
বাংলাদেশে বর্তমানে যে সরকার দায়িত্ব নিয়েছেন তারা মূলত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মতো দায়িত্ব পালন করছে। ২০২৫ সালে এই সরকারের কাছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও অরাজনৈতিক দলগুলোর অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন এই তিনটি বিষয় মূলত সরকারের প্রধান প্রায়োরিটি। কিন্তু এই তিনটি বিষয় নিয়ে কাজ করতে হলে সরকারকে অবশ্যই দেশের সকল রাজনৈতিক দলের সাথে (আওয়ামী লীগ ও জাপা বাদে) ঐক্যমতে পৌছাতে হবে।
সংস্কার : বর্তমান সরকার ক্ষমতায় বসার পর থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ লক্ষ্যে কমিশন গঠন করা হয়েছে যারা ২০২৪ সালে ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে কি কি সংস্কার প্রয়োজন তার রিপোর্ট দিবে। কিন্তু সংস্কারের জন্য করা সুপারিশ সবার নিকট গ্রহণযোগ্য হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাছাড়া বড়ো দল হিসাবে বিএনপি বারবার দাবী জানাচ্ছে নির্বাচিত সরকার যাতে সংস্কার করে। কোন অনির্বাচিত সরকার সংস্কার করতে পারে না। সংস্কারের জন্য করা সুপারিশ অনুযায়ী কাজ করতে পারে কেবল নির্বাচিত সরকার। সংস্কার কমিশন গুলোর একটি বড়ো দুর্বলতা হচ্ছে কোন রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিত্ব কমিশনে নাই। তাই রাজনীতিবিদদের অংশগ্রহণ ছাড়াই শুধু প্রস্তাবের উপর ভিত্তি করে সংস্কার কেমন হবে বলে তা সবার অজানা।
বিচার: বিচার না নির্বাচন কোনটা আগে হওয়া উচিত? অবশ্যই নির্বাচন! কারণ বিচার প্রক্রিয়া অনেক দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার। শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের আন্তর্জাতিক মান বজায় না রেখে শাস্তি ঘোষণা করলে এর গুরুত্ব থাকবে না। আওয়ামী লীগ তখন বিশ্ববাসীর কাছে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের প্রহসন মূলক বিচার হচ্ছে। আইন উপদেষ্টা বলেছেন৷ একবছরের মধ্যে বিচার কাজ শেষ হবে যা শুনতে হাস্যকর দেখায়। কারণ সরকার কোন পাতি ক্রিমিনালের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে এমনটি নয়। আওয়ামী লীগ একটি মাফিয়াদের নেক্সাসে পরিণত হয়েছে। এক বছরের মধ্যে বিচার কাজ শেষ করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রেও সরকার বিভিন্ন পক্ষ হতে চাপ পাচ্ছে প্রতিনিয়ত। সরকার সকল পক্ষের সাপোর্ট না হারিয়ে তাদের সাথে বসে বিচার না নির্বাচন কোনটি আগে জরুরি সে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
নির্বাচন : যত দিন যাবে তত সরকারের উপর জুলাই অভ্যুত্থানের অনেক স্টেক হোল্ডারদের চাপ বাড়বে নির্বাচনের জন্য। কিন্তু সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনের মধ্যে কোনটি আগে হওয়া জরুরি সরকার তা নির্ধারণ করতে পারছে না। কারণ সকল রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক দলগুলো কেউ আগে নির্বাচন চায়, কেউ চায় আগে বিচার হউক আবার কেউ চায় সংস্কার। এতে সরকার সব পক্ষকে ব্যালেন্স করতে গিয়ে হযবরল অবস্থা সৃষ্টি করেছে। সকল রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সংগঠন কে এক সাথে ডেকে সরকারের পক্ষ থেকে উচিত ছিলো কোন কাজটি আগে করলে ভালো হবে তা জানা। ভবিষ্যতেও রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে উপরের তিনটি বিষয় নিয়ে ঐক্যমতে পৌছানো জরুরি। না হলে দেশে সংঘাত ও অস্থিতিশীল ঘটনা বাড়তে থাকবে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।

