আপনি কি ধরণের কথা বলেন তার উপর আপনার ব্যক্তিত্ব অনেকটাই নির্ভর করে। পরিস্থিতি বুঝে কথা না বললে শ্রোতার মধ্যে বিরক্তি দেখা দেয়। আর যদি আপনি দেশের শাসন ভার পরিচালনার দায়িত্বে থেকে জনগণের পালস না বুঝে নিজের মনগড়া কথা বলতে থাকেন তবে সাধারণ মানুষ এই বিষয়টিকে কাঁটা গায়ে নুনের ছিটা মনে করবে।
শেখ হাসিনার বিগত শাসনামলে যতবার সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন ততবার ভুল কথা বলে মানুষের মধ্যে বিরক্তি সৃষ্টি করেছেন। উনাকে যতবার দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ার কারণ জিজ্ঞাসা করা হতো তিনি ভুখা বাঙালিকে রেসিপি শেয়ার করতেন। কাঁঠালের বার্গার, ডিম সিদ্ধ করে ফ্রীজে রাখা, ভাত কম খাওয়া সহ নানা ধরণের ফালতু বয়ান দিয়ে সংবাদ সম্মেলনকে হাসি তামাশায় পরিণত করে তুলতেন। জনগণ শেখ হাসিনার এমন বক্তব্য ভালোভাবে নেয়নি। কথায় আছে, বন্দুক হতে বের হওয়া গুলি ও মুখ থেকে বের হওয়া শব্দ খুব সাবধানে ব্যবহার করতে হয়। শেখ হাসিনার এসব ভুলভাল বক্তব্য আওয়ামী লীগের পতনের জন্য অনেকাংশে দায়ী।
বর্তমান ইন্টেরিম সরকার গত সপ্তাহে প্রায় ১০০ টি পণ্যের উপর অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে ভ্যাট বাড়িয়েছে। স্বভাবতই দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মানুষের আয় কমে গিয়েছে তার উপর ভ্যাট বৃদ্ধি মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা মনে হচ্ছে জনগণের নিকট। এমন বেসামাল সময়ে ইন্টেরিম সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের সামনে দাবী করেন ভ্যাট বাড়ালেও নাকি জনগণের সমস্যা হবে না। আবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেছেন ভ্যাট বাড়ালে জনগণের ব্যয় বাড়বে না। উনারা কিসের উপর ভিত্তি করে এমন ধারণা পোষণ করছেন উনারাই ভালো জানেন । কিন্তু জনগণ তাদের এমন বক্তব্য ভালোভাবে নিচ্ছে না। গত কয়েকদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদ ও সমালোচনা চলছে ভ্যাট বাড়ানোর বিরুদ্ধে। কিন্তু সরকারে থাকা লোকজন মানুষের পালস না বুঝেই নিজে যা বুঝেন বা ধারণা করেন সে অনুযায়ী বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন।
নিজেদের অক্ষমতা ঢাকার জন্য যখন জনগণের সামনে সংবাদ সম্মেলনে ভুল কথা বলে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করা হয় উহাকে হাসিনা সিন্ড্রোম বলে।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৩:২৫