somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

BDR হত্যা, তদন্তের হার্ট এ্যটাক

২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




২৫ শে ফেব্রুয়ারির হারানো চেইন

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~

অলিম্পিক গেমসের লোগোতে পাঁচটি রিং বা সার্কেল থাকে। ওপরে তিনটি, নিচে দুইটি। ওপরের তিনটি রিং প্রতিটি তাঁর পাশের রিং এর সাথে সংযুক্ত এবং ওপরের তিনটি রিং নিচের আরো দুইটি রিঙ এর সাথে সংযুক্ত। লোগোর ৫ টি রিঙ সে ক্ষেত্রে পরস্পর পরস্পরের সাথে যুক্ত। অলিম্পিকের পাঁচটি রিঙ হচ্ছে পৃথিবীত ৫ টি মহাদেশের প্রতীক। প্রথম তিনটি যথাক্রমে ইউরোপ, আফ্রিকা আমেরিকা এবং নিচের দুইটি এশা (এশিয়) ও অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের প্রতীক। ৫ রিঙকে একে অন্যের ভেতর দিয়ে প্রবেশ করানোর মধ্যে দিয়ে সমষ্টিগত ঐক্য ও পরস্পর ভাতৃত্ব ও নির্ভরশীলতা বোঝানো হয়। প্রতীকী রিঙ গুলো থেকে যদি মাত্র একটি রিঙকে আলাদা করে দেন, তখন এটি একতা ও ঐক্যের প্রতীক থাকবে না। একটি পৃথক রিঙের কারণে পাঁচটি রিঙ-ই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।


একটা বাই-সাইকেল, যার মূল যন্ত্র বিশাল সাইজের একতা চেন বা শিকল। সামনে পিছনে মোট দুটি গোল চাক্তির চারপাশ দিয়ে বাই সাইকের চেন ঘুরতে থাকে, ফলে চেনের ঘূর্ণনের মাধ্যমে বাইসাইকেলের দুটি চাকা ঘুরতে থাকে। এখন যদি চেন থেকে একটা মাত্র স্ক্রু বা কব্জা খুলে ফেলেন তখন সম্পূর্ণ ঘূর্নণ প্রকৃয়াটি বন্ধ হয়ে যাবে। সাইকেল আর একটুও সামনে এগিয়ে যেতে পারবেনা।


মাফিয়া বা অপরাধ চক্রের কাজের ধারা বিষয়ে আপনার জানা থাকলে, নিশ্চয় বুঝতে পারবেন একটা অপরাধ সংগঠনের সাথে যারা জড়িত থাকে তাঁদের প্রত্যেকের কাজ ভিন্ন হয়ে থাকে। ধরেন একটা খুন সংঘটিত হবে। একজন ভিক্টিমের চলাচলের স্থান মনিটর করবে, কেউ সেখান কার সার্বিক গতিবিধিতে নজর রাখবে, একজন ভিক্টিমের পরিচয় নিশ্চিত করবে, এক জন শুটার প্রস্তুত করা হবে। খুনের জন্য যে অস্ত্র ব্যাবহার হবে, সেই অস্ত্র কিন্তু খুনি নিজে বহন করবে না। কিলারকে যথাযথ স্থানে পৌঁছে দেবার দায়িত্ব যার, সে শুধু মাত্র তাঁকে পৌঁছে দিয়েই চলে যাবে। অস্ত্রেরের দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যাক্তি খুনির কাছে অস্ত্র ও গুলি পৌঁছে দেবে। অন্য কেউ কিলারকে টার্গেট দেখাবে। কিছু লোক খুনি বা কিলারের চারপাশে সাধারণ জনতার মত আশ্রয় নিয়ে আড়াল করবে। সঠিক সময়ে টার্গেট পৌঁছুলে খুনি পর্যাপ্ত ফায়ার করে মৃত্যু নিশ্চিত করে সরে পরবে। মজার ব্যাপার হচ্ছে কেটে পরার সময়ও কিলার অস্ত্র ক্যারি করবেনা। সে ঘটনাস্থলে কোথাও অস্ত্র ফেলে যাবে। অন্য কেউ তা সংগ্রহ করবে বা ব্যার্থ হলে অস্ত্র লোকাল পুলিশের হাতে পরবে।

ধরুন কোন কারণে খুনি ধরা পরলো পুলিশের হাতে। পুলিশ তাঁকে ইচ্ছা মত পিটালো, রিমান্ডে নিয়ে। পুলিশি জেরার মুখে নাকাল হলে তখন খুনি কতটুকু তথ্য পুলিশকে দিতে পারবে? যতটুকু সে জানে তাঁর বাইরে তো কিছুই বলা সম্ভব নয়, তাই না।

এখন মনে করুন আরো অধিক ইনভেস্টিগেশনের কারণে হয়তো খুনের আস্ত্র সরবরাহকারী ধরা পরলো, তাঁর মধ্যমে চক্রের আরো দু একজন ধরা পরলো। সেক্ষত্রে কি সম্পূর্ণ অপরাধ চক্রটিকে পাকড়াও করতে পারা সম্ভব হবে?

হবার সম্ভবনা খুব কম, কারণ পেশাদার মাফিয়ারা এমন ভাবে তাঁদের কাজ করে যে দু তিন জন ধরা খেলেও কিচ্ছু আসে বা যায় না। কারণ প্রত্যেকের কাছেই থাকে খুব অল্প ও সুনির্দিষ্ট তথ্য। তাঁই হাজার মাইর খেলেও নিজের জ্ঞানের বাইরে আর কিছু বলার থাকে না ।


এই ধরনের পরিস্থিতি এড়িয়ে পুলিশ যদি মাফিয়া বসের কাছে পৌঁছানর কাছাকাছি অবস্থানে চলে আসে তখন কি সমাধান?

Cut the rope -চেন কেটে দাও-
হ্যাঁ , তখন সর্বশ্রেষ্ট উপাই হচ্ছে চেন বা দীর্ঘ শিকল থেকে ছোট্ট একটু খানি জয়েন্ট বা স্ক্রু উপড়ে ফেলে সম্পূর্ণ সার্কেল বা ব্যাবস্থাপনাকে পৃথক করে দেওয়া।

ওপরে যেমন সাইকেলের চেনের কথা বলা হল, ঠিক সেরকম। বাই সাইকেলের চেন থেকে একটা ছোট্ট হুক খুলে নিলে যেমন সাইকেলটি আর চলবে না, ঠিক সেই রকম অপরাধী বা খুনি চক্র থেকে সুনির্দিষ্ট একটা বা দুইটা এসাইনমেন্টের দায়িত্ব প্রাপ্তদের দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিলে বা সরে গেলে খুনের মাষ্টার মাইন্ডের আর আপনি খুঁজে পাবেন না।


২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারির কুখ্যাত হত্যাকান্ডের প্রত্যক্ষ খুনিদের আপনি যতই ঘৃণা করেন না কেন, তাঁদের বাঁচিয়ে আপনাকে রাখতেই হবে, যদি আপনি সেই হত্যাকান্ডের মূলে আঘাত করতে চান। তাঁদের জীবিত অবস্থার মেমোরি সেলের স্টোরেজ সিস্টেম ব্যাতীত পূর্বের ধাপে পৌঁছে যাওয়া অলীক কল্পনা মাত্র

গ্রেফতার হওয়া কথিত বিদ্রহিীদের বেশ কজন তথাকথিত হার্ট এ্যটাকের কারণে ধরাধাম ত্যাগ করেছে। তাঁদের মৃত্যুর মাধ্যমে খুনি/ বিদ্রহি চক্রের মাষ্টার মাইন্ডরা নিশ্চিত ভাবে বাইসাইকেলের চেন থেকে একেকটা হুক খুলে নিয়ে ধরাছোঁয়ার বাইরে অবস্থান নিয়েছে।

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জনতা ও তাঁদের সহযাত্রী সৈনিক অফিসাররা যতই বেদনাতে নীল হোন না কেন, দ্বী-চক্র যানের সাইক্লিং সিস্টেম নষ্টকারী কাটা-চামচ গুলো তাতে আর খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে না।





সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ২:৫০
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×