সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে ‘বনখেকো’ ও ‘সন্ত্রাসীদের গডফাদার’ বলে অভিহিত করেছেন মহাজোট সরকারের বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এ নিয়ে প্রকাশ্যে বিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন আ’লীগের এ শীর্ষ দুই নেতা।
বন ও পরিবেশ মন্ত্রী থাকাকালে সাজেদা চৌধুরী ব্যাপক দুর্নীতি করেছেন দাবি করে তাকে ‘বনখেকো’ হিসেবে অভিহিত করেছেন মন্ত্রী। সাজেদা চৌধুরীর বিরুদ্ধে ফরিদপুরের সন্ত্রাসী কর্মকাে র মদদদাতার অভিযোগ এনে মন্ত্রী মোশাররফ বলেছেন, শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করা হবে। প্রয়োজনে সাজেদা চৌধুরীকে ফরিদপুরে ঢুকতে দেয়া হবে না।
ক্ষমতাসীন দলের দুই প্রভাবশালী নেতার প্রকাশ্যে বিরোধে জড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় আ’লীগ নেতাকর্মীরা দুইভাগে ভাগ হয়ে পড়েছেন। দুই পক্ষের মধ্যে যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংর্ঘযের আশংকা করা হচ্ছে।
জগৎ বন্ধুর ১৪০ তম আর্বিভাব দিবস উপলক্ষ্যে ফরিদপুর শহরের আঙ্গিনা প্রাঙ্গণে আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী স্মরণ সভার সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আর অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরী।
প্রভাবশালী দুই নেতার বিরোধ ও গ্র“পিংয়ে বেকায়দায় পড়েছেন স্থানীয় প্রশাসন। দুই গ্র“পকে খুশি রেখেই প্রশাসনকে কাজ করতে হচ্ছে। ২৮ মে সমাপনী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় সাজেদা চৌধুরীর বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনায় মুখর ছিলেন মন্ত্রী মোশারফ। মন্ত্রী বলেন, ফরিদপুরে সন্ত্রাসী কর্মকাে র মদদ দিচ্ছেন সাজেদা চৌধুরী। ৯৬ সালে সরকার আমলেও সন্ত্রাসীদের গডফাদার ছিলেন সাজেদা। বর্তমান সরকার আমলেও সাজেদা চৌধুরী ফরিদপুরকে অশান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
জানা গেছে, জগৎ বন্ধুর স্মরণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাজেদা চৌধুরী মন্ত্রী মোশারফ হোসেনের বাবার নামে রাস্তার নামকরণ ফলক ভেঙ্গে ফেলার পক্ষে বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, নাম ফলক ভাঙ্গার এখতিয়ার আমার নেই। জনগণ চাইলে এটি ভেঙ্গে দেবে, আর তারা রাখতে চাইলে রাখবে বলে মন্তব্য করেছিলেন সাজেদা চৌধুরী।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সাজেদা চৌধুরীকে ফরিদপুরে ঢুকতে দেওয়া হবে না এবং প্রকাশ্যে তাকে ‘বনখেকো’ বলায় সাজেদা পক্ষের নেতাকর্মীদের মাঝে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিপক্ষের ওপর হামলা এবং হামলা প্রতিহত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে উভয় পক্ষই। দুই গ্র“পই শক্তি সঞ্চয়ের চেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে আতংকে আছে সাধারণ মানুষ।
আ’লীগের প্রভাবশালী দুই নেতার বিরোধ ও গ্র“পিং দীর্ঘদিনের। ফুফু বনাম বেয়াই গ্র“প নামে পরিচিত ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফু হিসেবে পরিচিত সাজেদা চৌধুরী। অন্যদিকে মন্ত্রী মোশাররফ শেখ হাসিনার বেয়াই। ১৯৯৬ সালে আ’লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সাজেদা চৌধুরীর ও মোশাররফ হোসেন বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দু’গ্র“পের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষ হয়েছে। এক গ্র“প প্রতিপক্ষ গ্র“পের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর মোহাম্মদ বাবুল এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক শওকত আলী জাহিদ সন্ত্রাসী হামলায় আহত হয়েছেন।
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০১০ রাত ২:৩০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





