somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এ জগতে প্রত্যেকের কোর্ড নং আলাদা

৩০ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ছোট বেলায় হাট বারের দিন একজন লোক দেখতাম-বেশকিছু মানুষ জড় করে ঢোল ও হারমনিয়াম নিয়ে গান বজনা করে সালসা বিক্রি করত। আর আমি তার পাশ দিয়ে যেতে প্রায়ই তার মগজধোলায়ের মধ্যে পড়ে সালসা বিক্রির কৌশল দেখতাম। যেমন সে মাঝে মাঝে হারমনিয়ামের আওয়াজ দিত ও ঢোলে কয়টা করে ঘা মেরে বলত আপনারা আজ সারাদিন শুধু গান শুনবেন-আজ আর আমি ওষুধ কিক্রি করব না। আর আমি ভাবতাম দুই একটা গানশুনে তরপর চলে যাব। কিন্তু সেই গান গাওয়ার আগে সে অনেকগুলো ওষুধ বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন রকম বোঝাতো। আর বড় বড় মানুষগুলো সব হা করে দাড়িয়ে শুনত।

যাহোক তার একটি কাজের উদাহারণ দিয়ে আমি পৃথিবীর সকল মানুষের জগৎ সম্পর্কে আপেক্ষিক ভাবনার ও ধারনার কথা বোঝাতে চায় যেমনঃ- তিনি তার সালসা বের করে কয়েকজন আধাবয়সী মানুষদের এক ঢোক করে ফ্রি গালে ঢেলে দিয়ে বলতেন- প্রথম জনকে-কেমন আপেল আছেনা ? সে বলত হা আছে। আরেকজনকে দিয়ে বলতো কেমন আঙুর আছেনা ? সে বলত হা আছে। এভাবে ৫/৭ জনকে বলা হত-কলাপাকা,বেল,কাঠাল,আম ইত্যাদী। অর্থাত যার গালে ঢেলে দিয়ে যে ফলের নাম উচ্চারণ করতেন তারাও মাথা নাড়িয়ে বলতো হা সেটাই আছে। আমিতো ভেবে অবাক হতাম-একই বতলের মধ্যে সেটা কিভাবে সম্ভব। তো বড় হওয়ার পর বুঝলাম যে লোকটি বিভিন্ন ধরনের ফলের ফ্লেভার জোগাড় করে পানিতে রং মিশিয়ে সালসা বানিয়ে ধোকা দিয়ে বিক্রি করত।

তো আমি বলতে চাচ্ছি মানুষ জ্বন্মের শুরু থেকে এভাবেই একাকজন একাকভাবেই এই জগৎটাকে ভেবে নিতে থাকে বা নিয়ে থাকে! যেটা অন্যের সাথে কোনভাবেই মিলবেনা। অর্থাত এজগৎ গোল আলুর মতো একটা ব্যপার -ফলে একাকজন একাকভাবে দেখতে পায়,বুঝতে পারে,ভাবতে পারে। অথচ প্রত্যেকেই মনে করে যে অন্যরাও তার মত ভাবতে বুঝতে পারছে। আর এ কারনে একজন অন্যজনকে ভুল বুঝে গোলযোগ ও প্রতিশোধের আগুনে জ্বলে। কেননা একাক জনের ভাবনা একাক রকম বলে কেউ কারো সমস্যা বুঝতেই পারেনা। তাছাড়া একাকজন একাক ধাতুতে গড়ে যাচ্ছে বা কোর্ড নং আলাদা হচ্ছে বলে তার ইচ্ছা,জ্ঞান ও চাহিদা অলাদা। কেউ কারো সাথে কথা বলার সময়,মনে করে সে তার কথা বুঝতে পারছে। কিন্তু না,তেমনভাবে বা নিজের মন মত করে ছাড়া কেউ বুঝছে না। এবং মানুষ নিজে যেটা বোঝাতে চাচ্ছে সেটার উচ্চারন,অর্থ ও ভাবনা একাক জনের কাছে একাক রকম মনে হচ্ছে। কথা বলার সময় জাষ্ট ফর্মালিটি হোক আর স্বভাবই হোক মাথা সবাই নাড়ায় বা তর্ক করে। তারপরও মানুষের কার মাথায় কখন কি প্রশ্ন-উত্তর ও প্রতিউত্তর আসে সে নিজেও সঠিকভাবে বুঝে উঠতে পারেনা। আবার যে বা যারা সেগুলো শ্রবণ করে-তারা সেগুলো তাদেরই নিজেদের মন ও ধারনা মতো বুঝে নেয়। আবার একই বিষয় সময়ের ব্যবধানে-অন্য রকম প্রশ্ন ও উত্তর এবং ধারনা ও মন্তব্য আসে। আজকে যে মানুষটা ভাবছে তার কথাটা সঠিক আছে-কালকে সে মানুষটা সেই একই কথাটার পরিবর্তন ভাবছে। এটই নিয়ম আর এভাবেই জগৎ চলছে।

অতএব সবকিছুই আপেক্ষিক। অনেক জ্ঞানীজন অনেক বিষয়ে যথেষ্ট যুক্তি পেয়ে মনে করেন সবকিছু আপেক্ষিক নয়। কিন্তুু দুঃখের বিষয় এক জ্ঞানীর নিকট যেটা সঠিক অন্য জ্ঞানীর নিকট সেটার অবশ্যই বেঠিক যুক্তি থাকতে পারে। এছাড়া কোন ব্যক্তি-কখন কোন ধরনের ইগুতে অভ্যস্ত এবং কোন ধরনের যুক্তি কখন কার কাছে সঠিক ও বেঠিক হয়-বোঝা মুশকিল।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:৩৩
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে আপনি হাদিস শুনতে চান?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫


,
আপনি যদি সচিব, পিএইচডি, ইন্জিনিয়ার, ডাক্তারদের মুখ থেকে হাদিস শুনতে চান, ভালো; শুনতে থাকুন। আমি এসব প্রফেশানেলদের মুখ থেকে দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, বাজেট,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×