somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"হামিংবার্ড" (ভিত্তিহীন থ্রিলার)

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৫ রাত ১:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বেশ কয়েকদিন ধরেই মন মেজাজ ভালো না আমার।চুপ চাপ থাকি বেশিরভাগ সময়।বন্ধুরা কিছু বললে মুচকি একটা হাসি দিই শুধু।সবার সাথেই কথা বলা কমিয়ে দিয়েছি।বাসায় এসে নিজের রুমে ঢুকেই দড়জা লাগিয়ে দিই।যখন খাবার সময় হয় তখন দড়জা খুলি শুধু।বাসায় কেউ থাকে না এখন।একজন রুমমেট ছিলো সেও চলে গেছে ভার্সিটি ছুটি হওয়াতে।আমি ইচ্ছা করলেই চলে যেতে পারতাম।কিন্তু যাচ্ছি না একটা কারণেই।

"হামিংবার্ড"

শব্দটা পাখির নাম হলেও এটা একটা মানুষের ছদ্ম নাম।যাকে আমার খুন করতে হবে দেখতে পাওয়ার সাথেই।উপর মহল থেকে সেরকমই নির্দেশ দেয়া হয়েছে আমাকে।নির্দেশটা শুনে কয়েক প্রস্থ গালি দিয়েছি মনে মনে নরম গদিতে বসে থাকা মাথা মোটা গুলোকে।"শালার মাথা মোটা বলদ গুলা!!!দেখলেই মেরে ফেলতে হবে।শালার মারার পর তো নিজের জান নিজেকেই বাচাতে হবে।মাথা মোটা বলদগুলোতো আর সেটা বুঝবে না।নির্দেশ দিয়েই খালাস।শালার......... ফাকার!!!"

"হামিং বার্ড" লোকটা খুবই সাধারণ বাইরে থেকে।লোকটার ছবি যখন আমাকে প্রথম দেখানো হয় তখন চমকে উঠেছিলাম খানিকটা।এতো সহজ-সরল একটা লোককে কেনো মারতে হবে সেটা মাথায় কিছুতেই ঢুকছিলো না।বস যখন বিস্তারিত বললো তখন অনেকটা চমকে গিয়েছিলাম।এরকম একটা সাধা-সিধে লোক মানুষ মারার গবেষণার কাজ করছে!!

লোকটা নাকি "ফাজানুকা" নামের কি একটা ভাইরাস বানিয়েছে।আর এই ভাইরাসটা নাকি সে বানিয়েছে ছোট ছোট বাচ্চাদের মারার জন্য।

ভাইরাসের ক্ষতি নিয়ে আলোচনা করতেই শিউরে উঠলাম।"ফাজানুকা" ভাইরাস যেকোন একজনের নিঃশ্বাসের সংস্পর্শে আসলেই সে সাথে সাথেই পড়ে যাবে।শরীর কাপতে থাকবে।আশেপাশে যারা থাকবে তারা যখন আক্রান্তের কাছে আসবে তখন তারাও আক্রান্ত হবে।এবং পাচ মিনিটের মাঝে আক্রান্ত সবাই মারা যাবে।এতটুকু শুনে মাথায় কিছুতেই ঢুকছিলো না ব্যাপারটা।কোন কারণ ছাড়াই এরকম একটা ভাইরাস বানানোর মানে কি!!!বসকে জিজ্ঞেস করতেই বস থামিয়ে দিলেন।বললেন আগে কাজে নামতে।সময়মত জানানো হবে সব।বেকে বসি আমি।পরে বাধ্য হয়ে বিস্তারিত বলে।

"হামিং বার্ড" এই ভাইরাসটা বানিয়েছে প্রেসিডেন্টকে মারার জন্য।শুনে টাস্কি খাই আমি।বাচ্চাদের মারার সাথে প্রেসিডেন্টের মারার সম্পর্ক কোথায়??
"হামিং বার্ড"র একটা ছেলে ছিলো যে মাত্র ৫ বছর বয়সেই মারা যায় লিউকেমিয়ায়।ছেলের চিকিতসার জন্য তেমন কোন সাহাজ্য না পেয়ে প্রেসিডেন্টের শরণাপন্ন হয় সে।প্রেসিডেন্ট তাকে আশ্বাস দিলেও পরে কোন সাহাজ্যই করে নি।বার বার যাওয়ার পরও প্রেসিডেন্ট কোন সাহাজ্য করে নি।টাকার অভাবে চিকিতসা না হওয়াতে ছেলেটা মারা চায়।রোখ চেপে যায় "হামিং বার্ড"র।পেশায় সাইন্টিস্ট ছিলেন উনি।নিজের মেধা কাজে লাগিয়ে প্ল্যান করে এসবের।

দেশের বিভিন্ন জায়গায় স্কুলের বাচ্চারা মারা যেতে থাকলে প্রেসিডেন্ট অবশ্যই দেখতে যাবে।আর দেখতে গেলে ভাইরাস আক্রমন করবে প্রেসিডেন্টকে।ভাইরাসটা আক্রমণকারী মারা যাওয়ার পরও জীবিত থাকে।

এতোসব তথ্য ক্যথা থেকে পেলেন জিজ্ঞেস করলেও বলে নি আমাকে।আমিও আর কিছুই বলি নি।বসের অফিস থেকে বের হয়ে বাসায় এসে প্ল্যান সাজাই।এরপরের দিন কাজে নেমে পড়ি।

এই বাসাটা ভাড়া নিয়েছি এক মাস হলো।নেয়ার কারণ একটাই।"হামিংবার্ড"।লোকটা এই এলাকাতেই থাকে।আমি যে বাসায় ভাড়া নিয়েছি তার ঠিক সামনেই লোকটার বাড়ি।বাইনুকুলার দিয়ে সারাক্ষণ গলায় ঝুলিয়েই রাখি।লোকটা বড়ই ধুরন্ধর।বাড়ির বাইরে এখন পর্যন্ত বের হতে দেখি নি।রাতের বেলা নাইট ভিশন গ্লাস দিয়েও নজর রাখি।কিন্তু,লোকটার ছায়ার দেখাও পাই নি এখনো।অধৈর্য হয়ে যাচ্ছি আস্তে আস্তে।

ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি ১২ টা বাজে কেবল।ক্ষুধা লেগেছে বেশ।রান্না করাই আছে।খেয়ে নিবো লিনা ভাবছি।আর তখনই নজরে পড়লো এতোদিনের কাংখিত জিনিসের।
"হামিং বার্ড"।

হাতের কাছেই "Dragunov SVD" রাইফেলটা আছে।স্কোপে চোখ রেখেই নিশানা ঠিক করলাম।ট্রিগারে চাপ দিতেই নিঃশব্দে বুলেট বেরিয়ে গেলো।নিজের নিশানার ব্যাপারে আমি ভালোই জানি।বুলেটটা সোজা আঘাত হানবে "হামিং বার্ড"র মাথায়।অব্যর্থ নিশানা।হলোও তাই।

খুশি মনে রুমে এসে রাইফেলের পার্টস খুলে ব্যাগে ভরলাম।জামা কাপড় ব্যাগে ঢুকিয়ে বাথরুমে যেয়ে নিজের ছদ্মবেশ পাল্টালাম।নকল মেকআপ গুলো কমোডে ফেলে ফ্ল্যাস করে দিয়ে বের হয়ে আসলাম।

তালা লাগিয়ে সিড়ি দিয়ে নামতে নামতেই বসকে বিস্তারিত জানালাম সব।ফোনটা কেটে মেইন গেইট দিয়ে বের হতেই পাচজন লোক ঘিরে ধরলো।কোন কিছু বুঝার আগেই মাথায় কি দিয়ে যেনো সজোড়ে আঘাত করলো কেউ।জ্ঞান হারানোর ঠিক আগ মূহুর্তে শুনতে পেলাম কে যেনো বলছে,

"XP we got him"

"XP" আমার বসে নাম।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×