বাংলাদেশ। তিনপাশে ভারত, একপাশে মায়ানমার এবং দক্ষিনে বংগোপসাগর ঘেরা ছোট্ট একটি দেশ। না, এখানে যুক্তরাষ্ট্রকে আকর্ষন করার মত এমন আহামরি পরিমানের প্রাকৃতিক সম্পদ নেই যে যুক্তরাষ্ট্র ইরাক বা আফগানিস্তানে যে কারনে গনতন্ত্র এনেছে, সেই একই কারনে বাংলাদেশেও গনতন্ত্র আনবে না।
কক্সবাজার থেকে চীনের চেংদুর দুরত্ব ১৫৭৩ কিলোমিটার। টমাহক ক্রুজ মিসাইলের Block II TLAM-A সিরিজের সর্বোচ্চ দুরত্ব ২৫০০ কিলোমিটার। Block III TLAM-C এবং Block IV TLAM-E সিরিজের সর্বোচ্চ দুরত্ব ১৭০০ কিলোমিটার। জ্বী, আমি জানি আংকেল স্যাম তার দেশ থেকেই ইন্টার কন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইলের মাধ্যমে চীনে আঘাত হানতে পারে। সেটা তারা রাশিয়াকেও করতে পারে। তারপরেও রাশিয়ার চারপাশে ঘাঁটি গড়া থেকে তারা কিন্তু পিছপা হয়নি। তারা এটা করেছে মনস্তাত্বিক চাপ বজায় রাখার জন্য।
এই এলাকাতেও তাদের একটা ঘাঁটি হলে তাদের জন্য মন্দ হয় না। পাকিস্তান কখনোই যুক্তরাষ্ট্রকে চীনের বিরুদ্ধে তাদের দেশের মাটি ব্যবহার করতে দেবে না। তারা আবার পারমানবিক শক্তিধর দেশ। জোর করে তাদের মাটি ব্যবহার করতে গেলে অনেক মূল্য পরিশোধ করতে হবে। আর ভারতের ক্ষেত্রেও একই বিষয়। পার্থক্য হলো ভারত জনসমর্থনের কারনে এ কাজটি হতে দেবেনা, কেননা যে সরকার যুক্তরাষ্ট্রকে ঘাঁটি গড়ার অনুমতি দেবে সেই সরকার আসলে পলিটিক্যাল সুইসাইড করবে। মায়ানমারের সাথে জোর করলেও খরচের হিসাব বেশী হতে পারে কেননা তাদের সরকার তাদের সামরিক বাহিনীর পেছনে বিশাল খরচ করে যাতে তারা কিছুটা জবাব দিতে পারে।
বাদ রইলো বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র যদি বাংলাদেশ আক্রমন করে বসে, তাহলে তাতে প্রকৃত বাধা দেওয়ার মত বন্ধুরাষ্ট্র কেউ কি আছে? যে কোন দেশের কথা চিন্তা করুন। অথবা যুক্তরাষ্ট্রের খরচের খাতা ভারী করার সক্ষমতা কি বাংলাদেশের আছে?
আবারো বলছি, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান ও ইরাকে যে কারনে গনতন্ত্র যে কারনে এনেছে সেই একই কারনে বাংলাদেশে গনতন্ত্র আনবে না। কিন্তু ইরাক, আফগানিস্তান ব্রান্ডের গনতন্ত্র আনার ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ কিন্তু আংকেল স্যামদের এখানে নিহিত থাকতে পারে। আমাদের দেশে গনতন্ত্র এনে তারা ঠিকই একটি সামরিক ঘাঁটি গেড়ে বসতে পারেন।
হে মহান রাজনীতিবিদ, নেতা-কর্মী, চেলা-চামুন্ডা ও সমর্থকগণ, নিজেরা বসে ভালোভাবে সব ঠিক করে নিন। বর্তমান অবস্থাকে এখনই সামলান যাতে আমেরিকান গনতন্ত্র এদেশে হাজির না হয়ে পড়ে