আইচ্ছা,তোরা ঠোটের মইধ্যে এই মাছের আঁইশ মাইক্ষা কি মজা পাস?"
"ঐ খবরদার,আমার লিপস্টিক নিয়া কিছু কইবি না।"
"এতো দাম দিয়া লিপস্টিক কিনার কোন মানেই হয় না।হুদাই টেকা নষ্ট।এরচেয়ে মাছের আঁইশ গুলা পুতা দিয়া ছেইচ্চা তারপর ঠোটে লাগাইস।কামে দিবো।"
তুবা হাতের ছোট পার্স দিয়ে আমাকে মারা শুরু করলাম।আমি হাসতে লাগলাম ওর কান্ড দেখে।মেয়েরা ভালো করেই জানে তাদের এইসব পার্স দিয়ে মারা বা হাত দিয়ে ছোট খাটো কিল ঘুষি ছেলেদের শরীরে কোন প্রতিক্রিয়াই সৃষ্টি করে না।তারপরো মারবে।কারণ, বন্ধুদের তো আর জুতা খুলে মারা বা চড় দেয়া যাবে না।মেয়েদের বড় অস্ত্র এটাই বলা চলে।চড় মারার সময় কোথা থেকে যে এতো শক্তি পায় আল্লাহই ভালো জানে।
"অনেক মেরেছিস।এবার থাম।"
"আর কখনো আমার লিপস্টিক নিয়ে কিছু বলবি না।"
"ওকে বলবো না।এবার বল কেনো ডেকেছিস?"
"বাবা আমার জন্য ছেলে দেখছে।"
"আরি শালা!তোর বিয়ের বয়স হয়ে গেছে!টেরই পেলাম না।"
"দেখ,মজা করবি না এখন।আমি সিরিয়াস কিছু কথা বলবো তোকে।"
"ওকে বল।"
"আমি একজনকে ভালোবাসি।বাট,বাবাকে বলতে পারবো না।"
"ঐত্তেরি!যে ছেলেকে ভালোবাসিস তাকে বল তোর বাসায় প্রপোজাল পাঠাতে।"
"তুই আমার কথা শুনবি তো আগে।"
"ওকে বল।এই যে মুখে কলুপ আটলাম।"
তুবা আমার দিকে বেশ অসহায় ভঙিতে তাকালো।বুঝতে পারলাম মেয়েটা আমার ব্যবহারে কষ্ট পাচ্ছে।
"আমি যাকে ভালোবাসি সে আমাকে ভালোবাসে কিনা তা আমি জানি না।"
আমি কোন কথা না বলে চুপ করে রইলাম।তুবা কথা বলতে মানা করে দিয়েছে।ওর কথা শেষ হলেই বলবো।
"কিরে,চুপ করে আছিস কেনো?"
"তুই ই তো বললি কথা বলতে না।"
"আমি তোকে বলেছি মজা করে কোন কথা বলতে না।"
"ওকে।এখন আমাকে কি করতে হবে সেইটা বল।"
"তুই আমার বাবার কাছে যাবি।"
"আমি!!!"
তুবা এবার বেশ রাগত ভঙিতেই তাকালো আমার দিকে।চুপ মেরে গেলাম।এই মেয়ের যে রাগ!কোন সময় যে চড় মেরে বসে কে জানে!
"তুই আমার বাবার কাছে গিয়ে ছেলেটার কথা বলবি।বাবা তোকে অনেক পছন্দ করে।তোর কথা বাবা অবশ্যই শুনবে।তুই একটু বুঝিয়ে বললেই হবে।"
"এক শর্তে কাজটা করতে পারি।"
"কি শর্ত?"
"তুই তোর হাতের রান্না করা বিরিয়ানি খাওয়াবি আমাকে।আহা!সে যে কবে খেয়েছিলাম!এখনো মুখে সেই স্বাদ লেগে আছে।"
"ঠিকাছে।আমি রাজি।"
"এখন তাহলে ঐ পোলার নাম,ঠিকানা,কর্ম সব কিছুর ডিটেইলস দে।"
"কালকে বাসায় আসিস।আমি তোকে তখন বলবো।"
"এখন দিতে সমস্যা কি!"
"সমস্যা আছে।যা বলছি সেটা করবি।কালকে সকাল ১০ টায় বাসায় আসবি।আব্বু কাল বাসায় থাকবে।"
"আইচ্ছা ঠিকাছে।অখন ১০ টা টেকা দে।সিগারেট খামু।"
তুবা কোন কথা না বলে পার্স থেকে ১০ টাকা বের করে দিলো।আমি ওর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে আসলাম।টঙ এর দোকান থেকে সিগারেট ধরিয়ে বুক ভরে প্রথম টানটা দিলাম।আহা!নিজের টাকার চেয়ে অন্যের টাকায় সিগারেটে টান আরো পিনিকের।
পরদিন সকালে তুবার বাসায় গেলাম।অনেকদিন ধরে কাপড় চোপড় কিছু ধোয়া হয় না।তুবার বাসায় যেতে হবে তাই একটা শার্ট ধুয়েছি।মাসের শেষ।পকেট খুজে দেখি ১০ টাকা আছে।মানিব্যাগ তো কবেই এক্সপায়ার ডেট অতিক্রম করে ফেলেছে।মুচির কাছে নিয়ে গিয়ে যদি জুতার মত সেলাই করা যেতো তাহলে সেটাও করতাম।অভাবের বাজার বলে কথা।
শার্ট শুকানোর পর ইস্ত্রি করা দরকার।কিন্তু আছেই দশ টাকা।ইস্ত্রি করতে লাগবে ৫ টাকা।বাকি ৫ টাকা দিয়ে লোকাল বাসে ঝুলতে ঝুলতে তুবার বাসায় যাওয়া যাবে ঠিকই কিন্তু ফেরত আসা যাবে না।তাই পুরোনো পন্থাই অবলম্বন করতে হলো।শার্টটাকে সুন্দর করে ভাজ করে বালিশের তলে রেখে কয়েকবার চাপ দিলাম।বালিশ উল্টিয়ে দেখলাম কাজের কাজ কিছুই হয় নি।তাই পশ্চাৎ দেশ বালিশের উপর রেখে কয়েকবার উঠ বস করলাম।এই কাজ করার সময় খেয়াল করলাম যাতে হাওয়া লিক না হয়ে যায় আবার।মুরব্বিরা বলে বালিশের ওপর গ্যাস লিক করে দিলে নাকি ফোড়া উঠে।একবার বেশ বড় একটা ফোড়া হয়েছিলো।ইস!কি ব্যাথাই না পাইছিলাম কয়েকদিন।চ্যাগাইয়া চ্যাগাইয়া হাটতে হইছিলো।কথাটা মনে পড়লেই ব্যাথার কথা মনে উইঠা যায়।
কলিং বেল চাপলাম।আজকে বুক কাঁপছে। মনে হচ্ছে নিজের বিয়ের কথা নিজেই বলতে এসেছি।কন্ট্রোল সাঈদ,কন্ট্রোল ইউরসেলফ।
দুবার কলিংবেল বাজানোর পর কাজের মেয়েটা দড়জা খুলে ভেতরে বসতে বললো।আমি সুবোধ বালকের মত সোফায় গিয়ে বসলাম।আহ!গদিটা কি নরম।শালার আমার বিছানাও এতো নরম না।
তুবার বাবা আসাতে উঠে সালাম দিলাম।উনি সালামের উত্তর দিয়ে বসতে বললেন।
"কেমন আছেন আংকেল?"
"ভালোই আছি।তোমার কি খবর?"
"আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি।আংকেল,তুবা বাসায় আছে?"
"হুম।"
"ওকে একটু ডেকে দেয়া যাবে?"
"দিচ্ছি।তার আগে তুমি এইটা পড়ো।"
আংকেল আমার দিকে একটা ডায়রি এগিয়ে দিলাম।উপরে তুবার নাম লেখা।তুবার ডায়রি আংকেল আমাকে কেনো পড়ার জন্য বলছে বুঝলাম না।
"তুমি পড়তে থাকো।আমি তোমার জন্য নাস্তার কথা বলছি।"
আংকেল চলে যাওয়ার পর ডায়রিটা খুললাম।ডায়রির প্রথমে আমার পাসপোর্ট সাইজের সেই কলেজ লাইফের ভ্যাবলা মার্কা ছবি দেখে চমকে উঠলাম।তুবা এই ছবি ডায়রিতে রাখলো কেনো?
আস্তে আস্তে ডায়রিটা পড়তে লাগলাম।পড়তে পড়তে ভাবলাম আমি বোধহয় চোখে কম দেখছি।বার কয়েক চোখ কচলে নিলাম।নাহ!ঠিকই আছে।
তুবা পুরো ডায়রিটাতে আমার কথা লিখে রেখেছে।পরিচয়ের প্রথম দিন থেকে শুরু করে গতকাল পর্যন্ত যা যা হয়েছে সব লেখা আছে।নিজের চোখকেও ধোঁকাবাজ মনে হচ্ছিলো।
তুবা আমাকে ভালোবাসে!কিন্তু, আমি তো ওকে...
তুবার গতকালকে লেখাগুলো ভালো করে পড়লাম।তুবা আমাকে গতকাল ছেলেটার ঠিকানা কেনো দেয়নি সেটার মানেও বুঝলাম।কারণ,ছেলেটা আমি নিজেই।ও মনে করেছিলো আমি ওর কথায় রাজি হবো না।তাই এই প্যাচ মার্কা প্ল্যান ঠিক করেছে।আরেকটা জিনিস বুঝলাম ডায়রি পড়ে।তুবার বাবা হটাৎ করেই তার মেয়ের ডায়রিটা পান।সেটা পড়েই আমার ব্যাপারে জানতে পারেন।তুবা যে আমাকে ভালোবাসে সেটা জানার পর উনি তুবাকে বলেন আমাকে বাসায় নিয়ে আসতে।আর আমি এখন তুবার দেয়া ফাদে পা দিয়ে আছি।মেয়ে মানুষ কি চিজরে মাইরি!
চিন্তা করলাম ডায়রিটা রেখে আস্তে করে দড়জা খুলেই পালাবো।তারপর আর আমাকে পায় কে! আত্মবিশ্বাসে বলিয়ান হয়ে উঠতে যাবো এমন সময় দেখলাম তুবা নাস্তার প্লেট নিয়ে আসছে।আর পেছনে ওর বাবা।শালার,নিজেরে এখন জালে আটকানো জ্যান্ত মাছের মত মনে হইতেছে।
"তুবা,তুই সাঈদের পাশে বস।"
মনে মনে দুরূদ শরীফ পড়তে লাগলাম।মনে মনে আল্লাহর কাছে দোয়া করলাম যাতে আল্লাহ আমারে এই বিপদ থেকে উদ্ধার করে।উদ্ধার পাইলে কসম,আমি সিগারেট ছাইড়া দিমু।
তুবা আমার পাশে এসে বসলো।আমি ওর থেকে একটু চেপে বসলাম।এক্কেরে সোফার কিনারায়।আংকেলের দিকে তাকাইয়া দেখি উনি মুচকি হাসতেছে।এই ব্যাডায় হাসে ক্যা!মজা লয় নাকি!
"ডায়রিটা পড়েছো?"
"জি আংকেল।কিন্তু আংকেল..."
"যতটুকু জিজ্ঞেস করবো ঐটুকু উত্তর দিবা।"
চুপ মেরে গেলাম আংকেলের কথা শুনে।কোন মাইনকা চিপায় যে এসে পড়লাম!
"তুবা আমার একমাত্র মেয়ে।তাই কোন কিছুর কমতি রাখি নি।সবসময় ওর মুখে হাসি দেখতে চেয়েছি।ওর লাইফের অন্যতম একটা টার্নিং পয়েন্টে এসে আমি ওর হাসি মুছতে চাই নি।ডায়রি পড়ে তোমার কথা জানার পর তুবার জন্য আমি মনে মনে যে ছেলেটাকে ঠিক করে রেখেছিলাম সেটা বাদ দিয়ে দিই।আমি জানি,আমার মেয়ে আমার কথার অবাধ্য হতো না।আমি ওকে আমার পছন্দের ছেলের সাথেই বিয়ে দিতে পারতাম।কিন্তু ওর প্রাণখোলা হাসিটা দেখতে পেতাম না।এখন তোমার যদি কোন কথা বলার থাকে তুমি বলতে পারো।"
আমি চিন্তা করতে লাগলাম কি বলবো।তুবার দিকে তাকালাম।মাথা নিচু করে বসে আছে।
"আংকেল,আপনি তো জানেনই আমার বাবা-মা কেউই নেই।আপন বলতে এক চাচা আছে।যদিও আপন চাচা না।আমি যে এতিম খানায় বড় হয়েছিলাম সেইখানকার কেয়ারটেকার।উনার সাথে কথা না বলে আমি কিছুই করতে পারবো না।"
"সেটা আমি ম্যানেজ করবো।আগে তুমি বলো আমার মেয়েকে তুমি তোমার সঙিনী হিসেবে পেতে রাজি কিনা।"
দ্বিধায় পড়ে গেলাম।তুবা আমার লাইফের সবচেয়ে ভালো বন্ধু।ওর মুখে হাসি ফোটানোর জন্য আমি সাধ্যমত সব করতে রাজি। ওর জন্য আমার আলাদা একটা টান আছে ঠিকই কিন্তু সেটা কখনোই ভালোবাসার দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি নি।হ্যা,আমি প্রথম কিছুদিন দূর্বল ছিলাম ওর প্রতি।কিন্তু সেটা কাটিয়ে নিয়েছি নিজের অবস্থার কথা ভেবে।
তুবার দিকে তাকালাম আবার।আড়চোখে আমাকে দেখার চেষ্টা করছে।হাসি পেলো ওর কান্ড দেখে।
"তুবা আমার লাইফের অনেক ভালো বন্ধু।আমিও চাই ওর মুখে সবসময় হাসি লেগে থাকুক।"
এটুকু বলে থেমে তুবার দিকে আড়চোখে তাকালাম।মেয়েটা কান খাড়া করে কথা শুনছে।ভ্রু জোড়া কুঁচকে গেছে।
"আপনি আপনার মেয়ের মুখে এতোকাল হাসি ফুটিয়ে এসেছেন।আমিও তুবার মুখে সবসময় হাসি দেখতে চাই।কিন্তু আংকেল,আমি যে চাকরিটা করি সেটা খুবই সামান্য বেতনের।এই টাকায় আমার পক্ষে একটা সংসার চালানো সম্ভব না।আমি নিজের পায়ে আরো শক্ত হয়ে দাঁড়াতে চাই আগে।"
"আমি তোমাকে হেল্প করবো।"
"আংকেল, আমি খুবই খুশি হবো যদি আপনি আমাকে কোন সাহায্য না করেন।আমি এতো বছর বলতে গেলে একাই এসেছি এতোটা পথ।আমি তুবাকে বিয়ে করবো।কিন্তু ওকে আমি সুখে রাখতো পারবো কিনা জানি না।কারণ,যতদিন আমার ভিত শক্ত না হবে ততদিন তুবার কষ্ট করে থাকতে হবে।আর তুবার কষ্ট আমি দেখতে পারবো না।এখন আপনিই বলুন কি করবেন।"
আংকেল কিছু একটা বলার জন্য মুখ খুলতে যাবে এমন সময় তুবা বলে উঠলো,
"বাবা,তুমি একটু ভিতরে যাবে?আমি ওর সাথে কিছু কথা বলবো।"
তুবার বাবা মুচকি হেসে চলে গেলেন।আংকেল যাওয়ার পর তুবা আমার দিকে সরাসরি চোখ রাখলো।ওর চোখের দিকে তাকিয়ে আমি নিজেই চমকে উঠলাম।রাগে চোখ, মুখ সব লাল হয়ে গেছে ওর।নিশ্চিত চড় থাপ্পড় পড়বে আমার গালে।কল্পনায় দেখত পেলাপ তুবার এক চড়ে আমার দুটো দাত নড়ে গেছে।আর আমি ভ্যাবলার মত তুবার দিকে তাকিয়ে আছি।
"তুই আমাকে বিয়ে করবি কিনা বল।হ্যা অথবা না।একটাই উত্তর দিবি।"
"খাইছে!তুই দেখি MCQ এক্সাম নিচ্ছিস আমার।"
"বেশি কথা বলবি না।"
"তুই পারবি আমার সাথে থাকতে?"
"কেনো পারবো না?"
"তুবা,বাস্তবে আয়।"
"আমি বাস্তবেই আছি।"
বুঝলাম এই মেয়েকে বুঝানো সম্ভব না।রাজি হয়ে যাবো কিনা ভাবছি।
"এক শর্তে রাজি হতে পারি।"
"কি শর্ত?"
"তুই আজকের পর থেকে কোনদিন লিপস্টিক দিতে পারবি না।"
"এইটাই তোর শর্ত?"
"হুম।"
তুবা কিছুক্ষণ চুপ থেকে উত্তর দিলো।
"আমি রাজি।"
"ওকে।আংকেলকে ডাক।"
তুবা আমার দিকে মুচকি হেসে রুমের ভেতর চলে গেলো।আমি বসে বসে নাস্তা খেতে লাগলাম।আহ!কি টেস্ট মাইরি!
কিছুক্ষণ পর আংকেল আসলো।আমি আমার সম্মতির কথা জানিয়ে দিলাম।আংকেল বলে দিলেন আমার চাচা কে নিয়ে আগামীকাল বাসায় আসতে।এরপর বিদায় নিয়ে চলে আসলাম।
এরপরের ঘটনা খুব দ্রুতই ঘটতে লাগলো।যে এতিম খানায় আমি বড় হয়েছিলাম সেই এতিম খানার সবাইকে দাওয়াত দিয়েছি।আস্তে আস্তে সবাই চলে গেলো।নিজের বাসা এখনো ঠিক করি নি তাই বাসর রাতটা শশুড় বাড়িতেই কাটাতে হবে।একদিনের ঘর জামাই বলা চলে।হাহ হাহ হা!
এগারোটার সময় রুমে ঢুকলাম।রুমটা বেশ সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।খাটের মাঝে তুবা বসে আছে।বাসর ঘরে মেয়েরা ঘোমটা দিয়ে মাথা নিচু করে খাটের একেবারে মাঝ বরারবর বসে থাকবে এটা এখন রীতি হয়ে গেছে বলা চলে।আমি তো শেরওয়ানী পড়েই ঘামছি।তুবা যে এতো গয়না গাটি, ভারী শাড়ী পড়ে কি করে বসে আছে আল্লাহই ভালো জানে!মেয়ে মানুষের ধৈর্য+সহ্য ক্ষমতা আছে বটে।
আমি শেরওয়ানী খুলে নর্মাল জামা কাপড় পড়ে নিলাম।
"আর কষ্ট করে এতো জামা কাপর পড়ে থাকতে হবে না।কাপোড় চেঞ্জ করে নাও।"
আমার কথা শুনে তুবা মাথা উচু করলো।মুচকি হেসে খাট থেকে উঠে জামা কাপড় নিয়ে বাথরুমে গেলো।কিছুক্ষণ পর ও বেরিয়ে আসলো।ওকে দেখেই আমি থমকে গেলাম।
তুবাকে এ যাবৎ যতটা সুন্দর লেগেছে তার থেকে দিগুণ সুন্দর লাগছে।আমি মুগ্ধ দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম।
তুবা আমার পাশে এসে বসলো।আমি ওর দিকে আর ও আমার দিকে।বাংলা সিনেমা ফেইল মারবো শিউর আমাদের দুজনের তাকানো দেখে।
"আজকে লিপস্টিক দাও নাই কেনো?"
"তুমিই ই তো দিতে মানা করছিলা।"
"আজকে তো বিয়ের দিন।হাল্কা একটু দিতা।"
"আমি ঐদিনের পর আর লিপস্টিক দিই নি ঠোটে।সব ফেলে দিয়েছি।"
আহারে!মেয়েটার কত পছন্দের জিনিসে আঘাত করেছি!
"তুমি যদি চাও মাঝে মাঝে লিপস্টিক দিতে পারো।"
"মানে?"
"মানে হলো..."
কথাটা বলেই তুবার ঠোটে চুমু খেলাম।
"এভাবে।"
"ফাজিল হইছো তাই না?"
"লিপস্টিক টা ভালো লাগে নাই!ওকে,কি আর করার!দেখি কাউরে দেয়া যায় কিনা!"
"কি বললি তুই!আমার লিপস্টিক তুই আরেকজনরে দিয়া বেড়াবি!"
"তোর তো ভালো লাগে নাই।"
ওর দিকে হতাশার ভঙিতে তাকালাম।তুবা অবশ্য আমার দিকে বেশ রাগত ভঙিতেই তাকিয়ে আছে।হাসি আসলেও তা আটকে রাখলাম।
"খুব লিপস্টিক দেয়ার সখ তোর তাই না?"
"হুম।"
"দেখবো তো কত লিপস্টিক দিতে পারিস।"
"আরেকটা কথা।"
"আবার কি?"
"ঝালের চোটে যখন হাসফাস করবো তখন তোর লিপস্টিক লাগবে আমার।"
তুবা আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।আমি ওর হাত শক্ত করে ধরলাম।তুবা ওর মাথা আমার কাধে এলিয়ে দিলো।
আহা!গেবন হয় সুন্দর।এখন আপনেরা যাইতে পারেন।এখন শুধু ভালোবাসা বাসি হবে।
Please cloze your eyes. :v
লাইট অফ হবে এখন।
1...2...3...
(সমাপ্ত)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৪১