
নুরুল হক নুর বর্তমানে ছাত্রনেতাদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয়। কোটা আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড হিসাবে ধরা হয় নুরুল হক নুর ভাই কে। তিনি ঢাবির ডাকসুর ভিপি হিসাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন৷ নুর ভাইয়ের গণপরিষদ নামে একটি রাজনৈতিক দল রয়েছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর নুর ভাইকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সাথে ঘনিষ্ঠ হতে দেখা যায়। বিভিন্ন সময় নুর ভাই বলে এসেছেন, বিএনপির নেতা তারেক রহমানের সাথে খুব ভালো সম্পর্ক রয়েছে তার। নুর ভাই সর্বপ্রথম দাবী করেন জুলাই অভ্যুত্থানে তারেক রহমান আর্থিকভাবে ছাত্রদের সাহায্য করেছিলেন ৷নুরা ভাই যখন নিজ এলাকায় সমাবেশ করতে যান তখন বিএনপির হাইকমান্ড থেকে তাকে সাহায্য করতে নির্দেশ আসে।তখন সবাই ধারণা করেছিল নুরা ভাই বিএনপির প্রার্থী হিসাবে নমিনেশন পাইতে পারেন। ধারণা করা হয়েছিল সোশ্যাল ইনফ্লুয়েঞ্জা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব গোলান মাওলা রনি বিএনপির কাছ থেকে গ্রীন সিগন্যাল পাননি। নুরা ভাইয়ের রাজনৈতিক দল গণপরিষদ সৃষ্টির পিছনে বিএনপি ও প্রবাসী জামায়াতে ইসলামী নেতাদের সহযোগিতা রয়েছে। আড়ালে অনেকে নুর ভাই কে শিবির নুরা ও বলে থাকেন।
গত ২৬শে নভেম্বর রাজনৈতিক মাঠের নতুন সমীকরণ দেখা যায়। নুরা ভাইকে ইসলামিক রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে একই মঞ্চে দেখে অনেকেই অবাক হন। সেই সমাবেশ থেকে ধারণা পাওয়া যায় কয়েকটি ইসলামিক দল ও গণ পরিষদের নতুন জোট হতে যাচ্ছে। ইসলামিক দলগুলোর মধ্যে রয়েছে : ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিশ, নেজামে ইসলাম ও ফরায়েজী আন্দোলন সহ অন্যান্য ইসলামিক দল। আনঅফিসিয়াল ভাবে শোনা যাচ্ছে নুরা ভাইয়ের রাজনৈতিক দল গণপরিষদ তাদের সাথে যোগ দিতে যাচ্ছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো সকল ইসলামিক রাজনৈতিক দল এক জোট হলেও জামায়াতে ইসলামী তাদের সাথে অন্তর্ভুক্ত হয় নি।
বিএনপি ও জামায়াত খুব সম্ভবত জোটবদ্ধ হয়ে আগামী নির্বাচনে যাচ্ছে। জুলাই অভ্যুত্থানের পর জামায়াতের ইন্ট্রাম সরকারের উপর প্রভাব দেখে মনে হয়েছিল জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ একক ভাবে নির্বাচন করতে যাচ্ছে । জামায়াতের বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতা ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু জামাতের বাংলাদেশ শাখার আমীর শফিকুর রহমান লন্ডনে যাওয়ার পর সব হিসাব নিকাশ বদলাতে শুরু করে। শোনা যায় বিএনপির নেতা তারেক জিয়া ও জামায়াতের আমীরের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এক সাথে জোটবদ্ধ ভাবে নির্বাচনে যাওয়ার। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কে মোকাবিলার জন্য বিএনপি-জামাত একমত হয়েছে যে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নাই।
নুরা ভাইয়ের দল ইসলামিক রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগদানের পিছনে একটি সুক্ষ্ম রাজনৈতিক চাল রয়েছে। যেহেতু জামায়াত ইসলামিক দল গুলোর সাথে আপাতত এক জোট হচ্ছে না, স্বান্তনা হিসাবে বিএনপি ও জামায়াতের সমর্থিত ও মতাদর্শের দল ইসলামিক রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগ দিলে ইসলামিক দলগুলোর জোট নিজেদের রাজনৈতিক মাঠে আগের চেয়ে শক্তিশালী অনুভব করবে। নুরা ভাইয়ের মানুষকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে ইসলামিক রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের জনগণের সামনে আরো শক্তিশালী ভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হবে।
নুরা ভাই যদি বিএনপির সাপোর্ট ছাড়া নির্বাচন করতে যান তবে নিজের ইমেজ সংকটে পড়তে পারেন। স্বতন্ত্র হিসাবে নির্বাচনে অংশ নিলে নিজের এলাকায় বিএনপির যে কোন প্রার্থী তার বিরুদ্ধে নির্বাচনে দাড়ালে তিনি জামানত হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। তাই ধরে নেয়া যায় ইসলামিক দল গুলোর জোট ধরে রাখা ও বিএনপি-জামাতের সাথে ইসলামিক দলগুলোর অদৃশ্য বন্ধনে নুরা ভাই সেতু হিসাবে কাজ করছেন।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



