somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশে ঘন ঘন আন্দোলনের পিছনে কি কারণ থাকতে পারে?

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ২:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাংলাদেশ এখন পুরোপুরি মবের মুল্লুকে পরিণত হয়েছে বললে বোধহয় ভুল হবে না। প্রতিদিন কারো না কারো পতনের জন্য আন্দোলন, কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য রাস্তা অবরোধ, অনশন ও মিছিল চলছেই। জুলাই অভ্যুত্থানের পর ইন্টেরিম সরকার কে গত ছয়মাসে ১৩৬ টি আন্দোলনের মোকাবেলা করতে হয়েছে। চলমান কিছু আন্দোলন যেন সরকারের পিছন ছাড়ছেই না। তিতুমীর কলেজ কে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর করার আন্দোলন বোধকরি সবাই কে ছাপিয়ে গিয়েছে। শিক্ষার্থীরা কোমলমতি হওয়ায় সরকার হার্ডলাইনে যেতে পারছে না। কয়েকদিন আগে ঢাকা কলেজ বনাম ঢাবির ছোটখাটো মারামারি মানুষ প্রত্যক্ষ করেছিল। পান থেকে চুন খসলেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাসে নিজেদের মধ্যে, অন্যদের সাথে মারামারি করছে। পঞ্চগড়ে বিচারক অপসারণের জন্য আন্দোলন জাতি প্রত্যক্ষ করলো। জুলাই অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্রদের উপর হামলা চলছেই। পুলিশ না পারে দোষী খুজে বের করতে না পারে কাউকে গ্রেফতার করতে ! ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে ঢাবি ও জাবিতে দুই পক্ষের ঝামেলা লেগেই আছে। এক পক্ষ চায় নির্বাচন এখনই দিতে হবে অন গ্রুপ চায় আগে সংস্কার !

আজ প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে জুলাই অভ্যুত্থানে আহত রোগীরা যাত্রা শুরু করে। খারাপ লাগলেও বলতে হয় বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে চিকিৎসারত জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের বিরুদ্ধে নানা ধরণের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। কিছুদিন আগে দেখলাম জুলাই অভ্যুত্থানে আহতরা কোন এক অনুষ্ঠানে গণপরিষদের নেতা ফারুক কে পিটাচ্ছে। আহত ব্যক্তির পক্ষে এমন হামলা সত্যিই আশ্চর্যজনক। আরেক দিন দেখলাম হাসপাতালে জুলাই আহতরা খেলছে। তাদের দেখে রোগী বলে মোটেই মনে হয় নি। শ্যামলী পঙ্গু হাসপাতাল থেকে জুলাই অভ্যুত্থানের আহতরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে যাওয়ার সময় পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয়। পঙ্গু হাস্পাতালের আহত রা এর আগেও আন্দোলন করেছিলেন উন্নত চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে অবহেলা রয়েছে দেখতে পেয়ে তারা হয়তো আবার আন্দোলন করছে। সরকারের উচিত অতিসত্ত্বর এই সমস্যার সমাধান করা। জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে।

বিডিআর বিদ্রোহের সুষ্ঠু তদন্তের জন্য ইনকিলাব মঞ্চ নামে একটি গোষ্ঠী অনেকদিন ধরে আন্দোলন করে যাচ্ছে। অভিযোগ আছে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আসল অভিযুক্তদের দায় মুক্তি দিতে চান। এর প্রতিবাদে কখনো বিডিয়ারের নিহত সদস্যের পরিবার, কখনো ইনকিলাব মঞ্চ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পদত্যাগ দাবী করে আন্দোলন করেন। একাধিকবার একই ঘটনা ঘটছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকরি কোন পদক্ষেপ দেখি না।

পঙ্গু হাসপাতালের সামনে জুলাই আহতদের মিছিলের সময় এক মুরুব্বি হটাৎ 'জয় বাংলা' স্লোগান দিয়ে ইন্টেরিম সরকারের সমালোচনা করে আহতদের পক্ষ নেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মুরুব্বি কে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য। একজন শিক্ষা ক্যাডার আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণের সময় মিডিয়ায় ধরা খান। এখন উনার চাকুরি যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গোপালগঞ্জে ছাত্রলীগের হামলায় পুলিশ আহত, যানবাহন ভাঙচুর কিন্তু সেনাবাহিনী নিরব ভূমিকা পালন করছে। তাদের দেশের কোথাও দেখা যাচ্ছে না। পুলিশ শক্ত ভাবে ফাংশান করতে পারছে না।

শিক্ষার্থীদের অতি বিপ্লবী চেতনা নাকি তাদের ভিতর কোন গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট, কোন রাজনৈতিক দলের এজেন্ট দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এমন কাজ করছে তা খতিয়ে দেখা উচিত গোয়েন্দা সংস্থা গুলোর। কিন্তু যদি সর্ষের মধ্যে ভূত থাকে তাহলে কিছু করার নেই।

মোটাদাগে দেশজুড়ে চলমান সকল আন্দোলনের পিছনে যে সব কারণ থাকতে পারে :

১- দেশকে অস্থিতিশীল করে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করা। দেশে এক শ্রেণীর মানুষ আছেন যারা এই সরকারের সময় বেশি সু্যোগ সুবিধা ভোগ করছেন। তারা দ্রুত নির্বাচন চায় না।

২- দেশকে অস্থিতিশীল করে ইন্টেরিম সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করা। দ্রুত নির্বাচন দিতে যাতে বাধ্য হয় সরকার তাই এত সব আয়োজন।

৩- ইন্টেরিম সরকারের পতন ঘটিয়ে নতুন বিপ্লবী সরকার গঠন করা। কারণ জুলাই ঘোষণাপত্র ইন্টেরিম সরকারের জন্য আটকে গেছে।

৪- বিভিন্ন দেশের গোয়েন্দা সংস্থার কারসাজির মাধ্যমে বিশ্বের কাছে ইন্টেরিম সরকার কে দূর্বল ভাবে উপস্থাপন করানো।

৫- ইন্টেরিম সরকার নিজেই এসব আন্দোলন করিয়ে জনগণ কে ব্যস্ত রাখছে যাতে সরকারের বিভিন্ন খাতের ব্যর্থতা নিয়ে মানুষ সমালোচনা করার সুযোগ না পায়। ( এলপি গ্যাসের দাম বাড়ানো, বিপিএল কেলেঙ্কারি ইত্যাদি)।

৬- সমন্বয়ক ও শিক্ষার্থীদের সাধারণ মানুষের নিকট ঘৃণার পাত্র করে তোলার জন্য কোন একটি পক্ষ কাজ করতে পারে। ইতিমধ্যে মানুষ ছাত্র ও সমন্বয়কদের উপর বিরক্ত। এই বিরক্তকে ঘৃণায় পরিণত করতে হয়তো বারবার ছাত্র ও সমন্বয়কদের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে ফেলে আন্দোলনে নামতে বাধ্য করা হচ্ছে।

সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ রাত ২:২০
১৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রকৌশলী এবং অসততা

লিখেছেন ফাহমিদা বারী, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৭


যখন নব্বইয়ের দশকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং পছন্দ করলাম পুরকৌশল, তখন পরিচিত অপরিচিত অনেকেই অনেকরকম জ্ঞান দিলেন। জানেন তো, বাঙালির ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারিতে পিএইচডি করা আছে। জেনারেল পিএইচডি। সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুসের উচিৎ ভারতকে আক্রমন করা , বিডিআর হত্যাকান্ডের জন্য

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৭


ইউনুসের উচিৎ ভারতকে আক্রমন করা , বিডিআর হত্যাকান্ডের জন্য

পহেল গাঁয়ে পাকিস্থানি মদদে হত্যাকান্ডের জন্য ভারত পাকিস্থানে আক্রমন করে গুড়িয়ে দেয় , আফগানিস্থান তেহেরিক তালেবানদের মদদ দেওয়ার জন্য, পাকিস্থান... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:১৫

আমি ভারতকে যাহা দিয়াছি, ভারত উহা সারা জীবন মনে রাখিবে… :) =p~

ছবি, এআই জেনারেটেড।

ইহা আর মানিয়া নেওয়া যাইতেছে না। একের পর এক মামলায় তাহাকে সাজা দেওয়া... ...বাকিটুকু পড়ুন

এমন রাজনীতি কে কবে দেখেছে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২০


জেনজিরা আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের শাসনামল দেখেছে। মোটামুটি বীতশ্রদ্ধ তারা। হওয়াটাও স্বাভাবিক। এক দল আর কত? টানা ১৬ বছর এক জিনিস দেখতে কার ভালো লাগে? ভালো জিনিসও একসময় বিরক্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযুদ্ধের কবিতাঃ আমি বীরাঙ্গনা বলছি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১৫


এখনো রক্তের দাগ লেগে আছে আমার অত্যাচারিত সারা শরীরে।
এখনো চামড়া পোড়া কটু গন্ধের ক্ষতে মাছিরা বসে মাঝে মাঝে।

এখনো চামড়ার বেল্টের বিভৎস কারুকাজ খচিত দাগ
আমার তীব্র কষ্টের দিনগুলোর কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×