
সপ্তাহ দুয়েক আগে থেকেই ভাবছিলাম ব্লগে ১৪ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে একটা পোস্ট দেব। কিন্তু কোন টপিক ঠিক করতে পারছিলাম না। বর্ষপূর্তি পোস্টের ক্ষেত্রে স্মৃতিচারণমূলক লেখালেখিই সবচেয়ে জনপ্রিয়, কিন্তু বারে বারে আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম-টাইপ পোস্ট ব্লগাররা পড়তে চাইবেন বলে মনে হয় না। তাছাড়া কমিউনিটি ব্লগ একটা গতিশীল জিনিস, সময়ের সাথে পরিবর্তনটাই স্বাভাবিক। সুতরাং স্মৃতিচারণ আপাতত বাদ।
আরেকটা উপায় আছে-নিজের পছন্দের কিছু ব্লগার আর তাদের চমৎকার সব লেখা নিয়ে আলোচনা। সেখানে নিজের পছন্দের ব্লগারদের প্রশংসাবাক্যে ভাসিয়ে দেয়া যায়, হারিয়ে যাওয়া ব্লগারদের ফিরে আসার জন্য অনুরোধ করা যায়, অপছন্দের ব্লগার আর নানান সিন্ডিকেটের সদস্যদের মুন্ডুপাতও করা যায়। আপাতত সেসবের প্রয়োজনীয়তাও আমি দেখছি না।
চার বছর পূর্তিতে নিজের সবগুলো পোস্টকে বিষয় অনুসারে সাজিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেই পোস্টটাকেও আপডেট করা যেতে পারে। সমস্যা হচ্ছে, পরের ১০ বছরে কি ব্লগিং এর সেই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পেরেছি? সুতরাং এই টপিকও বাদ।
আর কি করা যায়? ব্লগের ভবিষ্যত নিয়ে উৎকন্ঠিত হয়ে প্যানিক ছড়ানোর জন্যও পোস্ট দেওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে সচল বন্ধ হয়ে যাওয়া আর ব্লগ মডারেটর কাল্পনিক_ভালবাসার সাক্ষাতকারের পর উৎকণ্ঠিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। তাছাড়া ব্লগ মাতা জানাও অসুস্থ, সুতরাং ব্লগারদের কপালে চিন্তার ভাজ পড়বেই।
এসব বিষয় নিয়ে ব্লগার বোকা মানুষ বলতে চায় বেশ ভাল একটা পোস্ট দিয়েছেন। ব্লগ মডারেটর সেখানে বেশ বড়সড় ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। এ বিষয়ে আমার নিজের চিন্তাভাবনাগুলোও লিখে রাখা উচিত। দেখা যাক, লিখব হয়ত কোন একদিন।
উপরের টপিকগুলো বাদ দিলে বর্ষপূর্তিতে লেখার মত আর কি থাকে?
সুতরাং নিজের কথা বাদ দেই। ব্লগে নিয়মিত না লিখলেও অফলাইনে অনেক পোস্টই পড়া হয়। সেখান থেকেই বরং কিছু নিয়ে কথা বলা যাক। গতকাল ব্লগার করুণাধারার নতুন পোস্টটা পড়লাম। দেশের ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব নিয়ে লিখেছেন তার পরিচিত এক তরুণীর অভিজ্ঞতার আলোকে।
এরই মধ্যে দেশে আরও কিছু ঘটনা ঘটে গেছে। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সার্বজনীন পেনশন প্রোগ্রামের 'প্রত্যয়' স্কিমে যুক্ত না হওয়ার জন্য আন্দোলন করছেন, ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রেখেছেন, তবে পর্যন্ত এই আন্দোলন থেকে দৃশ্যমান কিছু অর্জন করতে পেরেছেন কি না-সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ।
একই সময়ে এইসব শিক্ষকদের ছাত্র আর চাকরীপ্রার্থীরা আন্দোলন করছেন অযোক্তিক কোটা বাতিলের দাবীতে। রাজপথ যখন
'তুমি কে? আমি কে? রাজাকার, রাজাকার।
কে বলেছে? কে বলেছে? সরকার, সরকার।-স্লোগানে মুখরিত, তখন ইচ্ছাকৃতভাবেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আর মিডিয়ায় শুধুমাত্র প্রথম লাইনটা হাইলাইট করে পুরো আন্দোলনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চলছে, আবার আদালতকে টেনে আন্দোলনকারীদের ভয় দেখানোর চেষ্টাও হয়েছে। বেশ কিছু নিউজ দেখলাম আন্দোলনকারীদের ওপর হেলমেট বাহিনী ওরফে হাতুড়ি লীগ ওরফে সোনার ছেলেদের আক্রমণের। ছেলে-মেয়েরা কি দমে যাচ্ছে? লক্ষণ দেখেতো মনে হচ্ছে না।
ব্লগার করুণাধারা তার পোস্টে সেই তরুণীর যে চিত্র এঁকেছেন, তাতে কি মনে হয়েছে এই মেয়েটি হেরে যাবে? কিংবা থেমে যাবে? আমার কাছে মনে হয়নি। আমি অন্তত চাইব এই মেয়েটি যেন জীবনযুদ্ধে হেরে না যায়।
তাহলে সামু কেন থামবে? আলোর দেখা পেতে হলেতো অন্ধকারের বুক চিরেই এগিয়ে যেতে হবে।
ভাল থাকুক সামু, ভাল থাকুক প্রিয় বাংলাদেশ।





**সবগুলো ছবি নেওয়া হয়েছে প্রথম আলোয় প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৩:৩৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


