সময়টা গোমরা হয়ে আছে। সবাই কিছু বলতে গিয়ে থেমে যায়। একবার ভাবী ব্লগভরে আমার লেখা চালিয়ে যাই। যা বুঝি যা প্রয়োজন মনে করি সব লিখি। কিন্তু কি ভেবে আবার থেমে যাই।
রাজনীতির অনেক সম্ভাবনা আছে। যেমন ধরুন যদি ক’জন মিলে একটা রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন নেই তাহলে দুই জোটের কোথাও ঠাই মিলবে। আর এক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী হোক আর আপাত হোক মন্ত্রীসভায় কখনো ইন হওয়ার সুযোগ হয়তো হয়েও যেতে পারে।
মানুষের মাঝে ভোল পাল্টানো সুর একমাত্র রাজনৈতিক গোত্রেরই আছে। পুলিশ সাংবাদিক এরা সেই সুরে সুর মিলায়। সকালে অমুকের কুশপুত্তলিকা দাহ করে রাতের ডিনারে কোকেইন টেনে দেয়ার এমন সহজ চরিত্র রাজনীতিকেরই হয়।
মনে আছে ছোটবেলা যখন আপুর সাথে ঝগড়া লাগতাম তখন তার সাথে কনিষ্ঠ আঙুল লাগিয়ে আড়ি নিতাম। তার রুমেও যেতাম না, তার কথাও শুনতাম না। পরে মা এসে অভিমান ভাঙাতো। আর এখন এসব কি দেখি সস্তা সওয়ারি এসব কান্ডরীরা অভিমানও করতে জানেনা।
যাই হোক ওনাদের হুকুম আহকাম পালন করতে গিয়ে এতিম হচ্ছে অনেক শিশু, বিধবা হচ্ছেন অসংখ্য মা আর রাজনীতি পাচ্ছে নতুন প্রজেক্ট। এভাবে আসলে কতদিন চলবে। আমরা যে আর পারছি না। ভোট-মত সবারই আছে। তাই বলে সহিংসতার শিকার হয়ে আমার কাজ বন্ধ থাকবে, চুলোয় আগুন জ্বলবে না এ জিম্মাদারি রাজনীতিকদের দেয়া হয়নি।
পালাবদলের পর দুই জোটের যেই ক্ষমতায় আসুক তার সুরই পাল্টে যাবে। আবার গনতন্ত্রের চাদর গায় দিয়ে একদল টেন্ডার সন্ত্রাসীদের দেখবো চাকু হাতে অপর পক্ষকে দৌড়াচ্ছে। পুলিশের টিয়ারশেলের ঝাঁঝালো গন্ধে অফিসগামী মানুষ ছুটোছুটি করছে…। লুটপাট, নিয়োগ বানিজ্য, স্বেচ্ছাচারিতা… ওফ আর ভাল্লাগেনা এসব।
গত ৪২টি বছরই এসব দেখলাম। কেন?
কেন আমাদের এসব দৃশ্য বারবার দেখতে হবে?
এরআগের সরকার করে গেছে বলে আপনারাও তাই করবেন?
দয়া করে আমাদের বাঁচতে দিন।
সাইফুর রহমান, আবদুস সামাদ আজাদ, আবদুল মান্নান, খন্দকার দেলোয়ার হোসেন, আবদুল জলিল সাহেবদের দেখতাম টিভি স্ক্রিনে। কত ক্যামেরা, কত ফ্ল্যাশ.. কিন্তু এখন নেই। আর রাজনীতিকরা যেখানে মওলানা ভাসানী আর শেরে বাংলাকে স্মরণ করেনা তখন একসময়ের শীর্ষসারির এই নেতাদের স্মরণ করবে তা কি হয়! অথচ এই গত কয়েকবছর আগেও তাদের বক্তব্যই লিড হতো পত্রিকা টিভিতে। আজ এসব বাগ্মী নেতাশূণ্য ময়দানে তাদের শূণ্যতা কেউ স্মরণ করে না। তো
তাই বলছিলাম কি- সম্পদ তো আর কবরে নিয়ে যাবেন না। দয়া করে আমাদের বাঁচতে দিন। আর ক্ষমতা কোন সম্পদ নয় এটা জনগনকে পাহারা দেয়ার দায়িত্ব। আপনারা যদি এটার মর্ম বুঝতেন তবে এটা গ্রহণের জন্য এতো ফালাফালি করতেননা।
মামার জটিল ব্যাধিতে মায়ের বকুনিটা এমনই ছিল- ‘টাকা পয়সা সম্পদ কি কবরে নিয়ে যাবেন? এখন এসব ছাড়ুন। দয়া করে নিজের চিকিৎসার জন্য খরচপাতি করেন।’ সেই মামা আমার চেয়ারম্যানি নির্বাচনে ৩বার ফেল করে খুইয়েছে জমিজমার বিরাট অংশ। জনগন টাকা খেয়ে ভোট না দিলে তারই বা দোষ কি? দোষতো কপালের। ইশ! কেউ যদি আমার মামাকে ট্যাকনোক্রেট মন্ত্রী বানাতো.. তাহলে বলতে পারতাম আমার মামা মন্ত্রী ছিলেন। মজার কথা কি এখন আমার মামাকে এলাকায় চেয়ারম্যান নামেই চিনে। রিকশাওয়ালাকে বলি ওই যাবা! চেয়ারম্যান বাড়ি! – সে চলতে চলতে বলে আপনার মামাতো কখনো পাশ করে নাই !!!
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার পড়াশোনাটা কি যে কঠিন.. ঘুম আসলেও বই নিয়ে দাড়িয়ে থাকতাম। বসে পড়লে না জানি ঘুমিয়ে যাই। তো সেই সার্টিফিকেটটি পাওয়ার আনন্দে পাড়ায় অনেক মিষ্টি খাওয়ালেও এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি অনিশ্চিত। কারণ যেভাবে তারিখ পাল্টাচ্ছে শেষমেষ সেরাদের সাথে থাকার ভাগ্য হয় কিনা কে জানে। পড়ায় মন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আমাদের ছোট ভাইবোনদের। তাদের প্রস্তুতি বরবাদ করে আপনারা মসনদে যাবেন কার জন্য?
ওদিকে আলফু মিয়া গ্রাম থেকে তিনদিন আগেই বউ ভাতিজা নিয়ে ঢাকায় এসে উঠেছে কুয়েত যাবে বলে। যাবে সে একা কিন্তু সবাইকে আগেই ঢাকায় নিয়ে এসেছে কারণ যদি হরতালে নির্ধারিত ফ্লাইট ধরতে না পারে.. এসব কি কেউ বুঝে…!!
দয়া করে সমঝোতায় আসুন। আপনাদের বয়স ফুরিয়েছে আর পাগলামি করবেন না। নিজেদের জন্য না আমাদের জন্য করুন। বুকে হাত দিয়ে শপথ দেখাবেন না। অন্তরে শপথ নিন। দেশটাকে মায়ের মতো মনে করুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৩৯