somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এপার-ওপার

২৭ শে মে, ২০২৩ রাত ১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাঝে মাঝে এই পর্যায়টা আসে, সেদিন কোথাও বের হতে ইচ্ছে করে না. চিলেকোঠার ছাদের এক কোনায় বসে থাকতেই ইচ্ছে করে। সেদিন রাত দেখতে ভালো লাগে। ভাগ্য ভালো থাকলে আকাশ পরিস্কার থাকে। খন্ড খন্ড কালো অথবা গাড় ধূসর মেঘ ভাসতে দেখা যায়৷ কিন্তু পূর্নিমার রাত কেন জানি ভালো লাগে না। এসব রাত গুলোয় ক্ষুধা বা তৃষ্ণা কিছুই লাগে না।

রাত ১ টার পর এলাকার প্রায় সব বাড়িই অন্ধকার হয়ে যায়। টুকটাক করে এক এক বাসা থেকে আলো জ্বলে আর নিভে। এসব ভালো লাগে দেখতে। খাপছাড়া রাত। কোন চিন্তা ভাবনা নেই, কোন ভবিষ্যতের ডাক নেই, কারো কোনো আহবানও নেই। নিজের মত একদম। যেন নিজেকেই সময় দেয়া।
ছাত্রকালে এক অভ্যাস ছিল। পরীক্ষার হলে লিখতে ইচ্ছে হোতো না। প্রিপারেশন ভালো, প্রশ্নও কমন কেবল লিখতেই ইচ্ছে হোতো না। মনের খেয়াল। মনের খেয়াল খুব প্রাধান্য পেত হোসেনের জীবনে।এখনও পায়। এই যেমন আজ।
আজ ভাগ্যে খানিক ভালো, কিছু আলো আছে আকাশে। তবে কালো মেঘের আনাগোনাই বেশি। কিছুক্ষন পর পর অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। অন্ধকারে হোসেন নিজের দিকে তাকায়, আবছা হাত, পা দেখা যায়৷

অন্ধকারে হোসেনের গ্রামের কথা মনে পড়ে। গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে নদী। পাড় ভাংগা নদী। বর্ষায় পাড় ভাংতে ভাংতে বিলীন হয়েছে অনেক কিছু। কত বিলাপ, কত আহাজারি মানুষের। শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে অসহায় কতজন। বিকেলে হোসেন নদীর পাড় ঘেষে হেটে বেড়াত। পাড়ে দাঁড়িয়ে নদীর বয়ে চলা দেখত। দেখত ওপারে জেগেছে ভূমি। এপার ভেংগে ওপার গড়ে উঠছে। সবুজে ছেয়ে গেছে।
আচ্ছা এপারে যা হারিয়েছে ওপারে কি ঠিক তাই গড়ে উঠেছে? হয়ত ওপারেও কোন একদিন জনপদ গড়ে উঠবে কিন্তু এপারে যেমন ছিল তাই কি হবে? এই নদীর স্রোতে যা ভেসে গেছে তা কি কখনো আর ফিরে পাওয়া যাবে? কোথায় কোথায় না জানি হয়ত ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাবে না হয় হারিয়েই যাবে তার গর্ভে। হয়ত শত বছর পর একদিন এ নদী শুকালে উন্মোচন হবে, হারানো জিনিসের স্মৃতি বয়ে বেড়ানো মানুষটা কে কি আর পাওয়া যাবে?
মানুষের মনেও তো এমন ভাংগা গড়া চলে। দুটি মানুষের মধ্যে সম্পর্কের ভাংগন হয় আবার গড়েও। যা ভাংগে ঠিক তাই কি আর গড়ে? এই সময় কি নদীর মত বহমান নয়? সময় কি কেড়ে নিয়ে যায় না অনেক কিছুই? একজনের মনের কস্ট কি ঠিক অপর পাড়ের মানুষের মধ্যে পৌছায়? নাকি সময় নদীতেই ভেসে যায়। কস্টের ওজন বেশি হলে হয়ত বিলীন ই হয়ে যায়। হয়ত ভাসতে ভাসতে আরেক মানুষের পাড়ে গিয়ে পড়ে। হয়ত।
দুটি মানুষ যেন দুটি পাড়। তাদের মাঝের সম্পর্ক যেন বয়ে চলা এক নদীই। কখনো গভীর, কখনো খরস্রোতা। মনের আদান প্রদান যেন নৌকা। কখনো উজানে বয় কখনো ভাটিতে। ওই চাঁদ যেন অনূভুতি আর আবেগ। কখনো জোয়ারে আছড়ে পড়ে তো কখনো ভাটায় টান পড়ে। ওই পাড়েই ভাংগন ধরে আবার ওই পাড় ভেংগেই নতুন পাড় জাগে। মৌসুমে ওই নদীতে চর জাগে আবার কানায় কানায় জল।

কি মিল প্রকৃতির সাথে।

কখনো কখনো কোনো দূর্যোগে নদীর গতিপথ বদলে যায়, নদী থেকে তৈরী হয় শাখা নদী। মূল নদীর পানি বিভত্ত হয়। যে নদীর পানি নদীর একক অধিকারে ছিল তা কখন যে ভাগ হয়ে যায় নদী হয়ত তা টেরই পায় না। এত সব কিছু ঘটে মানুষের চোখের সামনেই। নিজের জীবনেও ঘটে যায় হয়ত তাও মানুষ বোঝে না। সৃস্টিকর্তার দেয়া দুটি চোখ দিয়ে দেখা ছাড়া মানুষ আর কোনো চোখের সন্ধান করেনি কখনোই।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০২৩ রাত ১:১৫
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×