দেলোয়ার হোসেন সাইদির মতো একটা ঘৃণ্য রাজাকারের মৃত্যুতে দেশের এতো এতো মানুষের শোক প্রকাশের বহর আমাদের মতো মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন হওয়া একটা দেশের পক্ষে যে কতোটা অবমাননাকর সেটা আমার সীমিত লেখনীক্ষমতার বাইরে। এর আগে রাজাকার শিরোমণি গোলাম আযমের মৃত্যুর পরও প্রায় একই ব্যাপার খুব হতাশা নিয়ে সহ্য করতে হয়েছে। এসব ঘটনার নিন্দা প্রকাশ করার মতো যুতসই ভাষা আমার জানা নেই। ইসলামে বলে “দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ।“ আর এইসমস্ত ঘৃণ্য বরাহদের বাহিনী আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় ইসলামের নামে পাকিস্তান রক্ষার নামে আপন রক্তের সাথে স্বজাতির সাথে বেঈমানি করেও শুধুমাত্র ধর্মকে ব্যবহার করে “কোরআনের পাখি” সেজে এতো মানুষকে সব ভুলিয়ে দিতে পারলো। যেটা লক্ষণীয় সেটা হল দেশের আপামর মানুষের চিন্তা চেতনার স্থূলতা, মুঢ়তা, অসচেতনতা আর ধর্মের প্রতি অন্ধত্ব এর সুযোগ এইসব রাজাকারের দল খুব ভালোমতোই ব্যবহার করতে পেরেছে। এরা অর্থাৎ এই রাজাকারেরা খুব ভালোমতোই এদেশের মানুষের পালস টিপে মতিগতি ধরতে পেরেছে আর সেভাবেই নিজেদের আখের গোছাতে পেরেছে। নাহলে আজ এই সময়ে এসে এইসব দুঃখজনক ব্যাপার দেখতে হতো না। দুনিয়ায় এখন পর্যন্ত আর কোনও দেশ দেখতে পেলাম না যেখানে সেদেশের জন্মের সময় যারা প্রত্যক্ষভাবে তার বিরোধিতা করেছিলো সেসমস্ত বেঈমানেরা সেদেশের মানুষের এতোটা সম্মান নিয়ে মরতে পারে। একই সাথে আরেকটা ব্যাপার খুব স্পষ্ট যে যেদেশের মানুষের একটা উল্লেখযোগ্য বড় অংশ এতোটা বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে দীন, হীন এবং স্থূল প্রকৃতির সেদেশের কপালে বড় ধরণের দুঃখ লেখা আছে। সেটা দেশের অতীত, বর্তমান বা ভবিষ্যৎ যে সময়ই হোক না কেন। এই দুঃখ থেকে এদেশের মানুষের মুক্তি নেই।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০২৩ রাত ১:৩১