somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার কথা বলো না বলো না, কবি হওয়া আর হলো না হলো না.......

০১ লা মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাঝেমাঝে শেষ বিকেলে এক ঘণ্টা ফ্রি টাইম পাওয়াটাই বেশি বোরিং। কিচ্ছু করার নাই, কোত্থাও যাওয়ার নাই। খুব বেশি ছোট ছিলাম যখন, তখন লেখালেখির শখ ছিল। এখন সেও উবে গেছে।

জানালার গ্রিলগুলো জেলের গরাদের মত লাগে।

শেষ বিকেলে জানালা ধরে বসে থাকি। হাতে কফির মফ, সেখান থেকে সাদা সাদা ধোঁয়া ওঠে।
ওই দূরেও কোন বিল্ডিং-এর পেছন থেকে ধোঁয়া উঠছে। সাদা ধোঁয়া। আম্মু রান্নাঘরে বসে আছে। চুলার উপরে রাখা পাত্র থেকেও ধোঁয়া ওঠে। সামনের ছাদে আসা আঙ্কেলের সিগারেট থেকেও ধোঁয়া ওঠে। সব ধোঁয়াই সাদা রঙের।

ঘনবসতির দেশ, প্রত্যেক বর্গকিলোমিটারে নাকি নয়'শর বেশি লোকের বসবাস। এক বর্গকিলোমিটার যায়গায় নয়'শ জীবনের গল্প লেখা হয়।

কারো গল্প কিংবদন্তি হয়ে যায়। কিছুটা সস্তা দামে হলেও বিকিয়ে যায় কারো কারো গল্প। বেশিরভাগের গল্পই কেউ শুনতে চায় না। সময় হয় না শোনার।
গল্পগুলো মাঝরাতে শোবার বালিশে জমা হয়। নোনাজলে বালিশ ভিজে ভারী হয়। চাপ সইতে না পেরে ছিঁড়েও যায় একসময়। ছেঁড়া বালিশ থেকে তুলা বের হয়ে আসে, গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে বাতাসে মিশে যায়। গল্পের পরিণতি, কেউ শুনতে চায়নি, কারো শোনা হয় না।

একসময় ভাবতাম, বালিশের ছেঁড়া তুলাগুলোই হয়ত "মেঘ" নামে আকাশে ঠাই নেয়। জমে থাকা জল ঝরিয়ে দেয়, "বৃষ্টি" নামে।
ভাবতাম হাজার মানুষের দীর্ঘশ্বাস মিশেই হয়ত তৈরি করে শীতের কুয়াশা। শীতকালে হতাশ মানুষগুলোর দীর্ঘশ্বাস দেখা যায়। গরমকালে তা সবার চোখের আড়াল।

চাইলে কিন্তু দেখা যায়। দেখতে চাইলে গরমকালেও পাশে বসা মানুষটার দীর্ঘশ্বাস দেখা যায়। এড়িয়ে যেতে চাইলে শীতকালেও কিছুই চোখে পড়ে না।

খুব বেশি ছোট ছিলাম যখন, তখন কবিতা লিখতে ইচ্ছে করত। কিছুটা বড় হবার পর সে শখ চলে গেছে।(আমি এখনও অনেক ছোট কিন্তু!)
ইদানিং কবি মানুষগুলার জন্য বরং বেশিই খারাপ লাগে।
"ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়", সেই রাজ্যে কবি হইতে চাওয়াটা বিভিষিকা!

রাস্তাঘাটে মানুষ দেখি; তাঁরা বিজ্ঞাপন পড়ে, সিনেমার পোস্টারের দিকে তাকায় থাকে। মানুষের কনফিডেন্সের বড়ই অভাব! "গোপন সমস্যা সমাধান" টাইপ লিফলেটগুলার দিকে অত্যন্ত মনোযোগ দিয়া তাকায় থাকে। শুধু কবিতার একটা বই সাধা হোক, সেটাই পড়ে না। সিরিয়াসলি, ফ্রিতে পাইলেও পড়ে না। উপহারে পাওয়া কবিতার বইটা কয়জনে পুরোটা পড়ে? উপহারে কবিতার বই পায়ই বা কয়জন? দেবেটাই বা কে?

বেচারা কবিগুলা, লম্বা লম্বা চুল দাড়ি নিয়া ঘোরাঘুরি করে। শখ করেই রাখে নাকি? মে বি শখ করেই রাখে। চুল দাড়ি কাটানোর খরচও অবশ্য কম না। এই টাকায় কম বেশি পেট ভরায়াও ফেলা যায়। অ্যাট লিস্ট আরও তিন কাপ চা তো খাওয়া যাবে। আরও এক রাত জেগে তো থাকা যাবে। আরও একটা কবিতা লেখা যাবে।

মানুষ কবিতা পড়ে না, এতে মানুষেরে দোষ দিয়াই বা লাভ কি। আজকালকার কবিতাও! সহজ কথাটারে ঘুরায় প্যাঁচায় দুনিয়ার কঠিন করে বলা। তারপর এমন ভাব করা, যেন কথাটা এরচেয়ে সহজভাবে আর বলাই যেত না।
কবি আর কবিতা দেখলে লোকে যে পাগলামি ভাবে, এতে লোকের দোষ কতটুকু?

সন্ধ্যা ঘনায়।
ক্লান্ত লোকেরা ঘরে ফিরতে থাকে। আন সাকসেসফুল কবিরা ঘরে যায় না। নতুন কবিদের ঘরে ফেরার মুড নাই। পুরান কবিদের ঘরে ফেরার মুখ নাই। তারা রাস্তায় ঘুরে। পাবলিশার টু পাবলিশার।

মাঝেমাঝে রাস্তায় রাতুল নামের বাচাল ছেলেটাকে পেলে হাতে একটা পাণ্ডুলিপি ধরিয়ে দ্যায়, "পড়ে বলুন না, কেমন হয়েছে?"

কবি আর তার কবিতাকে নিয়ে উপন্যাস লিখে ফেলা যায়। লিখবে কে? সে গল্প পড়বেই বা কে? কবিদের খাতা জুড়ে ভালোবাসার কবিতা, বাকি পুরো ঘরটা জুড়ে দুঃখ-গাঁথা, ছেঁড়া কাথার গল্প। আরো অনেকের ছেঁড়া তুলার মেঘ হয়ে হারিয়ে যায় গল্পগুলো।

কেউ পড়তে চায় নি, কারো পড়া হয় না......
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০১৬ বিকাল ৪:৩৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারী একা কেন হবে চরিত্রহীন।পুরুষ তুমি কেন নিবি না এই বোজার ঋন।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১২:৫৪



আমাদের সমাজে সারাজীবন ধরে মেয়েদেরকেই কেনও ভালো মেয়ে হিসাবে প্রমান করতে হবে! মেয়ে বোলে কি ? নাকি মেয়েরা এই সমাজে অন্য কোন গ্রহ থেকে ভাড়া এসেছে । সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=সকল বিষাদ পিছনে রেখে হাঁটো পথ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮



©কাজী ফাতেমা ছবি

বিতৃষ্ণায় যদি মন ছেয়ে যায় তোমার কখনো
অথবা রোদ্দুর পুড়া সময়ের আক্রমণে তুমি নাজেহাল
বিষাদ মনে পুষো কখনো অথবা,
বাস্তবতার পেরেশানী মাথায় নিয়ে কখনো পথ চলো,
কিংবা বিরহ ব্যথায় কাতর তুমি, চুপসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×