঁয়’)

যে কোনও কারনেই হোক, আপনার মনে একটি প্রশ্নের উদয় হয়েছে যা আপনি “কোরান কি অলৌকিক গ্রন্থ?” এভাবে ইন্টারনেটে তুলে ধরেছেন।
দ্বান্দিক বস্তুবাদ (ডায়ালেকটিকস্)যদি আপনার জানা থাকে তবে আপনি নিশ্চয়ই জানেন, দৃশ্যমান জগতে কোনও এক বা একাধিক কারন ব্যতিরেকে কিছুই ঘটেনা বলে বলা হয়েছে । আবার কারনের ও কার্যকরন থাকে । তাই আপনার প্রশ্নের উত্তর [***] দেয়ার আগে জানা দরকার আপনার এই প্রশ্ন তোলার পেছনের কারন বা কারনগুলি কি ।“মোটিভ” সম্পর্কে ধারনা থাকলে “অপরাধ” কিম্বা “নিরাপরাধ” কোনও সংঘটন সনাক্তকরন সহজতর হয়, বিচার প্রক্রিয়াটি ত্রুটিমুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে, এটি অপরাধ বিজ্ঞানের কথা । ধারনা করা যাক্ -কারনগুলি হতে পারে, আপনার প্রতিদিনকার পরিবেশ থেকে পাওয়া কোন না কোনও ধারনা, আপনার বুদ্ধিমত্তার স্তর থেকে উৎসারিত কোনও না কোনও সংশয়, আপনার পঠিত বিষয়গুলো থেকে প্রাপ্ত ধারনা, নিজস্ব অভিজ্ঞতা বা নিদেন পক্ষে মৌচাকে ঢিল ছুঁড়ে দুষ্টু-ছেলেদের মতো দেখা মৌমাছিতে কামড়ায় কিনা ইত্যাদি । খেয়াল করবেন, যে কোনও কারনের উপর আমি আপনার জন্যে নেতিবাচক কিছু আরোপ করিনি । সুবিচারের স্বার্থে ধরে নিতেই হবে আপনার কারনগুলি (যদি থাকে) মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত যথার্থ ।
[*** “উত্তর” না লিখে আমার লেখা উচিৎ ছিলো, আপনার উত্থাপিত প্রশ্নের বিশদ বিশ্লেষন করার খাতিরে ।]
আমাকে ক্ষমা করবেন, তর্কের খাতিরে নয় যুক্তির খাতিরে যদি আমাকে কখোনো রূঢ় যুক্তি তুলে ধরতে হয় । বিশ্বাস করতে ভালো লাগবে, সে পরিমিতিবোধ আপনার আছে ।
বিশ্লেষনে যাবার আগে জিজ্ঞেস করি আপনি ঠিক কি জানতে চান-
১) কেবল প্রশ্নটির উত্তর ? না কি-
২) আসল সত্যটি কি ? কিম্বা-
৩) একটি সারগর্ভ আলোচনা যা থেকে উভয়পক্ষের ভেবে দেখার বা চিন্তার খোরাক যোগানো যায় ।

আপনি যদি বিশ্লেষনধর্মী বলে নিজেকে মনে করেন তবে জানবেন, প্রথম দু’টি প্রশ্নের ধাঁচ একই রকম হলেও উত্তরটির প্রেক্ষাপট হবে ভিন্ন । সেখানে পক্ষে বিপক্ষে নানা যুক্তির অবতারনা হবে । এরকমের “বাহাস” অনেক হয়েছে । কেউই কাউকে বোঝাতে পারেনি, মানেনি, কেবল নিজের ধারনাটাকেই আগলে রেখেছে ।ফল যা হবার তাই ই হয়েছে ।
প্রথমটির (১) বেলায়(আপনার উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর) দু’টো জিনিষ হতে পারে ।
এক – এককথায় বিষয়টির নিষ্পত্তি । অর্থাৎ প্রশ্নটি খারিজ করা ।অবশ্যই যুক্তি সহকারে ।
দুই – যুক্তির ব্যবহার, তথ্য ও তত্ত্ব সমাহারে আপনার ধারনার (অনেক ধারনার কথাই দেখলাম আপনি লিখেছেন) জবাব দেয়া ।

আর আপনি যদি তৃতীয়টি (৩) তে যেতে চান তবে তাও হতে পারে । আমার ব্যক্তিগত মতামত, এটি ই সবার জন্যে মঙ্গলকর ।

আমি সবকিছু মিলিয়ে আপনার জিজ্ঞাসার জবাবে সত্যটি তুলে ধরার চেষ্টা করবো এবং আপনার কাছ থেকেও অধিকতর যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা আশা করবো ।

আপনি লিখেছেন “অলৌকিক”। অলৌকিক শব্দটি একটি বিশেষন পদ । অলৌকিক শব্দের আভিধানিক অর্থ - …..
১)মনুষ্যের পক্ষে বা মনুষ্যলোকে অসম্ভব ।
২) যাহা পৃথিবীর নয় এমোন ।
৩)লোকাতীত ।
[সংসদ বাংলা অভিধান / সাহিত্য সংসদ / কোলকাতা]
১) ইহলোকের নয় এমোন ।
২)মনুষ্যের পক্ষে বা মনুষ্যলোকে অসম্ভব ।
৩)লোকাতীত ।
[ব্যবহারিক বাংলা অভিধান / বাংলা একাডেমী / ঢাকা]
আমরা এর মূল ধাতু কিম্বা এর উৎপত্তি, ব্যবহার ইত্যাদি আলোচনায় গেলাম না ।

উপরের অর্থগুলো বিবেচনায় নিলে একথাই বোঝা যায় যে আপনার প্রশ্নের অর্ন্তনিহিত অর্থ হোল- কোরান নামের ধর্মগ্রন্থটি মানুষ সৃষ্ট, তাইতো ? যদি তাই ধরে নিই, তবে আমরা এভাবে আলোচনাটি এগিয়ে নিতে পারি –
মানুষ কি নিজেই ধর্ম সৃষ্টি করে না কি সে ক্ষমতা সে রাখে ? বলবেন, হ্যা করে । ক্ষেত্র বিশেষে করে হয়তো (ভুরি ভুরি উদাহরন আছে)।একটি অতীব ক্ষুদ্র গন্ডীর মধ্যে তার বিচরন এবং তা আয়ুহীন । তা নিজেরই স্বার্থে ।একথা নিশ্চয়ই এতোদিনে বুঝেছেন । ধর্ম সৃষ্টির প্রয়োজন হয় সমাজের বিভিন্ন উপাদানের মিথোস্ক্রিয়ার ফলে । কে বা কারা করেন, এ প্রসংগে ধীরে ধীরে আসা যাবে । প্রচলিত বড় বড় ধর্মগুলি কিন্তু একজন নিরাকার সৃষ্টিকর্তার উপর নির্ভর করেই গড়ে উঠেছে । সব ধর্মের ইতিহাস বা তাদের মূল গ্রন্থগুলো পড়লেই জানা যাবে যে, কোন ধর্ম কোন প্রেক্ষাপটে হাজির করা হয়েছে । সব ধর্মাবলম্বীরাই মনে করেন তাদের কাছে যে বাণী রয়েছে তা সেই একজন সৃষ্টিকর্তা প্রেরিত ।

আপনি যেহেতু প্রকারন্তরে নিজেকে নাস্তিক যার অর্থ সৃষ্টিকর্তায় অবিশ্বাসী এমোন দাবী করছেন(অথচ তাও পরিষ্কার নয়, যেহেতু আবার ধর্মালোচনাও করতে চাচ্ছেন) তাই আপনার কাছে সৃষ্টিকর্তা নামের কারো প্রেরিত কোনও বাণীর অস্তিত্বই থাকার কথা নয় ।অথচ আপনি এরকম একটি অস্তিত্বের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন । এর মানে- নিজের অজান্তে, নিজের অবিচল বিশ্বাসের বাইরে পা ফেলেছেন ভাবনা চিন্তা না করে অথবা কিছু না বুঝে নিছক অজ্ঞতার কারনে ।
কারন নীতিগত ভাবে যে অস্তিত্বে আপনার বিশ্বাসই নেই তার অস্তিত্ব আছে কি নেই এমোন প্রশ্ন তুলে স্ববিরোধীতা করলেন কিনা, এই আশংকা থেকেই গেল ।যার অস্তিত্ব নেই বলে মনে করেন আবার পাশাপাশি দেখতে চান- তা আছে কি নেই, এটি আপনার মনের দোদুল্যমানতা প্রমান করে । এতে আপনি যে নিজের বিশ্বাসেও অটল থাকতে পারলেন না তা প্রমানিত হোল ।
যাই হোক্ – আপনি এমোন একটি একপেশে ক্ষুদ্র প্রশ্ন তুললেন কেন ? অন্যান্য প্রধান প্রধান ধর্মগুলো কি অলৌকিক নয় ? আপনার এই প্রশ্নটি কোরআন এর ভেতর সীমাবদ্ধ রেখেছেন কেবল ।এর একটি মনস্তাত্বিক ব্যাখ্যা দেয়া যেতে পারে যা সময়মতো দেয়া যাবে ।
ইন্জিল (বর্তমানের বাইবেল) বা তাওরীৎ (বর্তমানের তোরাহ্) এবং যবুর (সম্ভবত বিলুপ্ত)এই ধর্মগ্রন্থগুলো কি লৌকিক বা মনুষ্য সৃষ্টি আপনার দৃষ্টিতে ? উত্তরটি যে আপনার কাছে ‘হ্যা’ তা নিষ্চিত বোঝা যায় এদের সম্পর্কে কোনও প্রশ্ন আপনি তোলেননি বিধায় । না তোলার পেছনে কারন কি এটাই যে, ওগুলো মানুষের তৈরী ? তাই ই যদি হয় তবে বুঝতে হবে, খ্রীষ্টান এবং ইহুদীধর্মাবলম্বীরা নিজেরাই এক একটি ধর্ম বানিয়ে নিয়েছে । আপনার প্রশ্ন না তোলার জণ্যে যা পরিষ্কার ।এখোন প্রশ্ন হোল- ওরা যদি নিজেরাই ধর্ম বানিয়ে থাকে তবে উপাসনালয়ে অদৃশ্য কারো কাছে হাটু গেড়ে বসে কেন ? এগুলো কি আপনি কখোনও দেখেন নি, না-কি জানেন না ? যদি দেখে থাকেন এবং জানেন তবে কেবল মাত্র ‘কোরআন’ অনুসারীদের প্রশ্নবিদ্ধ করলেন কেন ? যখোন করেই ফেলেছেন তখোন আপনার নিরপেক্ষতাকে লক্ষকোটি প্রশ্নবোধক চিহ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দিলেন নিজেই । বোঝা গেল আপনি পক্ষপাতদুষ্ট বা একটি বিশেষ ধর্মের প্রতি ক্ষোভাক্রান্ত । আর পক্ষপাতদুষ্ট প্রশ্নের পেছনে থাকে সৎ কিম্বা অসৎ উদ্দেশ্যের যে কোনও একটি । কোনটি, একমাত্র আপনিই তা ভালো বলতে পারবেন ।
কারন আপনি “হোমো স্যাপিয়েন্স” গোত্রের প্রানী । আপনার মগজের নিউরোনে নিউরোনে যে লক্ষকোটি খেলা চলে তা অন্য কোনও প্রাণীর বেলায় তেমন খেলে যায় না । তাই আপনি “সৃষ্টির শ্রেষ্ট” । নাকি এতেও আপনার আপত্তি আছে ? কারন এটিও কিন্তু কোরআনের একটি বাণী।

যদি আপনি “অলৌকিক” শব্দটি দ্বারা “ঐশ্বরিক” এর অর্থটি বোঝাতে চান তবে বলবো, গোড়াতেই ভুল ।
“অলৌকিক” আর “ঐশ্বরিক” শব্দদু’টি সমার্থক নয় । যদিও প্রচলিত ভাবে আমরা লোকজ ব্যাখ্যার বাইরের কিছুকেই ঐশ্বরিক বলে ধরে নিই। এটা আমাদের অবহেলা, অজ্ঞতা তো বটেই। ঐশ্বরিক শব্দটির মধ্যে একজন ঈশ্বরের অস্তিত্ব থাকতেই হবে ।(আভিধানিক অর্থ জ্ঞানতই বাদ দিলাম) আর অলৌকিক শব্দটির ভেতর থাকে মানুষের ধারনার অতীত বা ব্যাখ্যাতীত কিছুর প্রতি ঈংগিত, ঈশ্বরের অস্তিত্ব না থাকলেও চলে সেখানে ।

মূল বিষয়ে যাবার আগে আপনার কয়েকটি মন্তব্যের প্রতি আপনার দৃষ্টি আকর্ষন করছি যাতে করে আপনি ভবিষ্যতে সতর্ক হতে পারেন ।
আপনি লিখেছেন – কোরান বুঝার জন্য আরবি শিখি, হিন্দুদের বেদ বুঝার জন্য সংস্কৃত শিখি, ইহুদিদের ওল্ড টেস্টামেন্ট বুঝার জন্য হিব্রু শিখি, খ্রিস্টানদের নিউ টেস্টামেন্ট বুঝার জন্য গ্রীক শিখি, বৌদ্ধদের ত্রিপিটক বুঝার জন্য পালি শিখি - এভাবে কতদূর চলবে?
এতো অধৈর্য্য হলে চলবে কি করে? একজন নিরীক্ষককে যদি নিরীক্ষার খাতিরে প্রস্তরযুগের শীলালিপিও পড়ে দেখতে হয় তবে সে জ্ঞানটুকুও তার অবশ্যই থাকা উচিৎ নতুবা ঐ জ্ঞানে পারদর্শী কারো সাহায্য নিতে হয় । নতুবা তার ঐ ব্যবসা ছেড়ে দেয়া উচিৎ । আপনার কথাতে মনে হচ্ছে আপনার এসবের দরকার নেই, আপনি নিজেই সব জানেন-এর বাইরে জানার প্রয়োজনও নেই । এরকম ধারনা থাকা ঠিক নয় ।এটা আপনার বিদ্যাবুদ্ধি যে নীম্নস্তরের এমোন ইঙ্গিত দেয় । আমার ধারনা ছিলো, আমার কেনো অনেকেরই ধারনা, অবিশ্বাসীরা প্রচন্ড বুদ্ধি রাখে, যুক্তিতে ধার থাকে, বিচার-বুদ্ধিতে অসাধারন হয় । কিন্ত আপনার ভেতরে এসবের অভাব দেখে আবারো কষ্ট পেলাম । আপনি কি খাঁটি মাছ শিকারী দেখেছেন যারা পানিতে ছিপ্‌ ফেলে ঘন্টার পর ঘন্টা চুপচাপ বসে থাকে, হুশ্ থাকেনা চারপাশের, কখোন একটি বড় মাছ ফাৎনায় টান দেবে এই আশায় ? দিন যায় ফাৎনায় টান পরেনা । আবার পরের দিন সেই একই ধৈর্য্যের পরীক্ষা । আর আপনি শখের মাছ শিকারীও দেখতে পাবেন, যারা ধুপধাপ করে জল ছিটিয়ে, ঘোলা করে হুস-হাস করে খানকয়েক পুঁটিমাছ ধরে মনের আনন্দে বাড়ী ফেরে এই ভেবে যে অনেক হয়েছে ।
আপনি কি ঐ হীরক রাজার দেশে আছেন যেখানে সবার মগজ ধোলাই হয়েছে এই কথা দিয়ে –‘জানার কোনও শেষ নাই, জানার ইচ্ছা বৃথা তাই” ? আপনার এই পলায়নী মনোবৃত্তি মানা গেলনা বলে দুঃখিত ।

আপনি আরো লিখেছেন – মানুষ নবী ও রাসূল হতে পারে ……………..আরো প্রমাণ করতে হবে- মুহাম্মদ দীর্ঘ ২৩ বছর পুরো মানসিকভাবে সুস্থ ছিলেন এবং কখনো ইচ্ছাকৃতভাবে বা বাধ্য হয়ে বা পরিস্থিতির শিকার হয়েও নিজের বা অন্য কারো রচনাকে ওহী বা প্রত্যাদেশ বলে ঘোষণা দেন নি।
- সুতরাং কেউ যদি কিছু বলতে (ঘোষনা দিতে) চায় তবে আপনার সূত্র অনুযায়ী তার সুস্থতার সার্টিফিকেট দরকার, এইতো ?
অথচ আপনি এখানে নিজেই ঘোষনা দিয়েছেন – “কোরানের অলৌকিকতাঃ প্রমাণের দায়িত্ব কার” এবং অনেক কথা বলেছেন এবং আগামীতে বলবেন মনে হচ্ছে ।
একই কারনে আপনারও একটি সুস্থতার সার্টিফিকেট থাকলে ভালো হোত, আপনি ঐ কথাটি বলার যোগ্যতা রাখতেন বা আপনার ম্যরালিটি থাকতো । আপনার বিপক্ষদল আঙ্গুল তুলতে পারতোনা আপনার মানসিক সুস্থ্যতার উপর । যেহেতু প্রশ্নটির অবতারনা আপনিই করেছেন তাই সবদিক থেকে এটিই ভালো যে, আগামী সময়গুলো থেকে আপনি আপনার “মানসিক সুস্থ্যতার” একটি সার্টিফিকেট সবার জ্ঞাতার্থে প্রকাশ করবেন ।একটা প্রবাদ আছে “আপনি আচরী ধর্ম, পর কো শেখাও”। নিজের দেয়া যুক্তির প্রতি আস্থা থাকলে আপনার তাই ই করা উচিৎ । নাকি, এমোন যুক্তি আপনার নিজের বেলায় খাটবেনা, এই রকম একটি ফতোয়া দিয়ে বসবেন ?

আপনি আরো লিখেছেন – মোট কথা, কেউ যদি কোরানকে আল্লাহর দ্বারা রচিত বলে দাবি করেন তবে-
১। এ দাবি প্রমাণ করার দায়িত্ব সম্পূর্ণ তারই । তাকে কোরানের সব বাক্য ও শব্দ আল্লাহ রচিত এবং কোরানের সাথে অন্য কিছুর সামান্যতম মিশ্রণও ঘটে নি বলে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণ করতে হবে।

আপনি নিশ্চয়ই জানেন, মানুষের ( মানুষের উদাহরন দিলাম বা বললাম এই কারনে যে, আপনি একজন মানুষ তাই ) আদালতে কি প্রক্রিয়ায় বিচার চলে ? সরাসরি অভিজ্ঞতা না থাকলেও টিভি কিম্বা সিনেমায় দেখে থাকবেন । সেখানে উভয় পক্ষকে ( বাদী এবং আসামী) জেরা বা প্রশ্ন করা হয় । কে করেন ? উভয় পক্ষের উকিলই তা করে থাকেন । কাকে করেন ? বাদীর উকিল যেমন আসামীকে জেরা করেন তেমনি বাদীকেও করেন ।আবার আসামীপক্ষের উকিলও তাই করে থাকেন । বাদীকেও জবাব দিতে হয় । বাদী কখোনও এটা বলার অধিকার রাখেননা, যেহেতু তিনি অভিযোগকারী তাই তার জবাব দেয়ার কথা নয়, সব আসামীকেই বলতে হবে এবং আসামীকেই খন্ডন করতে হবে ।
তাহলে দেখা যাচ্ছে - আপনার ভেতর সহিষ্ণুতা, কোন কিছু বুঝে ওঠার জ্ঞানের ঘাটতি ইত্যাদি আছে যথেষ্ট । (অসমাপ্ত । চলবে..)

আজ এ পর্যন্তই । পরবর্তীতে নিজের হালকা একটু পরিচয় সহ বাকী আলোচনায় যেতে ইচ্ছে রাখি যদি আপনি সম্মতি দেন ।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০১১ সকাল ১১:১৭
১৯টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×