somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক তুষার ঝড়ের রাতে

১৮ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাবা মা র আদরের একমাত্র সন্তান অপরূপা রূপসী মারিয়া গাভ্রিলোভনা ছিল এক ষোড়শী জমিদার কন্যা যার বর্ননা কলম দিয়ে লেখার নয়, রূপকথাতেও বলার নয়। বাস করতো সে বাবা মা র সাথে রাশিয়ার গ প্রদেশে।

তখনকার রেওয়াজ অনুযায়ী মারিয়াও বেড়ে উঠেছিল ফরাসী উপন্যাস পড়ে। যার ফলে অবধারিত ভাবে সে প্রেমে পড়লো, আর পড়লো কি না ভ্লাদিমির নামে এক সামান্য লেফটেনেন্টের।
কিন্ত মারিয়ার অভিজাত বাবা মা কিছুতেই তাদের এ সম্পর্ক মেনে নিতে রাজী নন, কারণ দুজনের মধ্যে সামাজিক মর্যাদার এক দুস্তর ব্যাবধান !

ফলে যা হবার তাই হলো। নানা রকম চিন্তা ভাবনার পর শেষ পর্যন্ত এই প্রেমিক যুগল পালিয়ে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিল। মারিয়াকে এ ব্যাপারে সর্বাত্মক সাহায্য করছিল তারই বয়সী এক দাসী, তার একান্ত সহচরী, যার মাধ্যমে চলছিল দুজনের চিঠির আদান প্রদান।

মাঝ রাতে পালাতে হবে তাই মাথা ধরার অজুহাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাবে বলে বাবা মা র কাছ থেকে বিদায় নিল মারিয়া, যাকে বাবা মা আদর করে ডাকে মাশা।
এরপর ঘরে এসে ভারাক্রান্ত মন নিয়ে অনেক আবেগ আর দুঃখ মিশিয়ে বাবা মার উদ্দেশ্যে এক বিশাল চিঠি লিখে টেবিলের উপর রেখে দিল।
তাতে লেখা তাদের ছেড়ে যেতে তাদের আদরের মাশার কি দুঃখই না হচ্ছে এবং তার স্বর্গীয় প্রেমের কাছে বাকী সব ভালোবাসা কি ভাবে পরাজিত হয়েছে এসবের করুন বিবরণ!

ভ্লাদিমির তাদের জন্য একটি ঘোড়ার গাড়ী ঠিক করে রেখেছিল। মাঝরাতে দুই অপরাধিনী সবার অগোচরে পিছনের পথ দিয়ে বাড়ী থেকে বের হলো।
সাথে কাপড়ের ছোট্ট একটা পুটুলি ।
গাড়ীতে উঠার সাথে সাথে হঠাৎ প্রচন্ড এক তুষার ঝড় শুরু হলো, মনে হচ্ছিল ঝড় ও যেন তাদের এ কাজ থেকে নিবৃত্ত করতে চাইছে। যা হোক এরই মধ্যে অনেক কস্টে পরিকল্পনা মত তারা গ্রামের শেষ প্রান্তে এক পুরোনো গীর্জায় এসে হাজির হলো।

কিন্ত সেই ঝাপসা অন্ধকার পুরোনো কাঠের গীর্জা ঘরে শুধু পুরোহিত আর টাকার বিনিময়ে জোগাড় করা সাক্ষী ছাড়া আর কেউ নেই। অনেক রাত, বাইরে প্রচন্ড তুষার ঝড়, বর আসছেনা, পাদ্রী বার বার দরজার দিকে উকি দিচ্ছে । মারিয়া তার সখী সহ একটি বেন্চে বসে আছে আর সখী একটু পর পর ওডিকোলোন ভেজা রুমাল দিয়ে তার কপাল মুছে দিচ্ছে।

ভ্লাদিমির কোথায়! দেখা যাক সে কি করছে ! সে আসছে, কিন্ত রওনা দেয়ার সাথে সাথেই প্রচন্ড এক তুষার ঝড় শুরু হলো এবং মুহুর্তের মধ্যে রাস্তা ঘাট গভীর তুষারে ঢেকে গেল। পথের কোনো চিন্হ না থাকায় গাড়োয়ান আন্দাজে ঝড়ের মধ্যে গাড়ি চালিয়ে অনেক দুরে আরেক গ্রামে গিয়ে হাজির হলো।
অনেক কষ্টে এবং টাকার বিনিময়ে গ্রামের এক চাষীর ছেলের সহায়তায় সে যখন পুর্ব নির্ধারিত গীর্জায় পৌছালো তখন ভোর হয় হয়। চারিদিকে শুনশান, গীর্জা বন্ধ। অনেক খোজ খবর করে শেষে কি সংবাদটাই না সে শুনলো!

ওদিকে মারিয়া ফিরে এসে দেখে তার বাবা মা তখনো ঘুমিয়ে। সে তাড়াতাড়ি চিঠিটা ছিড়ে ফেলে কাপড় বদলে ঘুমিয়ে পড়লো। সুতরাং তাদের এই গোপন অভিসার এই গুটিকতক লোকই জানতো এবং যে কারনেই হোক তা গোপনই রইলো।
কিন্ত সকালে মারিয়ার এমন জ্বর আসলো যে সে ভুল বকতে লাগলো। তার মধ্যে গত রাতের ঘটনাও বাদ ছিলনা। মেয়ের অবস্থা দেখে বাবা মা সিদ্ধান্ত নিলেন ভ্লাদিমিরের সাথেই মেয়ের বিয়ে দেবেন
'জাত পাত কোনো বড় কথা না, জাত ধুয়ে পানি খাবে নাকি ! 'আর পাড়া পড়শী কে কি বল্লো সেটা নিয়ে মাথা না ঘামালেই হলো' ইত্যাদি চালু কথাগুলো আওড়াতে আওড়াতে তারা বিয়েতে রাজী বলে ভ্লাদিমিরকে ডেকে পাঠালো।
এর উত্তরে ভ্লাদিমির যা লিখলো তা পড়ে তারা তো হতবাক। লিখেছে 'সে আর বাচতে চায়না, মৃত্যু ছাড়া তার আর কোনো পথ নেই, তারা যেন তাকে ভুলে যায়, সে এক হতভাগ্য' ইত্যাদি।মারিয়ার বাবা মা এর অর্থ কিছুই বুঝলো না।

যাই হোক বেশ টানা হেচড়ার পর মারিয়াও আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠলো। কিছু দিন পর খবর আসলো ভ্লাদিমির বোরদিনোর এক যুদ্ধে মারা গেছে। মারিয়াকে খবরটা জানানো হলোনা।
এর কিছুদিন পরে মারিয়ার বাবা মা মেয়েকে নিয়ে গ্রামে নিজেদের জমিদার বাড়ীতে ফিরে গেল। সেখানে অনেক উচ্চ বংশের অনেক রূপবান গুনবান পানি প্রার্থী এসে নিরাশ হলো। মারিয়া কিছুতেই বিয়ে করবেনা কারণ সে যে ভ্লাদিমিরকে ভালোবাসে।

এর মধ্যে মারিয়ার বাবা মারা গেলে মারিয়ার মা মেয়ের ভবিষ্যত ভেবে ভীষন চিন্তায় পড়ে গেল।
ঠিক এসময়ই ঐ গ্রামে বুরমিন নামে আহত এক হুশার যোদ্ধার আগমন সেই এলাকার মেয়ে মহলে প্রচন্ড এক আলোড়নের সৃস্টি করলো।বিশেষ করে মেয়েদের প্রতি তার উদাসীনতাই ছিল এর কারণ !

সেই আহত যোদ্ধা বুরমিন একদিন মারিয়ার দুর্ভেদ্য দুর্গে ঢোকার সুযোগ পেল। তার সেই করুন বিষাদ ক্লিস্ট মুখ দেখে এতদিন পর মারিয়ার ও মন টলে উঠলো। সে প্রায় প্রতিদিনই মারিয়ার বাসায় আসে, মারিয়া বুঝতে পারলো সেও তাকে ভালোবাসে, কিন্ত কি যেন একটা বাধা তার মধ্যে। বলতে গিয়েও যেন বলে উঠতে পারছেনা।

সেদিন বিকেলে মারিয়া সাদা একটা গাউন পড়ে বাগানে লেকের ধারে বসে আছে এক ফরাসী উপন্যাস নিয়ে । তার মন বলছিল আজ বুরমিন কিছু বলবে। ঠিক সে সময়ই সেখানে বুরমিনের প্রবেশ।
মারিয়ার সেই ব্যাথাতুর মুখের দিকে চেয়ে বুরমিন আর নিজেকে সংযত রাখতে পারলোনা।আস্তে করে তার পাশে বসে বল্লো, 'মারিয়া আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি কিন্ত আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারবোনা'।

'কেন'?চমকে উঠলো মারিয়া।
'কারণ আমি বিবাহিত!'
'কি বলছেন ! বিবাহিত'!
'হ্যা শোনো তাহলে আজ আমার জীবনের সেই দুর্ভাগ্যের কাহীনি।
আজ থেকে বছর দুয়েক আগে এক ঝড়ের রাতে আমি ঘোড়ার গাড়ি করে এক সামরিক চৌকি থেকে আরেক চৌকিতে যাচ্ছিলাম'
'তারপর'!
'একটু পরেই শুরু হলো প্রচন্ড তুষার ঝড়। কোথা দিয়ে যাচ্ছিলাম কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ চেয়ে দেখি দুরে একটা টিমটিমে বাতি । গাড়োয়ান কে বল্লাম "চলো ওখানে"।
কাছে গিয়ে দেখি পুরোনো একটা গীর্জা, দরজায় ধাক্কা দিতেই খুলে গেল। প্রায় অন্ধকার সেই ঘরে এক পাদ্রি এগিয়ে এসে বল্লো 'কি ব্যাপার এত দেরী! কনে তো অজ্ঞান হবার অবস্থা। তাড়াতাড়ি আসুন বিয়েটা সেরে ফেলুন'।
ব্যাপারটা আমার কাছে তখন খুবই মজার এবং হাস্যস্কর ধরে নিয়ে বল্লাম, 'হ্যা হ্যা শুরু করুন ফাদার, দেরী করার দরকার কি'।
মোমের ক্ষীন আলোয় বেন্চে বসে থাকা মেয়েটাকে তার সখী ধরে আমার পাশে এনে দাড় করালো। ঝড় বেড়েই চলেছে , পাদ্রিও তাড়াহুড়া করে বিয়ে পড়িয়ে বল্লো 'এবার আপনাদের স্বামী স্ত্রী হিসেবে ঘোষনা করা হলো' ।
'তারপর' ! মারিয়ার আকুল প্রশ্ন ।
'সখী মেয়েটার মুখ উচু করে ধরলে আমি যখন রীতি অনুযায়ী তাকে চুমু খেতে যাবো তখনই মেয়েটা চোখ মেলে চিৎকার করে বল্লো " এ নয়, এ নয়" বলে অজ্ঞান হয়ে ঢলে পড়লো সখীর গায়ের উপর।
"তারপর" বুরমিনের জামার আস্তিন খামচে ধরে বল্লো মারিয়া।

'তারপর দেখি বাকী সবাই অবাক হয়ে আমার দিকে চেয়ে আছে । পাদ্রী মশাইয়ের চেহারাটাও কেমন ফ্যাকাশে। আমি ভাবলাম যথেস্ট শয়তানি হয়েছে আর না। কোনো দিকে না তাকিয়ে একলাফে গীর্জা থেকে বের হয়ে গাড়োয়ানকে বল্লাম, 'হাকাও গাড়ী'। এরপর গাড়ীতে উঠেই ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুম ভাংলো পরদিন আরেক সেনা চৌকিতে।

'তারপর সেই মেয়েটার কি হলো? তুমি কি তার আর কোনো খোজই নাওনি'! বিস্ফারিত চোখে মারিয়ার প্রশ্ন।

'আমি জানিনা মেয়েটার কি হলো মারিয়া, সেই ঝড়ের রাতে কোন গ্রামে কোথায় যে ঘটনাটা ঘটেছিল কিছুই আজ আর আমার মনে নেই।সেই গাড়োয়ানটাও মারা গেছে। সুতরাং তাকে খুজে পাওয়ার কোনো আশাই আর আমার নেই, যাকে নিয়ে ঠাট্টা করেছিলাম সেই এখন এত বড় এক প্রতিশোধ নিচ্ছে'।

ফ্যাকাশে মুখে মারিয়া তার মুখ তুলে বল্লো 'তুমি কি আমাকে চিনতে পারোনি '! আমিই তো সেই মেয়ে ' ।

ঘর থেকেই বুরমিনের খুশীর চিৎকার শুনে মারিয়ার মা বুকে বারবার ক্রস চিন্হ একে বিধাতাকে ধন্যবাদ জানাতে লাগলেন ।

***
রাশিয়ার বিখ্যাত লেখক নাট্যকার কবি আলেকজান্ডার পুশকিন এর নাম শুনেনি এমন মানুষ খুব কমই আছে । তার বিখ্যাত নাটক 'ইয়েভেগেনি ওনেগিন, গল্প 'ক্যাপ্টেনের মেয়ে' ইত্যাদি কালজয়ী সাহিত্য।

গল্পটি পুশকিন ইভান পেত্রোভিচ বেলকিনের লেখা বলে উল্লেখ করেছেন।
তবে গল্প বলার ধরণ দেখে মনে হয় স্বয়ং পুশকিনই এর রচয়িতা।

ইংরাজী The Blizzard থেকে অনুবাদ করেছি আমি, জানিনা কেমন হয়েছে । বিচারের ভার পাঠকদের উপরই রইলো।

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৫
৯৭টি মন্তব্য ৯৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×