
বাংলাদেশে বর্তমানে শিক্ষকের পর যে প্রফেশানের মানুষ সবচাইতে বিপদে আছেন তা হচ্ছে পুলিশ। জুলাই অভ্যুত্থানে সাবেক প্রভুদের আদেশ পালন করতে গিয়ে ছাত্র-জনতার হাতে বিপর্যয় ঘটে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এই বাহিনীর । পুলিশের হারানো ভাবমূর্তি এখনো তারা ফিরে পায় নি। জুলাই অভ্যুত্থানের আঘাতের কথা স্মরণ করে মব জাস্টিস নামক নতুন আযাব সামাল দিতে তারা আগ্রহী নয়। এতে সাধারণ মানুষ তাদের উপর ক্ষুব্ধ। অভ্যুত্থানে নিহত পুলিশদের হত্যাকারী কারা তা খুজে বের করতে না পারায় পুলিশের পুরো বাহিনী অস্বস্তির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলার কাজে নিয়োজিত এই বাহিনী এখনো ছাত্র-জনতাকে জুলাই অভ্যুত্থানে পুলিশের উপর হামলার জন্য মনে মনে দায়ী করছে। তার প্রমাণ শহীদ ইয়ামিনের মৃত্যু নিয়ে তদন্ত রিপোর্ট ! পুলিশ নাকি তদন্ত করে বের করেছে সাভারে শহীদ হওয়া ইয়ামিন একজন সন্ত্রাসী। অথচ ইয়ামিন মিলিটারি ইনিস্টিউট অব সাইন্স এন্ড টেকনোলজীতে পড়ুয়া একজন শিক্ষার্থী ছিলেন। পুলিশের এই গজব তদন্ত প্রতিবেদন জনসম্মুখে আসার পরপরই পুলিশকে আবারো অপমানিত হতে হচ্ছে ।
গতকাল গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় সাবেক প্রভুদের হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হন কতিপয় পুলিশ। একজন পুলিশ সদস্যকে অবরূদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। পুলিশের দাবী নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের এক কর্মীকে আটকের পর জনতা জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে তাদের উপর হামলা করে আসামিকে কেড়ে নিয়ে গিয়েছে। পুলিশের পক্ষে জয় বাংলা স্লোগান ছাড়া আর কাউকে পরিচিত মনে হয় নি। সাবেক প্রভুদের ভয়ে তারা থানার সামনে সেনাবাহিনীর পাহারার জন্য রিকোয়েস্ট করেছেন। পুলিশের সাবেক প্রভুরা জুলাই অভ্যুত্থানে পুলিশের উপর হামলার জন্য ছাত্র-জনতাকে দায়ী করে;এখন তারা নিজেরাই হামলা করছে ! পুলিশের প্রভুভক্তি এখন তাদের জন্য উভয় সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পোশাক নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছে। পুলিশের পোশাক পরিবর্তনের চেষ্টা চলছে। আগের পোশাকে সিভিলিয়ান হত্যা করায় তা কলঙ্কিত হয়েছে। তাই বিশেষজ্ঞরা পুলিশের পোশাক পরিবর্তনের জন্য তাগাদা দিচ্ছেন। এতে করে যদি জনগণের কিছুটা আস্থা ফিরে আসে। আমাদের জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেয়া একজন নারী সমন্বয়ক(উমামা ফাতেমা) পুলিশ বাহিনীর জন্য গোলাপি রঙের পোশাক বেশি পারফেক্ট হবে বলে মত প্রকাশ করেছেন। আপুনি মনে হয় বিটিএস লাভার ! সাধারণ জনগণ মনে করছেন পোশাক পাল্টিয়ে লাভ কি যদি স্বভাব না পাল্টায় ?
শেষ করছি একটি দুঃখজনক ঘটনা শেয়ার করে। গত ৩০শে জানুয়ারি পাকিস্তানের বাংলাদেশে নিযুক্ত হাইকমিশনার সহ আরো চারজন সদস্য সারদা পুলিশ একাডেমি সফর করেছে। এই ঘটনা দেখে বুকটা চিনচিন করে উঠলো ! এই সারদা পুলিশ একাডেমিতে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বধ্যভূমি যা পাকিস্তানি বাহিনীর বাঙালির উপর চরম নির্যাতনের প্রতীক হিসাবে বিবেচিত । মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজারবাগ পুলিশ লাইন থেকে সর্বপ্রথম পাকিস্তানি হানাদার দের প্রতিরোধ করা হয়েছিল। পাকিস্তান বাংলাদেশের মানুষের কাছে আজো তাদের ঘৃণিত কর্মকান্ডের জন্য ক্ষমা চায়নি। পুলিশকে আজ পাকি হাইকমিশনার ও তার সহযোগীদের অভ্যর্থনা জানাতে হচ্ছে। এর চাইতে অপমানের ঘটনা আর কি হতে পারে ?


অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


