২৩ শে জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের ৬১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে কেক কেটে উদযাপন করেন ও বিএনপির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রশ্ন ছুড়ে দেন ও যথারীতি কিছু বিষোদগার করেন। বিএনপি তার তরফ থেকে কি জবাব দিবে সেটা সময় বলে দিবে তবে তাঁর কিছু বাণী আমার কর্ণকুহরে প্রবেশের পর যেটা মনে হলো সমস্যাটা কোথায়? আমার ভুল জানা নাকি মিথ্যাচার।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলের উদ্দেশে বলেছেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলে তাদের প্রার্থী যখন অনেক ভোটে এগিয়ে ছিলেন, তখনও তারা (বিএনপি) কারচুপির অভিযোগ তুলে যাচ্ছিলেন। এ থেকে প্রশ্ন জাগে, তাহলে কি তারা কারচুপি করেই ওই নির্বাচনে জিতেছেন?
প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমরাও জানতে চাই কিভাবে মহিঃ চৌ রাত ৮ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত্য ১৫ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন। কেন ভোটের ফলালফল প্রকাশ বন্ধ ছিল? এই ৪ ঘন্টা ক্যন্টনমেন্টে কি নির্দেশ গিয়েছে ও তার প্রতি উত্তর কি ছিল? কেন সেনাবাহীনি ছিল না কন্ট্রোল রুমের সামনে? আবার সেটা কেন ফিরিয়ে আনা হয়েছিল? এই প্রশ্নগুলোর জবাব জানা খুব জরুরি আসলে কতটা সৎ ছিলেন আপনারা এই সম্পূর্ন নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সময়। যিনি প্রায় এক লাখ ভোটে পরাজিত হলেন তিনি কিভাবে রাতের একটা বিরাট অংশ জুড়ে ১৫ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিলেন এবং কিছু পত্রিকায় মহিঃ চৌঃ এর জয়ের আভাষ ও দেয়া হয়েছিল। কখন কিভাবে এই ব্যবধান ঘুচে মনজুর পক্ষে আসে সেটা বের করা উচিৎ।
বিরোধী দলের আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতনের হুমকি দেয়। অর্থাৎ তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতার পরিবর্তনে বিশ্বাসী নয়। আর হবেই বা কেন? তাদের জন্মই তো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নয়, সেনাবাহিনীর একজন মেজরের নেতৃত্বে সামরিক বাহিনীর ছাউনি থেকে তাদের জন্ম।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার মুখে এ কি কথা শুনি আজ। আন্দোলনের হুমকি দিলে তারা গনতন্ত্রে অবিশ্বাসী হয়ে গেল? আপনারা কি করেছেন যখন বিরোধি দলে ছিলেন? আপনি নিজে সদ্য সৈরাচারী থেকে গনতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্হার সরকার আসার পর বলেছিলেন, "এই সরকারকে একদিনও শান্তিতে থাকতে দিব না"। আপনার অনেক কথা ভুলে গেলেও এই কথা রেখেছেন অক্ষরে অক্ষরে। আপনার জিএস ও আপনি মিলে দিন তারিখ দিয়ে ৩০ শে এপ্রিল সরকার পতনের ঘোষনা দিয়ে সারা দেশে আতংক তৈরী করেছিলেন। রাজনীতির ছাত্র না আমি। আপনি তো গনতন্ত্রের মানস কন্যা। এভাবে দিন তারিখ দিয়ে সরকার পতনের ঘোষনা দেয়া কোন দেশের গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি খুব জানতে ইচ্ছা করে।
বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি জানি না খালেদা জিয়ার কেন সংসদে আসতে এত আপত্তি? তার যে বিকল্প বাজেট, সেটা তিনি সংসদেই দিতে পারতেন। এখন যদি তিনি এত বোঝেন, তাহলে ক্ষমতায় থাকতে কেন সেটা বুঝলেন না? ক্ষমতায় থাকতে কেন এ ধরনের বাজেট দিতে পারলেন না?' এ প্রসঙ্গে সরকারের বাজেট ও কার্যক্রমেই বিরোধীদলীয় নেতার বিকল্প বাজেটের অধিকাংশ প্রস্তাব আছে দাবি করে শেখ হাসিনা কৌতুক করে বলেন, কথায় আছে, বুঝলি না রে ফেলি, বুঝবি দিন গেলি?
সংসদে আপনারও আসেন নি। সংসদীয় রাজনীতি দুই নেত্রী মিলে আনলেন কিন্তু শুরু করলেন সংসদ বর্জনের রাজনীতি। আর সংসদ ও এমন এক সংসদ যেখানে দেশের কথা বাদ দিয়ে খিস্তি খেউড়ে বেশী সময় ব্যয় করা হয়। আর খালেদা জিয়ার বেশির ভাগ দাবি যদি বাজেটে গ্রহনই করা হয়ে থাকে তাহলে আর সংসদে যেয়ে কি হবে?
খালেদা জিয়া যেটা করেছেন সেটা একদম ব্যতিক্রমি এক উদ্যোগ। সরকারের জন্য বিকল্প কিছু প্রস্তাব উপস্হাপন। বাংলাদেশে রাজনীতির কালচারে যেটা কমন সেটা হলো বাজেটের পর বিরোধি দল থেকে গরীব মারার বাজেট বলে আর সরকারি তরফ থেকে যুগান্তকারী বাজট বলে যথাক্রমে প্রতিবাদ ও আনন্দ মিছিল করা হয়। %E
-------------------------------------------------------------------------
(মডারেশন এর পরে যেগুলো লিখেছলাম সেগুলো কেন মুছে দিলেন? সামুর এক রহস্যজনক বাগের কারণে আমার পোস্টটি প্রথম পাতা থেকে গায়েব হয়ে যায় এর পর ফেরত আসলে কিছু অংশ দেখি নাই হয়ে যায়। যাই হোক স্মৃতি হাতড়ে আবার লিখার চেষ্টা করছি মুছে যাওয়া অংশটুকু।)
সেই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে খালেদা জিয়া আপনাকে সাহায্য করার জন্য আগেই তার বিকল্প প্রস্তাবগুলো দিয়েছেন। তিনিও দির্ঘদিন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার অর্থমন্ত্রী বাজেট পেশ করতো ঠিক যেমন এখন মুহিত সাহেব পেশ করেন। বাজেট কোন আলটিমেট সলিউশন নয়। তাই প্রতি বছরে এটি পেশ করা হয়। এখন আপনারা বাজেট পেশ করছেন মানে এমন না যে আপনারা সবকিছু অর্জন করে ফেলবেন এর পরে যে সরকার আসবে তাদের কিছু করার থাকবে না। আপনারা আপনাদের কাজ করছেন। ৫ বছর পর যদি আপনারা ক্ষমতার বাইরে থাকেন তাহলেও আপনাদের অধিার থাকবে সরকারকে পরামর্শ দেয়ার, ঠিক যেমনটি আছে বর্তমান বিরোধি দলের। তারা শুধু সমালোচনা না করে বিকল্প প্রস্তাব পেশ করেছে বলে আপনার একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিএনপি তথা খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ জানানো উচিৎ ছিল। আপনি আজ পর্যন্ত্য সেটা করেন নি। উপরন্তু গেয়ো ঝগরাটে মহিলাদের মত ঝগরা করে যাচ্ছেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, বঙ্গবন্ধুই একমাত্র রাষ্ট্রপতি ছিলেন যার জন্ম এ দেশের মাটিতে, এ ভূখণ্ডে। আর বাকি সব রাষ্ট্রপতির জন্মই ভারত উপমহাদেশে।
আপনার এই তথ্য কতটুকু সত্য এ বিষয়ে আমি সন্দিহান। জিল্লুর রহমান ১৯ তম প্রেসিডেন্ট। তিনি ভৈরবের কিশোরগন্জে জন্মগ্রহন করেছেন বলে লিখা আছে। বাকি ১৮ জনের মধ্যেও একাধিক নিশ্চই আছেন। নাকি বাকিদেরকে আপনি প্ড়েসিডেন্ট বলেই স্বিকার করেন না। আর যদি না থাকেও তাহলেও কি বংগবন্ধু শেখ মুজিবকে সম্মান জানানোর জন্য এরকম একটা খোড়া অযুহাত দাড় করিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটাররা? তাকে সম্মান জানানোর আর কোন ভাল কারণ খুজে পেলেন না আওয়ামিলীগের ৬১ তম জন্মদিনে এসে?
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময়ই মানুষের পাশে থেকেছে। ৬১ বছরের ইতিহাসে দেখা যায়, বাংলাদেশের মানুষের যা কিছু প্রাপ্তি তা আওয়ামী লীগই দিয়েছে। তাই আওয়ামী লীগের ইতিহাস জনগণের প্রাপ্তির ইতিহাস।
আপনারাই ৯০ এর সৈরাচার পতনের মাধ্যমে গনতন্ত্রের প্রত্যাবর্তনকে জাতি হিসেবে আমাদের বড় একটি অর্জন বলেছিলেন। সেই অর্জনের সাথে কিন্তু আপনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বির নামটি জড়িয়ে আছে। এবং সেটা আপনার থেকে বেশী উজ্জ্বলতার সাথেই। আপনি স্বঘোষিত জাতিয় বেঈমান হয়ে ৮৬ এর এরশাদের নির্বাচনে না গেলে হয়ত ৯০ আরও আগে আসতো। যাই হোক বাংলাদেশের সবকিছু প্রাপ্তির জন্য শুধু নিজের দলকে কৃতিত্ব দিয়ে আপনি সংকির্নতার পরিচয় দিলেন।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সময় বাংলাদেশ একটি জঙ্গিবাদী আর দুর্নীতিবাজ দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছিল। বর্তমান সরকারের সময় সেই কলঙ্কের কালিমা মোচন করে বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে একটি মর্যাদাবান দেশ হিসেবে পরিচিত করে তোলা হয়েছে।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক হানাহানি সবসময়ই ছিল। কিন্তু বিভিন্ন জনসমাবেশে বোমা বিষ্ফোরনের এই সংস্কৃতি চালু হয় আপনারসরকারের আমলেই। যশোরে উদিচির বোমা বিষ্ফোরনের পর আপনি বললেন সরকারকে বিব্রত করতে জংগিরা এসব করছে। আর ধরলেন বিএনপির তরিকুল ইসলামকে। এরপর একের পর এক পল্টনে সিপিবির জনসভায়, ফেলা বৈশাখে রমনা বটমূলে বোমা ফাটলো। এসব ঘটনা আপনার সরকারের সময়েই হয়েছে। আপনি তখন বলতেন এর পিছনে বিরোধি দল আছে। তাহলে তারাই সরকারে এসে কেন বোমা ফাটাবে? যাই হোক জংগি আতংকেই বিল ক্লিনটন তার ঢাকা সফরের সময় সাভারে সফরসুচি বাদ দিয়েছিলেন। জংগিবাদি হিসেবে বাংলাদেশের পরিচয় তখন থেকেইতো অনেকটাই প্রতিষ্ঠিত।
দুর্নীতির বিশ্ব পরিচয়ের একটা সূচক যদি হয়ে থাকে টি আইবির রিপোর্ট। তাহলে সেই রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশ প্রথম চ্যাম্পিয়ন হয় ২০০০ সালে আপনার সরকারের আমলে। বিএনপির ৯১-৯৬ এর আমলে কিন্তু হয় নি। কিন্তি আপনারা বিদায় নেয়ার সময় দেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন রেখে বিএনপির হাতে তুলে দেয়। সেই বিএনপি সরকারকে নিয়ে অনেক অভিযোগ থাকলেও তারা বিদয়া নেয়ার সময় সেই অবস্হানটি কন্তু এক নাম্বারে ছিল না। তাহলে দেশকে বিশ্বের দরবারে দুর্নীতিবাজ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেবার দায়িত্ব সবটুকু কি শুধু খালেদা জিয়ার ঘাড়ে বর্তায়?
আশাকরি সমালোচনা সহ্য করার মত ক্ষমতা আপনার হবে। না হলে তার পরিণতি ভোগ করতে হবে আমাদের সবাইকে।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৪৭

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




