নিউ্ইয়র্ক সিটি টেররিস্টদের প্রধান লক্ষ্যবস্তু সবসময়ই। বিশেষ করে সাবওয়ে। আর জানি না কিছু ফ্যানাটিক যদি সত্যি সত্যি কিছু করে বসে তাহলে প্রায় অচল হয়ে যাবে নিউ ইয়র্ক। বাংলাদেশে একজন আমজনতা হিসেবে শির্ষনেত্রীর খুব কাছে গিয়েছিলাম। অবশ্য ক্ষমতায় থাকা অবস্হায় যাই নি কখনও। বারাক ওবামার প্রাইমারির সময় কাধে একটা ঝোলা ঝুলিয়ে একদম কাছে চলে গিয়েছিলাম। হ্যান্ডশেকও করেছিলাম। কেউতো এসে চেক করে নি। আসলে এরকম আমজনতা যদি সত্যি চায় তাহলে সেটা রোধ করা কোন দেশের পুলিশের পক্ষেই সম্ভব না।
ফয়সাল শাহজাদ একজন এয়ার ভাইস মার্শালের পুত্র। কম্পিউটার সাইন্সে আন্ডারগ্রেড করেছেন আমেরিকাতেই। এমবিএও করেছে সম্ভবত (গুগল করতে ইচ্ছা করছে না)। চাকুরি করতো। বিয়ে করেছে। দুটি সন্তান আছে। বাড়ি কিনেছিল। যেটি অবশ্য গত জুলাইয়ে লে অফ হবার পর ফর ক্লোসারে চলে যায়। ফয়সাল শাহজাদের প্রতিবেশীদের কাছে সে স্বাভাবিক একজন মানুষ। দেখা হলে হাই হেলো। তার ছেলে মেয়েরা খেলতো প্রতিবেশীদের সাথে। সে তার এক প্রতিবেশীর মেয়েকে তার পুরাতন কম্পিউটারটি দিয়ে দিয়েছিল। তার বিরুদ্ধে কোন ক্রিমিনাল রেকর্ড নাই। এখন কিভাবে এমন একজন মানুষ হঠাৎ করে একদিন টাইমস স্কয়ারে একটি বিষ্ফোরক ভর্তি একটা এসইউভি রেখে আসলো যাতে করে কয়েক হাজার মানুষ হতাহত হয়? আজকে পত্রিকায় শিরোনাম "How many more?" ফয়সাল শাহজাদের যে প্রোফাইল আমাদের অনেকের প্রোফাইলইতো অনেকটা তেমন। এখন আমরা একটি এলাকায় যেয়ে থাকা শুরু করলাম, কিভাবে আমার প্রতিবেশীটি বুঝবে যে আমি একজন টেররিস্ট না। কিভাবে আমি প্রমান করতে পারি যে আমি তাদের(টেররিস্টদের) একজন না। আমার নামে মোহাম্মদ আছে। আমি ড্রিনক করি না তার মানে তো ামি ইসলাম ধর্ম কিছুটা হলেও ফলো করছি। অনেক টেররিস্ট পাওয়া গেছে যারা নিয়মিত ক্লাবে যেত। জানিনা এসব তথাকথিত ধর্ম প্রেমীদের মাথায় কি কাজ করে? তারা আসলে কি অর্জন করতে চায়। কিন্তু তারা কোটি কোটি শান্তি প্রিয় মুসলমানকে বিব্রতকর অবস্হায় ফেলে দেয়। সিএনএন এ বলতে পারে ইসলাম শান্তির ধর্ম নয়। মহানবীর জীবনী যতটুকু পড়েছি তিনি কোন ঘটনায় কখনও কোন নিরস্ত্র, নিরপরাধকে হত্যা করতে বলেন নি। এই সব সন্ত্রাসীরা কেন বারবার এসব ভুল করছে? এরাতো কোন মাদ্রাসায় শিক্ষিত ব্যাক্তি নয়? সেকুলার শিক্ষায় শিক্ষিত, সমাজের উচুতলায় যাদের বসবাস সব সময়। লাদেনও একজন ইন্জিনিয়ার, আরবের অন্যতম ধনি পরিবার থেকে এসেছে। তাহলে এরা কেন বারবার ইসলামের নামে নিরীহ মানব সন্তানদের হত্যা করতে উদ্যত হচ্ছে?
২০০১/০২ এর দিকে হবে, তখন "মনের মাঝে তুমি" তুমুল জনপ্রিয় সিনেমা। একদিন রাতে আমি আর আমার দুই রুমমেট মিলে মধুমিতায় গেলাম দেখতে। ফিরতে ফিরতে একটু রাত হয়ে গিয়েছিল। গুলিস্তানের আশে পাশে আমাদের রিকশা পুলিশ থামাল। আমরা বললাম সিনেমা দেখতে গিয়েছিলাম। পুলিশ মহাশয় সবুজবাগের কোন এক এলাকার নাম বললো, যেটার নাম সেদিনই প্রথম শুনেছি সেদিনই শেষ। আমারতো প্রচন্ড মেজাজ খারপা হয়ে যাচ্ছিল। তারা টিকেট দেখতে চাচ্ছিল। আমি আবার টিকেট ফেলে দিয়েছি। যাই হোক একজনের কাছে তার টিকেট ছিল। পরে জিগ্গাসা করলো কোথায় পড়ি। বললাম। এরপর মামা আবার ভিপি জিএস এর নাম জিগ্গাসা করলো। বললাম। তারপর বললো পরে যেন টিকেট রাখি। আমরা রিকসায় উঠে চলে আসলাম। কিন্তু প্রচন্ড অপমানজনক লাগছিল তাদের এই জিগ্গাসাবাদ।
আজকে গরমের দেশের এই আমি বা আমরা যে হিমাংকের নিচের দেশে পড়ে আছি। কয়জন আছি একদম বিশুদ্ধ বিদ্যা আহরনের জন্য আছি? নিজেদের স্বপ্নটার কাছাকাছি যাবার জন্যইতো এখানে থাকা। কিন্তু তার জন্যকি আমাদেরকে অনাদিকাল ধরে আমার প্রতিবেশির সরুচোখের নিচে থাকতে হবে? আমাদের পরবর্তি জেনারেশনকে কি শুধু মাত্র তাদের নামের জন্য এটা প্রমান করে যেতে হবে যে না আমরা হত্যাকারি নই। সেদিন ঢাকার রস্তায় ৫/৬ মিনিটের জিগ্গাসাবাদে যেই অপমানজনক অনুভুতি হয়েছিল, সেই অনুভুতি কি সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হবে। তাদের কোন দোষ আমি দেখি না। মেয়র ব্লুমবার্ বলেছেন, "There is always some bad apples". একজন ফয়সাল শাহজাদ যদি টেররিস্ট হতে পারে তাহলে যে কেউই হতে পারে। আর ফয়সাল শাজাদকে মে মাসের আগে কোনভাবেই একটা ব্যাড এপল বলা যা্য না। একটা ভাল এপল কিভাবে এই কাজ করলো?
সবার প্রতি আহবান থাকবে সকল রকম ভায়োলেন্স বর্জন করুন। ভায়োলেন্স দিয়ে পৃথিবিতে কোন চুড়ান্ত বিজয় আসে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৩ সকাল ৯:১৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




