somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যমুনা বহুমুখী সেতু আঞ্চলিক জাদুঘরের কিছু কথা

০৯ ই আগস্ট, ২০১০ দুপুর ১:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত জুন মাসের ০৫ তারিখে অফিস থেকে টাঙ্গাইলের ভুয়াপুরে যমুনা রিসোর্টে গিয়েছিলাম একটা ভিজিটে। তখনই সুযোগ হয় জাদুঘরটি দেখার। যমুনা সেতু প্রকল্পের যেন একটি প্রামান্য দলিল। জাদুঘর থেকে যে লিফলেট দেয়া হয়েছিল তা থেকেই সংক্ষিপ্তাকারে তুলে দিলাম কিছু তথ্য:
যমুনা বহুমুখী সেতু নির্মাণের পূর্বে প্রশ্ন দেখা দেয় যে প্রস্তাবিত সেতু প্রকল্পের কারণে সংশ্লিষ্ট (টাংগাইল-সিরাজগঞ্জ) এলাকার ব্যাপক পরিবতর্ন সাধিত হবে এবং এতে স্থানীয় বন্যপ্রাণী ও প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর কোন ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে কিনা (পড়লে বিশ্বব্যাংক এ প্রকল্পে অর্থায়ন নাও করতে পারে) ? এ সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ১৯৯০-৯১ সালে যমুনা বহুমুখী সেতু কর্তৃপক্ষ (যবসেক) এর পক্ষে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রফেসর জাকের হোসেন (প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) এর নেতৃত্বে “বন্যপ্রাণী সমীক্ষা দল” সাত মাস ব্যাপী সমীক্ষা চালিয়ে রিপোর্ট পেশ করেন। সে রিপোর্টের সুপারিশ অনুযায়ী যবসেক, পরিবেশ ইউনিটের অধীনে সেতু নির্মাণকালীন সময়ের জন্য তিন বছর (১৯৯৫-৯৭) মেয়াদী স্থানীয় বন্যপ্রাণী ও পরিবেশের উপর “বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও সমীক্ষা” (Wildlife Protection and Monitoring) নামে একটি গবেষণা প্রকল্প গ্রহণ করে। বাংলাদেশ বন্যপ্রাণিতত্ত্ব সমিতি (Wildlife Society of Bangladesh) উক্ত প্রকল্প পরিচালনা করে। উক্ত গবেষণা প্রকল্পের মাঠকর্মীগণ তাদের কাজের এলাকায় প্রাপ্ত বিভিন্ন কারণে মারা যাওয়া বন্যপশু, পাখি, সরিসৃপ ইত্যাদি সংগ্রহ করেন। তাদের অনুকরণে স্থানীয় জনগনও মৃত বন্যপ্রাণী সংগ্রহ করে দিতে থাকে।
ডিসেম্বর ১৯৯৭-এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে সংগ্রহশালাটির রক্ষণাবেক্ষণ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। কিন্তু প্রকল্পের দুজন কর্মীর (আনন্দ কুমার দাস ও আব্দুস সাত্তার লিটন) ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সংগ্রহশালাটি টিকে থাকে। এরপর নানা বাধা বিপত্তি পেরিয়ে সংগ্রহশালাটি প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি পায় এবং এপ্রিল ২০০৪ থেকে যমুনা বহুমুখী সেতুর ২য় অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে মাগা নেট ওয়ান লিঃ সংগ্রহশালাটিকে আধুনিকায়ন করে পূর্ণাঙ্গ জাদুঘরে রূপ দেয়। জুন ২০০৯ থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন ‘বঙ্গবন্ধু ব্রীজ স্পেশাল অর্গানাইজেশন’ জাদুঘরটির পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পায়।
সময়ের পরিক্রমায় জাদুঘরটি যমুনা বহুমুখী সেতু এলাকার প্রাকৃতিক ও সামাজিক চিত্রের প্রতিচ্ছবি ধারণ করে দেশের অন্যতম সুন্দর জাদুঘর হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।



যা সংরক্ষিত আছে [পরিসংখ্যানটি ২০০৮ সালের] : স্থানীয় ২২ প্রজাতির ১১২ টি স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৮৩ প্রজাতির ৩৪০ টি পাখি, ৩১ প্রজাতির ১৯৯ টি সরীসৃপ, ৯ প্রজাতির ২৯ টি ব্যাঙ, ১২৮ প্রজাতির ১৪০ টি মাছ, ৩৯ প্রজাতির ১০১ টি পাখির ডিম, ৬৪ প্রজাতির ২৭৯ টি পাখির বাসা, ৩২ প্রজাতির শামুক-ঝিনুক, ৫৩৫ টি পোকা-মাকড়, ৯১১ টি উদ্ভিদ নমুনা এবং ৬৪৪ টি সামাজিক-নৃতাত্ত্বিক নমুনাসহ মোট ৩৫০০ নমুনা।

জাদুঘর দেখার সময়: সকাল ৯টা – দুপুর ১টা এবং বিকেল ২টা – ৪টা। প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ১০/- টাকা। সাধারণত সরকারী বন্ধের দিনে খোলা থাকে। পূর্ব অনুমতি নিয়ে শিক্ষা সফর করা যায়, তবে সরকারী বন্ধের দিন শিক্ষা সফরের অনুমতি দেয়া হয় না।

অবস্থান: বর্তমানে জাদুঘরটি যমুনা সেতুর পূর্ব পাশে যমুনা রিসোর্টের মধ্যে অবস্থিত।



যোগাযোগ : ফোন নম্বর : ০৯২৩৪-৭৬০২২
মোবাইল নম্বর : ০১৭১৮২৩৭২০৪, ০১৭১৫৫৬১৯৩৩
ফ্যাক্স নম্বর : ০৯২৩৪-৭৬০২০

৩টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×