আজকাল কালো চুলে আচমকা রুপোলি ঝিলিক দেখি,
কপোলে খানিক বেশি মেদ।
বাহুটিও কবি কল্পনার মত করে লতিয়ে নেই,
চোখের স্পষ্ট কালো তারা দুটোও কেমন অপরিচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে।
মানবীর দিনগত পাপক্ষয়ের কাল পূর্ণ হচ্ছে।
দেহে জমে ওঠা ছত্রাকের আভাসে,
পথভ্রষ্ট ছেঁড়া ফাটা স্বপ্নের অভ্যাসে,
মধ্যবিত্তের ঈশ্বর বিলাসিতায় তোমায় খুঁজে পাই;
আদম-ইভের অভিশপ্ত হবার রাত থেকে শুরু করে আজকের প্রলয়রাত্রি অবধি।
ভয় নেই, তোমায় ফিরে ডাকবো না।
মানবীর দিনগত পাপক্ষয়ের কাল পূর্ণ হচ্ছে।
কেমন আওয়াজ উঠছে,
অপ্রকৃতিস্থ দানবের উন্মত্ত দাপাদাপি।
নাকি, অধিকারহীন বন্ধনের আজ সুতো ছিঁড়ছে, খসে পড়ছে?
অথবা না পাওয়ারা কী মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে কৃষ্ণপক্ষের ঝোড়ো রাতে, আজ,এতদিন পর?
কী জানি!
শুধু অবচেতন ঠেলে আধো চেতনার পাথর ভেজানো স্রোতের আভাস পাচ্ছি,
উন্মত্ত বিকৃত হিহিহিহি হাসিতে ধেয়ে আসছে।
সে হাসিতে আমি তোমায় শুনেছি,
আমাদের স্বর্গপতন শুনেছি।
মানবীর দিনগত পাপক্ষয়ের কাল পূর্ণ হয়ে আসছে।
অপ্রকৃতিস্থ ক্লান্ত দানব ঘুমিয়েছে,
স্বপ্নশূন্য ঘুমের অন্ধকূপ বেয়ে উঠছে হুহুহুহু আওয়াজ-
শূন্য আওয়াজ, অন্ধ আওয়াজ।
মরণবীণা?
হতে পারে।
যে দুর্বোধ্য তানে একদা নবজন্ম পেয়েছিল আমাদের জীবনবীণার তন্ত্রী,
যে আকস্মিক তানে সুদূর বর্ষাধন্য লগ্নে রচিত হয়েছিল আমাদের অনুরাগ,
সে বোধ হয় তলিয়ে গেছে-
স্বপ্নশূন্য ঘুমের অন্ধকূপে,
অথবা,
চেতনার পাথর ভেজানো জলরাশিতে।
আকাশের দীপাবলির উদযাপনে অথবা বর্ষাস্নাত প্রথম কদমরেণুময় আমাদের যে ভালো বাস করতো,
তাও বুঝি তলিয়েই গেছে।
বেশ বুঝতে পারছি,
মানবীর দিনগত পাপক্ষয়ের কাল পূর্ণ হচ্ছে।
বুকের ভেতরে কে যেন ঘোষণা করল, "ভেসে যাচ্ছে।"
আজ সব ভেসে যাচ্ছে।
আকাশজোড়া দীপাবলি,
প্রথম কদমরেণু,
অপ্রকৃতিস্থ দৈত্যের অতৃপ্ত বেদনা,
অন্ধকূপের শূন্য শব্দ-
সব, সব ভেসে যাচ্ছে।
দীপমালার পুণ্যদীপের মত করে খুব যত্নে তুমিও ভেসে যাচ্ছ,
ধীরে ধীরে, বিস্মৃতির মহানদে।
চিরউদাসীন মহাপৃথিবীর মতই আজ আমাদেরও কিছু এসে যায় না।
আমাদের দিনগত পাপক্ষয়ের কাল পূর্ণ হয়েছে।
(ঋদভিকা)
১৬ আগস্ট, ২০২০
ফার্মগেট
(সর্বস্বত্ত্ব সংরক্ষিত: @ঋদভিকা পাল)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



