সরকারে থাকলে মানুষ তাদের কাছ থেকে ক্ষমতার দম্ভ নয় ক্ষমতার নিয়ন্ত্রীত প্রয়োগ দেখতে পছন্দ করে। আর সেই ক্ষমতার প্রয়োগ দেখাতে হয় জনকল্যাণে। যাই হোক এসবই হয় আদর্শ ইউটোপিয়ান রাষ্ট্রে। কিন্তু গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রেও মানুষ সরকারের ক্ষমতার অতিপ্রয়োগ দেখতে পছন্দ করে না। আমাদের প্রতিবেশী ভারতে চরম সাম্প্রদায়িক বিজেপি ক্ষমতায় আসলেও তারা প্রধানমন্ত্রী করে তুলনামূলকভাবে উদারপন্হি অটল বিহারি বাজপেয়িকে, এল কে আদভানিকে না।
বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য ক্ষমতায় বসেছে এক চরম প্রতিক্রিয়াশীল সরকার। মাহমুদুর রহমান তার পত্রিকায় প্রধানমন্ত্রীর পুত্রের দুর্নীতি নিয়ে একটি রিপোর্ট লিখার পর থেকে তার নামে সারা দেশে মানহানি মামলা দেয়া শুরু করে দিল লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। সরকারি তরফ থেকে সে বিষয়ে কোন তদন্তের কথা প্রকাশিত হয়নি। যথারীতি অস্বিকার করা হয়েছে, আর মামলার স্রোত বইয়ে দেয়া হয়েছে মাহমুদুর রহমানের নামে। শুধু মামলাই নয় তার গাড়িতেও হামলা করা হয়েছে। সেই হামলা পিছনে কারা ছিল সে রহস্যের কোন সমাধান হয় নি। এত কিছুর পরেও যখন দেখা গেল কোনভাবেই আটকে রাখা যাচ্ছে না সরকার বিরোধী একটি মাত্র পত্রিকা, তখন সেই পত্রিকা তারা একদিনের নোটিশে বন্ধ করে দিল, পত্রিকার সম্পাদককে আটক করে নিয়ে গেল। সরকার অবশ্য সফল একদিক দিয়ে কারণ চিন্তা করে দেখলাম বেশকিছুদিন পেপার তেমন পড়া হয় না। কারণ আগে আমার দেশ পড়ে একদিকের মনিভাব জানা যেত আরেক দিকের মনোভাব জানার জন্যতো বাকি সব পেপার আছেই। যেভাবেই হোক সরকার হয়ত পেরেছে তার কুকির্তীগুলো সাময়িকভাবে মানুষের চোখের আড়ালে নিয়ে যেতে। কিন্তু দিনের আলোতে ঘটে যাওয়া কুকর্মগুলোকে আড়াল করতে পারছে কি?
এ প্রসংগে এসে যায় গ্রেফতার উৎসবের আরেক পর্ব, যেদিন শহিদ উদ্দীন চৌঃ এ্যানি এমপিকে গ্রেফতার করা হলো। তার উপরে শাহবাগে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা হামলা করলো, তাকে আহতাবস্হার হাসপাতালে ভর্তির পর বেড থেকে পুলিশ হাত-পা ধরে চ্যাংদোলা করে গ্রেফতার করলো। প্রধানমন্ত্রী ও তার স্তাবকরা যথারীতি উৎফুল্ল হয়ে নানা রকম ভিত্তিহীন কথা বার্তা বলতে লাগলেন। দিনের আলোতে ঘটে যাওয়া একটা ঘটনা, যেটা তাদের সমর্থক পত্রিকাগুলোও আড়াল করতে পারেনি সেই ঘটনায় বলতে লাগলো এ্যানি আর তার সংগিরা ভাংচুর করেছে ইত্যাদি। যাই হোক শেখ হেলাল আর তার স্ত্রীকে একটি গ্রেফতার করার পর তাদেরকে সাথে সাথে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। আর বিএনপির একজন এমপিকে হাসপাতাল থেকে চ্যাংদোলা করে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হলো। কেন করা হলো এই গ্রেফতার? ঐ মুহুর্তে ঐ গ্রেফতার কি খুব জরুরী ছিল? জানি না এর নামই কি সুশাসন কিনা?
এভাবেই গ্রেফতার করা হলো একজন সংসদ সদস্যকে।
হরতালের দিন মির্জা আব্বাসের বাড়িতে ঢুকে যে তান্ডব লীলা চালানো হয় সেরকম নজির নিজের জীবনে কোনদিন দেখি নাই বাংলাদেশের ইতিহাসে। কারো লিখিত ইতিহাসে যদি আস্হা নাই রাখি, নিজের চোখে গত বিশ বছরে এমনটা দেখি নাই। মির্জা আব্বাস অতীতে কি ছিলেন না ছিলেন সেই আলোচনায় গেলে আরও অনেকের কথা এসে যাবে, সত্যি হলো তিনি বর্তমানে বিএনপির স্হায়ী কমিটির সদস্য। তাঁর বাড়িতে ঢুকে বৃদ্ধাদের উপর যেভাবে হামলা করা হলো সেটা দেখে আওয়ামিলীগে যেসব মানুষ আছে তারাও লজ্জিত হয়েছে বলেই আমার দৃঢ বিশ্বাস। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আফসোস করে বললেন, তার বাসায় কেন কোন শোকেস ভাংগা হলো না। হায় প্রধানমন্ত্রী, আপনার সন্তানরাতো আমেরিকা-কানাডায় থাকেন। তাদের সাথে কথা বলে দেখবেন বিরোধী দলের সিনিয়র নেতাদেরকে কোন দৃষ্টিতে দেখা হয়। যাই হোক র্যাব থেকে একবার বলা হলো তাদের উপরে হামলা করা হয়েছে বলে তারা বাড়িতে ঢুকে হামলা করেছে। টিভিতে যেটা দেখা গিয়েছে পুলিশ যেয়ে মির্জা আব্বাসকে গ্রেফতার করতে চাইছে, উনি পুলিশের সাথে গেলেন আর তার বাড়িতে ঢুকে বেধড়ক পিটানো হলো। তার বাড়িটি প্রধান সড়কে অবস্হি্ত নয় যেখানে গন্ডগোল হয়। যাই হোক র্র্যাবের ঐ ভাষ্য অন্য কোন সুত্র থেকে সমর্থিত হয় নি। এটা কি র্যাবকে বিতর্কিত করারই একটি সরকারি চক্রান্ত। যারা পেপার পড়েন তাদের নিশ্চই এটা মনে আছে, র্যাব গঠনের শুরু থেকেই শেখ হাসিনা স্বয়ং এবং আওয়ামি সমর্থিত বুদ্ধিজীবিরা এর বিরোধিতা করে আসছিল। কারণ তারা ভেবেছিল বিএনপি এর মাধ্যমে লীগের লোকদেরকে দমন করবে। কিন্তু বিএনপিতো ওদের মত এত খারাপ তে পারে নাই এখনও। তাই র্যাবকে মূলত ব্যবহার করা হয়েছে সেসব সন্ত্রাসীদেরকে শায়েস্তা করতে যাদের বিরুদ্ধে জীবিতাবস্হায় আমজনতার সাক্ষী দেয়ার সাহস নাই কিন্তু মৃত্যুর পর তারাই মিষ্টি বিতরন বা আনন্দ মিছিল করতে পারে। তাই শেখ হাসিনা অনেকবার র্যাবের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ করার পরেও, এমনকি এমনটিও বলেছিলেন, র্যাব গঠন করা হয়েছে হাওয়া ভবনের করে দেয়া তালিকা দিয়ে, সরকারে আসলে র্যাব বিলুপ্ত করবেন, পরে ক্ষমতায় এসে সেই র্যাবকেই মেনে নিতে হয়েছে। কারণ একটাই সাধারনের মাঝে র্যাবের একটি পজিটিভ ইমেজ ছিল। ভাল মানুষরা র্যাবকে ভয় পেতনা, বরং দুর্নীতিবাজ পুলিশের মাঝে একটিমাত্র আস্হার ক্ষেত্র মনে করতো। এর কারণ একটাই র্যাবকে দেখা গেছে জংগি ধরতে, সন্ত্রাসীদেরকে ধরতে, নাসিমকে পেটাতে নয়, বা মায়া চৌঃ এর বাড়িতে ঢুকে শোকেস ভাংতে নয়। কিন্তু র্যাবের সাথে যেহেতু বিএনপির নাম জড়িত তাই এই সরকার র্যাবকে বিতর্কিত করতেই একের পর এক রাজনৈতিক বিতর্কিত কর্মকান্ডে তাকে ব্যবহার করছে।
এই ধারার সাম্প্রতিক সংকলন হলো চৌঃ আলম। হ্যাঁ হতে পারে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে। কিন্তু কি সে অভিযোগ? আর কার কার বিরুদ্ধে আছে সে অভিযোগ? কোন সেই তালিকা জাতি সেটা জানতে চায়, যে তালিকার মানুষগুলা সবরকম বিচারের উর্ধে পৌছে গিয়েছে, যে তাদেরকে ধরে বিচার করা যায় না, ধরে গুম ফেলতে হয়? আমার জানামতে এরকম কোন তালিকা এই সরকার প্রকাশ করে নি। চৌঃ আলমকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে অনেক তার পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে অনেক অনুনয় করা হলো কি অপরাধে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হলো। সরকার ছিল সম্পূর্ন নীরব। আজকে দেখা গেল র্যাব তাকে খোজা শুরু করেছে। কতবড় হাস্যকর ঘটনা ঘটাতে যে পারে এরা।
মির্জা আব্বাসকে কেন গ্রেফতার করা হলো? উনি নাকি গাড়ি পোড়ানোর সাথে জড়িত। আবার জামাতের নেতারাও নাকি স্বিকার করেছে তারা গাড়ি পোড়ানোর সাথে জড়িত। তাহলে ঠিক কোন অভিযোগে মির্জা আব্বাসকে ধরে রাখা হলো? পারবেন কি কোন ব্লগার বন্ধু সঠিক জবাব দিতে? নাকি বলবেন তিনি ১৯৬০ সালে আমতলি বাসস্ট্যান্ডে করিমবন্ধু পরিবহনে চাদাবাজি করতে গিয়েছিলেন। যাই হোক অভিযোগ করতে চাইলে অনেক অভিযোগই করা যায়। তবে যদি জামাতের নেতারা যদি স্বিকার করেই থাকে তাহলে সরকারের কোন আইনগত অধিকার নাই তাকে আটকে রাখার। যাই হোক সরকার অবশ্য যে কাউকেই ধরে রাখতে পারে সেই বিশেষ ক্ষমতা আইনের জোড়ে, বাংলাদেশের আরেকটি কালো আইন যেটি এই আওয়ামিলীগেরই অবদান। পরে অবশ্য অন্যরাও এটি ব্যবহার করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যবহৃত কালো আইন হচ্ছে এটি।
(এরা কি র্যাব, যেটি নাকি এলিট ফোর্স। বিভিন্ন বাহিনীর চৌকষ সদস্যদের নিয়ে গঠিত। দেখুনতো এই সরকারি লাঠিয়াল গুলাকে কি চৌকষ মনে হচ্ছে?)
(যারা কথায় কথায় তুলনা করতে পছন্দ করেন তারা বলেনতো বিএনপি আমলে আওয়ামিলীগের কোন হরতালে এভাবে র্যাব দিয়ে লাঠিপেটা করা হয়েছিল? লাঠিপেটার জন্য এলিট ফোর্সের কি দরকার?)
সরকারের রোষানলে পড়া বিএনপির আরেক নেতা হলো শমশের মোবিন চৌঃ(বীর বিক্রম)। কথায় কথায় মুক্তিযুদ্ধের কথা বলা এই সরকারের কাছ থেকে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তিনি কোন সহানুভুতি পাননি । তাকেও গ্রেফতার করা হলো গাড়ি পোড়ানোর মামলায়, রিমান্ডে নিয়ে অত্যাচার করা হলো। এ আরেক অদ্ভুত নাটক সরকারের। হরতালের আগেরদিন একটি গাড়ি পোড়ানো হলো এই ঢাকা শহরের মধ্যে। হরতালের মধ্যে পুলিশের নাকি অনেক সদস্য থাকে। একটি গাড়ি থেকে বের হতে কতক্ষন লাগে একজন মানুষের। সেই ফারুক কি বের হতে পারলো না? না তার সামনে যারা আগুন লাগিয়েছিল তারা নাকি দাড়িয়ে থেকে নিশ্চিত করেছে আগুন যেন ফারুকের গায়ে লাগে। কোথায় সেই সব অমানুষগুলো, নরপশুগুলো? কোথায়? একটি নিউজ দেখানতো পাঠকরা? এই লোকগুলো আগুন লাগিয়েছিল। দাড়িয়ে থেকে দেখছিল, এরা বিএনপির কর্মি। দেখান প্লিজ। বিশ্বাস করতে চাইনা মতিউর রহমান রেন্টুর সেই অভ্যাস এখনও আছে শেখ হাসিনার বা আওয়ামিলীগের। বিটিভিতে ফারুকের সাক্ষাতকার দেখানো হলো। একজন মুমুর্ষ ব্যক্তির এভাবে সাক্ষাতকার দেয়া কিভাবে ডাক্তাররা এলাউ করলো? তারপর প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালে গেলেন তাকে দেখতে, উনি নিজে চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারপর দেখা গেল ফারুক মারা গেল। আর সেজন্য মামলা দেয়া হচ্ছে সিনিয়র নেতাদের নামে। কোথায় সেসব ক্যাডার যারা আগুন লাগালো? কিসের ভিত্তিতে শমশের মোবিন চৌঃ এর মত মানুষদেরকে দায়ী করা হচ্ছে? শমসের মোবিন চৌঃ কে আদালত জামিন দিলেও তাকে জেলগেট থেকে আবার গ্রেফতার করা হলো? কেন? তিনি কি দেশর জন্য এতই বিপদজনক? নাকি সরকারের ফ্যাসিবাদি আচরনের বহিঃপ্রকাশ? অনেক আওয়ামি বন্ধুর আবার চরম আপত্তি তাদেরকে ফ্যাসিবাদি বলে মেনে নিতে। যাই হোক হরতালের দিন আরও অনেককে ধরা হয়েছে এমনকি মানববন্ধনের মত একটি নিরীহ কর্মসুচিতেও পুলিশে হামলায় একজন কর্মী মারা গিয়েছে।
তাহলে এই সরকার কি বলতে চায়? কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ড কি করা যাবে না? এই সরকার কি কোন রাজনৈতিক সরকার নাকি একটি সামরিক সরকার? এই সরকার কি ১/১১ এর সরকারের একটি ধারাবাহিকতা?
না তা না। এই সরকার হলো জনতার রায় নিয়ে আসা সরকার। তাদের ভাষ্যমতে যুদ্ধাপরাধিদের বিচার করার জন্য জনরায় নিয়ে ক্ষমতায় আসা। এসব ইস্যু ব্লগে জনপ্রিয় হলেও সাধারনের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ন সেই প্রমান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ইলেকশনে একবার দেখা গিয়েছে। অনেক জায়গায় জামাত জয়লাভ করেছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো মিডিয়ার অপপ্রচার সত্ত্বেও মনজুরুল আলম জয়লাভ করেছে। যাই হোক ওখানে একটা থাপ্পর খাওয়ার পর মিডিয়া বিষয়টা চাপা পড়েছে। কিন্তু বিএনপি যদি হারতো তাহকে সবকিছু ছাপিয়ে মূখ্য হয়ে যেত বিএনপির সাথে জামাতের জোট বাধা ও সালাউদ্দীন কাদের চৌঃ সামনে থেকে দায়িত্ব নেওয়া। তবে সরকার ঐ নির্বাচন থেকে একটি ব্যাপার ভালই বুঝতে পেরেছে, সেটা হলো সরকারের ১৫ মাসের কাজে সাধারন মানুষ খুশী না আর যদি আঔামিলীগ বিরোধি ভোটের শক্তিগুলো সদি এক থাকে, আর ২০০৯ এর মত সামরিক বাহীনির সহায়তা না পেলে তাদের সামনে দিন খারাপ। তাই শুরু করলো জামাতের নেতাদেরকে ধরা। এখানে অনেকে বলবেন তারা চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী। আপনি যদি না বুঝে বলে থাকেন তাহলে পরের অংশ পড়তে পারেন আর বুঝে যদি বলেন তাহলে আপনাকে বুঝানোর ক্ষমতা কারও নাই। প্রথম কথা হলো তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানার একটি হাস্যকর মামলায়। ব্যাপারটা এমন আমি বললাম ব্লগার 'ক' এর চরিত্র মহানবির সাথে তুলনীয়। এতে আরেকজন ব্লগার মডুদের কাছে তার ধর্মানুভুতিতে আঘাত হানার অভিযোগ আনলো। আর মডারেটর যেয়ে সেই ব্লগার 'ক' কে ব্যান করে দিল। এখন বিভিন্ন গাড়ি পোড়ানোর মামলা দেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের রাজনিতিতে ভাংচুর একটি অনেক পুরানো সংস্কৃতি। ৯০ এর আন্দোলোনের পর সে সময়ের ছাত্রনেতাদের নিয়ে বিচিত্রার একটা ফিচার পড়েছিলাম যেখানে আমান, খোকন, হাবিব, প্রধান প্রমুখ নেতার পরিচয় করিয়ে দেয়া হচ্ছিল কে কয়টি গাড়ি পুড়িয়েছে সেই সংখ্যা দিয়ে। তখন সেই শিশু মনেও প্রশ্ন গেগেছিল গাড়ি ভাংচুর করা কি কোন ভাল কাজ? তাহলে গাড়ি ভাংচুর করার জন্য কেন এরা এত গর্বিত? ভাংচুর বা পোড়ানোর জন্য বাংলাদেশের বেশীর ভাগ রাজনৈতিককে আটক করে রিমান্ডে নেয়া যায়। শেখ সেলিম নিজের মুখে বলেছেন, বাসে গান পাউডার দিয়ে শিশু হত্যার সাথে যুবলীগের নেতারা জড়িত ছিলেন। সরকার কি সেই হত্যার বিচার করবে? নাকি দেশের আওয়ামিলীগের জন্য সব অপরাধ মাফ? যাই হোক জামাতের নেতাদের গ্রেফতারের পর দেখালাম টুকু সাহেব কি সুন্দর ভাষায় শিবিরকে বললেন তাদেরকে সহযোগিতা করতে। আর বিএনপিকে দুষলেন যুদ্ধাপরাধিদের বিচারের বিরোধিতা করার জন্য। সরকারের কি শিবিরের সাহায্য দরকার, আর বিএনপির সাহায্য লাগে না? হ্যা এটা ঠিক চার দলীয় জোট না হলে লীগের জন্য নির্বাচনে জয়লাভ করা সহজ হয়। টুকু সাহেবের সেদিনের কথাতেই এটা পরিষ্কার হয়ে যাবার কথা, এই সরকারের বিরোধিতা জামাতের সাথে না। জামাত কেন বিএনপির সাথে আছে সেজন্য। জ্বনাব শাহরিয়ার কবির এ প্রসংগে একটি সত্য কথা বলে ফেলেছেন অনিচ্ছা সত্ত্বেও। তিনি বলেছেন জামাতের শির্ষ নেতাদের ফাসি চান। পাঠক তিনি কিন্তু দেশের শির্ষ যুদ্ধাপরাধি/মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধিদের বিচার চান নাই। যারা যুদ্ধাপরাধিদের বিচার নিয়ে মাতামাতি করেন তাদের বেশীর ভাগের মানসিকতাও একই। তারা মুখে অনেকে অনেক কথা বলতে পারে। আসল উদ্দেশ্য হলো আওয়ামিলীগ বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে দুর্বল করা। সামনে চলে আসছে জামাতের বিভিন্ন নেতারা। আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল বলেছেন, "মীর কাশেম যুদ্ধাপরাধী নয়, কারণ সেটি এখনও প্রমানিত হয়নি"। কেন মীর কাশেমের সাথে কোন গোপন সমাঝোতা হয়েছে? চট্টগ্রামের যারা আছেন অনেক সিনিয়র তারা খুব ভাল করেই জানেন মীর কাশেম কি ছিল। আজকে বিএনপির কোন নেতা যে যুক্তিতে কামরুল মীর কাশেমকে নিরপরাধ বলছেন সেই অযুহাতে বললে ঝড় বয়ে যেত সারা দেশে। এরই নাম আওয়ামি বাকশালি মিডিয়া। বিএনপির এখন পর্যন্ত্য অনেক স্মার্টলি হ্যান্ডেল করেছে এই ইস্যু। জামাত বিএনপির ভোটের অংশিদার। সে হিসেবে তাদের মুক্তি চেয়েছে। কিন্তু যুদ্ধাপরাধিদের বিচারের বোরিধিতা করে নাই। এটা আওয়ামিলীগের ইস্যু। বাংলাদেশের যে কোন মানুষই চাইবে মুক্তিযুদ্ধকালীন ঘটে যাওয়া হত্যা আর নানা অপরাধের সাথে জড়িতদের সঠিক বিচার হোক। এখন পর্যন্ত্য আশাজাগানীয়া কোন লক্ষন দেখা যায়নি। এক অফিস রেডি করতে করতে এক বছরের বেশী পার হয়ে গেল। পরে দেখা গেল এমন লোককে প্রধান করা হলো যিনি ৭১ এ নিজামীদের অধিনস্হ নেতা ছিল। হায়রে সেলুকাস কি বিচিত্র এ দেশ। এখনও যিনি আছেন তাকে দেখা যায় বিভিন্ন জন যেয়ে বিরাট বিরাট বই হাতে তুলে দিচ্ছেন। ১০০ দিনের বেশী হয়ে গেলও একজন অপরাধিকেও সেই ট্রাইবুনাল সনাক্ত করতে পারে নাই। দেখা যাক সামনে আরও ৩ বছরের বেশী সময় আছে। আরও কত নাটক হয় এই ইস্যু নিয়ে সেটা দেখার অপেক্ষায় রইলাম। তবে প্রথম তিনজনকে যে মামলা দিয়ে যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে সেটা বাংলাদেশের আইন আদালতের জন্য একটু চরম খারাপ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ধরেন আমি বললাম জয়ের চারিত্রিক দৃডতা মহানবীর মত(নাউজুবিল্লাহ)। আর এতে করে কোন মুসলিম ক্ষিপ্ত হয়ে মামলা করলে সেই মামলায় পুলিশ আমাকে না ধরে যদি জয়কে ধরে রিমান্ডে নিয়ে যায় ব্যাপারটা কেমন হয়? তাই কোন বিবেকবান মানুষ ঐ মামলায় তাদের গ্রেফতারে উৎফুল্ল হতে পারে নাই। কারণ এটাই শেষ সরকার নয়, কি আদর্শ রেখে যাচ্ছে তারা ভবিষ্যতের জন্য? শেখ হাসনা যেদিন শপথ নেন সেদিন একটি কথা তিনি বলেছিলেন, "অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী হইয়া কোন সিদ্ধান্ত গ্রহন করিব না"। এখন পর্যন্ত এই সরকারের সমস্ত কর্মকান্ড হচ্ছে দলীয়/ব্যাক্তিগত রাগ অনুরাগের বহিঃপ্রকাশ। এজন্য সরকার দলীয় নেতাদের মামলা সব বাতিল হয়ে যায় আর বিরোধিদের নামে চলছে হামলা/মামলা/গ্রেফতারের মহোৎসব।
যাই হোক বলছিলাম গ্রেফতার উৎসব নিয়ে। এই সরকারের গ্রেফতার উৎসব তাদের ক্ষমতা নেয়ার প্রথম দিন থেকেই চলছে। বিএম বাকির হোসেনকে মেরেই ফেললো। কে ছিলেন বাকির হোসেন? দেশের শির্ষ সন্ত্রাসী? দুর্নিতিবাজ? জংগি? কেন তাকে হত্যা করা হলো? যেখানে ক্ষমতাশালীরা মন্ত্রীকে সবার সামনে ধমক দিয়েও রেহাই পেয়ে যায়। কি দোষ এহসানুল হক মিলনের? বাংলাদেশে আজকে যে নকল মুক্ত পরীক্ষা হচ্ছে এর পিছনে এই মানুষটির অনেক বড় একটি অবদান আছে। তার নামে মামলা দেয়া হচ্ছে মানিব্যাগ ছিনতাই, ৬০ বছরের বৃ্দ্ধাকে ধর্ষন প্রচেষ্টার, ৯ হাজার টাকা চাদা দাবি, মাটি চুরি জন্য। এসব গ্রেফতার আওয়ামিলীগ ও তার সমর্থকদেরকে অনেক আনন্দ দিতে পারে। কিন্তু একজন আমজনতা হিসেবে আমাকে আতংকিত করে। কারণ বাংলাদেশে সরকার বিরোধিতার জন্য এখন যে কাউকে গ্রেফতার করা যায়, রিমান্ডে নিয়ে অত্যাচার করা যায়। এজন্য কোন অযুহাত লাগে না, কিছু না পেলে বলবে জংগি, হিজবুত। আর এই যে সংস্কৃতি তুমুল গতিতে শুরু হয়েছে এর শেষ কোথায় হবে?
আফ্রিকার বিশ্বকাপ উৎসব আজকে শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবে সরকারের এই গ্রেফতার উৎসব সামনে আরও তীব্রতর হবে, হয়ত চলবে আরও মাসের পর মাস। চার বছর পর আসা বিশ্বকাপ উৎসবকে আমরা অনেকেই মিস করবো। তবে বাকশাল সমর্থকরা এই গ্রেফতার উৎসব আরও অনেকদিন ধরে উপভোগ করবেন। করুন আপনারা উপভোগ তবে কোনদিন নিজেরাও এই অন্যায়ের মুখোমুখি হন তখন বুঝবেন কতটা অন্যায়ের মাঝে ডুবে যাচ্ছে দিন বদলের কথা দিয়ে ক্ষমতায় আসা এই সরকার।
এখানে পোশাক পরে র্যাব যেই কাজ করছে সেই কাজের জন্য নিশ্চই র্যাবের জন্ম হয় নি।
পুলিশের পোশক নাই কেন? সাদা পোশাকে পুলিশ কখন থাকে?
এই র্যাব সদস্যের পরিচয় কি?
বিঃ দ্রঃ ছবির জন্য কৃতগ্গতা স্বিকার 'গুগল'
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:৪৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




