somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলায় গুগল, গুগলে বাংলা . . .

২৯ শে জানুয়ারি, ২০০৯ বিকাল ৩:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশে যারা নেট ব্যবহার করেন, আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটের কারনেই ইংরেজি পড়ে বুঝতে পারাটা তাদের সাধ্যের বাইরে নয়। ঐতিহাসিকভাবে এটা সত্যি যে বাংলাদেশের নেট ব্যবহারকারীদের কম্পিউটারের সাথে পরিচয় হয় এম এস ওয়ার্ড ব্যবহার করে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই সেটার অপারেশনাল ইন্টারফেস ইংরেজিতেই হয়ে থাকে। সেই ইন্টারফেস ব্যবহার করে গড়ে ওঠা কম্পিউটার ব্যবহারের অভ্যস্ততা , এখন গুগলের বাংলা ইন্টারফেস অনুবাদের ক্ষেত্রে আসলে একটা সমস্যা।

ইংরেজি না জানলে ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদের ব্যাপারে মত দেবে কি করে একটা মানুষ? মজাটা এখনেই যে যারা গুগলের অনুবাদের নীতি নির্ধারণে সাধারণ ব্যবহারকারী হিসেবে মত প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছেন তাদের অনেকেই যে শুধু ইংরেজি জানেন তা না একই সাথে বাংলায় প্রযুক্তিকে দেখতেও অনভ্যস্ত। এর সাথে যোগ হয়েছে বাংলা শব্দ ভান্ডারের সাথে যথেষ্ট মিথষ্ক্রিয়া না থাকা। একথা স্পষ্ট যে দিনকে দিন সাহিত্যের পাঠক কমছে বাড়ছে ডিভিডির ক্রেতা। স্বাভাবিক পরিণতি “এপোকোলিপ্টো”কে গ্রহণ করতে পারার মানষিকতা এবং “সঞ্চিত পাতা” কে “উদ্ভট বাংলা” মনে করা। আর এর চূড়ান্ত পরিণতি প্রবলভাবে ইংরেজি প্রাভাবিত “অনুবাদকৃত বাংলা” র গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠা। সঞ্চিতা বা সঞ্চয়িতা শব্দের সাথে পরিচয় থাকলে শব্দ হিসেবে “সঞ্চিত পাতা” কে উদ্ভট বাংলা মনে হওয়ার কথা না cached এর বাংলা হিসেবে।

বাংলাতে প্রযুক্তিকে দেখার জন্য আমাদের যতটা আবেগ কাজ করে, “বাংলা” তে অনূদিত গুগল মেনে নেয়ার জন্য মন ততটা প্রস্তুত না। এটাই বাস্তবতা যে “অনুবাদ” এর চেয়ে “বাংলা বর্ণমালায় ইংরেজী শব্দ” সিংহভাগের কাছে আরামদায়ক হবে। আর এখানেই চলে আসে প্রচলিত আর অপ্রচলিত শব্দের ব্যবহার নিয়ে রশি টানাটানি। কিভাবে নির্ধারণ করা যাবে যে একটা শব্দ অপ্রচলিত? যে সঞ্চিতা বা সঞ্চয়িতা শব্দের সাথে পরিচিত তার কাছে “সঞ্চিত পাতা” অপ্রচলিত হওয়ার কোন কারণ নেই। কিভাবে নির্ধারণ করা যাবে “হোমপেজ” এর বাংলা “নীড়পাতা” অগ্রহণযোগ্য? অথবা “লিংক” “সংযোগ” হবে কি হবে না?

গুগলে যখন অনুবাদ করছিলাম, তখন ইংরেজি বর্ণমালা ব্যবহার করে লেখা বাংলা দেখে যত না অবাক হয়েছি তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছি বোধহীনভাবে ইচ্ছামত শব্দ বসিয়ে দেয়ার প্রবণতা দেখে। তখন মনে হয়েছিলো যে বা যারা অনুবাদের ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন, বাংলায় সর্বোচ্চ “আবার জিগায়-কোপা শামসু-আয় জাইগা” মানের অভ্যস্ততা নিয়ে অন্তত অনুবাদে আসা উচিত হয়নি। নাহ! স্বেচ্ছাশ্রমে অনুবাদ করতে গেলে ব্যাকরণবিদ হওয়া লাগবে না নিশ্চয়, তবে বাংলা শব্দ ভান্ডারের সাথে যথেষ্ট মিথষ্ক্রিয়া থাকাটা কাম্য। তা না থাকলে অনূদিত শব্দকে উদ্ভট লাগবে অথবা গড়ে সব ইংরেজি শব্দকে বাংলায় আত্মিকরণের ইচ্ছা হবে।

অনুবাদের সমস্যা এখন এই যে সহজবোধ্যতা থাকতে হবে ঠিকই কিন্তু সেটা যদি সেরকম সাধারণ ব্যবহারকারীর সহজবোধ্যতার জন্য তৈরী হয় যারা নথি, সঞ্চিত পাতা, সংযোগ ইত্যাকার বাংলাকে মেনে নিতে অক্ষম, তাহলে সেই অনুবাদ “অনুবাদ” হবেনা, হবে বাংলা বর্ণমালা ব্যবহার করে লেখা ইংরেজি। সুতরাং “সহজবোধ্যতা” ‘র একটা মাত্রা ঠিক করে নিতেই হবে।

আর একটা ব্যাপার, তখন একই সাথে “কেমন কেমন” এক ধরণের বাংলা দেখেছিলাম, পরে জানলাম বুঝলাম যে সেগুলো পশ্চিম বাংলায় করা। এই দূরত্ব না কমলে অনুবাদ শেষ পর্যন্ত “ভাষিক সংঘর্ষ” হয়ে উঠবে।


পুনশ্চঃ রাগিব হাসানের গুগলের বাংলা ইন্টারফেইসে কী সমস্যা? জানিয়ে দিন সরাসরি গুগলকেই ... প্রসঙ্গে লেখা।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ রাত ১:১৩
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×