Click This Link
খেলাধুলা নিয়ে আর সবার মত আমারও আগ্রহ আছে। তাই অনেক পেপারেরই আর কিছু না পড়লেও খেলার পাতায় চোখ যাবেই। 'কালের কন্ঠে' উপরের এই খবরটার দিকে আজকে দৃষ্টি গেল। শেখ পরিবারের তিন ভাইয়েরই এখন ক্লাব হলো ঢাকা তথা জাতীয় লীগে। শেখ কামালের আবাহনী, শেখ রাসেল ক্রিড়া চক্র আর সর্বশেষ সংস্করন মেঝ ভাইয়ের শেখ জামাল ক্লাব (অধুনালুপ্ত ধানমন্ডি ক্লাব)। ক্ষমতাশালী ও ধনবান লোকেরা যদি ক্রিড়ানুরাগী হন তাহলে আমাদের আমজনতার জন্য সেটাতো বিরাট প্রাপ্তি। কিন্তু সেখানে যদি ক্ষমতার অপপ্রয়োগ ঘটানো হয় তাহলে সেটি হয় ক্রড়ানুরাগীদের জন্য দুঃখজনক। প্রথম যে বিষয়টা আমার নজরে পড়েছে 'শেখ জামাল' কোন যোগ্যতায় বাংলাদেশ লীগে খেলবে? শুধু নামের মধ্যে শেখ থাকলেই সব আইন কানুন মাফ হয়ে যায়।? নাকি আসলে এর আড়ালে নব্য ধনী আর দুর্নীতিবাজদের আখের গোছানোর জন্য একটি আইওয়াশ? খালেদা জিয়ার পুত্র আরাফাত রহমান কোকো ক্রিকেটের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন উত্তরা ক্লাব দিয়ে, কয়ক বছর বেশ শক্তিশালী দল গঠন করলেও গতবারের খবর জানি না। এরকম শেখ জামাল ক্লাবের ভবিষ্যত কি সেটা সময়ই বলে দিবে।
তবে স্মরন হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত্য ফুটবল মাঠে এই ক্লাবের কোন বিশেষ অবদান বা সাফল্যের কথা মনে পরছে না। আপনাদের কারও জানা থাকলে বলতে পারেন। ঢাকার মাঠে আবাহনী, মোহামেডানের বাইরে তৃতীয় শক্তি ছিল ব্রাদার্স। ৯২-৯৩ এর দিকে এসে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ শক্তিশালী দল গঠন শুরু করলো। এর মাঝে ইয়ংম্যানস ফকিরাপুল, ওয়ারী, অগ্রনি ব্যাংক, আরামবাগ এরা ঢাকার মাঠে উল্লেখযোগ্য ফুটবল দল গড়তো। তাহলে কোন যোগ্যতায় এই শেখ জামাল ক্লাব একদম সরাসরি বাংলাদেশ লীগে খেলবে। এ প্রসংগে ক্লাবের সভাপতি মঞ্জুরুল কাদেরও বলছেন বাফুফের সবুজ সংকেত পাওয়ার কথা, 'বাফুফের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো চিঠি এখনো পাইনি আমরা। তবে বাংলাদেশ লিগে খেলতে গেলে যেসব শর্ত পূরণ করতে হয় সবই আমরা করেছি। সেখানে বড় বিষয় হচ্ছে খেলার মাঠ, সেটা আমাদের আছে। আছে আমাদের সাংগঠনিক দক্ষতা ও আর্থিক সচ্ছলতা। এ বিষয়গুলো তলিয়ে দেখে বাফুফে আমাদের সবুজ সংকেত দিয়ে রেখেছে।'
সাংগঠনিক দক্ষতা, খেলার মাঠ, আর্থিক সচ্ছলতা থাকলেই একটি ক্লাব(!) জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহন করতে পারে। ঢাকার অন্যসব দলকে টপকে কিভাবে শেখ জামাল খেলার যুযোগ পেল? আর কি অবস্হা! এখনও খেলতে পারবে কিনা তারই কোন অফিসিয়াল গ্যারান্টি নাই শুধু মাত্র সবুজ সংকেতের ভিত্তিতেই তারা দল গঠন করে বসে আছে। আইন কানুন নিয়ম নীতিকে এরা যে থোড়াই কেয়ার করে সেটাই বলে দেয় তাদের এই এটিচিউড। আর যথারীতি আঘাত পড়েছে মোহামেডানের উপর। কারণ আর কিছুই না এই সরকারের সর্বক্ষেত্রে দলীয়করণের একটা আঘাত ক্রিড়াংগনেও পরেছে। ক্রিকেটে তামিম ইকবালকে হারানোর পর তার বাসার সামনে বোমা হামলা করেছে, লীগে জোর করে আঘাতের অযুহাত তুলে খলেতে দেয়নি, কারণ ক্ষমতায়তো আবাহনীর লোটাস কামাল। তারপরেও ফাইনালে মাহমুদুল্লাহ আর পাইলেট বীরোচিত পারফরমেন্সে মোহামেডান আবাহনীকে হারিয়ে লীগ শিরোপা জিতে। ফুটবলে গতবার মোহামেডান সবচেয়ে ভাল দল করে সবার চেয়ে ভাল পারফর্ম করে যখন সিটিসেল সুপার কাপ জীতলো তখন থেকেই ইচ্ছা করেই বাংলাদেশ লীগে তাদেরকে হারিয়ে দেয়া হয় ন্যাক্কারজনক ভাবে। আর এজন্য তারা বেছে নেয় সিলেট স্টেডিয়াম, যেখানে মিডিয়ার ফোকাস কম। সিলেট বিয়ানিবাজারের কাছে মহামেডান শুধু পয়েন্টই খোয়ায়নি, সেদিন মোহামেডানে খেলা জাতীয় দলের খেলয়াড়দেরকে ধাওয়া খেতে হয়েছিল সন্ত্রাসীদের কাছে। সেই বিয়ানিবাজারও হেরেছে মহামেডানের কাছে ঢাকা স্টেডিয়ামে, চ্যাম্পিয়ন(!) আবাহনীও হেরেছে মহামেডানের কাছে। জিতেছে সরকারি কুটচাল আর চক্রান্ত, ফলাফল আবাহনী হ্যট্রিক চ্যাম্পিয়ন।
ফুটবল এখনও বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা এবং এই খেলাটি খুব সহজে খেলা যায় বলে গ্রামে গন্জে সর্বত্র অতি প্রচলিত। এবারের বিশ্বকাপে আমরা ব্রাজিল আরজেন্টিনা নিয়ে দেশে চরম নৈরাজ্য আর হানাহানি দেখেছি। আমার জীবনেও ৯৩/৯৪ এর দিকে দেখেছি আবাহনী মহামেডানের খেলার দিন রাস্তাঘাট জনশুন্য হয়ে যেতে। এই খেলার জনপ্রিয়তা নিয়ে আমার কোন সন্দেহ নাই। আর আমি এই কথা বিশ্বাস করতে রাজি না ১৬ কোটি মানুষের বাংলাদেশ থেকে ৩২ জন মানসম্পন্ন খেলোয়াড় বেরোবে না। এই বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলা উরুগুয়ের জনসংকখ্যা মাত্র ৩৫ লক্ষ। তারা ফোরলানের মত এত চমৎকার খেলোয়াড় বের করতে পারলে আমরা এশিয়া মানের কোন খেলোয়াড় বের করে আনতে পারবো না কেন? থাইল্যান্ড একসময় আমাদের পিছনে ছিল। আশির দশকে প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টে আমাদের লাল দল সবুজ দল কি চমৎকার খেলেছিল, ঝাকড়া চুলে আয়াজকে পেয়েছিলাম আমরা। পেয়েছিলাম আমরা আসলাম, কায়সার হামিদের পাশাপাশী সাব্বির, মুন্নাকে। আমাদের আলফাজ এশিয়ার প্লেয়ার অফ দ্যা মান্ত হয়েছিল। তার মানে কি? এরকম ঘুনে ধরা অবস্হার মধ্যেও মানসম্পন্ন খেলোয়াড় বেরিয়ে এসেছে। তাহলে আমরা কি পারি না দীর্ঘমেয়াদি একটি পরিকল্পনা করতে ফুটবলকে নিয়ে? যেই খেলাকে এদেশের মানুষ এতটা ভালোবাসে এটা সেই দেশের মানুষের জন্য ক্রিড়া সংগঠকদের নৈতিক দায়িত্ব। তবে এ দায়িত্ব শেখ রাসেল, শেখ জামাল বা আবাহনীকে জোর করে চ্যাম্পিয়ন করে হবে না। তবে যদি সালাহউদ্দীন, সাব্বির, আসলামরা সারাদেশে ট্যুর করে ৬৪ জেলা থেকে ১২৮ জন অনুর্ধ ১০ (বয়স চুরি ছাড়া) খেলোয়াড় এনে একটা আবাসিক ক্যাম্প করে ১০ বছর মেয়াদি, আমি নিশ্চিত বাংলাদেশ এশিয়ার শির্ষ দলগুলোর একটি হতে পারবে ১০ বছর পর।
দ্বিতীয় সংবাদটি হলো হকি নিয়ে
Click This Link
আবাহনী মোহামেডান হকি খেলেছে আর তাতে মোট ৮ জন পাকিস্তানী খেলয়ার খেলেছে দুই দলের হয়ে। আবাহনীতে ৫ জন পাকিস্তানী হকি খেলোয়াড় খেলেছে। এখানে উল্লেখ্য হলো আবাহনীর প্রতিষ্ঠাতা হলেন মরহুম শেখ কামাল। আর উপদেষ্টা পরিষদে আছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দল নির্বাচনে কোন ভূমিকা হয়ত রাখেন না। তবে এই ক্লাবের গভর্নিং বডিতে সবাই আওয়ামিলীগের ডাকসাইটে নেতা, যেমন: সালমান এফ রহমান, সাবের হোসেন চৌঃ, লোটাস কামাল, কাজী শাহেদ আহমেদ প্রমুখ। সুতরাং েই ক্লাবটিকে আমরা মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ শক্তি ধরতে পারি। কিন্তু এই ক্লাবটিতে বরাবর পাকিস্তানী খেলোয়াড়দের প্রতি আলাদা আকর্ষন পরিলক্ষিত হয়। ওয়াসিম আকরাম, শহিদ আফ্রিদিরা খেলে গিয়েছে। গত লীগে আব্দুল রাজ্জাক বিজয়ের মাসে বাংলাদেশের জাতিয় দলের খেলোয়াড়দেরকে বেধড়ক পিটিয়ে প্রায় ডাবল সেন্চুরী করে ফেলেছিল ওয়ানডেতে। আর এবার হকিতে তারা ৫ জন পাকি খেলোয়াড় নিয়ে মাঠে নামলো। শুধু তাই নয়। ঢাকার ক্রিকেট লীগে দল বেধে পাকিস্তানী খেলোয়াড়রা খেলতে আসে। এক পাকি জহুর ইকবালের ব্যাটের আঘাতে আমাদের অশান্ত ছেলে হাসিবুল হোসেনে শান্তর ক্রিকেট ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায়। বাকিদের কথা বাদ দিলাম, মুক্তি যুদ্ধের সপক্ষ শক্তির এই দলে এত পাকি খেলোয়াড় আনার কারণে কোন দেশপ্রেমিক কলামলেখক কি প্রতিবাদ করেছেন? না করলে কেন করেন নাই? আমজনতার একজন হিসেবে আমি জানতে চাই।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




