somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এতোদিন আমি কেন ব্লগ থেকে দূরে ছিলাম!

২৯ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আসসালামুআলাইকুম। আশা করি সবাই ভালো আছেন। অনেক দিন পর ব্লগে এলাম। ব্লগে লগডইন তো দূরের কথা ব্লগ ওপেন পর্যন্ত করতে পারিনি। না না, ব্লক থাকার কারনে নয়, বরং আমার অসুস্থতার কারনে। এতো বেশি অসুস্থ মনে হয় এর আগে হইনি। সর্বশেষ ১৪ মার্চ ২০১৯ ভৃগুদার ও গঙ্গা তুমি বইছ কেন পোস্টে মন্তব্য করেছিলাম। আসলে সমস্যা সেদিন থেকেই।

সকালে ঘুম থেকে উঠে অনুভব করলাম সারা শরীর ব্যাথা। কেউ যেন লাঠি দিয়ে পিটিয়েছে। হঠাৎ করে এমন শরীর ব্যাথার হেতু বুঝতে পারলাম না। সেই দিন রাতে রুমে একা শুয়ে আছি। ঘুম ভেঙে গেলো প্রচন্ড শীতে। রুমমেটও ছুটি নিয়ে বাড়িতে গেছে। শীতের শেষে বসন্তের আগমনে আবহাওয়াও বেশ মানানসই। সে কারনেই কম্বল প‌্যাকেটে ভরে রেখেছি।

ঢোক গিলতে পারছি না। গলাও ব্যাথা করছে। এক গ্লাস পানি খাওয়া দরকার। টেবিলের উপর রাখা বোতল থেকে ডানহাতটা বাড়িয়ে কোনমতে দুই ঢোক পানি পান করলাম। রুমমেটের খাটে অযত্নে পরে থাকা লেপ এনে গায়ে জড়িয়ে শুয়ে পরলাম। এতো শীত মনে হয় শীতের দিনেও লাগে না। শীত আবার ফিরে এলো নাকি?

সকাল হবার আগেই ঘুম ভেঙে গেল। এখন আর শীত লাগছে না। তার মানে রাতের বেলা জ্বর এসে রাতেই চলে গেছে। কিন্তু জ্বরের রেশ সারা শরীর জুরে। ব্যাথায় শরীরে জামা গায়ে দিতে কষ্ট হচ্ছে। হাত-মুখ ধুঁয়ে ডাইনিং টেবিলে খেতে গিয়ে অনুভব করলাম মুখের সব স্বাদ চলে গেছে জ্বরের তীব্রতার কারনে। একবারের বেশি মুখে দিতে ইচ্ছে করলো না। পানি মুখে দিয়ে তাও বিস্বাদ লাগলো। দুপুরেও কিছু খেলাম না। রাতে একটা ডিম ভাজি দিয়ে কিছু ভাত খাওয়ার চেষ্টা করলাম। তাতেও পুরোপুরি সফল হলাম না। সারা রাত ঘুমাতে পারি নি। কোন বিরহে হয়, বেদনায়। শরীরের বেদনায়। পেটের মধ্যে যে পরিমান ক্ষুদা তাতে করে মনে হচ্ছে ইট-পাথর সব খাই। অথচ ভাতই গলা দিয়ে চালান করতে সমস্যা হচ্ছে। মনে হচ্ছে আমার গলা থেকে যে রাস্তা পাকস্থলি পর্যন্ত বিস্তৃত তাতে কেও একজন ট্রানজিট দিচ্ছে না বিধায় মালামাল পেটে চালান করতে পারছি না। ট্রানজিট সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য গেলাম পাশের বাজারে এক ক্লিনিকে, ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার সাহেব বললেন লাইন ক্লিয়ার করা যাবে তবে আপনাকে গুনতে হবে মোটা অংকের টাকা। ডাক্তার সাহেব পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে জানালেন অতি সূক্ষ্ম টাইফয়েড জীবানু আপনার শরীরে বাসা বেঁধেছে পরিবার সমেত। এখনই ট্রিটমেন্ট না করালে তারা বংশবিস্তার করতে পারে অপরিকল্পিত ভাবে।

ঔষধ খাচ্ছি। জ্বর কমার কোন নাম গন্ধ নেই। এ কয়দিন বাড়িতে বলিনি যে এই অবস্থা। বাড়িতে বললে আরো বেশি টেনশন করবে। এখন চেহারার যে অবস্থা করেছি না খেয়ে খেয়ে, মনে হচ্ছে বলতেই হবে। প্রথমে আয়েশাকে বললাম। তারপর মাকে। শুরু হলো ফোনের পর ফোন। ১০-১৫ মিনিট পরপর। কেমন আছি জানা বাদ দিয়ে খবর নিচ্ছে জ্বরের। সবাই বলছে ''জ্বর কেমন হয়েছে?" জ্বর কমছে কিনা! কিন্তু কেউ আমার খবর নিচ্ছে না দেখে অবশেষে বাড়িতেই চলে গেলাম। সবার যত্ন-আত্মিতে ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকি।

গতকাল আসলাম ঢাকায়। অফিসে আসলাম আজ সকালে। আমাদের ফ্যাক্টরি টাইম ২৪/৭ । সপ্তাহে একদিন অফ ডে। অফিসে এসেই কম্পিউটার থেকে লগডইন করেই পোস্ট করার সিদ্ধান্ত নিলাম।

এর মাঝে এতো দিন অনেকেই ফেসবুকে খবর নিয়েছেন। স্রাঞ্জি সে, সায়মা আপু, কাজী ফাতেমা ছবি আপু, সৈয়দ তাজুল ইসলাম, তাইমুর চৌধুরী সহ অনেকেই। ব্লগ ওপেন করে দেখি "আরোগ্য" বলছেন, "কি খবর স্যার গায়েব কেন?" "নীল আকাশ" বলেছেন: হাবিব ভাই, কই আপনি? ধুর, এটা কথা হলো! আপনার কোন কবিতা পাচ্ছি না????" মনে মনে খুব আনন্দ হলো। কতটা মজবুত আমাদের ব্লগীয় সম্পর্ক! যেন আত্মার বাঁধন!

গতকাল রাতে বিছানায় শুয়ে ছিলাম। সৈয়দ তাজুল ইসলাম ভাইয়ের সাথে অনেক কথা হলো। ওনার কাছ থেকে জানতে পারলাম নকিব ভাইয়ের সনেট কবি, হাবিব স্যার, কাওসার চৌধুরী, বিজন রয়, পাঠকের প্রতিক্রিয়া, সৈয়দ তাজুল ইসলামসহ যাদের ফিরে আসার প্রতিক্ষায় থাকি...... এই পোস্টের কথা। আনন্দে মনটা ভরে উঠলো। মনে হলো যতটুকু ভালো বাসা পাবার যোগ্য আমি তার চেয়ে অনেক অনেক বেশি পেয়েছি। এত আন্তরিকতা ভার্চুয়াল জগতে হতে পারে তা হয়তো এই ব্লগে না আসলে বুঝতামই না। অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা সহ ধন্যবাদ নকিব ভাই সহ সবাইকে, যারা মন্তবে এসেও আমাকে খুঁজেছেন। এর মধ্যে মা.হাসান, চাঁদগাজী, আরোগ্য, নীল আকাশ- এদের কথা উল্লেখ না করলেই নয়।

আশা করি ব্লগে নিয়মিত হতে পারবো। অসুস্থতা থেকে উঠেছি ঠিকই তবে তার রেশ শরীরে রয়েই গেছে। না খেতে পেরে নতুন করে গ্যাস্ট্রিকের কারনে পেটে ব্যাথা করছে। লোসেকটিল খাচ্ছি দুইবেলা। সবার কাছে দোয়া চাই। সৃষ্টিকর্তা যেন সবাইকে সুস্থ রাখেন।

ছবিঋণ: গুগল।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:০৩
৩৩টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×