somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘রংবাজ’ বাংলা চলচ্চিত্রের এক নতুন যুগের নাম

২৭ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে চলচ্চিত্রের সেই সময়ের শীর্ষ অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক সিদ্ধান্ত নিলেন ছবি প্রযোজনা করবেন । তখনও ১৯৫৬ সালে পথ শুরু করা বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অনেক অনেক সিমাবদ্ভতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল যার ফলে সব ধারার চলচ্চিত্র তখনও বাংলাদেশের পরিচালকরা দর্শকদের উপহার দিতে পারছিলেন না । কিন্তু পাশের দেশ ভারত কিংবা বিশ্বের ১নং ইন্ডাস্ট্রি হলিউডে তখন ধুমধাম অ্যাকশন, রোমান্টিক, সামাজিক, ঐতিহাসিক সব ধরনের চলচ্চিত্রে পরিপূর্ণ হতে যাচ্ছে । তাই রাজ্জাক চিন্তা করলেন যে তখন পর্যন্ত বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের দর্শকরা যা থেকে বঞ্ছিত সেটা থেকে তিনি তাদের মুক্তি দিবেন । বাংলা চলচ্চিত্রের তখন সামাজিক, রোমান্টিক, ফোক ফ্যান্টাসির জয় জয়কার । সব ছবিতেই দর্শক জমজমাট কাহিনী, হৃদয় ছোঁয়া কথা ও সুরের গান ,মনে দাগ ফেলা অভিনয়, সুনিপুন শিল্প সম্মত পরিচালনা সব পাচ্ছে তবুও কি যেন নেই নেই মনে হয়। ঠিক, তখনও কোন ছবিতে অ্যাকশন দৃশ্য নেই বা অ্যাকশন দৃশ্য করানোর মতো ঝুকি কেউ নেয়নি । রাজ্জাক ছুটে গেলেন অভিনেতা ও পরিচালক প্রয়াত জহিরুল হক এর কাছে । যিনি সেই সময় পরিচালনায় মাত্র তরুন। দুজনে মিলে ঠিক করলেন যে তারা একটি সামাজিক অ্যাকশন ছবি নির্মাণ করবেন যার প্রয়োজক হবেন রাজ্জাক এবং পরিচালক হবেন জহিরুল হক । শুরু হলো অভিনেতা রাজ্জাক এর প্রযোজকের খাতায় নাম লিখানোর পালা যে প্রতিষ্ঠানের নাম দিলেন রাজ্জাকের ‘রাজ’ আর তাঁর স্ত্রীর নাম ‘লক্ষ্মী’ দিয়ে যার নাম হলো ‘রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন’ । এভাবেই শুরু হলো রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন এর প্রথম ছবির কাজ যার দিলেন ‘রংবাজ’। । এই ‘রংবাজ’ ছবিটি ইতিহাসে ঠাই করে নেয় বাংলাদেশের প্রথম অ্যাকশন ধর্মী ছবি হিসেবে । তাই ‘রংবাজ’ ছবিটি শুধুই একটি ব্যবসাসফল ছবির নাম নয়, ‘রংবাজ’ হলো বাংলা চলচ্চিত্রের একটি সফল ধারার নামও বটে।
“রাজা” (রাজ্জাক) একটি বস্তি এলাকার রংবাজ, সে রংবাজি পকেটমারী সহ নানা ধান্দায় লিপ্ত থাকে সারাক্ষন। ঐ বস্তিরই মেয়ে “মালা” (কবরী) রাজাকে খুব ভালবাসে। একদিন রাজা এক চাকুরী জীবির আনোয়ার হোসেন পকেট মারে, লোকটা সেদিনই কেবল বেতন পেয়ে ফিরছিল। এ কারনে পাওনা মিটাতে না পেরে লোকটাকে বাড়িওয়ালা সহ পাওনাদারদের কাছে চরম অপমান হজম করতে হয়। অন্য একদিন রাজা পকেট মারতে গিয়ে জনতার তাড়া খেয়ে ঐ লোকটার ঘরে তার স্ত্রী “শিরিন” (রোজি) এর সাহায্যে বেচে গেলে তাকে বোন সম্বদন করে আসে। অক্ষম স্বামীর অজান্তে রাজা মায়ের মতো বোনকে অনেক সাহায্য করে এবং শেষ পর্যন্ত নিজ বাসায় নিয়ে আসে। এক সময় রাজা সকল খারাপ কাজ ছেড়ে দিলে রাজার মনের মানুষ মালার মনে প্রশ্ন জাগে- আমি হাজারবার বলার পর ও ভাল পথে এলোনা আর এই মহিলা আসতে না আসতেই ভাল হয়ে গেল? এদিকে শিরিনের স্বামীও সন্দেহ করছে স্ত্রীকে।কাহিনি মোড় নেয় দ্বন্দ্বমুখরের দিকে । যে সন্দেহটার সুযোগে ছবির খল চরিত্র বাবর সুযোগ নেয় রাজার উপর প্রতিশোধ নেয়ার । পরিশেষে সবাই জানতে পারল রাজা একজন অসাধারন মনের মানুষ, যিনি প্রতিটি মানুষকে যথাযত সম্মান করতে জানে এবং সকলের ভুল ভেঙে মিলনাত্মক সফল সমাপ্তি ঘটে।
ছবিতে অভিনয় করেছিলেন রাজ্জাক - রাজা (রংবাজ ), কবরী (মালা) ,রোজি (শিরিন) আনোয়ার হোসেন,হাসমত, বাবর ।
রংবাজ ছবির লিঙ্ক
রংবাজ ছবির সংগীত পরিচালনা করেন আনোয়ার পারভেজ। যার মাঝে ‘হৈ হৈ হৈ রঙ্গিলা রঙ্গিলা রে-

’ এবং ‘সে যে কেন এলোনা কিছু ভালোলাগে না’ - গান দুটি তুমুল শ্রোতাপ্রিয় হয় যা আজো রয়ে গেছে দর্শক শ্রোতাদের মনের ভেতর ।
আর এই ‘রংবাজ’ এর হাত ধরেই বাংলা চলচ্চিত্র সামাজিক অ্যাকশন ধারার এক নতুন যুগে প্রবেশ করে যাকে সমৃদ্ধ করে গেছেন দেওয়ান নজরুল, জহিরুল হক, মমতাজ আলী , দারাশিকো , দিলিপ বিশ্বাস, অশোক ঘোষ, মাসুদ পারভেজ, ফজল আহমেদ বেনজির, মতিন রহমান, আজিজুর রহমান, কামাল আহমেদ, এ জে মিন্টু, শিবলি সাদিক, কাজী হায়াত, শহিদুল ইসলাম খোকনদের মতো অনেক গুণী পরিচালকরা তাদের নির্মিত বক্স অফিসে সাড়া জাগানো ছবিগুলো দিয়ে ।।
একটি কবি ও কাব্য এবং http://www.radiobg24.com যৌথ নিবেদন ।।

৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×