বাংলাদেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের ইতিহাস অনেক পুরনো।ধারণা করা ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের নামে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের প্রথম শিকার সিরাজ শিকদার।তবে ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড ব্যাপক আলোচনায় আসে বিএনপি -জামাত জোট সরকারের আমলে। ২০০৪ সালে দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করতে র্যাব গঠন করা হয়। সে সময় ঢাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী এবং বিভিন্ন অঞ্চলে চরম পন্থী দের উত্থানের কারণে র্যাব এবং পুলিশ ক্রসফায়ার বা বন্দুক যুদ্ধে অংশ নেয়। বিচার ছাড়াই এমন হত্যাকান্ড নিয়ে মানবাধিকার সংস্থা গুলো প্রতিবাদ জানালেও সন্ত্রাস দমনের কার্যকরি হাতিয়ার হিসাবে সরকারের পক্ষ থেকে ক্রসফায়ার কে বৈধতা দেয়া হয়।
ক্রসফায়ার নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনা শুরু হয় ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে। সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনের হাতিয়ার হিসাবে ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের নাটক মঞ্চায়িত করে।প্রথম দিকে লিস্টে সন্ত্রাসীদের নাম থাকলে ও সময়ের সাথে সাথে পুলিশ, বিজিবি, র্যাব প্রভাবশালী দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বা অর্থের বিনিময়ে এই কাজ করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।ভুক্তভোগীর পরিবার স্বজন দের মামলা বা থানায় না যেতে ভয় ভীতি দেখানোর মতো অভিযোগ ও আছে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বরাবর এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জের ৭ খুন, কক্সবাজারে একরাম হত্যার বিষয় গুলো পত্রপত্রিকায় দেশে- বিদেশে ব্যাপক তোলপাড় হয়। বিএনপি অভিযোগ করেছে তাদের ৬৭০ জন কর্মী গুম এবং ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছে।
বেসরকারি মানবাধিকার সংস্থা ' আইন ও সালিশ কেন্দ্র' ( আসক) বিভিন্ন পত্রপত্রিকার নিউজ হতে তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে ১৯২৬ জন বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের শিকার হয়ে হয়েছে বলে দাবী করছে। পুলিশের বিশেষ শাখা ( এসবি) ২০১৫-২০২১ সালের ক্রসফায়ারের তথ্য সংরক্ষণ করে রেখেছে।সে অনুযায়ী ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধে মারা গিয়েছেন ১২৯৩ জন। নির্বাচনের কয়েক মাস পূর্বে ক্রসফায়ারের ঘটনা আশংকাজনক ভাবে বেড়ে যেত।
এসব হত্যাকান্ডের ভুক্তভোগীদের অন্তত ২৩ ধরণের অপরাধী হিসাবে ট্যাগ দেয়া হত । তবে ২০২১ সালে র্যাবের উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর ক্রসফায়ারের সংখ্যা হ্রাস পায়।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


