somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছাত্রদের রাজনৈতিক দল কি জামায়াতের গণতান্ত্রিক শাখা হিসাবে আত্নপ্রকাশ করতে যাচ্ছে ?

১০ ই জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:১৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জুলাই-আগস্ট মাসে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রাজপথে ইসলামিক ছাত্রশিবির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ইহা আমার কথা নয়। সারজিস আলমের। আমরা যারা জুলাই অভ্যুত্থানে বিভিন্ন কোচিং সেন্টারগুলোর পক্ষ থেকে আন্দোলনে গিয়েছিল বেশিরভাগ শিবির সমর্থিত কোচিংসেন্টার ছিলো। একচুয়ালি আমরা অনেকেই জানতাম না এসব কিছু। শেখ হাসিনার পলায়নের পর এসব কোচিং সেন্টার হটাৎ করেই ইসলামিক ছাত্র শিবির নিয়ে ফেইসবুক ও অফলাইনে কথা বলতো। যারা নিরপেক্ষ ছিলাম তারা সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কে একটি অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম হিসাবে জানতাম। কিন্তু যখন ১৫৮ জন সমন্বয়কের মধ্যে ১২০ এর অধিক সমন্বয়ক ইসলামিক ছাত্র শিবিরের সাথে জড়িত শুনলাম তখন আস্তে আস্তে মোহ ভাঙতে থাকে। কারণ রাজনীতি অনেক খারাপ জিনিস। আমরা সাধারণ নিরপেক্ষ ছাত্রদের দেশে চাকুরি করে চলা লাগবে তাই কোন দলের ট্যাগ খেতে আমরা রাজি ছিলাম না। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী প্লাটফর্ম থেকে যেদিন নতুন রিপাবলিক ঘোষণা করার আল্টিমেটাম আসে তখন থেকেই আমরা সাধারণ ছাত্ররা কোন ধরণের আন্দোলনে যাওয়া থেকে নিজেদের বিরত রাখি।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দল। কিন্তু দলটির মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ভূমিকা অত্যন্ত প্রশ্নবিদ্ধ ছিলো। সেই কারণে তাদের অধিকাংশ বড়ো নেতা ফাঁসি ও যাবজ্জীবনের মুখোমুখি হয়েছে। এবার যেহেতু জামায়াতের ছাত্র সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে তাই তারা স্বপ্ন দেখে ক্ষমতায় যাওয়ার। একটি রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখতেই পারে। কিন্তু জামায়াতের প্রধান সমস্যা ইহা বিদেশি শক্তির খুব পছন্দনীয় দল নয়। কারণ জামায়াতের বিভিন্ন নেতার বক্তব্য পুরোপুরি অগণতান্ত্রিক। ইহারা বিভিন্ন বক্তব্যে ইসলামী শরিয়াহ শাসন চায় কিন্তু রাজনীতি করে গণতান্ত্রিক কাঠামোতে। দেশে যদি প্রকৃত গণতন্ত্রমনা মানুষ বা দল এখন ক্ষমতায় থাকতো তবে জামায়াতের রাজনীতি ফুল স্টপ হয়ে যেত। তাছাড়া জামায়াতে ইসলামী দেশের সংবিধান বদলে জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনার আলোকে সংবিধান চায়। এতে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার তাদের বিতর্কিত ভূমিকা আবারও সামনে চলে আসে। জামায়াতে কোন মুক্তিযোদ্ধা নাই তবে জুলাই অভ্যুত্থানের অনেক শহীদ যোদ্ধা জামায়াত-শিবিরের দল করতো। একজন বিদেশি রাষ্ট্রদূত অলরেডি দেশের সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতা থাকবে কিনা প্রশ্ন তুলেছে। এতসব কারণে জামায়াতের ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের ইমেজ অতীতেও গ্রহণযোগ্যতা পায় নি ভবিষ্যতেও পাবে না।

আমরা মোটামুটি ধরে নিতে পারি ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর থেকে জামায়াতে ইসলামী ও তার ছাত্র সংগঠনগুলো প্লান করে যে অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম থেকে আন্দোলন করে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারকে পতন ঘটাতে হবে। ইহা কোন খারাপ সিদ্ধান্ত নয়। কারণ আওয়ামী লীগ কোন সাধূ সন্ত মনীষীর দল নয়। উহা আরেক জালিম ও জুলুমবাজ সরকার ছিলো। জামায়াত-,শিবিরের এই প্লানে বিএনপি ও ছিলো। বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসাবে সংগ্রাম করে যাচ্ছিল অন্যদিক অন্যদিকে শিবির আন্ডারগ্রাউন্ড পলিটিক্স করা শুরু করে। ছাত্রলীগের বিভিন্ন পোস্ট তারা দখল করে ২০১৭ সালে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও ২০১৮ সালে কোটা আন্দোলনের সময় । জুলাই অভ্যুত্থানের সময় গণহারে ছাত্রলীগের বিভিন্ন পোস্ট থেকে পদত্যাগ করা বেশির ভাগ পোলাপান ইসলামিক ছাত্র শিবিরের। গণহারে পদত্যাগ ছাত্রলীগকে দূর্বল করে তুলেছিল।

জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা ও বিদেশি শক্তির নিকট গ্রহণযোগ্যতা পেতে বহু বছর ধরেই তাদের মধ্যে থেকে A টিম, B টিম ও C টিম গঠনের চেষ্টা করে যাচ্ছে। অন্যদিকে ছাত্রদের তৈরি রাজনৈতিক প্লাটফর্ম গুলোর সাথে জামায়াতের সখ্যতা লক্ষনীয়। সারজিস আলমের ইসলামিক ছাত্রশিবিরের প্রোগ্রামে যাওয়া তাই ইঙ্গিত করে। এখন ছাত্রদের তৈরি ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক প্লাটফর্ম অবশ্যই গণতন্ত্রমনা ও মধ্যপন্থী দল হিসাবে রাজনীতি করার চিন্তা ভাবনা করছে যা অনেকটা বিএনপির মতো হতে পারে। ছাত্রদের দ্বারা সংগঠিত দলটি ভবিষ্যতে জামায়াতে ইসলামীর গণতান্ত্রিক শাখা হিসাবে বিদেশি শক্তির নিকট নিজেদের তুলে ধরার সম্ভাবনা শতভাগ। জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রদের তৈরি রাজনৈতিক সংগঠন জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে যেতে পারে। সামনের নির্বাচন না হলেও তার পরের নির্বাচনে তারা এমন জোট বাধতে পারে। এক্ষেত্রে বিএনপির সাথে জামায়াতের জোট ভেঙে পড়তে পারে। বিএনপি এই বাস্তবতা অনুধাবন করতে শুরু করেছে। এতে সরকার ও স্ট্রং বিরোধী পক্ষ নির্বাচনের পর দেশবাসী পাবে বলে জামায়াতে ইসলামীর বদ্ধমূল ধারণা। বিদেশিদের জামায়াত-ছাত্রদের তৈরি দল নিয়ে কোন আপত্তি থাকার কথা নয়।



সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:২৫
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদের উচ্চ কক্ষের নির্বাচন আগে দিয়ে দেখতে দিন কে বাঘ কে বিড়াল?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪৬



সব দলের অংশগ্রহণে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদের উচ্চ কক্ষের নির্বাচন আগে দিন। কোন দলকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে কি করেনি সেইটাও জাতিকে দেখতে দিন। পিআর পদ্ধতির জাতীয় সংসদের উচ্চ... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রকৌশলী এবং অসততা

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৭


যখন নব্বইয়ের দশকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং পছন্দ করলাম পুরকৌশল, তখন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই অনেকরকম জ্ঞান দিলেন। জানেন তো, বাঙালির ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারিতে পিএইচডি করা আছে। জেনারেল পিএইচডি। সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১৫

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

ছবি, এআই জেনারেটেড।

ইহা আর মানিয়া নেওয়া যাইতেছে না। একের পর এক মামলায় তাহাকে সাজা দেওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধের কবিতাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৫


এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে আমার অত্যাচারিত সারা শরীরে।
এখনো চামড়া পোড়া কটু গন্ধের ক্ষতে মাছিরা বসে মাঝে মাঝে।

এখনো চামড়ার বেল্টের বিভৎস কারুকাজ খচিত দাগ
আমার তীব্র কষ্টের দিনগুলোর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×